উপগ্রহ ও ভূ–বৈচিত্র্যসূচক মানচিত্র Class 10

উপগ্রহ ও ভূ–বৈচিত্র্যসূচক মানচিত্র class 10

ক) বহুবিকল্পভিত্তিক প্রশ্নাবলী (MCQ) – মান ১ (৫০টি)

১. ভারতে ভূ-বৈচিত্র্যসূচক মানচিত্র প্রস্তুতকারী সংস্থা হল –

  • (ক) ISRO
  • (খ) NASA
  • (গ) SOI
  • (ঘ) NATMO

২. উপগ্রহ চিত্রে বনভূমিকে যে রঙে দেখানো হয়, তা হল –

  • (ক) লাল
  • (খ) সবুজ
  • (গ) নীল
  • (ঘ) হলুদ

৩. মহাকাশে কৃত্রিম উপগ্রহ যেখানে রাখা হয়, তাকে বলে –

  • (ক) সেন্সর
  • (খ) স্টেশন
  • (গ) প্ল্যাটফর্ম
  • (ঘ) কক্ষপথ

৪. একটি মিলিয়ন শিটের স্কেল হল –

  • (ক) ১:৫০,০০০
  • (খ) ১:২৫০,০০০
  • (গ) ১:১০,০০,০০০
  • (ঘ) ১:১,০০,০০০

৫. ভূ-বৈচিত্র্যসূচক মানচিত্রে সমোন্নতি রেখা আঁকা হয় যে রঙে, তা হল –

  • (ক) কালো
  • (খ) লাল
  • (গ) নীল
  • (ঘ) বাদামি

৬. ভারতের প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ হল –

  • (ক) ভাস্কর
  • (খ) আর্যভট্ট
  • (গ) ইনস্যাট-১বি
  • (ঘ) আই.আর.এস-১এ

৭. উপগ্রহ চিত্রে জলের প্রতিচ্ছবি 나타য় –

  • (ক) লাল রঙে
  • (খ) হলুদ রঙে
  • (গ) গাঢ় নীল বা কালো রঙে
  • (ঘ) সাদা রঙে

৮. যে যন্ত্রের সাহায্যে উপগ্রহ চিত্র তোলা হয়, তা হল –

  • (ক) ক্যামেরা
  • (খ) সেন্সর বা সংবেদক
  • (গ) থার্মোমিটার
  • (ঘ) টেলিস্কোপ

৯. টোপোগ্রাফিক্যাল মানচিত্রে সড়কপথ দেখানো হয় –

  • (ক) নীল রঙে
  • (খ) কালো রঙে
  • (গ) লাল রঙে
  • (ঘ) সবুজ রঙে

১০. দূর সংবেদনের মূল ভিত্তি হল –

  • (ক) তড়িৎচুম্বকীয় বিকিরণ
  • (খ) শব্দ তরঙ্গ
  • (গ) আলোক তরঙ্গ
  • (ঘ) মাধ্যাকর্ষণ শক্তি

১১. ISRO-র সদর দপ্তর অবস্থিত –

  • (ক) দিল্লিতে
  • (খ) মুম্বাইয়ে
  • (গ) হায়দ্রাবাদে
  • (ঘ) বেঙ্গালুরুতে

১২. ভূ-সমলয় উপগ্রহ (Geostationary Satellite) পৃথিবীর সাপেক্ষে –

  • (ক) গতিশীল থাকে
  • (খ) স্থির থাকে
  • (গ) দিক পরিবর্তন করে
  • (ঘ) উপরে-নীচে ওঠানামা করে

১৩. টোপোগ্রাফিক্যাল মানচিত্রে কৃষিজমিকে দেখানো হয় –

  • (ক) লাল রঙে
  • (খ) নীল রঙে
  • (গ) সবুজ রঙে
  • (ঘ) হলুদ রঙে

১৪. উপগ্রহ চিত্রে ক্ষুদ্রতম একককে বলে –

  • (ক) সেন্সর
  • (খ) প্ল্যাটফর্ম
  • (গ) পিক্সেল
  • (ঘ) বাইট

১৫. ১:৫০,০০০ স্কেলের মানচিত্রকে বলা হয় –

  • (ক) মিলিয়ন শিট
  • (খ) ডিগ্রি শিট
  • (গ) ইঞ্চি শিট
  • (ঘ) সেন্টিমিটার শিট

১৬. যে উপগ্রহগুলি মেরু থেকে মেরুতে পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করে, তারা হল –

  • (ক) ভূ-সমলয় উপগ্রহ
  • (খ) সূর্য-সমলয় উপগ্রহ
  • (গ) যোগাযোগ উপগ্রহ
  • (ঘ) স্পাই উপগ্রহ

১৭. ভূ-বৈচিত্র্যসূচক মানচিত্রে জনবসতি দেখানো হয় –

  • (ক) কালো রঙে
  • (খ) সবুজ রঙে
  • (গ) লাল রঙে
  • (ঘ) হলুদ রঙে

১৮. FCC-এর পুরো নাম হল –

  • (ক) False Colour Combination
  • (খ) False Colour Composite
  • (গ) First Colour Composite
  • (ঘ) Final Colour Composite

১৯. টোপোগ্রাফিক্যাল মানচিত্রে ‘RF’ বলতে বোঝায় –

  • (ক) Real Fraction
  • (খ) Representative Fraction
  • (গ) Reduced Fraction
  • (ঘ) River Flow

২০. উপগ্রহ চিত্রে বরফাবৃত অঞ্চলকে দেখানো হয় –

  • (ক) সাদা রঙে
  • (খ) কালো রঙে
  • (গ) লাল রঙে
  • (ঘ) সবুজ রঙে

২১. একটি ডিগ্রি শিটের অক্ষাংশ ও দ্রাঘিমাগত বিস্তার হল –

  • (ক) ৪° × ৪°
  • (খ) ১৫’ × ১৫’
  • (গ) ১° × ১°
  • (ঘ) ৩০’ × ৩০’

২২. INSAT হল ভারতের একটি –

  • (ক) সূর্য-সমলয় উপগ্রহ
  • (খ) ভূ-সমলয় উপগ্রহ
  • (গ) মেরু উপগ্রহ
  • (ঘ) গুপ্তচর উপগ্রহ

২৩. টোপোগ্রাফিক্যাল মানচিত্রে নদী, হ্রদ ইত্যাদি জলাশয় দেখানো হয় –

  • (ক) কালো রঙে
  • (খ) নীল রঙে
  • (গ) সবুজ রঙে
  • (ঘ) বাদামি রঙে

২৪. ল্যান্ডস্যাট কোন দেশের কৃত্রিম উপগ্রহ?

  • (ক) ভারত
  • (খ) রাশিয়া
  • (গ) ফ্রান্স
  • (ঘ) আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র

২৫. ঘন সন্নিবিষ্ট সমোন্নতি রেখা দ্বারা বোঝানো হয় –

  • (ক) মৃদু ঢাল
  • (খ) খাড়া ঢাল
  • (গ) সমভূমি
  • (ঘ) মালভূমি

২৬. ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থার নাম হল –

  • (ক) NASA
  • (খ) ESA
  • (গ) ISRO
  • (ঘ) JAXA

২৭. উপগ্রহ চিত্রে জনবসতিকে সাধারণত দেখানো হয় –

  • (ক) লাল রঙে
  • (খ) হলুদ রঙে
  • (গ) নীল রঙে
  • (ঘ) ধূসর বা হালকা নীল রঙে

২৮. মিলিয়ন শিটের সূচক সংখ্যা হল, যেমন –

  • (ক) 73
  • (খ) 73 A
  • (গ) 73 A/16
  • (ঘ) 73 A/SW

২৯. যে সেন্সর নিজের উৎস থেকে শক্তি পাঠিয়ে তথ্য সংগ্রহ করে, তা হল –

  • (ক) সক্রিয় সেন্সর
  • (খ) নিষ্ক্রিয় সেন্সর
  • (গ) ক্যামেরা
  • (ঘ) থার্মোমিটার

৩০. ভূ-বৈচিত্র্যসূচক মানচিত্রে বনভূমিকে দেখানো হয় –

  • (ক) হলুদ রঙে
  • (খ) লাল রঙে
  • (গ) সবুজ রঙে
  • (ঘ) কালো রঙে

৩১. দূর সংবেদন কথাটি প্রথম ব্যবহার করেন –

  • (ক) আর্থার স্ট্রলার
  • (খ) এভিলিন প্রুইট
  • (গ) ডেভিস
  • (ঘ) কোপেন

৩২. টোপোগ্রাফিক্যাল মানচিত্রে রেললাইন দেখানো হয় –

  • (ক) লাল রঙে
  • (খ) কালো রঙে
  • (গ) নীল রঙে
  • (ঘ) বাদামি রঙে

৩৩. IRS হল ভারতের একটি –

  • (ক) যোগাযোগ উপগ্রহ
  • (খ) আবহাওয়া উপগ্রহ
  • (গ) দূর সংবেদন উপগ্রহ
  • (ঘ) গুপ্তচর উপগ্রহ

৩৪. সূর্য হল দূর সংবেদনের ক্ষেত্রে একটি –

  • (ক) সক্রিয় শক্তির উৎস
  • (খ) নিষ্ক্রিয় শক্তির উৎস
  • (গ) প্ল্যাটফর্ম
  • (ঘ) সেন্সর

৩৫. টোপোগ্রাফিক্যাল মানচিত্রে ‘PO’ প্রতীকটি নির্দেশ করে –

  • (ক) পুলিশ স্টেশন
  • (খ) পোস্ট অফিস
  • (গ) পাওয়ার অফিস
  • (ঘ) প্রাইমারি স্কুল

৩৬. ভূ-সমলয় উপগ্রহের উচ্চতা হল প্রায় –

  • (ক) ৮০০ কিমি
  • (খ) ১০০০ কিমি
  • (গ) ৩৬,০০০ কিমি
  • (ঘ) ১০,০০০ কিমি

৩৭. ১৫’ × ১৫’ অক্ষাংশ ও দ্রাঘিমাগত বিস্তারের ভূ-বৈচিত্র্যসূচক মানচিত্রের RF হল –

  • (ক) ১:২৫০,০০০
  • (খ) ১:১,০০,০০০
  • (গ) ১:৫০,০০০
  • (ঘ) ১:১০,০০,০০০

৩৮. উপগ্রহ চিত্রে শুষ্ক নদীখাতকে দেখানো হয় –

  • (ক) গাঢ় কালো রঙে
  • (খ) হালকা সাদা রঙে
  • (গ) লাল রঙে
  • (ঘ) হলুদ রঙে

৩৯. নিষ্ক্রিয় সেন্সর তথ্য সংগ্রহ করে –

  • (ক) সূর্যালোকের সাহায্যে
  • (খ) লেজারের সাহায্যে
  • (গ) রাডারের সাহায্যে
  • (ঘ) কৃত্রিম আলোর সাহায্যে

৪০. টোপোগ্রাফিক্যাল মানচিত্রে আন্তর্জাতিক সীমানা রেখা দেখানো হয় –

  • (ক) একটি সরল কালো রেখা দিয়ে
  • (খ) একটি লাল রেখা দিয়ে
  • (গ) মোটা কালো ড্যাশ ও বিন্দুর রেখা দিয়ে
  • (ঘ) একটি নীল রেখা দিয়ে

৪১. রাডার (RADAR) হল একটি –

  • (ক) নিষ্ক্রিয় সেন্সর
  • (খ) সক্রিয় সেন্সর
  • (গ) প্ল্যাটফর্ম
  • (ঘ) ক্যামেরা

৪২. ডিগ্রি শিটকে কটি ভাগে ভাগ করে ইঞ্চি শিট তৈরি হয়?

  • (ক) ৪টি
  • (খ) ৮টি
  • (গ) ১৬টি
  • (ঘ) ৩২টি

৪৩. সমোন্নতি রেখাগুলি পরস্পরকে ছেদ করে –

  • (ক) খাড়া ঢালে
  • (খ) মৃদু ঢালে
  • (গ) কখনো ছেদ করে না
  • (ঘ) ভৃগু বা ক্লিফে

৪৪. SPOT কোন দেশের উপগ্রহ?

  • (ক) ভারত
  • (খ) ফ্রান্স
  • (গ) জাপান
  • (ঘ) রাশিয়া

৪৫. ভূ-বৈচিত্র্যসূচক মানচিত্রে পারাপারহীন নদী বোঝাতে কোন রঙের রেখা ব্যবহৃত হয়?

  • (ক) কালো
  • (খ) লাল
  • (গ) নীল
  • (ঘ) বাদামি

৪৬. GIS-এর পুরো নাম হল –

  • (ক) Global Information System
  • (খ) Geographic Information System
  • (গ) Geo Information Science
  • (ঘ) Global Imaging System

৪৭. ভূ-বৈচিত্র্যসূচক মানচিত্রে কালো রঙের বৃত্ত দ্বারা বোঝানো হয় –

  • (ক) শুষ্ক কূপ
  • (খ) সজল কূপ
  • (গ) মন্দির
  • (ঘ) পোস্ট অফিস

৪৮. আবহাওয়া সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহের জন্য ব্যবহৃত হয় –

  • (ক) IRS উপগ্রহ
  • (খ) INSAT উপগ্রহ
  • (গ) ল্যান্ডস্যাট উপগ্রহ
  • (ঘ) SPOT উপগ্রহ

৪৯. একটি মিলিয়ন শিটের বিস্তার হল –

  • (ক) ১° × ১°
  • (খ) ৪° × ৪°
  • (গ) ১৫’ × ১৫’
  • (ঘ) ৩০’ × ৩০’

৫০. দূর সংবেদন ব্যবস্থায় তথ্য বিশ্লেষণ করা হয় যার মাধ্যমে, তা হল –

  • (ক) ক্যামেরা
  • (খ) সেন্সর
  • (গ) কম্পিউটার
  • (ঘ) রকেট

খ) অতি-সংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্নাবলী (SAQ) – মান ১ (৪০টি)

১. দূর সংবেদন (Remote Sensing) কাকে বলে?

উত্তর: কোনো বস্তুকে স্পর্শ না করে দূর থেকে তার সম্বন্ধে তথ্য সংগ্রহ করার পদ্ধতিকে দূর সংবেদন বলে।

২. উপগ্রহ চিত্র কী?

উত্তর: কৃত্রিম উপগ্রহে অবস্থিত সেন্সরের মাধ্যমে তোলা পৃথিবীর ছবিকে উপগ্রহ চিত্র বলে।

৩. ISRO-র পুরো নাম কী?

উত্তর: Indian Space Research Organisation (ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা)।

৪. ভূ-বৈচিত্র্যসূচক মানচিত্র (Topographical Map) কী?

উত্তর: যে মানচিত্রে কোনো অঞ্চলের প্রাকৃতিক (যেমন – পাহাড়, নদী) এবং সাংস্কৃতিক (যেমন – রাস্তা, জনবসতি) উপাদানগুলিকে প্রচলিত প্রতীক ও চিহ্নের মাধ্যমে দেখানো হয়, তাকে ভূ-বৈচিত্র্যসূচক মানচিত্র বলে।

৫. সেন্সর বা সংবেদক কী?

উত্তর: যে যন্ত্রের সাহায্যে দূর থেকে কোনো বস্তু থেকে প্রতিফলিত বা বিকিরিত তড়িৎচুম্বকীয় শক্তি সংগ্রহ করে তথ্য সংগ্রহ করা হয়, তাকে সেন্সর বলে।

৬. সমোন্নতি রেখা কাকে বলে?

উত্তর: সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে সমান উচ্চতাযুক্ত স্থানগুলিকে যে কাল্পনিক রেখা দ্বারা মানচিত্রে যুক্ত করা হয়, তাকে সমোন্নতি রেখা বলে।

৭. FCC কী?

উত্তর: False Colour Composite (ছদ্ম বা কৃত্রিম রঙে তোলা ছবি); উপগ্রহ চিত্রে বিভিন্ন প্রাকৃতিক বস্তুকে স্পষ্টভাবে বোঝার জন্য যখন তাদের প্রকৃত রঙের পরিবর্তে নির্দিষ্ট কৃত্রিম রঙ ব্যবহার করা হয়, তখন তাকে FCC বলে।

৮. ভারতের একটি ভূ-সমলয় উপগ্রহের নাম লেখো।

উত্তর: INSAT-3D বা GSAT-17।

৯. টোপোশিটে ব্যবহৃত দুটি মনুষ্যসৃষ্ট প্রতীকের নাম লেখো।

উত্তর: মন্দির এবং পোস্ট অফিস (PO)।

১০. পিক্সেল কী?

উত্তর: ডিজিটাল বা উপগ্রহ চিত্রের ক্ষুদ্রতম একককে পিক্সেল বলে।

১১. ভূ-সমলয় উপগ্রহের একটি ব্যবহার লেখো।

উত্তর: আবহাওয়ার পূর্বাভাস এবং দূরদর্শন ও বেতার সম্প্রচারের কাজে ব্যবহৃত হয়।

১২. RF কী?

উত্তর: Representative Fraction; এটি মানচিত্রের দূরত্ব ও ভূমিভাগের দূরত্বের অনুপাত, যা ভগ্নাংশের আকারে প্রকাশ করা হয়।

১৩. নিষ্ক্রিয় সেন্সর কাকে বলে?

উত্তর: যে সেন্সর তথ্য সংগ্রহের জন্য সূর্যের মতো প্রাকৃতিক শক্তির উপর নির্ভর করে, তাকে নিষ্ক্রিয় সেন্সর বলে।

১৪. টোপোশিটে ব্যবহৃত দুটি প্রাকৃতিক প্রতীকের নাম লেখো।

উত্তর: নিত্যবহ নদী এবং স্বাভাবিক উদ্ভিদ (বনভূমি)।

১৫. ডিগ্রি শিট কাকে বলে?

উত্তর: যে ভূ-বৈচিত্র্যসূচক মানচিত্রের অক্ষাংশ ও দ্রাঘিমাগত বিস্তার ১° × ১° হয়, তাকে ডিগ্রি শিট বলে।

১৬. সূর্য-সমলয় উপগ্রহ কাকে বলে?

উত্তর: যে উপগ্রহগুলি মেরু থেকে মেরুতে পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করে এবং প্রতিদিন একই সময়ে কোনো নির্দিষ্ট স্থানের উপর দিয়ে যায়, তাদের সূর্য-সমলয় উপগ্রহ বলে।

১৭. উপগ্রহ চিত্রে লাল রঙে কী দেখানো হয়?

উত্তর: সুস্থ ও স্বাভাবিক উদ্ভিদ বা বনভূমি।

১৮. SOI-এর সদর দপ্তর কোথায় অবস্থিত?

উত্তর: উত্তরাখণ্ডের দেরাদুনে।

১৯. মিলিয়ন শিটের RF কত?

উত্তর: ১:১০,০০,০০০ (1:10,00,000)।

২০. উপগ্রহ চিত্রের দুটি সুবিধা লেখো।

উত্তর: ১. দুর্গম অঞ্চলের তথ্য সহজে পাওয়া যায়। ২. খুব কম সময়ে বিশাল অঞ্চলের তথ্য সংগ্রহ করা যায়।

২১. সক্রিয় সেন্সর কাকে বলে?

উত্তর: যে সেন্সর নিজের উৎস থেকে শক্তি (যেমন – রাডার) পাঠিয়ে তথ্য সংগ্রহ করে, তাকে সক্রিয় সেন্সর বলে।

২২. টোপোশিটে বাদামি রঙ দিয়ে কী বোঝানো হয়?

উত্তর: ভূমির বন্ধুরতা, অর্থাৎ সমোন্নতি রেখা ও বালিয়াড়ি।

২৩. ভারতের একটি দূর সংবেদন উপগ্রহের নাম লেখো।

উত্তর: IRS-1A বা রিসোর্সস্যাট।

২৪. উপগ্রহ চিত্রে নীল বা কালো রঙ দিয়ে কী বোঝানো হয়?

উত্তর: গভীর জল বা জলাশয়।

২৫. টোপোশিটে ব্যবহৃত স্কেলের দুটি ধরন কী কী?

উত্তর: রৈখিক স্কেল (Linear Scale) এবং ভগ্নাংশসূচক স্কেল (RF)।

২৬. GPS-এর পুরো নাম কী?

উত্তর: Global Positioning System।

২৭. টোপোশিটে লাল রঙের দুটি ব্যবহার লেখো।

উত্তর: জনবসতি এবং পাকা রাস্তা বোঝাতে।

২৮. উপগ্রহ চিত্রে বসতি অঞ্চল কী রঙে দেখা যায়?

উত্তর: ধূসর বা হালকা নীল (সায়ান) রঙে।

২৯. Bench Mark (BM) কী?

উত্তর: ভূ-বৈচিত্র্যসূচক মানচিত্রে কোনো নির্দিষ্ট স্থানের সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রকৃত উচ্চতা সংখ্যায় লেখা থাকলে তাকে বেঞ্চমার্ক বলে।

৩০. সূর্য-সমলয় উপগ্রহের একটি ব্যবহার লেখো।

উত্তর: প্রাকৃতিক সম্পদ সমীক্ষা এবং ভূমি ব্যবহারের মানচিত্র তৈরিতে।

৩১. ডিজিটাল তথ্য কী?

উত্তর: উপগ্রহ চিত্রে সংগৃহীত তথ্য যা বাইনারি সংখ্যা (০ এবং ১) রূপে কম্পিউটারে সংরক্ষিত হয়, তাকে ডিজিটাল তথ্য বলে।

৩২. টোপোশিটের সূচক সংখ্যা কী?

উত্তর: কোনো একটি নির্দিষ্ট ভূ-বৈচিত্র্যসূচক মানচিত্রকে শনাক্ত করার জন্য ব্যবহৃত সংখ্যাকে সূচক সংখ্যা বলে।

৩৩. উপগ্রহ চিত্রের রেজোলিউশন কী?

উত্তর: উপগ্রহ চিত্রের ছবির স্পষ্টতাকে রেজোলিউশন বলে। এটি পিক্সেলের আকারের উপর নির্ভরশীল।

৩৪. টোপোশিটে শুষ্ক নদীখাত কী রঙে দেখানো হয়?

উত্তর: কালো রঙে।

৩৫. দূর সংবেদনের দুটি পর্যায় কী কী?

উত্তর: তথ্য সংগ্রহ এবং তথ্য বিশ্লেষণ।

৩৬. ভূ-বৈচিত্র্যসূচক মানচিত্রের দুটি বৈশিষ্ট্য লেখো।

উত্তর: ১. এটি একটি বৃহৎ স্কেলের মানচিত্র। ২. এতে প্রাকৃতিক ও সাংস্কৃতিক উভয় প্রকার বিষয় দেখানো হয়।

৩৭. টোপোশিটে দেখানো একটি রৈখিক বসতির উদাহরণ দাও।

উত্তর: কোনো পাকা রাস্তা বা নদীর ধার বরাবর গড়ে ওঠা বসতি।

৩৮. উপগ্রহ চিত্র গ্রহণের সময় মেঘমুক্ত আকাশ প্রয়োজন কেন?

উত্তর: কারণ মেঘ থাকলে ভূপৃষ্ঠ থেকে প্রতিফলিত সৌরশক্তি সেন্সর পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে না, ফলে সঠিক চিত্র পাওয়া যায় না।

৩৯. বিবৃতিমূলক স্কেল (Statement Scale) কী?

উত্তর: যে স্কেলকে ভাষায় প্রকাশ করা হয়, যেমন – ‘১ সেমিতে ১ কিমি’, তাকে বিবৃতিমূলক স্কেল বলে।

৪০. NASA-র পুরো নাম কী?

উত্তর: National Aeronautics and Space Administration।


গ) সংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্নাবলী – মান ২ (২০টি)

১. উপগ্রহ চিত্রের দুটি ব্যবহার লেখো।

উত্তর: ১. আবহাওয়ার পূর্বাভাস দিতে এবং ঘূর্ণিঝড়ের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের গতিপথ পর্যবেক্ষণে। ২. অরণ্য সম্পদ, খনিজ সম্পদ ইত্যাদি প্রাকৃতিক সম্পদের সমীক্ষা ও ব্যবস্থাপনায়।

২. ভূ-বৈচিত্র্যসূচক মানচিত্রের দুটি গুরুত্ব লেখো।

উত্তর: ১. কোনো অঞ্চলের ভূমিরূপ, নদনদী, স্বাভাবিক উদ্ভিদ ইত্যাদি সম্পর্কে সঠিক ধারণা পাওয়া যায়। ২. সামরিক পরিকল্পনা, নগর পরিকল্পনা এবং পথঘাট নির্মাণের কাজে এটি অপরিহার্য।

৩. ভূ-সমলয় ও সূর্য-সমলয় উপগ্রহের মধ্যে পার্থক্য কী?

উত্তর: ভূ-সমলয়: এটি নিরক্ষীয় তলে প্রায় ৩৬,০০০ কিমি উঁচুতে থাকে এবং পৃথিবীর সাপেক্ষে স্থির দেখায়। এটি মূলত যোগাযোগ ও আবহাওয়ার কাজে লাগে। সূর্য-সমলয়: এটি মেরু কক্ষপথে প্রায় ৭০০-৯০০ কিমি উঁচুতে থাকে এবং প্রতিদিন একই স্থানীয় সময়ে কোনো জায়গার উপর দিয়ে যায়। এটি মূলত সম্পদ সমীক্ষার কাজে লাগে।

৪. FCC বা ছদ্ম রঙ বলতে কী বোঝো?

উত্তর: উপগ্রহ চিত্রে বিভিন্ন বস্তুকে স্পষ্টভাবে শনাক্ত করার জন্য তাদের দৃশ্যমান প্রকৃত রঙের পরিবর্তে যখন নির্দিষ্ট কৃত্রিম রঙ ব্যবহার করা হয়, তখন তাকে False Colour Composite বা ছদ্ম রঙের প্রতিচ্ছবি বলে। যেমন, সুস্থ উদ্ভিদকে লাল, পরিষ্কার জলকে কালো এবং জনবসতিকে ধূসর রঙে দেখানো হয়।

৫. সমোন্নতি রেখার দুটি বৈশিষ্ট্য লেখো।

উত্তর: ১. প্রতিটি সমোন্নতি রেখা একটি বদ্ধ বক্ররেখা এবং সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে নির্দিষ্ট উচ্চতা নির্দেশ করে। ২. দুটি সমোন্নতি রেখা কখনোই পরস্পরকে ছেদ করে না।

৬. দূর সংবেদন ব্যবস্থার সুবিধাগুলি কী কী?

উত্তর: ১. দুর্গম ও বিপদসংকুল অঞ্চলের তথ্য সহজেই সংগ্রহ করা যায়। ২. খুব কম সময়ে বিশাল অঞ্চলের তথ্য পাওয়া যায়, যা নিয়মিত পর্যবেক্ষণ ও পরিবর্তণশীল ঘটনা বিশ্লেষণের জন্য উপযোগী।

৭. সক্রিয় ও নিষ্ক্রিয় সেন্সরের মধ্যে পার্থক্য লেখো।

উত্তর: সক্রিয় সেন্সর: এটি নিজের উৎস থেকে শক্তি (যেমন- রাডার) পাঠিয়ে তথ্য সংগ্রহ করে। এটি দিন-রাত্রি বা মেঘাচ্ছন্ন আবহাওয়াতেও কাজ করতে পারে। নিষ্ক্রিয় সেন্সর: এটি তথ্য সংগ্রহের জন্য সূর্যের আলোর মতো প্রাকৃতিক শক্তির উপর নির্ভর করে। এটি রাত্রিবেলায় বা মেঘাচ্ছন্ন আবহাওয়ায় কাজ করতে পারে না।

৮. টোপোশিটে ব্যবহৃত বিভিন্ন রঙের তাৎপর্য কী?

উত্তর: টোপোশিটে লাল রঙ (রাস্তা, বসতি), নীল রঙ (জলাশয়), সবুজ রঙ (বনভূমি), হলুদ রঙ (কৃষিজমি) এবং বাদামি রঙ (সমোন্নতি রেখা) ব্যবহার করে বিভিন্ন প্রাকৃতিক ও সাংস্কৃতিক বিষয়কে স্পষ্টভাবে বোঝানো হয়।

৯. প্ল্যাটফর্ম ও সেন্সরের মধ্যে সম্পর্ক কী?

উত্তর: দূর সংবেদন ব্যবস্থায় প্ল্যাটফর্ম হল সেই আধার বা স্থান যেখানে সেন্সরটিকে বসানো হয়। যেমন – কৃত্রিম উপগ্রহ বা বিমান হল প্ল্যাটফর্ম এবং তার মধ্যে থাকা ক্যামেরা বা স্ক্যানার হল সেন্সর। অর্থাৎ, প্ল্যাটফর্ম সেন্সরকে বহন করে।

১০. স্কেল অনুসারে ভূ-বৈচিত্র্যসূচক মানচিত্রের শ্রেণিবিভাগ করো।

উত্তর: স্কেল অনুসারে ভূ-বৈচিত্র্যসূচক মানচিত্র প্রধানত তিন প্রকার:
১. বৃহৎ স্কেলের মানচিত্র: যেমন – মৌজা ম্যাপ (RF ১:৪,০০০)।
২. মাঝারি স্কেলের মানচিত্র: যেমন – ইঞ্চি শিট বা ডিগ্রি শিট (RF ১:৫০,০০০)।
৩. ক্ষুদ্র স্কেলের মানচিত্র: যেমন – মিলিয়ন শিট (RF ১:১০,০০,০০০)।

১১. উপগ্রহ চিত্র ও ভূ-বৈচিত্র্যসূচক মানচিত্রের দুটি পার্থক্য লেখো।

উত্তর: উপগ্রহ চিত্র: এটি সেন্সরের মাধ্যমে তোলা পৃথিবীর বাস্তব ছবি। এটি খুব কম সময়ে তৈরি করা যায়। ভূ-বৈচিত্র্যসূচক মানচিত্র: এটি জরিপকার্যের মাধ্যমে তৈরি একটি রেখাচিত্র। এটি তৈরি করতে অনেক সময় লাগে।

১২. মিলিয়ন শিট ও ডিগ্রি শিটের মধ্যে সম্পর্ক কী?

উত্তর: একটি মিলিয়ন শিট (৪° × ৪°) কে ১৬টি ভাগে ভাগ করলে প্রতিটি ভাগ (১° × ১°) একটি ডিগ্রি শিট তৈরি করে। মিলিয়ন শিটের সূচক সংখ্যা যদি 73 হয়, তবে ডিগ্রি শিটগুলিকে 73A, 73B, … 73P পর্যন্ত চিহ্নিত করা হয়।

১৩. GIS বলতে কী বোঝো?

উত্তর: GIS বা Geographic Information System হল একটি কম্পিউটার-নির্ভর ব্যবস্থা, যার সাহায্যে বিভিন্ন ভৌগোলিক তথ্য (যেমন – মানচিত্র, উপগ্রহ চিত্র, পরিসংখ্যান) সংগ্রহ, সংরক্ষণ, বিশ্লেষণ ও পরিচালনা করা হয় এবং তার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।

১৪. টোপোশিট থেকে কীভাবে ভূমির ঢাল বোঝা যায়?

উত্তর: টোপোশিটে সমোন্নতি রেখার ব্যবধান দেখে ভূমির ঢাল বোঝা যায়। যদি সমোন্নতি রেখাগুলি খুব কাছাকাছি অবস্থান করে, তবে তা খাড়া ঢাল নির্দেশ করে। আর যদি রেখাগুলি দূরে দূরে অবস্থান করে, তবে তা মৃদু ঢাল নির্দেশ করে।

১৫. রৈখিক স্কেল ও ভগ্নাংশসূচক স্কেলের পার্থক্য লেখো।

উত্তর: রৈখিক স্কেল: এটি একটি রেখার মাধ্যমে মানচিত্রের দূরত্ব ও ভূমিভাগের দূরত্বের সম্পর্ককে দেখায়। মানচিত্র ছোটো বা বড়ো করলে এর আনুপাতিক পরিবর্তন হয়। ভগ্নাংশসূচক স্কেল (RF): এটি একটি অনুপাত বা ভগ্নাংশের মাধ্যমে (যেমন – ১:৫০,০০০) সম্পর্ক দেখায়। এর কোনো একক থাকে না।

১৬. টোপোশিটে ব্যবহৃত প্রচলিত প্রতীক চিহ্ন ব্যবহারের কারণ কী?

উত্তর: টোপোশিটে অল্প জায়গার মধ্যে বিভিন্ন প্রাকৃতিক ও সাংস্কৃতিক বিষয়কে দেখানোর জন্য প্রচলিত প্রতীক চিহ্ন ব্যবহার করা হয়। এই চিহ্নগুলি আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত হওয়ায় যে কেউ সহজেই মানচিত্রটি বুঝতে পারে।

১৭. উপগ্রহ চিত্রকে কম্পিউটারের প্রয়োজন হয় কেন?

উত্তর: উপগ্রহ থেকে প্রাপ্ত তথ্য ডিজিটাল আকারে বা সংখ্যায় (0 এবং 1) আসে। এই বিপুল পরিমাণ ডিজিটাল তথ্যকে প্রক্রিয়াকরণ, বিশ্লেষণ এবং তাকে ছবিতে রূপান্তরিত করার জন্য শক্তিশালী সফটওয়্যার-যুক্ত কম্পিউটারের প্রয়োজন হয়।

১৮. টোপোগ্রাফিক্যাল মানচিত্রে জরিপ বর্ষের উল্লেখ থাকে কেন?

উত্তর: সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কোনো অঞ্চলের প্রাকৃতিক ও সাংস্কৃতিক উপাদানের (যেমন – নদীর গতিপথ, রাস্তা, বসতি) পরিবর্তন ঘটে। জরিপ বর্ষের উল্লেখ থাকলে বোঝা যায় মানচিত্রটি কতটা সাম্প্রতিক এবং বর্তমান অবস্থার সঙ্গে তার কতটা পার্থক্য হতে পারে।

১৯. উপগ্রহ চিত্রের দুটি অসুবিধা লেখো।

উত্তর: ১. উপগ্রহ চিত্র গ্রহণ ও বিশ্লেষণের জন্য উন্নত প্রযুক্তি ও প্রচুর অর্থের প্রয়োজন। ২. মেঘ বা কুয়াশা থাকলে নিষ্ক্রিয় সেন্সরের মাধ্যমে ভূপৃষ্ঠের সঠিক ছবি তোলা সম্ভব হয় না।

২০. ভূ-বৈচিত্র্যসূচক মানচিত্রের দুটি সীমাবদ্ধতা লেখো।

উত্তর: ১. এই মানচিত্র তৈরি করতে অনেক সময় ও পরিশ্রম লাগে, তাই এটি দ্রুত পরিবর্তনশীল অঞ্চলের সঠিক চিত্র তুলে ধরতে পারে না। ২. দুর্গম বা বিপদসংকুল অঞ্চলের জরিপ করা খুব কঠিন।


ঘ) সংক্ষিপ্ত রচনাধর্মী প্রশ্নাবলী – মান ৩ (২০টি)

১. ভূ-বৈচিত্র্যসূচক মানচিত্রের ব্যবহার বা গুরুত্ব আলোচনা করো।

উত্তর: ভূ-বৈচিত্র্যসূচক মানচিত্রের ব্যবহার বহুমুখী:
ক) সামরিক ক্ষেত্রে: যুদ্ধকালীন সময়ে কৌশল নির্ধারণ, সেনাচলাচলের পথ নির্বাচন এবং শত্রুপক্ষের অবস্থান বোঝার জন্য এই মানচিত্র অপরিহার্য।
খ) পরিকল্পনা ও উন্নয়ন: নগর পরিকল্পনা, গ্রামোন্নয়ন, রাস্তা, রেললাইন, বাঁধ ইত্যাদি নির্মাণের জন্য কোনো অঞ্চলের ভূমিরূপ, ঢাল, নদনদী সম্পর্কে ধারণা পেতে এই মানচিত্র ব্যবহৃত হয়।
গ) প্রাকৃতিক সম্পদ আহরণ: বনজ সম্পদ, খনিজ সম্পদ আহরণ এবং জলসম্পদের সঠিক ব্যবস্থাপনার পরিকল্পনা করতে এই মানচিত্র সাহায্য করে।
ঘ) পর্যটন: পর্যটকরা কোনো অঞ্চলের দর্শনীয় স্থান, পথঘাট এবং থাকার জায়গা সম্পর্কে জানতে এই মানচিত্র ব্যবহার করেন।

২. উপগ্রহ চিত্রের প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলি কী কী?

উত্তর: উপগ্রহ চিত্রের প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলি হল:
ক) বিশাল অঞ্চলের দৃশ্য: একটি উপগ্রহ চিত্র একবারে একটি বিশাল অঞ্চলের ছবি তুলতে পারে, যা সাধারণ বিমান চিত্র পারে না।
খ) পুনরাবৃত্তি: উপগ্রহগুলি নির্দিষ্ট সময় অন্তর একই জায়গার ছবি তুলতে পারে, যা বন্যা, খরা, অরণ্য ধ্বংসের মতো পরিবর্তনশীল ঘটনা পর্যবেক্ষণে সাহায্য করে।
গ) ডিজিটাল ফরম্যাট: উপগ্রহ চিত্রগুলি ডিজিটাল আকারে পাওয়া যায়, ফলে কম্পিউটারের মাধ্যমে এগুলিকে সহজেই বিশ্লেষণ ও পরিবর্তন করা যায়।
ঘ) তড়িৎচুম্বকীয় বর্ণালী: উপগ্রহ সেন্সরগুলি মানুষের চোখের সীমার বাইরের অবলোহিত (Infrared) বা অন্যান্য তড়িৎচুম্বকীয় তরঙ্গ ব্যবহার করে তথ্য সংগ্রহ করতে পারে, যা অনেক লুকানো তথ্যকে প্রকাশ করে।

৩. উপগ্রহ চিত্র ও ভূ-বৈচিত্র্যসূচক মানচিত্রের মধ্যে পার্থক্য লেখো।

উত্তর: | বৈশিষ্ট্য | উপগ্রহ চিত্র (Satellite Imagery) | ভূ-বৈচিত্র্যসূচক মানচিত্র (Topographical Map) | |—|—|—| | **সংজ্ঞা** | এটি কৃত্রিম উপগ্রহের সেন্সরের মাধ্যমে তোলা পৃথিবীর বাস্তব আলোকচিত্র। | এটি জরিপকার্যের মাধ্যমে তৈরি প্রতীক-চিহ্ন নির্ভর একটি রেখাচিত্র। | | **প্রস্তুতির সময়** | এটি খুব কম সময়ে প্রস্তুত করা যায় এবং দ্রুত তথ্য পাওয়া যায়। | এটি তৈরি করতে অনেক সময়, পরিশ্রম ও অর্থ লাগে। | | **তথ্যের প্রকৃতি** | এতে তথ্য ডিজিটাল আকারে থাকে এবং নিয়মিত আপডেট করা যায়। | এতে তথ্য অ্যানালগ বা মুদ্রিত আকারে থাকে এবং সহজে আপডেট করা যায় না। | | **বস্তুর উপস্থাপন** | বস্তুকে পিক্সেলের মাধ্যমে বাস্তব চিত্রের মতো দেখানো হয়। | বস্তুকে প্রচলিত প্রতীক ও চিহ্নের মাধ্যমে দেখানো হয়। |

৪. দূর সংবেদন ব্যবস্থার পর্যায়গুলি সংক্ষেপে আলোচনা করো।

উত্তর: দূর সংবেদন ব্যবস্থা কয়েকটি পর্যায়ের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়:
১. শক্তির উৎস: প্রথমে শক্তির প্রয়োজন হয়। নিষ্ক্রিয় সেন্সরের ক্ষেত্রে এটি সূর্য এবং সক্রিয় সেন্সরের ক্ষেত্রে এটি কৃত্রিম উৎস (রাডার)।
২. তথ্য সংগ্রহ: কৃত্রিম উপগ্রহে থাকা সেন্সর ভূপৃষ্ঠ থেকে প্রতিফলিত বা বিকিরিত শক্তিকে গ্রহণ করে ডিজিটাল তথ্য হিসেবে সংগ্রহ করে।
৩. তথ্য প্রেরণ: উপগ্রহ সংগৃহীত তথ্যকে বেতার তরঙ্গের মাধ্যমে ভূপৃষ্ঠের গ্রহণ কেন্দ্রে (Ground Station) পাঠায়।
৪. তথ্য বিশ্লেষণ: গ্রহণ কেন্দ্রে কম্পিউটারের সাহায্যে সফটওয়্যারের মাধ্যমে ওই ডিজিটাল তথ্যকে বিশ্লেষণ করে ব্যবহারযোগ্য ছবি বা মানচিত্রে পরিণত করা হয়।
৫. চূড়ান্ত ব্যবহার: সবশেষে, বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিশেষজ্ঞরা (যেমন – ভূগোলবিদ, আবহাওয়াবিদ) ওই চিত্র বা মানচিত্রকে নিজ নিজ প্রয়োজনে ব্যবহার করেন।

৫. সমোন্নতি রেখার বৈশিষ্ট্যগুলি লেখো।

উত্তর: সমোন্নতি রেখার প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলি হল:
১. প্রতিটি রেখা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে সমান উচ্চতাযুক্ত স্থানগুলিকে যুক্ত করে।
২. দুটি সমোন্নতি রেখা কখনোই পরস্পরকে ছেদ করে না, তবে খাড়া ভৃগু বা ক্লিফের ক্ষেত্রে এগুলি একসঙ্গে মিশে যেতে পারে।
৩. রেখাগুলি খুব কাছাকাছি থাকলে খাড়া ঢাল এবং দূরে দূরে থাকলে মৃদু ঢাল বোঝায়।
৪. এগুলি সর্বদা বদ্ধ বক্ররেখা হয়, যদিও মানচিত্রের সীমার বাইরেও প্রসারিত হতে পারে।
৫. নদীর উপত্যকা অতিক্রম করার সময় এগুলি ‘V’ অক্ষরের মতো বেঁকে যায়, যার শীর্ষবিন্দু উজানের দিকে থাকে।

৬. ভূ-বৈচিত্র্যসূচক মানচিত্রে ব্যবহৃত স্কেলের গুরুত্ব আলোচনা করো।

উত্তর: ভূ-বৈচিত্র্যসূচক মানচিত্রে স্কেল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ:
ক) দূরত্ব নির্ণয়: স্কেলের সাহায্যে মানচিত্রের যেকোনো দুটি স্থানের মধ্যেকার রৈখিক দূরত্বকে ভূমিভাগের প্রকৃত দূরত্বে রূপান্তরিত করা যায়।
খ) ক্ষেত্রফল নির্ণয়: স্কেলের মাধ্যমে মানচিত্রে দেখানো কোনো অঞ্চলের (যেমন – বনভূমি, হ্রদ) প্রকৃত ক্ষেত্রফল নির্ণয় করা সম্ভব হয়।
গ) বিষয়ের পরিধি বোঝা: স্কেল থেকে বোঝা যায় মানচিত্রটি কতটা অঞ্চলের বিবরণ দিচ্ছে। বৃহৎ স্কেলের মানচিত্র (যেমন – ১:৫০,০০০) অল্প জায়গার বিস্তারিত বিবরণ দেয়, আর ক্ষুদ্র স্কেলের মানচিত্র (যেমন – ১:১০,০০,০০০) বিশাল অঞ্চলের সংক্ষিপ্ত বিবরণ দেয়।

৭. চিত্রসহ ভূ-সমলয় ও সূর্য-সমলয় উপগ্রহের বর্ণনা দাও।

উত্তর: ভূ-সমলয় উপগ্রহ (Geostationary Satellite): এই উপগ্রহগুলি পৃথিবীর নিরক্ষীয় তলের উপর প্রায় ৩৬,০০০ কিমি উচ্চতায় এমনভাবে স্থাপন করা হয়, যাতে এদের আবর্তন গতি পৃথিবীর আবর্তন গতির সমান (২৪ ঘন্টা) হয়। ফলে উপগ্রহগুলিকে পৃথিবী থেকে দেখলে এক জায়গায় স্থির বলে মনে হয়। এগুলি মূলত আবহাওয়ার পূর্বাভাস, দূরদর্শন সম্প্রচার এবং যোগাযোগের কাজে ব্যবহৃত হয়। ভারতের INSAT সিরিজ এই ধরনের উপগ্রহ।
সূর্য-সমলয় উপগ্রহ (Sun-synchronous Satellite): এই উপগ্রহগুলি মেরু কক্ষপথে প্রায় ৭০০-৯০০ কিমি উচ্চতায় উত্তর থেকে দক্ষিণে পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করে। এগুলি এমনভাবে পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করে যাতে প্রতিদিন একই স্থানীয় সময়ে কোনো নির্দিষ্ট স্থানের উপর দিয়ে যায়। এর ফলে একই রকম সূর্যালোকের পরিস্থিতিতে ছবি তোলা সম্ভব হয়, যা বিভিন্ন ছবির মধ্যে তুলনা করতে সাহায্য করে। এগুলি মূলত সম্পদ সমীক্ষা, পরিবেশ পর্যবেক্ষণ এবং মানচিত্র তৈরির কাজে ব্যবহৃত হয়। ভারতের IRS সিরিজ এই ধরনের উপগ্রহ।
(দুটি পৃথক চিত্র আঁকতে হবে, একটিতে নিরক্ষীয় কক্ষপথ ও অন্যটিতে মেরু কক্ষপথ দেখানো থাকবে)।

৮. উপগ্রহ চিত্রের তিনটি ব্যবহারিক প্রয়োগ আলোচনা করো।

উত্তর: উপগ্রহ চিত্রের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যবহারিক প্রয়োগ হল:
১. প্রাকৃতিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা: ঘূর্ণিঝড়, বন্যা, খরা, দাবানলের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের পূর্বাভাস দেওয়া, তাদের গতিপথ পর্যবেক্ষণ করা এবং দুর্যোগ পরবর্তী ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ণয় ও ত্রাণকার্যের পরিকল্পনা করতে উপগ্রহ চিত্র অপরিহার্য।
২. সম্পদ সমীক্ষা ও ব্যবস্থাপনা: অরণ্য সম্পদের পরিমাণ, খনিজ সম্পদের সম্ভাব্য অবস্থান, ভূমি ব্যবহারের ধরন, জলসম্পদের বণ্টন ইত্যাদি বিষয়ে সঠিক তথ্য সংগ্রহ করে তাদের সঠিক পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনায় সাহায্য করে।
৩. আবহাওয়ার পূর্বাভাস: বায়ুমণ্ডলের মেঘের সঞ্চার, বায়ুর চাপ, উষ্ণতা ইত্যাদি তথ্য সংগ্রহ করে আবহাওয়ার নির্ভুল পূর্বাভাস দিতে ভূ-সমলয় উপগ্রহগুলি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

৯. টোপোগ্রাফিক্যাল মানচিত্রে ব্যবহৃত প্রচলিত প্রতীক চিহ্নগুলির গুরুত্ব কী?উত্তর: টোপোগ্রাফিক্যাল মানচিত্রে প্রচলিত প্রতীক চিহ্নগুলির গুরুত্ব অপরিসীম:
১. এই চিহ্নগুলি ব্যবহার করে একটি ছোট মানচিত্রের মধ্যে বিপুল পরিমাণ তথ্যকে (যেমন – ভূমিরূপ, নদনদী, রাস্তা, বসতি) সহজে ও স্পষ্টভাবে দেখানো সম্ভব হয়।
২. এই প্রতীক চিহ্নগুলি আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত, ফলে ভাষা বা দেশ নির্বিশেষে যে কেউ মানচিত্রটি সহজে পড়তে ও বুঝতে পারে।
৩. চিহ্নগুলির মাধ্যমে কোনো অঞ্চলের প্রাকৃতিক ও সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে এক নজরে একটি সুস্পষ্ট ধারণা লাভ করা যায়, যা বিভিন্ন পরিকল্পনার ক্ষেত্রে সহায়ক হয়।

১০. দূর সংবেদনকে দুটি প্রধান ভাগে ভাগ করে আলোচনা করো।

উত্তর: সেন্সরের প্রকৃতি অনুসারে দূর সংবেদনকে দুটি প্রধান ভাগে ভাগ করা যায়:
ক) নিষ্ক্রিয় দূর সংবেদন (Passive Remote Sensing): এই পদ্ধতিতে সেন্সর কোনো বস্তু সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহের জন্য প্রাকৃতিক শক্তির উৎস, মূলত সূর্যের প্রতিফলিত আলোর উপর নির্ভর করে। সেন্সরের নিজস্ব কোনো শক্তির উৎস থাকে না। সাধারণ ক্যামেরা বা উপগ্রহে ব্যবহৃত মাল্টিস্পেকট্রাল স্ক্যানার (MSS) এর উদাহরণ। এর প্রধান অসুবিধা হল, এটি রাত্রিবেলায় বা মেঘাচ্ছন্ন আবহাওয়ায় কাজ করতে পারে না।
খ) সক্রিয় দূর সংবেদন (Active Remote Sensing): এই পদ্ধতিতে সেন্সর তার নিজস্ব কৃত্রিম উৎস থেকে শক্তি (যেমন – রাডার, লেজার) পাঠিয়ে সেই শক্তি বস্তুতে বাধা পেয়ে ফিরে এলে তা গ্রহণ করে তথ্য সংগ্রহ করে। এর জন্য সূর্যের আলোর প্রয়োজন হয় না। তাই এটি দিন-রাত্রি এবং যেকোনো আবহাওয়ায় কাজ করতে পারে। রাডার (RADAR) ও লিডার (LIDAR) এর উদাহরণ।

১১. ভূ-বৈচিত্র্যসূচক মানচিত্রের নম্বর ব্যবস্থা (নাম্বারিং) কীভাবে করা হয়?

উত্তর: ভারতের ভূ-বৈচিত্র্যসূচক মানচিত্র একটি নির্দিষ্ট আন্তর্জাতিক সিরিজের অংশ।
১. মিলিয়ন শিট: ৪° অক্ষাংশ ও ৪° দ্রাঘিমাংশ জুড়ে বিস্তৃত এই শিটের স্কেল ১:১০,০০,০০০। এগুলিকে সংখ্যা দ্বারা (যেমন – 73, 78) চিহ্নিত করা হয়।
২. ডিগ্রি শিট: প্রতিটি মিলিয়ন শিটকে ১৬টি (A থেকে P) ভাগে ভাগ করলে ১° × ১° বিস্তারের ডিগ্রি শিট পাওয়া যায়। এর স্কেল ১:২৫০,০০০ (পুরানো) বা ১:৫০,০০০ (নতুন)। এর সূচক সংখ্যা হয় 73A, 73B ইত্যাদি।
৩. ইঞ্চি/সেন্টিমিটার শিট: প্রতিটি ডিগ্রি শিটকে আবার ১৬টি ভাগে ভাগ করলে ১৫’ × ১৫’ বিস্তারের শিট পাওয়া যায়। এর স্কেল ১:৫০,০০০। এর সূচক সংখ্যা হয় 73A/1, 73A/2, … 73A/16।

১২. টোপোগ্রাফিক্যাল মানচিত্র থেকে কীভাবে বিভিন্ন ধরনের ভূমিরূপ শনাক্ত করা যায়?

উত্তর: টোপোগ্রাফিক্যাল মানচিত্রে সমোন্নতি রেখার বিন্যাস দেখে বিভিন্ন ভূমিরূপ শনাক্ত করা যায়:
ক) পাহাড়: গোলাকার বা ডিম্বাকৃতির বদ্ধ সমোন্নতি রেখা, যার মান কেন্দ্রের দিকে বাড়তে থাকে, তা পাহাড় নির্দেশ করে।
খ) মালভূমি: বিস্তৃত অঞ্চল জুড়ে প্রায় সমান উচ্চতার এবং অনিয়মিত আকারের সমোন্নতি রেখা, যার পার্শ্বদেশ খাড়া হয়, তা মালভূমি নির্দেশ করে।
গ) উপত্যকা: ‘V’ বা ‘U’ আকৃতির সমোন্নতি রেখা, যার মান বাইরের দিকে বাড়তে থাকে, তা উপত্যকা নির্দেশ করে।
ঘ) খাড়া ঢাল: খুব কাছাকাছি অবস্থিত সমোন্নতি রেখা খাড়া ঢাল নির্দেশ করে।
ঙ) মৃদু ঢাল: দূরে দূরে অবস্থিত সমোন্নতি রেখা মৃদু ঢাল নির্দেশ করে।

১৩. উপগ্রহ চিত্রের রেজোলিউশন বলতে কী বোঝায়? এর প্রকারভেদ লেখো।

উত্তর: উপগ্রহ চিত্রের রেজোলিউশন বলতে ছবির স্পষ্টতা বা সেন্সরের তথ্য সংগ্রহের সূক্ষ্মতাকে বোঝায়। এটি যত ভালো হয়, ছবি তত স্পষ্ট হয়। রেজোলিউশন প্রধানত চার প্রকার:
১. স্থানিক রেজোলিউশন (Spatial): ভূপৃষ্ঠের কতটা ক্ষুদ্র অংশকে সেন্সর একটি পিক্সেল হিসেবে শনাক্ত করতে পারে।
২. বর্ণালী রেজোলিউশন (Spectral): সেন্সর তড়িৎচুম্বকীয় বর্ণালীর কতটা সূক্ষ্ম অংশকে আলাদাভাবে শনাক্ত করতে পারে।
৩. সময়গত রেজোলিউশন (Temporal): একটি উপগ্রহ কতদিন পর পর একই জায়গার ছবি তুলতে পারে।
৪. বিকিরণগত রেজোলিউশন (Radiometric): সেন্সর প্রতিফলিত শক্তির কতটা সূক্ষ্ম পার্থক্যকে শনাক্ত করতে পারে।

১৪. ভূ-বৈচিত্র্যসূচক মানচিত্রের দুটি সুবিধা ও দুটি অসুবিধা লেখো।

উত্তর: সুবিধা:
১. এই মানচিত্র থেকে কোনো অঞ্চলের ভূমিরূপ, নদনদী, ঢাল ইত্যাদি সম্পর্কে অত্যন্ত নির্ভুল ও বিস্তারিত ধারণা পাওয়া যায়।
২. এটি সামরিক পরিকল্পনা, নগর পরিকল্পনা এবং ইঞ্জিনিয়ারিং-এর কাজে অপরিহার্য।
অসুবিধা:
১. এই মানচিত্র তৈরি করা অত্যন্ত সময়সাপেক্ষ ও ব্যয়বহুল।
২. একবার তৈরি হয়ে গেলে এটি সহজেই আপডেট করা যায় না, ফলে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এর তথ্যের প্রাসঙ্গিকতা কমে যায়।

১৫. টোপোশিটে ব্যবহৃত রৈখিক ও গোষ্ঠীবদ্ধ বসতির পার্থক্য লেখো।

উত্তর: টোপোশিটে লাল রঙের চিহ্ন দিয়ে বসতি দেখানো হয়।
রৈখিক বসতি (Linear Settlement): যখন বসতিগুলি কোনো রাস্তা, নদী বা খালের ধার বরাবর একটি রেখার মতো গড়ে ওঠে, তখন তাকে রৈখিক বসতি বলে। টোপোশিটে এটি একটি রেখার দুপাশে লাল চিহ্ন দিয়ে বোঝানো হয়।
গোষ্ঠীবদ্ধ বসতি (Nucleated/Clustered Settlement): যখন জলের উৎস, নিরাপত্তা বা অন্য কোনো কারণে বসতিগুলি এক জায়গায় কেন্দ্রীভূত বা পুঞ্জীভূতভাবে গড়ে ওঠে, তখন তাকে গোষ্ঠীবদ্ধ বসতি বলে। টোপোশিটে এটি একটি ছোট অঞ্চলের মধ্যে অনেক গুলি লাল চিহ্ন একত্রে দেখিয়ে বোঝানো হয়।

১৬. উপগ্রহ চিত্রের সঙ্গে টোপোশিটের সমন্বয় কীভাবে আধুনিক ভূগোল চর্চায় সাহায্য করে?

উত্তর: উপগ্রহ চিত্র ও টোপোশিটের সমন্বয় আধুনিক ভূগোল চর্চায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছে:
১. উপগ্রহ চিত্র সাম্প্রতিকতম তথ্য প্রদান করে, যা টোপোশিটের পুরানো তথ্যকে আপডেট করতে সাহায্য করে।
২. টোপোশিট থেকে ভূমির উচ্চতা ও ঢালের সঠিক ধারণা পাওয়া যায়, আর উপগ্রহ চিত্র থেকে ভূমি ব্যবহারের (যেমন – বনভূমি, কৃষিজমি) বাস্তব চিত্র পাওয়া যায়। এই দুটিকে GIS সফটওয়্যারে একত্রিত করে কোনো অঞ্চলের একটি সম্পূর্ণ ও ত্রিমাত্রিক মডেল তৈরি করা সম্ভব।
৩. এই সমন্বয়ের মাধ্যমে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, শহর পরিকল্পনা এবং পরিবেশ পর্যবেক্ষণের কাজ অনেক বেশি নির্ভুল ও কার্যকরভাবে করা যায়।

১৭. ‘দূর সংবেদন’ নামটি কতটা সার্থক? আলোচনা করো।

উত্তর: ‘দূর সংবেদন’ নামটি সম্পূর্ণ সার্থক। ‘দূর’ কথার অর্থ হল দূরত্ব এবং ‘সংবেদন’ কথার অর্থ হল অনুভব করা বা তথ্য সংগ্রহ করা। এই পদ্ধতিতে কোনো বস্তুকে সরাসরি স্পর্শ না করে, দূর থেকে (যেমন – মহাকাশে অবস্থিত উপগ্রহ থেকে) তার সম্বন্ধে তথ্য সংগ্রহ করা হয়। সেন্সরগুলি তড়িৎচুম্বকীয় তরঙ্গের মাধ্যমে বস্তুর বৈশিষ্ট্য অনুভব করে। যেহেতু শারীরিক সংস্পর্শ ছাড়াই দূর থেকে তথ্য সংবেদন বা সংগ্রহ করা হয়, তাই এই প্রযুক্তির ‘দূর সংবেদন’ নামকরণ অত্যন্ত যুক্তিযুক্ত ও সার্থক।

১৮. টোপোগ্রাফিক্যাল মানচিত্রে ব্যবহৃত বিভিন্ন প্রতীক চিহ্নের একটি সচিত্র তালিকা দাও (কমপক্ষে ৫টি)।

উত্তর: টোপোগ্রাফিক্যাল মানচিত্রে ব্যবহৃত ৫টি প্রতীক চিহ্ন হল:
১. মন্দির: একটি ছোট চতুর্ভুজ যার উপর একটি পতাকা থাকে।
২. মসজিদ: একটি গম্বুজ ও মিনারসহ স্থাপত্যের প্রতীক।
৩. গির্জা: একটি স্থাপত্য যার মাথায় একটি ক্রুশ চিহ্ন থাকে।
৪. পোস্ট অফিস (PO): ‘PO’ অক্ষর দ্বারা চিহ্নিত করা হয়।
৫. পাকা রাস্তা: দুটি সমান্তরাল লাল সরলরেখা দ্বারা দেখানো হয়।
(এখানে প্রতিটি প্রতীকের পাশে তার একটি সরল চিত্র আঁকতে হবে)।

১৯. উপগ্রহ চিত্রে রঙের ব্যবহার সম্পর্কে লেখো।

উত্তর: উপগ্রহ চিত্রে, বিশেষত FCC-তে, বিভিন্ন বস্তুকে শনাক্ত করার জন্য নির্দিষ্ট রঙ ব্যবহার করা হয়:
লাল: সুস্থ, সবুজ ও ঘন বনভূমি বা উদ্ভিদকে উজ্জ্বল লাল রঙে দেখানো হয়। ক্লোরোফিল অবলোহিত (Infrared) রশ্মি বেশি প্রতিফলন করে বলে এই রঙ হয়।
নীল বা কালো: পরিষ্কার ও গভীর জল বা জলাশয়কে গাঢ় নীল বা কালো রঙে দেখানো হয়, কারণ জল অবলোহিত রশ্মি শোষণ করে নেয়।
ধূসর বা হালকা নীল (সায়ান): শহর বা জনবসতিপূর্ণ অঞ্চলকে ধূসর বা হালকা নীল রঙে দেখানো হয়।
সাদা: বরফাবৃত অঞ্চল, মেঘ বা শুষ্ক বালি/লবণাক্ত জমিকে সাদা রঙে দেখানো হয়।
হলুদ বা হালকা বাদামি: কৃষিজমি বা পতিত জমিকে এই রঙে দেখানো হয়।

২০. ভূ-বৈচিত্র্যসূচক মানচিত্রের ভবিষ্যৎ কী?

উত্তর: ডিজিটাল প্রযুক্তির যুগে ভূ-বৈচিত্র্যসূচক মানচিত্রের গুরুত্ব কমেনি, বরং এর রূপ পরিবর্তিত হয়েছে।
১. বর্তমানে কাগজের মানচিত্রের পরিবর্তে ডিজিটাল টোপোগ্রাফিক্যাল মানচিত্র (Digital Topographical Map) তৈরি হচ্ছে, যা কম্পিউটারে সহজেই ব্যবহার ও আপডেট করা যায়।
২. GIS সফটওয়্যারে টোপোশিটকে একটি স্তর (Layer) হিসেবে ব্যবহার করে তার উপর উপগ্রহ চিত্র, জনসংখ্যা, মৃত্তিকা ইত্যাদি বিভিন্ন তথ্য বসিয়ে উন্নতমানের বিশ্লেষণ করা হচ্ছে।
৩. GPS প্রযুক্তির সঙ্গে টোপোশিটকে যুক্ত করে অবস্থান নির্ণয় ও পথ প্রদর্শনের কাজ আরও নির্ভুল হচ্ছে। সুতরাং, ভবিষ্যৎ হল ডিজিটাল ও সমন্বিত মানচিত্রের।

উপগ্রহ ও ভূ–বৈচিত্র্যসূচক মানচিত্র class 10 MCQ, অতি-সংক্ষিপ্ত, ও রচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তর : Class 10 Geography উপগ্রহ ও ভূ–বৈচিত্র্যসূচক মানচিত্র Question Answer

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top