হারিয়ে যাওয়া কালি কলম প্রবন্ধের প্রশ্ন উত্তর

হারিয়ে যাওয়া কালি কলম প্রবন্ধের প্রশ্ন উত্তর

হারিয়ে যাওয়া কালি কলম – নিখিল সরকার (শ্রীপান্থ)

ক) বহুবিকল্পভিত্তিক প্রশ্নাবলী (MCQ) – মান ১ (৫০টি)

১. ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ প্রবন্ধটির লেখকের ছদ্মনাম কী?

  • (ক) বনফুল
  • (খ) শ্রীপান্থ
  • (গ) যাযাবর
  • (ঘ) কালকূট

২. লেখকের আসল নাম কী?

  • (ক) নিখিল সেন
  • (খ) বলাইচাঁদ মুখোপাধ্যায়
  • (গ) সমরেশ বসু
  • (ঘ) নিখিল সরকার

৩. “আমার মনে পড়ে প্রথম ফাউন্টেন পেন কেনার কথা।” – লেখক কোথা থেকে পেনটি কিনেছিলেন?

  • (ক) কলেজ স্ট্রিট
  • (খ) নিউ মার্কেট
  • (গ) শ্যামবাজার
  • (ঘ) ধর্মতলা

৪. “কলম তাদের কাছে আজ অস্পৃশ্য।” – কাদের কাছে?

  • (ক) সাংবাদিকদের
  • (খ) পকেটমারদের
  • (গ) বৃদ্ধদের
  • (ঘ) শিশুদের

৫. লর্ড কার্জন কী পছন্দ করতেন?

  • (ক) বাঙালি পোশাক
  • (খ) বাঙালি রান্না
  • (গ) বাঙালি কলম
  • (ঘ) বাঙালি সংস্কৃতি

৬. কালি তৈরির জন্য লেখকেরা কী ব্যবহার করতেন?

  • (ক) নিমপাতা
  • (খ) ত্রিফলা
  • (গ) তুলসীপাতা
  • (ঘ) ভেষজ রঙ

৭. ফাউন্টেন পেনের আবিষ্কর্তা কে?

  • (ক) লুইস অ্যাডসন ওয়াটারম্যান
  • (খ) জর্জ পার্কার
  • (গ) ওয়াল্টার শেফার
  • (ঘ) টমাস এডিসন

৮. সত্যজিৎ রায়ের সংগ্রহে কত ডজন ফাউন্টেন পেন ছিল?

  • (ক) এক ডজন
  • (খ) দুই ডজন
  • (গ) পাঁচ ডজন
  • (ঘ) কয়েক ডজন

৯. “একদা বলা হত…” – কী বলা হত?

  • (ক) লেখা পড়া করে যে, গাড়ি ঘোড়া চড়ে সে
  • (খ) কালি কলম মন, লেখে তিনজন
  • (গ) পড়া লেখা না করলে, চাষবাস করতে হয়
  • (ঘ) কলম তরোয়ালের চেয়ে শক্তিশালী

১০. পালকের কলমের ইংরেজি নাম কী?

  • (ক) Fountain Pen
  • (খ) Stylus
  • (গ) Quill
  • (ঘ) Reed Pen

১১. ফাউন্টেন পেনের বাংলা নাম ‘ঝরনা কলম’ কে দিয়েছিলেন?

  • (ক) শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
  • (খ) বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
  • (গ) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
  • (ঘ) ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর

১২. “কখনো বা শিংওয়ালা” – কার শিং?

  • (ক) হরিণের
  • (খ) গরুর
  • (গ) ছাগলের
  • (ঘ) মোষের

১৩. কঞ্চির কলম কী দিয়ে তৈরি হত?

  • (ক) শরের ডগা
  • (খ) বাঁশের কঞ্চি
  • (গ) খাগের ডগা
  • (ঘ) গাছের ডাল

১৪. “অনেক রকম নিব পাওয়া যেত” – তার মধ্যে একটি হল:

  • (ক) স্টিলের নিব
  • (খ) সোনার নিব
  • (গ) গরুর শিং-এর নিব
  • (ঘ) সবকটিই

১৫. কোন বিখ্যাত লেখকের দোয়াত সংগ্রহ ছিল?

  • (ক) শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
  • (খ) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
  • (গ) সুভাষ মুখোপাধ্যায়
  • (ঘ) তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়

১৬. ফাউন্টেন পেনের জন্মদাতা লুই ওয়াটারম্যান পেশায় কী ছিলেন?

  • (ক) ব্যবসায়ী
  • (খ) লেখক
  • (গ) কেরানি
  • (ঘ) ইঞ্জিনিয়ার

১৭. “এই নেশা আমি পেয়েছি…” – লেখক কার কাছ থেকে এই নেশা পেয়েছিলেন?

  • (ক) রবীন্দ্রনাথের কাছ থেকে
  • (খ) শরৎচন্দ্রের কাছ থেকে
  • (গ) শৈলজানন্দের কাছ থেকে
  • (ঘ) বাবার কাছ থেকে

১৮. “সিজার যে কলমটি দিয়ে কাসকাকে আঘাত করেছিলেন, তার পোশাকি নাম…”

  • (ক) কুইল
  • (খ) স্টাইলাস
  • (গ) নিব
  • (ঘ) শলাকা

১৯. ‘দোয়াত’ কী?

  • (ক) কলমদানি
  • (খ) কালির পাত্র
  • (গ) লেখার ডেস্ক
  • (ঘ) কাগজ রাখার পাত্র

২০. কোন কলমের ‘মৃত্যু’ নিয়ে লেখক আক্ষেপ করেছেন?

  • (ক) পালকের কলম
  • (খ) কঞ্চির কলম
  • (গ) ঝরনা কলম
  • (ঘ) বল পয়েন্ট পেন

২১. “সবই আজ অবলুপ্তির পথে” – কোনটি অবলুপ্তির পথে নয়?

  • (ক) দোয়াত
  • (খ) কালি
  • (গ) কলম
  • (ঘ) কম্পিউটার

২২. কালি তৈরির জন্য কীসের ছাগদুগ্ধ মেশানো হত?

  • (ক) কালিকে স্থায়ী করতে
  • (খ) কালিকে ঘন করতে
  • (গ) কালির রঙ বদলাতে
  • (ঘ) কালিকে সুগন্ধি করতে

২৩. “কানে কলম গুঁজে দুনিয়া খোঁজেন” – কারা?

  • (ক) দারোগা
  • (খ) সাংবাদিক
  • (গ) দার্শনিক
  • (ঘ) লেখক

২৪. কলমকে কীসের চেয়ে শক্তিশালী বলা হয়েছে?

  • (ক) বন্দুকের
  • (খ) বোমার
  • (গ) তরোয়ালের
  • (ঘ) কামানের

২৫. ‘স্টাইলাস’ কী দিয়ে তৈরি ছিল?

  • (ক) লোহা
  • (খ) রুপা
  • (গ) ব্রোঞ্জ
  • (ঘ) সোনা

২৬. ছেলেবেলায় লেখক কী দিয়ে কলম তৈরি করতেন?

  • (ক) পালক
  • (খ) খাগের ডগা
  • (গ) গাছের ডাল
  • (ঘ) বাঁশের কঞ্চি

২৭. ফাউন্টেন পেনের আগের নাম কী ছিল?

  • (ক) কুইল পেন
  • (খ) স্টাইলাস
  • (গ) রিজার্ভার পেন
  • (ঘ) ঝরনা কলম

২৮. শৈলজানন্দ মুখোপাধ্যায় কী দিয়ে লিখতেন?

  • (ক) কঞ্চির কলম
  • (খ) পালকের কলম
  • (গ) ফাউন্টেন পেন
  • (ঘ) বল পয়েন্ট পেন

২৯. “কালি কলম মন, লেখে তিনজন” – এখানে ‘তিনজন’ কারা?

  • (ক) তিনজন লেখক
  • (খ) তিনজন দেবতা
  • (গ) কালি, কলম এবং মন
  • (ঘ) লেখক, পাঠক ও প্রকাশক

৩০. ‘কিলক’ কী?

  • (ক) একটি গাছ
  • (খ) একটি যন্ত্র
  • (গ) ব্রোঞ্জের শলাকা
  • (ঘ) একটি কলম

৩১. “লাঠি তোমার দিন ফুরাইয়াছে” – কে বলেছিলেন?

  • (ক) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
  • (খ) শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
  • (গ) বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
  • (ঘ) প্রমথ চৌধুরী

৩২. অন্নদাশঙ্কর রায় বিদেশে গেলে কীসের বিজ্ঞাপন দেখতেন?

  • (ক) বইয়ের
  • (খ) কলমের
  • (গ) ঘড়ির
  • (ঘ) গাড়ির

৩৩. ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ প্রবন্ধটি কোন শ্রেণীর?

  • (ক) তথ্যমূলক
  • (খ) আত্মজীবনীমূলক
  • (গ) ব্যঙ্গাত্মক
  • (ঘ) রম্যরচনা

৩৪. ফাউন্টেন পেনের নিব কিসের তৈরি হত?

  • (ক) সোনা
  • (খ) রুপা
  • (গ) ইস্পাত
  • (ঘ) সবকটিই

৩৫. দোয়াত আগে কীসের তৈরি হত?

  • (ক) কাঁচের
  • (খ) মাটির
  • (গ) সোনার
  • (ঘ) সবকটিই

৩৬. “সম্ভবত শেষ পর্যন্ত নিবের কলমের মান মর্যাদা” – কে বাঁচিয়ে রেখেছিলেন?

  • (ক) অন্নদাশঙ্কর রায়
  • (খ) সত্যজিৎ রায়
  • (গ) শৈলজানন্দ মুখোপাধ্যায়
  • (ঘ) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

৩৭. ঝরনা কলমের সবচেয়ে বড়ো দোষ কী ছিল?

  • (ক) দাম বেশি
  • (খ) কালি ফুরিয়ে যাওয়া
  • (গ) পকেটে কালি লেগে যাওয়া
  • (ঘ) সহজে ভেঙে যাওয়া

৩৮. চীনারা কোথায় লিখত?

  • (ক) কাগজের উপর
  • (খ) তুলোর উপর
  • (গ) সিল্কের উপর
  • (ঘ) চামড়ার উপর

৩৯. “দার্শনিক তাকেই বলি” – কাকে?

  • (ক) যিনি দর্শন নিয়ে আলোচনা করেন
  • (খ) যিনি চোখে চশমা পরেন
  • (গ) যিনি কলম কানে গুঁজে দুনিয়া খোঁজেন
  • (ঘ) যিনি বই পড়েন

৪০. পালকের কলম তৈরিতে কীসের পালক লাগত?

  • (ক) হাঁসের
  • (খ) ময়ূরের
  • (গ) কাকের
  • (ঘ) সবকটিই (তবে রাজহাঁস ও ময়ূর প্রধান)

৪১. “ওস্তাদ কলমবাজদের” কী বলা হত?

  • (ক) লিপিকর
  • (খ) ক্যালিগ্রাফিস্ট
  • (গ) লেখক
  • (ঘ) প্রবন্ধকার

৪২. গ্রামের বয়স্করা কী দেখে লেখককে আশীর্বাদ করতেন?

  • (ক) তার পড়াশোনা দেখে
  • (খ) তার ভালো লেখা দেখে
  • (গ) তার হাতের লেখা দেখে
  • (ঘ) তার আচরণ দেখে

৪৩. ফাউন্টেন পেনের এক নাম কী ছিল?

  • (ক) নিব পেন
  • (খ) কালি পেন
  • (গ) রিজার্ভার পেন
  • (ঘ) পকেট পেন

৪৪. “সব আজ _____ জগতে” – শূন্যস্থান পূরণ কর।

  • (ক) কম্পিউটারের
  • (খ) বলপেনের
  • (গ) যন্ত্রের
  • (ঘ) ছাপাখানার

৪৫. লেখক কোন কলমটি কেনার পরদিনেই তার ‘বিয়োগ ব্যথা’ পেয়েছিলেন?

  • (ক) একটি জাপানি পাইলট
  • (খ) একটি শেফার পেন
  • (গ) একটি পার্কার পেন
  • (ঘ) একটি ওয়াটারম্যান পেন

৪৬. ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ প্রবন্ধটি কোন মূল গ্রন্থ থেকে নেওয়া?

  • (ক) কালি কলম মন
  • (খ) যখন ছাপাখানা ছিল না
  • (গ) কলম-কথা
  • (ঘ) লেখকের কোনো গ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়নি

৪৭. টাইপরাইটারে লিখে বিখ্যাত হয়েছিলেন কোন বাঙালি লেখক?

  • (ক) অন্নদাশঙ্কর রায়
  • (খ) সুভাষ মুখোপাধ্যায়
  • (গ) সত্যজিৎ রায়
  • (ঘ) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

৪৮. লেখক কালি বানানোর জন্য কীসের পাতা ব্যবহার করতেন?

  • (ক) কলাপাতা
  • (খ) লাউপাতা
  • (গ) শালপাতা
  • (ঘ) পদ্মপাতা

৪৯. রোমে ব্রোঞ্জের শলাকার পোশাকি নাম কী ছিল?

  • (ক) নিব
  • (খ) স্টাইলাস
  • (গ) কুইল
  • (ঘ) পেন

৫০. ঝরনা কলমের ‘খুনী’ কে?

  • (ক) কঞ্চির কলম
  • (খ) পালকের কলম
  • (গ) বল পয়েন্ট পেন
  • (ঘ) কম্পিউটার

খ) অতি-সংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্নাবলী (SAQ) – মান ১ (৪০টি)

১. ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ প্রবন্ধের লেখকের ছদ্মনাম কী?

উত্তর: লেখকের ছদ্মনাম শ্রীপান্থ।

২. লেখকের আসল নাম কী?

উত্তর: লেখকের আসল নাম নিখিল সরকার।

৩. পালকের কলমের ইংরেজি নাম কী?

উত্তর: পালকের কলমের ইংরেজি নাম কুইল (Quill)।

৪. প্রাচীনকালে কিসের কলম ব্যবহৃত হত?

উত্তর: প্রাচীনকালে বাঁশের কঞ্চি, খাগ, নল বা পালকের কলম ব্যবহৃত হত।

৫. কালি তৈরির জন্য ব্যবহৃত একটি ফলের নাম লেখো।

উত্তর: কালি তৈরির জন্য ব্যবহৃত একটি ফলের নাম হরিতকী।

৬. ‘কালি কলম মন, লেখে তিনজন’ – এই প্রবাদটির অর্থ কী?

উত্তর: এই প্রবাদটির অর্থ হলো, ভালো লেখার জন্য ভালো কালি, ভালো কলম এবং লেখকের মনোসংযোগ—এই তিনটি জিনিসের প্রয়োজন।

৭. ফাউন্টেন পেনের আবিষ্কর্তা কে?

উত্তর: ফাউন্টেন পেনের আবিষ্কর্তা লুইস অ্যাডসন ওয়াটারম্যান।

৮. ঝরনা কলমের বাংলা নামটি কে দিয়েছিলেন?

উত্তর: ঝরনা কলমের বাংলা নামটি দিয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।

৯. ‘কলম তাদের কাছে আজ অস্পৃশ্য’ – কাদের কাছে?

উত্তর: পকেটমারদের কাছে কলম আজ অস্পৃশ্য।

১০. কোন লেখকের দোয়াত সংগ্রহের নেশা ছিল?

উত্তর: লেখক সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের দোয়াত সংগ্রহের নেশা ছিল।

১১. সত্যজিৎ রায়ের প্রিয় কলম কোনটি ছিল?

উত্তর: সত্যজিৎ রায়ের প্রিয় কলম ছিল পার্কার বা শেফার।

১২. ‘স্টাইলাস’ কী?

উত্তর: ‘স্টাইলাস’ হলো ব্রোঞ্জের তৈরি একটি শলাকা, যা প্রাচীন রোমে লেখার কাজে ব্যবহৃত হত।

১৩. ফাউন্টেন পেনের জন্ম হয়েছিল কেন?

উত্তর: চুক্তিপত্র সই করার সময় দোয়াতের কালি পড়ে যাওয়ায় সেই বিপত্তি থেকে রক্ষা পেতেই ফাউন্টেন পেনের জন্ম হয়েছিল।

১৪. লেখক ছেলেবেলায় কালি কোথায় রাখতেন?

উত্তর: লেখক ছেলেবেলায় কালি মাটির দোয়াত বা কলাপাতা কেটে তার মধ্যে রাখতেন।

১৫. ক্যালিগ্রাফিস্ট কাদের বলা হয়?

উত্তর: যারা ওস্তাদ কলমবাজ বা সুন্দর হাতের লেখার শিল্পী, তাদের ক্যালিগ্রাফিস্ট বলা হয়।

১৬. ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ প্রবন্ধটি কোন গ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে?

উত্তর: প্রবন্ধটি ‘কালি কলম মন’ গ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে।

১৭. ‘ত্রিফলা’ কী?

উত্তর: ‘ত্রিফলা’ হলো হরিতকী, আমলকী ও বহেড়া—এই তিনটি ফলের মিশ্রণ।

১৮. লেখক প্রথম কোন পেন কিনেছিলেন?

উত্তর: লেখক প্রথম একটি জাপানি পাইলট পেন কিনেছিলেন।

১৯. ‘রিজার্ভার পেন’ কোন কলমকে বলা হত?

উত্তর: ফাউন্টেন পেনকে ‘রিজার্ভার পেন’ বলা হত।

২০. কলমকে কীসের চেয়ে শক্তিশালী বলা হয়?

উত্তর: কলমকে তরোয়ালের চেয়ে শক্তিশালী বলা হয়।

২১. শৈলজানন্দ মুখোপাধ্যায় কীসের জন্য বিখ্যাত ছিলেন?

উত্তর: শৈলজানন্দ মুখোপাধ্যায় ফাউন্টেন পেন দিয়ে লেখার জন্য বিখ্যাত ছিলেন।

২২. কম্পিউটারের দাপটে কারা বেকার হয়ে গেছে?

উত্তর: কম্পিউটারের দাপটে অনেক মুদ্রণ শিল্পী বা ক্যালিগ্রাফিস্ট বেকার হয়ে গেছে।

২৩. কলম কোথায় গোঁজার কথা বলা হয়েছে?

উত্তর: কলম কানে গোঁজার কথা বলা হয়েছে।

২৪. “লাঠি তোমার দিন ফুরাইয়াছে” – এই উক্তিটি কার?

উত্তর: এই উক্তিটি সাহিত্যসম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের।

২৫. বলপেনের ‘খুনী’ কে?

উত্তর: লেখক ঝরনা কলমকে খুন করার জন্য বলপেনকে দায়ী করেছেন।

২৬. দোয়াতের কালি কীভাবে তৈরি হত?

উত্তর: বাড়িতে কাঠ জ্বালিয়ে তৈরি করা কালি, ভেষজ উপাদান এবং ত্রিফলা ভিজিয়ে দোয়াতের কালি তৈরি হত।

২৭. কালিকে আরও কালো করার জন্য কী মেশানো হত?

উত্তর: কালিকে আরও কালো করার জন্য আতপ চাল ভেজে পুড়িয়ে তা মেশানো হত।

২৮. লেখককে কে হাতের লেখা দেখে আশীর্বাদ করতেন?

উত্তর: গ্রামের বয়স্করা লেখকের হাতের লেখা দেখে তাকে আশীর্বাদ করতেন।

২৯. ফিনিসীয়রা কীসের উপর লিখত?

উত্তর: ফিনিসীয়রা হাড় বা পশুর চামড়ার উপর লিখত।

৩০. ‘কানে কলম গুঁজে দুনিয়া খোঁজেন’ – কারা?

উত্তর: দার্শনিকরা কানে কলম গুঁজে দুনিয়া খোঁজেন।

৩১. লেখকের কেনা প্রথম পেনটি কীভাবে হারিয়েছিল?

উত্তর: কেনার পরদিনেই লেখকের প্রথম পেনটি চুরি হয়ে গিয়েছিল।

৩২. পকেটমাররা কেন কলম নেয় না?

উত্তর: কারণ এখনকার সস্তা কলমের কোনো দাম নেই এবং তা বিক্রি করা যায় না।

৩৩. ‘কিলক’ কী দিয়ে তৈরি?

উত্তর: ‘কিলক’ ব্রোঞ্জ দিয়ে তৈরি।

৩৪. সত্যজিৎ রায় কোন কলম পছন্দ করতেন না?

উত্তর: সত্যজিৎ রায় বল পয়েন্ট পেন পছন্দ করতেন না।

৩৫. ‘কালি-কলম’ এখন কোথায় দেখা যায়?

উত্তর: ‘কালি-কলম’ এখন মূলত মিউজিয়াম বা সংগ্রহশালায় দেখা যায়।

৩৬. কলম তৈরির জন্য বাঁশের কঞ্চি কীভাবে কাটা হত?

উত্তর: বাঁশের কঞ্চির মুখটি সরু করে চিরে কলম তৈরি করা হত।

৩৭. ঝরনা কলমের সবচেয়ে বড়ো সুবিধা কী ছিল?

উত্তর: ঝরনা কলমের সবচেয়ে বড়ো সুবিধা ছিল, এর সঙ্গে কালি বা দোয়াত বয়ে নিয়ে বেড়াতে হত না।

৩৮. লেখকের মতে, কলমের দুনিয়ায় বিপ্লব এনেছিল কে?

উত্তর: লেখকের মতে, কলমের দুনিয়ায় বিপ্লব এনেছিল ফাউন্টেন পেন।

৩৯. “সবই আজ অবলুপ্তির পথে” – ‘সবই’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে?

উত্তর: ‘সবই’ বলতে হাতে তৈরি কালি, বাঁশের কলম, খাগের কলম, পালকের কলম, দোয়াত ইত্যাদি বোঝানো হয়েছে।

৪০. প্রবন্ধের শেষে লেখক কী নিয়ে আক্ষেপ করেছেন?

উত্তর: প্রবন্ধের শেষে লেখক কালি-কলমের হারিয়ে যাওয়া এবং যন্ত্রনির্ভর লেখার প্রসারে হাতে লেখার আবেগ ও শিল্পের বিলুপ্তি নিয়ে আক্ষেপ করেছেন।


গ) রচনাধর্মী প্রশ্নাবলী – মান ৫ (১০টি)

১. ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ প্রবন্ধের নামকরণের সার্থকতা বিচার করো।

উত্তর:
ভূমিকা: শ্রীপান্থের ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ প্রবন্ধটির নামকরণ তার বিষয়বস্তু ও মূল সুরকে সার্থকভাবে ধারণ করেছে। প্রবন্ধটি মূলত কালি-কলমের অতীত ঐতিহ্য এবং আধুনিক প্রযুক্তির দাপটে তার বিলুপ্তির ইতিহাস নিয়ে এক মনোগ্রাহী রম্যরচনা।
‘হারিয়ে যাওয়া’র প্রেক্ষাপট: লেখক দেখিয়েছেন, একসময় মানুষের জীবনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে ছিল হাতে তৈরি কালি এবং বাঁশের বা পালকের কলম। ফাউন্টেন পেনের আবিষ্কার সেই জগতে বিপ্লব আনলেও, তার সঙ্গেও জড়িয়ে ছিল এক শৈল্পিক আবেগ। কিন্তু বল পয়েন্ট পেন এবং কম্পিউটারের আগমনে সেই কালি-কলমের জগৎ আজ প্রায় হারিয়ে গেছে।
কালি ও কলমের প্রসঙ্গ: প্রবন্ধের পরতে পরতে লেখক কালি তৈরির পদ্ধতি, বিভিন্ন ধরনের কলমের (কঞ্চি, পালক, স্টাইলাস, ঝরনা কলম) বিবর্তনের কথা বলেছেন। তিনি দেখিয়েছেন, এই কালি-কলম শুধু লেখার উপকরণ ছিল না, এ ছিল এক সংস্কৃতির অঙ্গ।
উপসংহার: যেহেতু প্রবন্ধের মূল বিষয়ই হলো কালি-কলমের সেই সমৃদ্ধ ঐতিহ্য এবং আধুনিকতার চাপে তার ধীরে ধীরে বিলীন হয়ে যাওয়ার আক্ষেপ, তাই ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ নামকরণটি অত্যন্ত ব্যঞ্জনাময় ও সার্থক।

২. “কলম তাদের কাছে আজ অস্পৃশ্য।” – ‘কলম’ কাদের কাছে এবং কেন অস্পৃশ্য হয়ে উঠেছে? এই উক্তির মাধ্যমে লেখক কোন সামাজিক পরিবর্তনের দিকে ইঙ্গিত করেছেন?

উত্তর:
ভূমিকা: শ্রীপান্থের ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ প্রবন্ধ থেকে গৃহীত এই উক্তিটি এক গভীর সামাজিক পরিবর্তনের দিকে ইঙ্গিত করে।
অস্পৃশ্যতার কারণ: এখানে ‘কলম’ পকেটমারদের কাছে অস্পৃশ্য হয়ে উঠেছে। অতীতে ফাউন্টেন পেন ছিল একটি মূল্যবান ও শৌখিন বস্তু। পকেটমাররা সুযোগ পেলেই তা চুরি করত। কিন্তু বর্তমানে সস্তা বল পয়েন্ট পেনের দাপটে দামী ফাউন্টেন পেনের ব্যবহার প্রায় উঠে গেছে। এই সস্তা কলমের কোনো বাজারমূল্য নেই, তাই পকেটমারদের কাছে এর কোনো আকর্ষণও নেই। এই কারণেই কলম আজ তাদের কাছে ‘অস্পৃশ্য’ বা বর্জনীয়।
সামাজিক পরিবর্তনের ইঙ্গিত: এই উক্তির মাধ্যমে লেখক দুটি সামাজিক পরিবর্তনের দিকে ইঙ্গিত করেছেন—
১. প্রযুক্তির পরিবর্তন: বল পয়েন্ট পেনের সহজলভ্যতা এবং কম দাম ফাউন্টেন পেনের যুগকে শেষ করে দিয়েছে। প্রযুক্তি মানুষের জীবনযাত্রাকে বদলে দিয়েছে।
২. মূল্যবোধের পরিবর্তন: একসময় যা মূল্যবান ও সম্মানীয় ছিল, আজ তা মূল্যহীন। কলম এখন আর শুধু লেখার উপকরণ নয়, তা ব্যবহারের মাধ্যমে মানুষের রুচি ও মর্যাদারও পরিচয় দিত। সেই মূল্যবোধ আজ হারিয়ে গেছে।
সুতরাং, এই একটি মাত্র লাইনের মাধ্যমে লেখক প্রযুক্তিগত ও সামাজিক পরিবর্তনের এক চমৎকার চিত্র তুলে ধরেছেন।

৩. “কালি কলম মন, লেখে তিনজন” – এই প্রবাদটির তাৎপর্য কী? বর্তমান যুগে এই প্রবাদটি কতটা প্রাসঙ্গিক বলে তোমার মনে হয়?

উত্তর:
প্রবাদটির তাৎপর্য: “কালি কলম মন, লেখে তিনজন” – এই প্রাচীন প্রবাদটির তাৎপর্য হলো, একটি সার্থক লেখা বা শিল্পকর্ম শুধুমাত্র লেখকের একক প্রচেষ্টার ফল নয়। এর জন্য তিনটি জিনিসের নিখুঁত সমন্বয় প্রয়োজন—ভালো কালি, ভালো কলম এবং লেখকের মনোসংযোগ বা ভাবনার গভীরতা। কালি ও কলম যদি মসৃণ না হয়, তবে লেখকের মনের ভাবও সাবলীলভাবে প্রকাশ পেতে পারে না। তাই লেখা হলো এই তিনের এক সম্মিলিত সৃষ্টি।
বর্তমান যুগে প্রাসঙ্গিকতা: বর্তমান কম্পিউটার ও বলপেনের যুগে এই প্রবাদটির আক্ষরিক প্রাসঙ্গিকতা হয়তো কমে গেছে। এখন লেখার জন্য কালি বা দোয়াতের প্রয়োজন হয় না। কিন্তু এর ভাবগত প্রাসঙ্গিকতা এখনও অটুট। ‘কালি’ ও ‘কলম’ এখানে লেখার উপকরণের প্রতীক। আজও একজন লেখকের ভালো লেখার জন্য প্রয়োজন উপযুক্ত মাধ্যম (কম্পিউটার বা আধুনিক কলম) এবং তার সঙ্গে গভীর ‘মন’ বা চিন্তার সংযোগ। মাধ্যম बदलলেও, মনের সঙ্গে মাধ্যমের সুষম সমন্বয় ছাড়া ভালো লেখা সম্ভব নয়। তাই, রূপ বদলালেও প্রবাদটির মূল ভাব আজও প্রাসঙ্গিক।

৪. ফাউন্টেন পেনের জন্মবৃত্তান্তটি সংক্ষেপে লেখো। এর বাংলা নাম ‘ঝরনা কলম’ কে দিয়েছিলেন?

উত্তর:
জন্মবৃত্তান্ত: ফাউন্টেন পেনের জন্ম হয়েছিল এক ব্যবসায়িক প্রয়োজন এবং দুর্ঘটনা থেকে। এর আবিষ্কর্তা লুইস অ্যাডসন ওয়াটারম্যান ছিলেন একজন ব্যবসায়ী। তিনি একবার এক চুক্তিপত্র সই করতে গিয়েছিলেন। কিন্তু দোয়াতের কালি হঠাৎ कागজের উপর পড়ে যাওয়ায় চুক্তিপত্রটি নষ্ট হয়ে যায়। তিনি যখন নতুন করে কাগজ জোগাড় করে ফিরে আসেন, তখন অন্য একজন সেই চুক্তিটি সই করে নিয়ে চলে যায়। এই ঘটনায় হতাশ ও ক্ষুব্ধ হয়ে ওয়াটারম্যান এমন একটি কলম তৈরির কথা ভাবেন, যার জন্য দোয়াতের প্রয়োজন হবে না এবং কালি পড়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না। এই ভাবনা থেকেই তিনি রিজার্ভার পেন বা ফাউন্টেন পেনের আবিষ্কার করেন।
নামকরণ: ফাউন্টেন পেনের বাংলা নাম ‘ঝরনা কলম’ দিয়েছিলেন বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।

৫. ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ প্রবন্ধে লেখক কালি ও কলম নিয়ে তাঁর ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার যে বর্ণনা দিয়েছেন, তা নিজের ভাষায় লেখো।

উত্তর:
ভূমিকা: ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ প্রবন্ধে লেখক কালি-কলমের ইতিহাসের পাশাপাশি নিজের ছেলেবেলার স্মৃতিকেও অত্যন্ত আন্তরিকভাবে তুলে ধরেছেন।
ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা:
১. কলম তৈরি: লেখক জানান, তিনি ছেলেবেলায় বাঁশের কঞ্চি কেটে কলম তৈরি করতেন। কলমের মুখটি চিরে দেওয়া হত, যাতে কালি ধীরে ধীরে নেমে আসে।
২. কালি তৈরি: তিনি বাড়িতে কালি তৈরি করতেন। মা, পিসি বা দিদিদের সাহায্য নিয়ে তিনি কাঠ জ্বালিয়ে তৈরি করা কালি, ভেষজ উপাদান এবং ত্রিফলা ভিজিয়ে তা লোহার পাত্রে ফুটিয়ে কালি বানাতেন। সেই কালি কলাপাতা বা মাটির দোয়াতে রাখা হত।
৩. প্রথম ফাউন্টেন পেন: লেখকের মনে পড়ে তাঁর প্রথম ফাউন্টেন পেন কেনার কথা। তিনি কলেজ স্ট্রিটের এক দোকান থেকে একটি জাপানি পাইলট পেন কিনেছিলেন। কিন্তু কেনার পরদিনই সেটি চুরি হয়ে যাওয়ায় তিনি অত্যন্ত দুঃখ পেয়েছিলেন।
উপসংহার: এই ব্যক্তিগত স্মৃতিচারণার মাধ্যমে লেখক কালি-কলমের সঙ্গে তাঁর শৈশবের আবেগ ও ভালোবাসার সম্পর্কটিকে ফুটিয়ে তুলেছেন, যা প্রবন্ধটিকে আরও বেশি মনোগ্রাহী করে তুলেছে।

৬. “আমরা কালিও তৈরি করতাম নিজেরাই।” – লেখকদের কালি তৈরির পদ্ধতিটি প্রবন্ধ অনুসারে বর্ণনা করো।

উত্তর:
ভূমিকা: ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ প্রবন্ধে লেখক প্রাচীনকালে বাড়িতে কালি তৈরির এক বিস্তারিত ও মনোগ্রাহী বর্ণনা দিয়েছেন।
কালি তৈরির পদ্ধতি:
১. উপকরণ: কালি তৈরির মূল উপকরণ ছিল ত্রিফলা (হরিতকী, আমলকী ও বহেড়া) এবং কাঠের উনুনে রান্না করা কড়াইয়ের তলায় জমা কালি। এছাড়াও প্রয়োজন হত লোহার পাত্র ও ছাগলের দুধ।
২. প্রক্রিয়া: প্রথমে ত্রিফলা জলে ভিজিয়ে রাখা হত। তারপর সেই জল একটি লোহার পাত্রে নিয়ে ফোটানো হত। কালিকে আরও ঘন ও কালো করার জন্য কখনও কখনও আতপ চাল ভেজে পুড়িয়ে তা মেশানো হত। সবশেষে, এই মিশ্রণের সঙ্গে সামান্য ছাগলের দুধ মিশিয়ে দেওয়া হত।
৩. সংরক্ষণ: তৈরি করা কালি মাটির দোয়াত বা কলাপাতা কেটে তার মধ্যে রাখা হত।
লেখকের মতে, এই কালি তৈরিতে যেমন मेहनत ছিল, তেমনই ছিল এক ধরনের শিল্প ও আনন্দ। এটি ছিল বাঙালি ঘরের এক নিজস্ব সংস্কৃতি।

৭. প্রবন্ধ অনুসারে পালকের কলম ও কঞ্চির কলমের পরিচয় দাও।

উত্তর:
ভূমিকা: ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ প্রবন্ধে লেখক আধুনিক কলমের পূর্বসূরি হিসেবে পালকের কলম ও কঞ্চির কলমের বিস্তারিত পরিচয় দিয়েছেন।
কঞ্চির কলম: এটি ছিল সবচেয়ে সহজলভ্য কলম। গ্রামের ছেলেমেয়েরা বাঁশের সরু কঞ্চি কেটে এটি তৈরি করত। কঞ্চির মুখটি ছুঁচলো করে তার মাঝখানটা চিরে দেওয়া হত, যাতে কালি ধীরে ধীরে লেখার সময় নেমে আসে। লেখক নিজেও ছেলেবেলায় এই কলম ব্যবহার করতেন।
পালকের কলম (কুইল): এটি ছিল কঞ্চির কলমের চেয়ে উন্নত এবং মূলত অভিজাত ও শিক্ষিত মহলে এর ব্যবহার ছিল। রাজহাঁস, ময়ূর বা অন্যান্য পাখির পালক দিয়ে এটি তৈরি করা হত। পালকের ডগাটি ছুঁচলো করে কেটে নিবের মতো তৈরি করা হত। ইংরেজি ‘পেন’ (Pen) শব্দটি এসেছে ল্যাটিন ‘পেনা’ (Penna) থেকে, যার অর্থ পালক। এই পালকের কলম বহুদিন ধরে সারা বিশ্বে লেখার প্রধান মাধ্যম ছিল।

৮. “সবই আজ অবলুপ্তির পথে।” – কোন কোন জিনিস আজ অবলুপ্তির পথে? এই অবলুপ্তির কারণ কী?

উত্তর:
অবলুপ্তির পথে থাকা জিনিস: শ্রীপান্থের মতে, কালি-কলমের সঙ্গে জড়িত বহু ঐতিহ্য আজ অবলুপ্তির পথে। যেমন—
১. হাতে তৈরি কালি।
২. বাঁশের বা খাগের কলম।
৩. পালকের কলম বা কুইল।
৪. মাটির বা কাঁচের দোয়াত।
৫. কালি শুকানোর জন্য ব্যবহৃত ব্লটিং পেপার।
৬. নিব ও হোল্ডারের কলম।
এমনকি, আভিজাত্যের প্রতীক ফাউন্টেন পেনও আজ প্রায় হারিয়ে যেতে বসেছে।
অবলুপ্তির কারণ: এই অবলুপ্তির মূল কারণ হলো প্রযুক্তির দ্রুত পরিবর্তন এবং মানুষের জীবনযাত্রার পরিবর্তন।
১. বল পয়েন্ট পেনের আগমন: বল পয়েন্ট পেনের সহজলভ্যতা, কম দাম এবং কালি ভরার ঝামেলা না থাকায় এটি দ্রুত ফাউন্টেন পেনের জায়গা দখল করে নেয়।
২. কম্পিউটার ও আধুনিক মুদ্রণযন্ত্র: কম্পিউটারের ব্যাপক ব্যবহার হাতে লেখার প্রয়োজনকেই কমিয়ে দিয়েছে। এখনকার মুদ্রণ শিল্পে আর ক্যালিগ্রাফিস্ট বা লিপিকরের প্রয়োজন হয় না।
এই প্রযুক্তিগত বিপ্লবই কালি-কলমের ঐতিহ্যকে ধীরে ধীরে অবলুপ্তির দিকে ঠেলে দিয়েছে।

৯. “আমার মতো আরও অনেকেই হয়তো…” – লেখক এবং তাঁর মতো আরও অনেকের আক্ষেপের কারণ কী? প্রবন্ধ অবলম্বনে আলোচনা করো।

উত্তর:
ভূমিকা: ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ প্রবন্ধের শেষে লেখক এক গভীর আক্ষেপ প্রকাশ করেছেন, যা শুধু তাঁর ব্যক্তিগত নয়, একটি প্রজন্মের আক্ষেপ।
আক্ষেপের কারণ:
১. শিল্পের বিলুপ্তি: লেখকের মতে, কালি-কলমে লেখা শুধুমাত্র একটি কাজ ছিল না, এটি ছিল একটি শিল্প। সুন্দর হাতের লেখা, কালির বিভিন্ন রঙ, দোয়াতের বৈচিত্র্য—এই সবকিছুর সঙ্গে এক শৈল্পিক আবেগ জড়িয়ে ছিল। কম্পিউটার ও বলপেনের যুগে সেই শিল্পের মৃত্যু ঘটেছে, যা লেখকের আক্ষেপের প্রধান কারণ।
২. আন্তরিকতার অভাব: হাতে লেখা চিঠিতে বা লেখায় যে ব্যক্তিগত স্পর্শ ও আন্তরিকতা থাকত, কম্পিউটারে টাইপ করা লেখায় তা অনুপস্থিত। প্রযুক্তির দাপটে এই মানবিক স্পর্শ হারিয়ে যাচ্ছে।
৩. ঐতিহ্যের অবসান: কালি তৈরি করা, কলম বানানো—এই সবকিছুর সঙ্গে একটি পারিবারিক ও সামাজিক ঐতিহ্য জড়িয়ে ছিল। আধুনিকতা সেই ঐতিহ্যকে ধ্বংস করে দিয়েছে।
উপসংহার: লেখক এবং তাঁর মতো পুরনো প্রজন্মের মানুষেরা দেখেছেন কীভাবে তাঁদের চোখের সামনে কালি-কলমের এই সুন্দর জগৎটি হারিয়ে গেল। এই হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্য এবং শিল্পের জন্যই তাঁদের এই গভীর আক্ষেপ।

১০. ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ প্রবন্ধে লেখক কলমের বিবর্তনের যে ইতিহাস তুলে ধরেছেন, তা নিজের ভাষায় সংক্ষেপে লেখো।

উত্তর:
ভূমিকা: শ্রীপান্থ তাঁর ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ প্রবন্ধে অত্যন্ত সহজ ও মনোগ্রাহী ভাষায় কলমের বিবর্তনের এক সুন্দর ইতিহাস তুলে ধরেছেন।
বিবর্তনের ধারা:
১. প্রাচীন যুগ: লেখক জানিয়েছেন, কলমের ইতিহাস খুব প্রাচীন। মিশর, চিন বা রোমে নল, খাগ, তুলি বা ব্রোঞ্জের শলাকা (স্টাইলাস) দিয়ে লেখার কাজ চলত।
২. মধ্যযুগ: এরপর আসে পালকের কলম বা কুইলের যুগ। বিভিন্ন পাখির পালক দিয়ে তৈরি এই কলম বহু শতাব্দী ধরে লেখার প্রধান মাধ্যম ছিল। এর পাশাপাশি, আমাদের দেশে বাঁশের বা কঞ্চির কলমের ব্যাপক প্রচলন ছিল।
৩. আধুনিক যুগের সূচনা: কলমের ইতিহাসে বিপ্লব নিয়ে আসে ফাউন্টেন পেন। লুইস ওয়াটারম্যানের হাত ধরে এর জন্ম হয়। এই কলমের জন্য আলাদা করে দোয়াত বয়ে বেড়ানোর প্রয়োজন ছিল না, যা লেখাকে অনেক সহজ করে দেয়।
৪. বর্তমান যুগ: ফাউন্টেন পেনের যুগকেও শেষ করে দেয় বল পয়েন্ট পেনের আগমন। এর সহজলভ্যতা ও কম দাম এটিকে জনপ্রিয় করে তোলে। সবশেষে, কম্পিউটার ও কি-বোর্ডের দাপটে হাতে লেখার প্রয়োজনই আজ কমে গেছে।
উপসংহার: এভাবেই, লেখক খাগের কলম থেকে শুরু করে কম্পিউটার পর্যন্ত কলমের এই দীর্ঘ ও আকর্ষণীয় বিবর্তনের ইতিহাসকে তুলে ধরেছেন।

Class 10 bengali হারিয়ে যাওয়া কালি কলম question answer

হারিয়ে যাওয়া কালি কলম নিখিল সরকার (শ্রীপান্থ) প্রবন্ধের প্রশ্ন উত্তর, MCQ, অতি-সংক্ষিপ্ত, ও রচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তর : Class 10 bengali হারিয়ে যাওয়া কালি কলম প্রবন্ধের প্রশ্ন উত্তর

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top