ভারতের অবস্থান প্রশাসনিক বিভাগ Class 10
ক) বহুবিকল্পভিত্তিক প্রশ্নাবলী (MCQ) – মান ১ (৭০টি)
১. ভারতের মূল ভূখণ্ডের দক্ষিণতম বিন্দু হল –
২. বর্তমানে ভারতে অঙ্গরাজ্যের সংখ্যা হল –
৩. ভারতের সঙ্গে কোন দেশের দীর্ঘতম স্থল সীমানা রয়েছে?
৪. ক্ষেত্রফল অনুসারে ভারতের বৃহত্তম রাজ্য হল –
৫. ভারতের প্রমাণ দ্রাঘিমা রেখার মান হল –
৬. ভারতের নবীনতম রাজ্যটি হল –
৭. ভারতের কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের সংখ্যা হল –
৮. ভারতের কোন রাজ্যের উপকূলরেখা দীর্ঘতম?
৯. পক প্রণালী দ্বারা বিচ্ছিন্ন দুটি দেশ হল –
১০. ভারতের ক্ষুদ্রতম রাজ্য হল –
১১. ভারতের দক্ষিণতম স্থলবিন্দু হল –
১২. ভাষার ভিত্তিতে গঠিত ভারতের প্রথম রাজ্য হল –
১৩. ভারতের রাজ্য পুনর্গঠন কমিশন গঠিত হয় –
১৪. ভারতের রাজধানী নতুন দিল্লি কোন রাজ্যের অন্তর্গত?
১৫. SAARC-এর সদর দপ্তর অবস্থিত –
১৬. ভারতের উত্তরতম স্থান ‘ইন্দিরা কোল’ অবস্থিত –
১৭. কর্কটক্রান্তি রেখা ভারতের কটি রাজ্যের উপর দিয়ে গেছে?
১৮. ভারতের কোন প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে কোনো স্থল সীমানা নেই?
১৯. ভারতের ক্ষুদ্রতম কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হল –
২০. ভারতের পূর্বতম ও পশ্চিমতম বিন্দুর মধ্যে সময়ের পার্থক্য প্রায় –
২১. ‘চিকেনস নেক’ বলা হয় –
২২. ভারতের কোন রাজ্য তিন দিক দিয়ে বাংলাদেশ দ্বারা বেষ্টিত?
২৩. জম্মু ও কাশ্মীর এবং লাদাখ কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে বিভক্ত হয় –
২৪. ভারতের কোন রাজ্যের সঙ্গে সর্বাধিক রাজ্যের সীমানা রয়েছে?
২৫. ভারতের মোট আয়তন প্রায় –
২৬. ভারতের উত্তর-দক্ষিণে বিস্তার হল –
২৭. ভারতের পূর্ব-পশ্চিমে বিস্তার হল –
২৮. ভারত ও চিনের মধ্যেকার সীমানা রেখা হল –
২৯. ছত্তিশগড় রাজ্যটি গঠিত হয়েছে কোন রাজ্য ভেঙে?
৩০. SAARC-এর সদস্য দেশ নয় কোনটি?
৩১. ভারতের প্রমাণ সময় গ্রিনিচের সময় থেকে –
৩২. নিম্নলিখিত কোন শহরটি কর্কটক্রান্তি রেখার সবচেয়ে কাছে অবস্থিত?
৩৩. ভারতের একটি স্থলবেষ্টিত (Land-locked) রাজ্য হল –
৩৪. আয়তনে পৃথিবীতে ভারতের স্থান হল –
৩৫. ভারতের পূর্বতম রাজ্য হল –
৩৬. দাদরা ও নগর হাভেলি এবং দমন ও দিউ-এর রাজধানী হল –
৩৭. ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যেকার সীমারেখা হল –
৩৮. ভারতের কোন প্রতিবেশী দেশের জনসংখ্যা সবচেয়ে কম?
৩৯. পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে কটি দেশের আন্তর্জাতিক সীমানা রয়েছে?
৪০. ভারতের দ্বিতীয় ক্ষুদ্রতম রাজ্য কোনটি?
৪১. ভারতের কোন রাজ্যের দুটি রাজধানী রয়েছে?
৪২. ভারতের সবচেয়ে জনবহুল রাজ্য হল –
৪৩. ভারতের সবচেয়ে কম জনবহুল রাজ্য কোনটি?
৪৪. ভারত মহাসাগরে অবস্থিত ভারতের প্রতিবেশী দ্বীপরাষ্ট্রটি হল –
৪৫. ভারতের পশ্চিমতম প্রান্তের নাম হল –
৪৬. কোন চ্যানেল দ্বারা আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ পৃথক হয়েছে?
৪৭. ভারতের কোন শহরকে ‘প্রবেশদ্বার’ বলা হয়?
৪৮. ভারতের এমন একটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের নাম করো যার নিজস্ব বিধানসভা আছে।
৪৯. ভারতের অক্ষাংশগত বিস্তার প্রায় –
৫০. ভারতের কোন রাজ্যের নামের অর্থ ‘মেঘের আবাস’?
৫১. সার্ক (SAARC) কবে গঠিত হয়?
৫২. ভারতের কোন রাজ্যের সাক্ষরতার হার সর্বাধিক?
৫৩. তিনবিঘা করিডোর কোন দুটি দেশের মধ্যে অবস্থিত?
৫৪. ভারতের কোন রাজ্যের জনসংখ্যা ঘনত্ব সর্বাধিক?
৫৫. ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তম রাজ্য (আয়তনে) কোনটি?
৫৬. ছিটমহল সমস্যা কোন দেশের সঙ্গে জড়িত ছিল?
৫৭. ভারতের কোন রাজ্যের প্রধান ভাষা ইংরেজি?
৫৮. ভারতের বৃহত্তম কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল কোনটি?
৫৯. ভারতের কোন রাজ্যকে ‘ভারতের হৃদয়’ বলা হয়?
৬০. নিম্নলিখিত কোনটি ভারতের প্রতিবেশী দেশ নয়?
৬১. ভারতের ক্ষেত্রফল পৃথিবীর মোট স্থলভাগের প্রায় –
৬২. ভারতের মূল ভূখণ্ডের উপকূলরেখার দৈর্ঘ্য প্রায় –
৬৩. জনসংখ্যায় ভারতের ক্ষুদ্রতম রাজ্য হল –
৬৪. ‘সেভেন সিস্টার্স’ এর অন্তর্গত নয় কোন রাজ্য?
৬৫. ভারতের কোন কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল দুটি রাজ্যে বিস্তৃত?
৬৬. ভারতের কোন রাজ্য নেপাল ও ভুটানের মাঝে অবস্থিত?
৬৭. ভারতের মোট স্থলভাগের সীমানার দৈর্ঘ্য প্রায় –
৬৮. ভারতের কোন রাজ্যের কোনো আন্তর্জাতিক সীমানা বা উপকূলরেখা নেই?
৬৯. ভারতের কোন রাজ্যের জন্মতারিখ ১লা নভেম্বর নয়?
৭০. কোন রাজ্যের রাজধানী কর্কটক্রান্তি রেখার উপর অবস্থিত?
খ) অতি-সংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্নাবলী (SAQ) – মান ১ (৬০টি)
১. ভারতের উত্তরতম বিন্দু কোনটি?
উত্তর: ইন্দিরা কোল (লাদাখ)।
২. ভারতের প্রমাণ দ্রাঘিমার মান কত?
উত্তর: ৮২°৩০′ পূর্ব।
৩. SAARC-এর পুরো নাম কী?
উত্তর: South Asian Association for Regional Cooperation.
৪. ক্ষেত্রফল অনুসারে ভারতের ক্ষুদ্রতম রাজ্য কোনটি?
উত্তর: গোয়া।
৫. ভারতের এমন একটি রাজ্যের নাম লেখো যার আন্তর্জাতিক সীমানা নেই।
উত্তর: হরিয়ানা বা মধ্যপ্রদেশ।
৬. ভারতের কোন রাজ্য ভেঙে তেলেঙ্গানা গঠিত হয়েছে?
উত্তর: অন্ধ্রপ্রদেশ।
৭. ভারতের দীর্ঘতম আন্তর্জাতিক সীমানা কোন দেশের সঙ্গে?
উত্তর: বাংলাদেশ।
৮. ভারতের ‘চিকেনস নেক’ কাকে বলে?
উত্তর: পশ্চিমবঙ্গের শিলিগুড়ি করিডোরকে।
৯. ভারতের একটি দ্বীপীয় প্রতিবেশী দেশের নাম লেখো।
উত্তর: শ্রীলঙ্কা বা মালদ্বীপ।
১০. ভারতের নবীনতম কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল কোনটি?
উত্তর: দাদরা ও নগর হাভেলি এবং দমন ও দিউ (একত্রীকরণের পর)।
১১. কর্কটক্রান্তি রেখা ভারতের কোন শহরের উপর দিয়ে গেছে?
উত্তর: রাঁচি বা দুর্গাপুর।
১২. ভারতের কোন রাজ্যকে ‘উদীয়মান সূর্যের দেশ’ বলা হয়?
উত্তর: অরুণাচল প্রদেশ।
১৩. ডুরান্ড লাইন কোন দুটি দেশের মধ্যে অবস্থিত?
উত্তর: ভারত ও আফগানিস্তান (এবং পাকিস্তান ও আফগানিস্তান)।
১৪. রাজ্য পুনর্গঠন কমিশনের চেয়ারম্যান কে ছিলেন?
উত্তর: ফজল আলি।
১৫. ভারতের কোন দুটি রাজ্যের যৌথ রাজধানী রয়েছে?
উত্তর: পাঞ্জাব ও হরিয়ানা (চণ্ডীগড়)।
১৬. ইন্দিরা পয়েন্টের পূর্বনাম কী ছিল?
উত্তর: পিগম্যালিয়ন পয়েন্ট।
১৭. ভারতের একটি প্রবাল দ্বীপের উদাহরণ দাও।
উত্তর: লাক্ষাদ্বীপ।
১৮. ভারতের কোন রাজ্য ভুটান ও মায়ানমারের সীমান্তে অবস্থিত?
উত্তর: অরুণাচল প্রদেশ।
১৯. ভারতের মোট উপকূলরেখার দৈর্ঘ্য কত?
উত্তর: দ্বীপপুঞ্জ সহ প্রায় ৭৫১৬.৬ কিমি।
২০. ভারতের মূল ভূখণ্ডের অক্ষাংশগত বিস্তার কত?
উত্তর: ৮°৪′ উত্তর থেকে ৩৭°৬′ উত্তর।
২১. ভারতের দ্রাঘিমাগত বিস্তার কত?
উত্তর: ৬৮°৭′ পূর্ব থেকে ৯৭°২৫′ পূর্ব।
২২. ভারতের কোন প্রতিবেশী দেশের সরকারি নাম ‘ফেডারেল ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক’?
উত্তর: নেপাল।
২৩. ভারতের ক্ষুদ্রতম প্রতিবেশী দেশ কোনটি?
উত্তর: মালদ্বীপ।
২৪. ভারতের কোন রাজ্যের সঙ্গে নেপাল, ভুটান ও চিন— এই তিনটি দেশের সীমান্ত রয়েছে?
উত্তর: সিকিম।
২৫. ভারতের কোন শহরকে ‘গোলাপী শহর’ বলা হয়?
উত্তর: জয়পুর।
২৬. ভারতের কোন কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলটি ফরাসি উপনিবেশ ছিল?
উত্তর: পুদুচেরি।
২৭. ভারতের কোন রাজ্যকে ‘ঈশ্বরের নিজের দেশ’ বলা হয়?
উত্তর: কেরালা।
২৮. ‘লাইন অফ কন্ট্রোল’ (LOC) কোন দুটি দেশের মধ্যে অবস্থিত?
উত্তর: ভারত ও পাকিস্তান।
২৯. ভারতের একটি আগ্নেয় দ্বীপের নাম লেখো।
উত্তর: ব্যারেন দ্বীপ।
৩০. ভারতের কোন শহরকে ‘কমলালেবুর শহর’ বলা হয়?
উত্তর: নাগপুর।
৩১. IST ও GMT-এর মধ্যে সময়ের পার্থক্য কত?
উত্তর: ৫ ঘন্টা ৩০ মিনিট।
৩২. ভারত এশিয়ার কোন অংশে অবস্থিত?
উত্তর: দক্ষিণ এশিয়ায়।
৩৩. ভারতের কোন কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলটি বঙ্গোপসাগরে অবস্থিত?
উত্তর: আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ।
৩৪. ভারতের কোন রাজ্যকে ‘পঞ্চনদের দেশ’ বলা হয়?
উত্তর: পাঞ্জাব।
৩৫. সার্ক-এর নবীনতম সদস্য দেশ কোনটি?
উত্তর: আফগানিস্তান।
৩৬. কোন প্রণালী ভারতকে শ্রীলঙ্কা থেকে বিচ্ছিন্ন করেছে?
উত্তর: পক প্রণালী।
৩৭. ভারতের কোন রাজ্যের কোনো উপকূলরেখা নেই?
উত্তর: তেলেঙ্গানা বা ঝাড়খণ্ড।
৩৮. ভারতের কোন কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের রাজধানী লেহ?
উত্তর: লাদাখ।
৩৯. পশ্চিমবঙ্গের রাজধানীর নাম কী?
উত্তর: কলকাতা।
৪০. ভারতের কোন রাজ্যের পূর্বনাম ছিল নেফা (NEFA)?
উত্তর: অরুণাচল প্রদেশ।
৪১. ভারতের ‘সিলিকন ভ্যালি’ কোন শহরকে বলা হয়?
উত্তর: বেঙ্গালুরু।
৪২. ভারতের কোন রাজ্যের প্রধান উৎসব ওনাম?
উত্তর: কেরালা।
৪৩. ভারতের কোন কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল আরব সাগরে অবস্থিত?
উত্তর: লাক্ষাদ্বীপ।
৪৪. ভারতের কোন প্রতিবেশী দেশের জাতীয় খেলা তিরন্দাজি?
উত্তর: ভুটান।
৪৫. ভারতের কোন দুটি রাজ্যের সীমানায় লোকটাক হ্রদ অবস্থিত?
উত্তর: মণিপুর। (এটি একটি রাজ্যের মধ্যেই অবস্থিত)
৪৬. ‘গড’স ওন কান্ট্রি’ কোন রাজ্যকে বলা হয়?
উত্তর: কেরালা।
৪৭. ভারতের কোন রাজ্যের শীতকালীন রাজধানী জম্মু?
উত্তর: জম্মু ও কাশ্মীর (কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল)।
৪৮. মन्नार উপসাগর কোন দুটি দেশকে পৃথক করেছে?
উত্তর: ভারত ও শ্রীলঙ্কা।
৪৯. ভারতের এমন একটি রাজ্যের নাম লেখো যা তিনটি দেশ দ্বারা পরিবেষ্টিত।
উত্তর: সিকিম বা অরুণাচল প্রদেশ।
৫০. ভারতের কোন শহরকে ‘দক্ষিণের কাশী’ বলা হয়?
উত্তর: মাদুরাই।
৫১. রাজ্য পুনর্গঠন আইন কবে পাস হয়?
উত্তর: ১৯৫৬ সালে।
৫২. ভারতের কোন রাজ্যে মরুভূমি রয়েছে?
উত্তর: রাজস্থান।
৫৩. ভারতের কোন রাজ্য ধান উৎপাদনে প্রথম?
উত্তর: পশ্চিমবঙ্গ।
৫৪. সিকিম কবে ভারতের অঙ্গরাজ্যে পরিণত হয়?
উত্তর: ১৯৭৫ সালে।
৫৫. ভারতের কোন রাজ্যে একটি মাত্র জেলা?
উত্তর: গোয়া (দুটি জেলা, উত্তর ও দক্ষিণ গোয়া)। (প্রশ্নটি সাধারণত গোয়াকে বোঝাতেই করা হয়, তবে এটি প্রযুক্তিগতভাবে সঠিক নয়)।
৫৬. ভারতের জাতীয় জলচর প্রাণী কোনটি?
উত্তর: গাঙ্গেয় শুশুক বা ডলফিন।
৫৭. ভারতের কোন প্রতিবেশী দেশ একটি রাজতন্ত্র?
উত্তর: ভুটান।
৫৮. ভারতের কোন রাজ্যে সর্বাধিক বনভূমি রয়েছে?
উত্তর: মধ্যপ্রদেশ।
৫৯. ভারতের কোন রাজ্যে সর্বাধিক সংখ্যক আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর রয়েছে?
উত্তর: কেরালা।
৬০. ভারতের কোন শহরকে ‘প্রাচ্যের ভেনিস’ বলা হয়?
উত্তর: আলাপ্পুঝা (কেরালা)।
গ) সংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্নাবলী – মান ২ (২৫টি)
১. ভারতের অক্ষাংশ ও দ্রাঘিমাগত বিস্তার লেখো।
উত্তর: ভারতের মূল ভূখণ্ডের অক্ষাংশগত বিস্তার ৮°৪′ উত্তর থেকে ৩৭°৬′ উত্তর এবং দ্রাঘিমাগত বিস্তার ৬৮°৭′ পূর্ব থেকে ৯৭°২৫′ পূর্ব।
২. ভারতের দুটি পূর্ব ও পশ্চিম প্রান্তের নাম কী?
উত্তর: ভারতের পূর্বতম প্রান্ত হল অরুণাচল প্রদেশের কিবিথু এবং পশ্চিমতম প্রান্ত হল গুজরাটের কচ্ছ জেলার গুহার মতি।
৩. ভারতের প্রমাণ সময় (IST) বলতে কী বোঝো?
উত্তর: ভারতের প্রায় মাঝখান দিয়ে যাওয়া ৮২°৩০′ পূর্ব দ্রাঘিমারেখার স্থানীয় সময়কে ভারতের প্রমাণ সময় বা ইন্ডিয়ান স্ট্যান্ডার্ড টাইম (IST) হিসেবে ধরা হয়। এই রেখাটি উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজের (এলাহাবাদ) কাছে অবস্থিত।
৪. SAARC কী? এর সদস্য দেশগুলির নাম লেখো।
উত্তর: SAARC বা দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থা হল দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলির একটি অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সংগঠন। এর সদস্য দেশগুলি হল – ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, নেপাল, ভুটান, মালদ্বীপ ও আফগানিস্তান।
৫. ‘উপদ্বীপ’ কাকে বলে? ভারতকে উপদ্বীপ বলা হয় কেন?
উত্তর: যে ভূখণ্ডের তিন দিক জল দ্বারা বেষ্টিত এবং এক দিক স্থলভাগের সঙ্গে যুক্ত, তাকে উপদ্বীপ বলে। ভারতের দক্ষিণে ভারত মহাসাগর, পূর্বে বঙ্গোপসাগর এবং পশ্চিমে আরব সাগর থাকায় ভারতকে উপদ্বীপ বলা হয়।
৬. ভারতের দুটি নবগঠিত কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের নাম ও তাদের রাজধানী লেখো।
উত্তর: ভারতের দুটি নবগঠিত কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হল – জম্মু ও কাশ্মীর (রাজধানী: গ্রীষ্মকালীন শ্রীনগর, শীতকালীন জম্মু) এবং লাদাখ (রাজধানী: লেহ)।
৭. কর্কটক্রান্তি রেখা ভারতের কোন কোন রাজ্যের উপর দিয়ে গেছে?
উত্তর: কর্কটক্রান্তি রেখা ভারতের ৮টি রাজ্যের উপর দিয়ে গেছে। এগুলি হল – গুজরাট, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড়, ঝাড়খণ্ড, পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা ও মিজোরাম।
৮. ভারতের চারটি প্রতিবেশী দেশের নাম ও তাদের রাজধানী লেখো।
উত্তর: ১. নেপাল (রাজধানী: কাঠমান্ডু), ২. ভুটান (রাজধানী: থিম্পু), ৩. বাংলাদেশ (রাজধানী: ঢাকা), ৪. পাকিস্তান (রাজধানী: ইসলামাবাদ)।
৯. ভারতের দুটি প্রধান দ্বীপপুঞ্জের নাম ও অবস্থান লেখো।
উত্তর: ভারতের দুটি প্রধান দ্বীপপুঞ্জ হল – ১. আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ, যা বঙ্গোপসাগরে অবস্থিত। ২. লাক্ষাদ্বীপ, যা আরব সাগরে অবস্থিত।
১০. রাজ্য পুনর্গঠন কমিশনের দুটি সুপারিশ লেখো।
উত্তর: ১৯৫৩ সালে গঠিত রাজ্য পুনর্গঠন কমিশনের দুটি প্রধান সুপারিশ ছিল – ১. ভাষার ভিত্তিতে রাজ্যগুলির সীমানা পুনর্নির্ধারণ করা। ২. প্রশাসনিক সুবিধার জন্য রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল গঠন করা।
১১. ভারতের দক্ষিণতম বিন্দু ইন্দিরা পয়েন্টের গুরুত্ব কী?
উত্তর: ইন্দিরা পয়েন্ট ভারতের দক্ষিণতম স্থলবিন্দু হওয়ায় এটি দেশের সার্বভৌমত্বের প্রতীক। এছাড়া, এটি ভারত মহাসাগরের একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক জলপথের উপর অবস্থিত হওয়ায় এর সামরিক ও অর্থনৈতিক গুরুত্ব রয়েছে।
১২. ‘সেভেন সিস্টার্স’ বা ‘সপ্ত ভগিনী’ বলতে কী বোঝায়?
উত্তর: ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সাতটি রাজ্য—অরুণাচল প্রদেশ, নাগাল্যান্ড, মণিপুর, মিজোরাম, ত্রিপুরা, মেঘালয় ও আসামকে তাদের পারস্পরিক নির্ভরশীলতা ও সাংস্কৃতিক মিলের জন্য একত্রে ‘সেভেন সিস্টার্স’ বা ‘সপ্ত ভগিনী’ বলা হয়।
১৩. ভারতের দুটি উপকূলীয় ও দুটি স্থলবেষ্টিত রাজ্যের নাম লেখো।
উত্তর: উপকূলীয় রাজ্য: পশ্চিমবঙ্গ, গুজরাট। স্থলবেষ্টিত রাজ্য: মধ্যপ্রদেশ, ঝাড়খণ্ড।
১৪. ভারতের প্রমাণ সময়ের প্রয়োজনীয়তা কী?
উত্তর: ভারতের পূর্ব ও পশ্চিম প্রান্তের মধ্যে সময়ের পার্থক্য প্রায় ২ ঘন্টা। এই অসুবিধা দূর করে সারা দেশে একই সময়ে প্রশাসনিক, রেল ও অন্যান্য কাজ পরিচালনার জন্য একটি নির্দিষ্ট প্রমাণ সময়ের প্রয়োজন হয়।
১৫. ভারতের সীমানা নির্ধারণকারী দুটি প্রাকৃতিক ও দুটি কৃত্রিম রেখার নাম লেখো।
উত্তর: প্রাকৃতিক: হিমালয় পর্বতমালা (উত্তর দিকে), পক প্রণালী (দক্ষিণ দিকে)। কৃত্রিম: র্যাডক্লিফ লাইন (ভারত-পাকিস্তান), ম্যাকমোহন লাইন (ভারত-চিন)।
১৬. ভারতের ক্ষুদ্রতম রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের নাম লেখো।
উত্তর: ভারতের ক্ষুদ্রতম রাজ্য হল গোয়া এবং ক্ষুদ্রতম কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হল লাক্ষাদ্বীপ।
১৭. ভারতের দুটি নবীনতম রাজ্যের নাম ও তাদের গঠনকাল লেখো।
উত্তর: ভারতের দুটি নবীনতম রাজ্য হল – ১. তেলেঙ্গানা (গঠিত হয় ২রা জুন, ২০১৪) এবং ২. উত্তরাখণ্ড (গঠিত হয় ৯ই নভেম্বর, ২০০০)।
১৮. ভারতের কোন কোন রাজ্যের সঙ্গে মায়ানমারের সীমান্ত রয়েছে?
উত্তর: ভারতের চারটি রাজ্যের সঙ্গে মায়ানমারের সীমান্ত রয়েছে। এগুলি হল – অরুণাচল প্রদেশ, নাগাল্যান্ড, মণিপুর ও মিজোরাম।
১৯. ভারতের উত্তর-দক্ষিণ ও পূর্ব-পশ্চিমের বিস্তার কত?
উত্তর: ভারতের উত্তর থেকে দক্ষিণে (ইন্দিরা কোল থেকে কন্যাকুমারী) বিস্তার ৩,২১৪ কিমি এবং পূর্ব থেকে পশ্চিমে (কিবিথু থেকে গুহার মতি) বিস্তার ২,৯৩৩ কিমি।২০. ভারতের কোন দুটি রাজ্যের সীমানা সর্বাধিক সংখ্যক দেশকে স্পর্শ করেছে?
উত্তর: সিকিম (নেপাল, ভুটান, চিন), অরুণাচল প্রদেশ (ভুটান, চিন, মায়ানমার) এবং পশ্চিমবঙ্গ (নেপাল, ভুটান, বাংলাদেশ) — এই তিনটি রাজ্যের প্রত্যেকটির সীমানা তিনটি করে দেশকে স্পর্শ করেছে।
২১. কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল কেন গঠন করা হয়?
উত্তর: প্রশাসনিক, সাংস্কৃতিক বা সামরিক গুরুত্বের কারণে কিছু অঞ্চলকে রাজ্যের মর্যাদা না দিয়ে সরাসরি কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে রাখা হয়। এই অঞ্চলগুলিকেই কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল বলে। যেমন – দিল্লি, চণ্ডীগড়।
২২. ছিটমহল কী?
উত্তর: ছিটমহল হল কোনো দেশের এমন একটি ভূখণ্ড যা অন্য একটি দেশের ভূখণ্ড দ্বারা সম্পূর্ণরূপে পরিবেষ্টিত। ২০১৫ সালের আগে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে এই ধরনের ছিটমহল বিনিময় হয়েছে।
২৩. ভারতের মোট স্থল ও জলভাগের সীমানার দৈর্ঘ্য কত?
উত্তর: ভারতের মোট স্থলভাগের সীমানার দৈর্ঘ্য প্রায় ১৫,২০০ কিমি এবং দ্বীপপুঞ্জ সহ মোট জলভাগের সীমানার দৈর্ঘ্য প্রায় ৭,৫১৬.৬ কিমি।
২৪. ভারতের কোন কোন রাজ্যের ওপর দিয়ে প্রমাণ দ্রাঘিমা রেখা (৮২°৩০′ পূর্ব) গেছে?
উত্তর: ভারতের প্রমাণ দ্রাঘিমা রেখা ৫টি রাজ্যের উপর দিয়ে গেছে: উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড়, ওড়িশা এবং অন্ধ্রপ্রদেশ।
২৫. ভারতের জনসংখ্যা অনুসারে বৃহত্তম ও ক্ষুদ্রতম রাজ্যের নাম লেখো।
উত্তর: ভারতের জনসংখ্যা অনুসারে বৃহত্তম রাজ্য হল উত্তরপ্রদেশ এবং ক্ষুদ্রতম রাজ্য হল সিকিম।
ঘ) সংক্ষিপ্ত রচনাধর্মী প্রশ্নাবলী – মান ৩ (২৫টি)
১. ভারতকে উপমহাদেশ বলা হয় কেন?
উত্তর: ভারত এশিয়া মহাদেশের অংশ হলেও এর একটি স্বতন্ত্র ভৌগোলিক পরিচিতি রয়েছে।
১. বিশালতা ও সীমানা: ভারতের উত্তরে সুবিশাল হিমালয় পর্বতমালা একে এশিয়ার মূল ভূখণ্ড থেকে প্রায় বিচ্ছিন্ন করে রেখেছে।
২. বৈচিত্র্য: ভারতের মধ্যে বিভিন্ন প্রকার জলবায়ু, ভূমিরূপ, স্বাভাবিক উদ্ভিদ, ভাষা ও সংস্কৃতির বৈচিত্র্য দেখা যায়, যা একটি মহাদেশের মতোই।
৩. স্বতন্ত্র সত্তা: ভারত ও তার প্রতিবেশী দেশগুলি (পাকিস্তান, নেপাল, ভুটান, বাংলাদেশ) মিলে একটি স্বতন্ত্র প্রাকৃতিক ও সাংস্কৃতিক অঞ্চল গঠন করে। এই সমস্ত কারণে ভারতকে উপমহাদেশ বলা হয়।
২. ভারতের অবস্থান ও বিস্তারের গুরুত্ব আলোচনা করো।
উত্তর: ভারতের অবস্থান ও বিস্তার এর অর্থনৈতিক ও ভূ-রাজনৈতিক ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ:
ক) অর্থনৈতিক গুরুত্ব: ভারতের দীর্ঘ উপকূলরেখা এবং ভারত মহাসাগরের শীর্ষস্থানে অবস্থান একে সামুদ্রিক বাণিজ্য ও মৎস্য চাষে সুবিধা দিয়েছে। পূর্ব ও পশ্চিমের দেশগুলির সঙ্গে যোগাযোগ রাখা সহজ।
খ) সামরিক গুরুত্ব: এর কৌশলগত অবস্থান ভারত মহাসাগরের উপর নিয়ন্ত্রণ রাখতে সাহায্য করে। উত্তরের হিমালয় পর্বতমালা প্রাকৃতিক প্রাচীরের মতো কাজ করে।
গ) জলবায়ুগত গুরুত্ব: মৌসুমী বায়ুর দেশ হওয়ায় ভারত কৃষিতে উন্নত। অক্ষাংশগত বিস্তারের জন্য এখানে ক্রান্তীয় ও উপক্রান্তীয় উভয় প্রকার জলবায়ু দেখা যায়।
৩. ভারতের প্রমাণ সময়ের প্রয়োজনীয়তা ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: ভারতের পূর্ব ও পশ্চিম প্রান্তের দ্রাঘিমার পার্থক্য প্রায় ৩০° (৯৭°২৫′ পূর্ব – ৬৮°৭′ পূর্ব)। এর ফলে ভারতের পূর্বতম ও পশ্চিমতম স্থানের মধ্যে স্থানীয় সময়ের পার্থক্য হয় প্রায় ২ ঘন্টা (৩০ × ৪ মিনিট = ১২০ মিনিট)। এই বিশাল সময়ের পার্থক্য দূর করতে এবং সারা দেশে রেল, বিমান, বেতার ও প্রশাসনিক কাজকর্মে সামঞ্জস্য রাখার জন্য একটি প্রমাণ সময়ের প্রয়োজন হয়। তাই ভারতের প্রায় মাঝখান দিয়ে যাওয়া ৮২°৩০′ পূর্ব দ্রাঘিমার স্থানীয় সময়কে সারা দেশের জন্য প্রমাণ সময় হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে।
৪. SAARC গঠনের প্রধান উদ্দেশ্যগুলি কী কী?
উত্তর: দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থা বা SAARC-এর প্রধান উদ্দেশ্যগুলি হল:
১. সদস্য দেশগুলির জনগণের কল্যাণ সাধন করা এবং তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন করা।
২. দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলির মধ্যে অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক আদান-প্রদান ও সহযোগিতা বৃদ্ধি করা।
৩. সদস্য দেশগুলির সম্মিলিত আত্মনির্ভরশীলতা বাড়ানো এবং সাধারণ সমস্যাগুলি সমাধানে একে অপরকে সাহায্য করা।
৫. ভাষার ভিত্তিতে রাজ্য পুনর্গঠনের কারণ ও ফলাফল আলোচনা করো।
উত্তর: কারণ: স্বাধীনতার পর ভারতে বিভিন্ন ভাষাভাষী মানুষের মধ্যে নিজ নিজ ভাষার ভিত্তিতে পৃথক রাজ্যের দাবি ওঠে। প্রশাসনিক সুবিধা এবং বিভিন্ন ভাষাগত গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক পরিচয় রক্ষার জন্য ভাষার ভিত্তিতে রাজ্য পুনর্গঠনের প্রয়োজন দেখা দেয়।ফলাফল: ১৯৫৩ সালে গঠিত ফজল আলি কমিশনের সুপারিশ মেনে ১৯৫৬ সালে রাজ্য পুনর্গঠন আইন পাস হয়। এর ফলে ভাষার ভিত্তিতে ১৪টি রাজ্য ও ৬টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল গঠিত হয়। যেমন – তেলেগু ভাষাভাষীদের জন্য অন্ধ্রপ্রদেশ, মারাঠিদের জন্য মহারাষ্ট্র ইত্যাদি। এর ফলে ভারতের যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো আরও শক্তিশালী হয়।
৬. ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির ভৌগোলিক গুরুত্ব লেখো।
উত্তর: ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলি (সেভেন সিস্টার্স ও সিকিম) ভৌগোলিক ও সামরিক দিক থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ:
১. এই অঞ্চলটি মায়ানমার, চিন, ভুটান ও বাংলাদেশের মতো প্রতিবেশী দেশগুলির সীমান্তে অবস্থিত, তাই এর সামরিক গুরুত্ব অপরিসীম।
২. এটি ভারতের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে শুধুমাত্র একটি সংকীর্ণ ‘শিলিগুড়ি করিডোর’ বা ‘চিকেনস নেক’ দ্বারা যুক্ত, যা এটিকে কৌশলগতভাবে संवेदनशील করে তুলেছে।
৩. এই অঞ্চলটি বিভিন্ন জনজাতি, বনজ সম্পদ ও জীববৈচিত্র্যে পরিপূর্ণ, যা ভারতের সাংস্কৃতিক ও প্রাকৃতিক বৈচিত্র্যকে সমৃদ্ধ করেছে।
৭. ভারতের প্রতিবেশী দেশগুলির সঙ্গে সম্পর্কের সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও।
উত্তর: ভারতের সঙ্গে তার প্রতিবেশী দেশগুলির সম্পর্ক মিশ্র প্রকৃতির:১. সুসম্পর্ক: বাংলাদেশ, নেপাল, ভুটান, মালদ্বীপ ও শ্রীলঙ্কার সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক মূলত বন্ধুত্বপূর্ণ ও সহযোগিতামূলক। এই দেশগুলির সঙ্গে ভারতের বাণিজ্যিক ও সাংস্কৃতিক আদান-প্রদান রয়েছে।
২. проблемসম্পর্ক: পাকিস্তান ও চিনের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক মূলত সীমান্ত বিবাদ ও সন্ত্রাসবাদের কারণে উত্তেজনাপূর্ণ।
৩. সহযোগিতামূলক সম্পর্ক: SAARC এবং অন্যান্য মঞ্চের মাধ্যমে ভারত তার সমস্ত প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের চেষ্টা করে চলেছে।
৮. ভারতের অক্ষাংশগত ও দ্রাঘিমাগত বিস্তারের প্রভাব কী?
উত্তর: অক্ষাংশগত বিস্তারের প্রভাব: ভারতের দক্ষিণ অংশ ক্রান্তীয় অঞ্চলে এবং উত্তর অংশ উপক্রান্তীয় অঞ্চলে অবস্থিত। এর ফলে দেশের জলবায়ু, স্বাভাবিক উদ্ভিদ ও কৃষিকাজের মধ্যে ব্যাপক বৈচিত্র্য দেখা যায়। দক্ষিণাঞ্চলে উষ্ণ জলবায়ু এবং উত্তরাঞ্চলে চরমভাবাপন্ন জলবায়ু পরিলক্ষিত হয়।
দ্রাঘিমাগত বিস্তারের প্রভাব: ভারতের পূর্ব ও পশ্চিম প্রান্তের মধ্যে দ্রাঘিমার পার্থক্য প্রায় ৩০°। এর ফলে পূর্বতম ও পশ্চিমতম স্থানের স্থানীয় সময়ের পার্থক্য প্রায় ২ ঘন্টা হয়। এই কারণেই একটি প্রমাণ সময়ের প্রয়োজন হয়েছে।
৯. ভারতের উপকূলরেখার গুরুত্ব আলোচনা করো।
উত্তর: ভারতের দীর্ঘ উপকূলরেখার গুরুত্ব অপরিসীম:১. বাণিজ্য: দীর্ঘ উপকূলরেখা বরাবর মুম্বাই, কলকাতা, চেন্নাই, বিশাখাপত্তনমের মতো অনেক বড় বন্দর গড়ে উঠেছে, যা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে সহায়তা করে।
২. মৎস্য চাষ: উপকূলবর্তী অগভীর সমুদ্রে প্রচুর মাছ পাওয়া যায়, যা লক্ষ লক্ষ মৎস্যজীবীর জীবিকা নির্বাহ করে।
৩. পর্যটন: গোয়া, কেরালা, আন্দামানের মতো মনোরম সমুদ্র সৈকতগুলি পর্যটন শিল্পকে উন্নত করেছে।
৪. প্রতিরক্ষা: দীর্ঘ উপকূলরেখা দেশের সামুদ্রিক নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
১০. ভারতের কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির প্রশাসনিক ব্যবস্থা সম্পর্কে লেখো।
উত্তর: ভারতের কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলি সরাসরি কেন্দ্রীয় সরকারের দ্বারা শাসিত হয়।
১. রাষ্ট্রপতি প্রতিটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের জন্য একজন प्रशासक বা লেফটেন্যান্ট গভর্নর নিয়োগ করেন।
২. দিল্লি, পুদুচেরি ও জম্মু ও কাশ্মীরের মতো কিছু কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের নিজস্ব নির্বাচিত বিধানসভা ও মন্ত্রিসভা রয়েছে, যদিও তাদের ক্ষমতা রাজ্যের তুলনায় সীমিত।
৩. অন্যান্য কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল যেমন – লাদাখ, চণ্ডীগড়, আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ সম্পূর্ণভাবে কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে থাকে এবং তাদের কোনো নিজস্ব বিধানসভা নেই।
১১. টিকা লেখো: র্যাডক্লিফ লাইন।
উত্তর: র্যাডক্লিফ লাইন হল ১৯৪৭ সালে ভারত ভাগের সময় ভারত ও পাকিস্তানের (পূর্ব ও পশ্চিম) মধ্যে নির্ধারিত আন্তর্জাতিক সীমানা। ব্রিটিশ আইনজীবী স্যার সিরিল র্যাডক্লিফের নেতৃত্বে গঠিত সীমান্ত কমিশন এই সীমানা নির্ধারণ করে। বর্তমানে এটি ভারত-পাকিস্তান এবং ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত হিসেবে পরিচিত। এটি একটি কৃত্রিম বা আরোপিত সীমানা যা সম্পূর্ণরূপে রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের উপর ভিত্তি করে তৈরি হয়েছিল।
১২. টিকা লেখো: ম্যাকমোহন লাইন।
উত্তর: ম্যাকমোহন লাইন হল ভারত ও চিনের মধ্যেকার আন্তর্জাতিক সীমানা, বিশেষত অরুণাচল প্রদেশ অঞ্চলে। ১৯১৪ সালে সিমলা চুক্তির সময় ব্রিটিশ ভারতের বিদেশ সচিব স্যার হেনরি ম্যাকমোহন এই সীমানা নির্ধারণ করেন। ভারত এই সীমানাকে স্বীকৃতি দিলেও চিন এটিকে মানে না, যা দুই দেশের মধ্যে সীমান্ত বিবাদের অন্যতম প্রধান কারণ।
১৩. দাদরা ও নগর হাভেলি এবং দমন ও দিউ-এর সংযুক্তিকরণ সম্পর্কে লেখো।
উত্তর: পূর্বে দাদরা ও নগর হাভেলি এবং দমন ও দিউ দুটি পৃথক কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল ছিল। প্রশাসনিক কাজের সুবিধা এবং ব্যয় সংকোচনের জন্য ভারত সরকার এই দুটি অঞ্চলকে একত্রিত করার সিদ্ধান্ত নেয়। ২০২০ সালের ২৬শে জানুয়ারি এই দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলকে আনুষ্ঠানিকভাবে সংযুক্ত করে ‘দাদরা ও নগর হাভেলি এবং দমন ও দিউ’ নামে একটিমাত্র কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল গঠন করা হয়। এর রাজধানী হল দমন।
১৪. ভারতের কোন কোন রাজ্যের সঙ্গে বাংলাদেশের সীমান্ত রয়েছে?
উত্তর: ভারতের পাঁচটি রাজ্যের সঙ্গে বাংলাদেশের সীমান্ত রয়েছে। এই রাজ্যগুলি হল:
১. পশ্চিমবঙ্গ (সবচেয়ে দীর্ঘ সীমান্ত)
২. আসাম
৩. মেঘালয়
৪. ত্রিপুরা
৫. মিজোরাম
এই সীমান্ত অঞ্চলটি অত্যন্ত ঘনবসতিপূর্ণ এবং অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ।
১৫. ভারতের কোন কোন রাজ্যের সঙ্গে পাকিস্তানের সীমান্ত রয়েছে?
উত্তর: ভারতের তিনটি রাজ্য এবং দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের সঙ্গে পাকিস্তানের সীমান্ত রয়েছে।
রাজ্যগুলি:
১. গুজরাট
২. রাজস্থান
৩. পাঞ্জাব
কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল:
১. জম্মু ও কাশ্মীর
২. লাদাখ
এই সীমান্ত অঞ্চলটি সামরিক দিক থেকে অত্যন্ত संवेदनशील।
১৬. ‘উপদ্বীপীয় মালভূমি’ বলতে কী বোঝায়?
উত্তর: ভারতের দক্ষিণ অংশ যা তিনদিকে সমুদ্র দ্বারা বেষ্টিত এবং একটি প্রাচীন মালভূমি অঞ্চল, তাকে উপদ্বীপীয় মালভূমি বলে। এটি ভারতের বৃহত্তম প্রাকৃতিক বিভাগ। এর উত্তরে সাতপুরা, বিন্ধ্য পর্বত এবং পূর্বে পূর্বঘাট ও পশ্চিমে পশ্চিমঘাট পর্বতমালা অবস্থিত। এই অঞ্চলটি প্রাচীন শিলা দ্বারা গঠিত এবং খনিজ সম্পদে সমৃদ্ধ।
১৭. ভারতের ক্ষুদ্রতম প্রতিবেশী রাষ্ট্রটির ভৌগোলিক পরিচয় দাও।
উত্তর: ভারতের ক্ষুদ্রতম প্রতিবেশী রাষ্ট্র হল মালদ্বীপ।
অবস্থান: এটি ভারত মহাসাগরে অবস্থিত একটি দ্বীপরাষ্ট্র।
প্রকৃতি: এটি প্রায় ১২০০টি ছোট ছোট প্রবাল দ্বীপ নিয়ে গঠিত।
রাজধানী: এর রাজধানী হল মালে।
গুরুত্ব: পর্যটন শিল্প এই দেশের অর্থনীতির প্রধান ভিত্তি। সমুদ্রতলের উচ্চতা বৃদ্ধির কারণে এই দেশটি জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বিপন্ন।
১৮. ভারত মহাসাগরে ভারতের কৌশলগত অবস্থানের গুরুত্ব কী?
উত্তর: ভারত মহাসাগরের শীর্ষস্থানে ভারতের অবস্থান দেশটিকে একটি বিশেষ কৌশলগত সুবিধা দিয়েছে:
১. পূর্ব আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং অস্ট্রেলিয়ার মধ্যেকার প্রধান সামুদ্রিক বাণিজ্য পথগুলি ভারতের কাছ দিয়ে গেছে।
২. ভারত এই মহাসাগরের উপর সহজেই নজরদারি চালাতে পারে এবং তার নৌবাহিনীর মাধ্যমে দেশের সামুদ্রিক নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে পারে।
৩. এই অবস্থান ভারতকে তার প্রতিবেশী দ্বীপরাষ্ট্রগুলির (শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ) উপর প্রভাব বিস্তার করতে এবং আঞ্চলিক শক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে সাহায্য করেছে।
১৯. ভারতের রাজ্যগুলির মধ্যে আয়তন ও জনসংখ্যার বণ্টন বৈষম্যपूर्ण কেন?
উত্তর: ভারতের রাজ্যগুলির মধ্যে আয়তন ও জনসংখ্যার বণ্টনে ব্যাপক বৈষম্য দেখা যায়।
আয়তন: রাজস্থানের মতো বড় রাজ্যের আয়তন গোয়ার মতো ছোট রাজ্যের চেয়ে অনেক গুণ বেশি। এর কারণ ঐতিহাসিক ও প্রশাসনিক বিভাজন।
জনসংখ্যা: উত্তরপ্রদেশের মতো রাজ্যের জনসংখ্যা সিকিমের চেয়ে অনেক বেশি। এর কারণ হল উর্বর সমভূমি, জলবায়ুর অনুকূল পরিস্থিতি এবং অর্থনৈতিক সুযোগ-সুবিধা, যা জনবসতিকে আকর্ষণ করে। মরুভূমি বা পার্বত্য অঞ্চলে প্রতিকূল পরিবেশের কারণে জনসংখ্যা কম।
২০. টিকা লেখো: তিনবিঘা করিডোর।
উত্তর: তিনবিঘা করিডোর হল ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার জেলায় অবস্থিত একটি ভূখণ্ড, যা ভারত লিজ হিসেবে বাংলাদেশকে প্রদান করেছে। এই করিডোরটি বাংলাদেশের দহগ্রাম-আঙ্গরপোতা ছিটমহলকে বাংলাদেশের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে যুক্ত করেছে। ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত চুক্তির অংশ হিসেবে এটি কার্যকর হয়েছে, যা দুই দেশের মধ্যে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
২১. অরুণাচল প্রদেশে যখন সূর্যোদয় হয়, গুজরাটে তখনো ভোর হয়নি কেন?
উত্তর: এর কারণ ভারতের পূর্ব-পশ্চিমের দ্রাঘিমাগত বিস্তার। ভারতের পূর্বতম প্রান্ত অরুণাচল প্রদেশ (৯৭°২৫′ পূর্ব) এবং পশ্চিমতম প্রান্ত গুজরাটের (৬৮°৭′ পূর্ব) মধ্যে দ্রাঘিমার পার্থক্য প্রায় ৩০°। আমরা জানি, ১° দ্রাঘিমার পার্থক্যের জন্য সময়ের পার্থক্য হয় ৪ মিনিট। তাই ৩০° দ্রাঘিমার পার্থক্যের জন্য সময়ের পার্থক্য হয় (৩০ × ৪) = ১২০ মিনিট বা ২ ঘন্টা। এই কারণেই অরুণাচল প্রদেশে সূর্যোদয় হওয়ার প্রায় ২ ঘন্টা পর গুজরাটে সূর্যোদয় হয়।
২২. ভারতের দুটি দ্বীপপুঞ্জের সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও।
উত্তর: আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ: এটি বঙ্গোপসাগরে অবস্থিত এবং প্রায় ৫৭২টি দ্বীপ নিয়ে গঠিত। এর রাজধানী পোর্ট ব্লেয়ার। এই দ্বীপপুঞ্জটি মূলত নিমজ্জিত পর্বতের চূড়া। ভারতের একমাত্র সক্রিয় আগ্নেয়গিরি ব্যারেন এখানেই অবস্থিত।
লাক্ষাদ্বীপ: এটি আরব সাগরে অবস্থিত এবং ৩৬টি প্রবাল দ্বীপ নিয়ে গঠিত। এর রাজধানী কাভারাত্তি। এটি ভারতের ক্ষুদ্রতম কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল এবং পর্যটনের জন্য বিখ্যাত।
২৩. জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যের পুনর্গঠন সম্পর্কে আলোচনা করো।
উত্তর: ২০১৯ সালের আগস্ট মাসে ভারত সরকার সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিল করে জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যের বিশেষ মর্যাদা তুলে নেয়। এর পাশাপাশি, রাজ্যটিকে পুনর্গঠন করার জন্য একটি আইন পাস করা হয়। এই আইন অনুযায়ী, ২০১৯ সালের ৩১শে অক্টোবর থেকে জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যটি দুটি পৃথক কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে বিভক্ত হয়:
১. জম্মু ও কাশ্মীর: যার নিজস্ব বিধানসভা থাকবে।
২. লাদাখ: যার কোনো বিধানসভা থাকবে না।
এই পদক্ষেপটি ভারতের প্রশাসনিক মানচিত্রে একটি বড় পরিবর্তন এনেছে।
২৪. ভারতের কোন কোন রাজ্যের দুটি করে রাজধানী আছে? সেগুলি কী কী?
উত্তর: ভারতের একাধিক রাজ্যের দুটি করে রাজধানী রয়েছে, যা মূলত গ্রীষ্ম ও শীতকালীন প্রশাসনিক কাজের সুবিধার জন্য করা হয়েছে:
১. জম্মু ও কাশ্মীর (কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল): গ্রীষ্মকালীন রাজধানী শ্রীনগর এবং শীতকালীন রাজধানী জম্মু।
২. হিমাচল প্রদেশ: গ্রীষ্মকালীন রাজধানী সিমলা এবং শীতকালীন রাজধানী ধর্মশালা।
৩. উত্তরাখণ্ড: রাজধানী দেরাদুন এবং গ্রীষ্মকালীন রাজধানী गैरसैंण।
৪. মহারাষ্ট্র: রাজধানী মুম্বাই এবং শীতকালীন বা উপ-রাজধানী নাগপুর।
২৫. ভাষার ভিত্তিতে গঠিত ভারতের প্রথম চারটি রাজ্যের নাম লেখো।
উত্তর: ভাষার ভিত্তিতে রাজ্য পুনর্গঠন আইন (১৯৫৬) অনুযায়ী প্রথম যে রাজ্যগুলি গঠিত হয়, তাদের মধ্যে চারটি হল:
১. অন্ধ্রপ্রদেশ: তেলেগু ভাষাভাষীদের জন্য (এটি আইন পাসের আগেই ১৯৫৩ সালে গঠিত হয়)।
২. কেরালা: মালায়ালম ভাষাভাষীদের জন্য।
৩. কর্ণাটক (তৎকালীন মহীশূর): কন্নড় ভাষাভাষীদের জন্য।
৪. তামিলনাড়ু (তৎকালীন মাদ্রাজ): তামিল ভাষাভাষীদের জন্য।
ঙ) রচনাধর্মী প্রশ্নাবলী – মান ৫ (১০টি)
১. ভারতের অবস্থান, সীমানা ও প্রতিবেশী দেশগুলির একটি সবিস্তার বিবরণ দাও।
উত্তর:
অবস্থান: ভারত এশিয়া মহাদেশের দক্ষিণ অংশে অবস্থিত একটি বিশাল দেশ। এটি সম্পূর্ণরূপে উত্তর গোলার্ধে অবস্থিত। ভারতের মূল ভূখণ্ড ৮°৪′ উত্তর থেকে ৩৭°৬′ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৬৮°৭′ পূর্ব থেকে ৯৭°২৫′ পূর্ব দ্রাঘিমাংশের মধ্যে বিস্তৃত। কর্কটক্রান্তি রেখা (২৩.৫° উত্তর) ভারতের প্রায় মাঝখান দিয়ে অতিক্রম করেছে।
সীমানা: ভারতের উত্তরে সুবিশাল হিমালয় পর্বতমালা, দক্ষিণে ভারত মহাসাগর, পূর্বে বঙ্গোপসাগর এবং পশ্চিমে আরব সাগর অবস্থিত। ভারতের স্থলভাগের সীমানার দৈর্ঘ্য প্রায় ১৫,২০০ কিমি এবং দ্বীপপুঞ্জ সহ উপকূলরেখার দৈর্ঘ্য প্রায় ৭,৫১৬.৬ কিমি।
প্রতিবেশী দেশ: ভারতের ৯টি প্রতিবেশী দেশ রয়েছে।
স্থলভাগের প্রতিবেশী:
১. উত্তর-পশ্চিমে: পাকিস্তান ও আফগানিস্তান।
২. উত্তরে: চিন, নেপাল ও ভুটান।
৩. পূর্বে: বাংলাদেশ ও মায়ানমার।
জলভাগের প্রতিবেশী:
১. দক্ষিণে: শ্রীলঙ্কা (পক প্রণালী দ্বারা বিচ্ছিন্ন)।
২. দক্ষিণ-পশ্চিমে: মালদ্বীপ।
এই অনন্য ভৌগোলিক অবস্থান ভারতকে ভূ-রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক দিক থেকে একটি গুরুত্বপূর্ণ দেশে পরিণত করেছে।
২. স্বাধীনতার পর ভারতে রাজ্য পুনর্গঠনের প্রেক্ষাপট ও বিবর্তন আলোচনা করো।
উত্তর:
প্রেক্ষাপট: ১৯৪৭ সালে স্বাধীনতার সময় ভারত প্রায় ৫৫০টিরও বেশি দেশীয় রাজ্য এবং ব্রিটিশ শাসিত প্রদেশ নিয়ে গঠিত ছিল। এই রাজ্যগুলির কোনো নির্দিষ্ট ভৌগোলিক বা সাংস্কৃতিক ভিত্তি ছিল না। সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলের নেতৃত্বে বেশিরভাগ দেশীয় রাজ্য ভারতে যোগদান করে। কিন্তু রাজ্যগুলির সীমানা নিয়ে, বিশেষত ভাষার ভিত্তিতে, বিভিন্ন অঞ্চলে অসন্তোষ ও পৃথক রাজ্যের দাবি বাড়তে থাকে।
বিবর্তন:
১. ভাষার ভিত্তিতে প্রথম রাজ্য: তেলেগু ভাষাভাষীদের তীব্র আন্দোলনের ফলে ১৯৫৩ সালে মাদ্রাজ রাজ্য ভেঙে অন্ধ্রপ্রদেশ গঠিত হয়। এটিই ভাষার ভিত্তিতে গঠিত ভারতের প্রথম রাজ্য।
২. রাজ্য পুনর্গঠন কমিশন: এই ঘটনার পর ভাষার ভিত্তিতে রাজ্য গঠনের দাবি সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে। এর ফলে ১৯৫৩ সালে ভারত সরকার ফজল আলির নেতৃত্বে ‘রাজ্য পুনর্গঠন কমিশন’ গঠন করে।
৩. রাজ্য পুনর্গঠন আইন, ১৯৫৬: কমিশনের সুপারিশের ভিত্তিতে ১৯৫৬ সালে ‘রাজ্য পুনর্গঠন আইন’ পাস হয়। এর মাধ্যমে ভাষার ভিত্তিতে ভারতে ১৪টি রাজ্য ও ৬টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল তৈরি হয়।
৪. পরবর্তী বিবর্তন: এরপরও বিভিন্ন সময়ে প্রশাসনিক, সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক কারণে নতুন রাজ্য গঠিত হয়েছে। যেমন – ১৯৬০ সালে বোম্বে রাজ্য ভেঙে মহারাষ্ট্র ও গুজরাট, ১৯৬৬ সালে পাঞ্জাব ভেঙে পাঞ্জাব ও হরিয়ানা, ২০০০ সালে তিনটি নতুন রাজ্য (ছত্তিশগড়, উত্তরাখণ্ড, ঝাড়খণ্ড) এবং সর্বশেষ ২০১৪ সালে অন্ধ্রপ্রদেশ ভেঙে তেলেঙ্গানা গঠিত হয়েছে।
৩. ভারতের ভূ-রাজনৈতিক গুরুত্বের কারণগুলি কী কী? দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের ভূমিকা আলোচনা করো।
উত্তর:
ভূ-রাজনৈতিক গুরুত্বের কারণ:
১. কৌশলগত অবস্থান: ভারত মহাসাগরের শীর্ষস্থানে অবস্থিত হওয়ায় ভারত পূর্ব ও পশ্চিমের দেশগুলির মধ্যেকার প্রধান সামুদ্রিক বাণিজ্য পথগুলিকে নিয়ন্ত্রণ করে।
২. বিশাল আকার ও জনসংখ্যা: ভারত বিশ্বের সপ্তম বৃহত্তম দেশ এবং দ্বিতীয় সর্বাধিক জনবহুল দেশ। এই বিশাল মানব সম্পদ ও বাজার ভারতকে একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক শক্তিতে পরিণত করেছে।
৩. শক্তিশালী সামরিক বাহিনী: ভারত বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী সামরিক বাহিনীর অধিকারী, যা এই অঞ্চলের স্থিতিশীলতা রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
৪. পারমাণবিক শক্তি: ভারত একটি পারমাণবিক শক্তিধর দেশ, যা তার আন্তর্জাতিক গুরুত্ব বাড়িয়ে দিয়েছে।
দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের ভূমিকা:
দক্ষিণ এশিয়ায় ভারত বৃহত্তম এবং সবচেয়ে শক্তিশালী রাষ্ট্র হওয়ায় এর ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
১. নেতৃত্বদানকারী ভূমিকা: SAARC-এর মতো আঞ্চলিক সংগঠনে ভারত নেতৃত্বদানকারী ভূমিকা পালন করে এবং সদস্য দেশগুলির অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নে সহায়তা করে।
২. স্থিতিশীলতা রক্ষা: এই অঞ্চলের রাজনৈতিক বা অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষায় ভারতের ভূমিকা অপরিসীম। প্রতিবেশী দেশগুলির অভ্যন্তরীণ সংকটে ভারত প্রায়শই সাহায্য করে।
৩. অর্থনৈতিক কেন্দ্র: ভারত এই অঞ্চলের প্রধান অর্থনৈতিক কেন্দ্র। প্রতিবেশী দেশগুলি বাণিজ্য ও বিনিয়োগের জন্য ভারতের উপর অনেকাংশে নির্ভরশীল।
৪. ভারতের কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির গঠন ও প্রশাসনিক বৈশিষ্ট্য আলোচনা করো।
উত্তর:
গঠনের কারণ: ভারতের যে সমস্ত অঞ্চল আয়তনে ছোটো, জনসংখ্যায় কম অথবা সাংস্কৃতিক, ঐতিহাসিক বা সামরিক দিক থেকে বিশেষ গুরুত্বসম্পন্ন, সেগুলিকে রাজ্যের মর্যাদা না দিয়ে সরাসরি কেন্দ্রীয় সরকারের শাসনাধীনে রাখা হয়েছে। এগুলিকেই কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল বলা হয়। যেমন – দিল্লির জাতীয় রাজধানীর মর্যাদা, চণ্ডীগড়ের দুটি রাজ্যের রাজধানী হিসেবে গুরুত্ব, বা আন্দামান ও লাক্ষাদ্বীপের দূরবর্তী অবস্থান এর কারণ।
প্রশাসনিক বৈশিষ্ট্য:
১. কেন্দ্রীয় শাসন: এই অঞ্চলগুলি সরাসরি ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্বারা শাসিত হয়। রাষ্ট্রপতি প্রতিটি অঞ্চলের জন্য একজন প্রশাসক, লেফটেন্যান্ট গভর্নর বা চিফ কমিশনার নিয়োগ করেন।
২. বিধানসভার অস্তিত্ব: বেশিরভাগ কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের নিজস্ব বিধানসভা বা নির্বাচিত সরকার নেই। তবে ব্যতিক্রম হিসেবে দিল্লি, পুদুচেরি এবং জম্মু ও কাশ্মীরের নিজস্ব বিধানসভা ও মন্ত্রিসভা রয়েছে। যদিও তাদের ক্ষমতা রাজ্যের তুলনায় সীমিত এবং অনেক বিষয়ে লেফটেন্যান্ট গভর্নরের অনুমোদন প্রয়োজন হয়।
৩. আইন প্রণয়ন: কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির জন্য আইন প্রণয়নের ক্ষমতা ভারতীয় সংসদের হাতে থাকে। বিধানসভা থাকা অঞ্চলগুলিতে নির্দিষ্ট কিছু বিষয়ে স্থানীয় সরকার আইন তৈরি করতে পারে।
৫. ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ভূ-রাজনৈতিক গুরুত্ব আলোচনা করো।
উত্তর:
ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল, যা ‘সেভেন সিস্টার্স’ ও সিকিম নিয়ে গঠিত, ভূ-রাজনৈতিক ও কৌশলগত দিক থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
১. কৌশলগত সীমান্ত অঞ্চল: এই অঞ্চলটি চিন, মায়ানমার, ভুটান ও বাংলাদেশের মতো চারটি দেশের সীমান্তে অবস্থিত। ফলে আন্তর্জাতিক সীমান্ত সুরক্ষা এবং চোরাচালান ও অনুপ্রবেশ রোধের ক্ষেত্রে এর গুরুত্ব অপরিসীম।
২. ‘চিকেনস নেক’ এর অবস্থান: এই অঞ্চলটি ভারতের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে শুধুমাত্র একটি সংকীর্ণ ‘শিলিগুড়ি করিডোর’ বা ‘চিকেনস নেক’ দ্বারা যুক্ত। এই সংকীর্ণ পথটি কৌশলগতভাবে অত্যন্ত সংবেদনশীল, কারণ এটি বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলে সমগ্র উত্তর-পূর্বাঞ্চল ভারতের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়তে পারে।
৩. ‘Act East’ নীতি: ভারত সরকারের ‘Act East’ নীতির (দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলির সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন) প্রবেশদ্বার হল এই উত্তর-পূর্বাঞ্চল। এই অঞ্চলের মাধ্যমে মায়ানমার ও থাইল্যান্ডের সঙ্গে সড়ক ও রেল যোগাযোগ স্থাপন করা হচ্ছে।
৪. প্রাকৃতিক সম্পদের প্রাচুর্য: এই অঞ্চলটি জলবিদ্যুৎ, বনজ সম্পদ, খনিজ তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাসে সমৃদ্ধ, যা দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
৫. সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য: বিভিন্ন জনজাতির বসবাস এই অঞ্চলকে সাংস্কৃতিকভাবে বৈচিত্র্যময় ও গুরুত্বপূর্ণ করে তুলেছে।
৬. ভারতের প্রশাসনিক বিভাগের বর্তমান চিত্রটি তুলে ধরো।
উত্তর:
ভারত একটি সার্বভৌম, সমাজতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র যার একটি সংসদীয় ব্যবস্থা রয়েছে। প্রশাসনিক সুবিধার জন্য, ভারত বর্তমানে ২৮টি রাজ্য এবং ৮টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে বিভক্ত।
রাজ্য: প্রতিটি রাজ্যের নিজস্ব নির্বাচিত সরকার রয়েছে যা বিধানসভা নামে পরিচিত। রাজ্যের প্রধান হলেন রাজ্যপাল (রাষ্ট্রপতি দ্বারা নিযুক্ত) এবং সরকারের প্রধান হলেন মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্যগুলি নিজস্ব আইন প্রণয়ন করতে পারে। ভারতের বৃহত্তম রাজ্য রাজস্থান এবং ক্ষুদ্রতম রাজ্য গোয়া। নবীনতম রাজ্য তেলেঙ্গানা (২০১৪)।
কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল: এই অঞ্চলগুলি সরাসরি কেন্দ্রীয় সরকারের দ্বারা শাসিত হয়। রাষ্ট্রপতি একজন লেফটেন্যান্ট গভর্নর বা প্রশাসক নিয়োগ করেন। বর্তমানে ৮টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হল – আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ, চণ্ডীগড়, দাদরা ও নগর হাভেলি এবং দমন ও দিউ, দিল্লি, জম্মু ও কাশ্মীর, লাদাখ, লাক্ষাদ্বীপ এবং পুদুচেরি। এদের মধ্যে দিল্লি, পুদুচেরি ও জম্মু ও কাশ্মীরের নিজস্ব বিধানসভা রয়েছে। লাদাখ ভারতের বৃহত্তম এবং লাক্ষাদ্বীপ ক্ষুদ্রতম কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল।
৭. ভারতের প্রতিবেশী দেশ হিসাবে বাংলাদেশ ও নেপালের সংক্ষিপ্ত ভৌগোলিক বিবরণ দাও।
উত্তর:
বাংলাদেশ:
অবস্থান ও সীমানা: বাংলাদেশ ভারতের পূর্বে অবস্থিত একটি প্রতিবেশী দেশ। এর তিন দিকে ভারত এবং এক দিকে মায়ানমার ও বঙ্গোপসাগর রয়েছে। ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের দীর্ঘতম স্থল সীমানা রয়েছে।
ভূপ্রকৃতি: বাংলাদেশ মূলত গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র-মেঘনা নদীর বদ্বীপ দ্বারা গঠিত একটি সমভূমি প্রধান দেশ।
নদনদী: পদ্মা (গঙ্গা), মেঘনা, যমুনা (ব্রহ্মপুত্র) এখানকার প্রধান নদী।
রাজধানী ও ভাষা: রাজধানী ঢাকা এবং প্রধান ভাষা বাংলা।
সম্পর্ক: ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের ভাষা, সংস্কৃতি ও ঐতিহাসিক দিক থেকে গভীর সম্পর্ক বিদ্যমান।
নেপাল:
অবস্থান ও সীমানা: নেপাল ভারতের উত্তরে অবস্থিত একটি স্থলবেষ্টিত (Land-locked) দেশ। এর তিন দিকে ভারত এবং এক দিকে চিন (তিব্বত) রয়েছে।
ভূপ্রকৃতি: নেপাল একটি পার্বত্য দেশ। বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্ট এখানেই অবস্থিত।
নদনদী: কোশী, গণ্ডক, কালী এখানকার প্রধান নদী।
রাজধানী ও ভাষা: রাজধানী কাঠমান্ডু এবং প্রধান ভাষা নেপালি।
সম্পর্ক: নেপাল একটি হিন্দুপ্রধান রাষ্ট্র এবং ভারতের সঙ্গে এর ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক অত্যন্ত গভীর।
৮. ভারতের জাতীয় সংহতি রক্ষায় ভৌগোলিক বৈচিত্র্যের ভূমিকা আলোচনা করো।
উত্তর:
ভারতের ভৌগোলিক বৈচিত্র্য তার জাতীয় সংহতি রক্ষায় এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
১. পারস্পরিক নির্ভরশীলতা: ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলের ভৌগোলিক বৈচিত্র্য অর্থনৈতিকভাবে একে অপরের উপর নির্ভরশীল করে তুলেছে। যেমন – উত্তরের পার্বত্য অঞ্চল বনজ ও জলবিদ্যুৎ সম্পদে সমৃদ্ধ, আবার সমভূমি অঞ্চল কৃষি উৎপাদনে উন্নত। এই পারস্পরিক অর্থনৈতিক নির্ভরশীলতা রাজ্যগুলির মধ্যে সংযোগ স্থাপন করে।
২. মৌসুমী বায়ুর প্রভাব: দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ু সারা দেশে বৃষ্টিপাত ঘটিয়ে কৃষিকাজকে সম্ভব করে তুলেছে। এই বায়ুর আগমন ও প্রত্যাবর্তন সারা দেশের মানুষের মধ্যে একটি সাধারণ ঋতুচক্র ও সাংস্কৃতিক বন্ধন তৈরি করেছে।
৩. প্রাকৃতিক সীমানা: উত্তরের হিমালয় এবং তিন দিকের সমুদ্র ভারতকে একটি নির্দিষ্ট ভৌগোলিক একক হিসেবে চিহ্নিত করেছে। এই প্রাকৃতিক সীমানা দেশের অধিবাসীদের মধ্যে একটি অখণ্ডতার অনুভূতি জাগিয়ে তোলে।
৪. তীর্থক্ষেত্রের অবস্থান: ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে অবস্থিত তীর্থক্ষেত্রগুলি (যেমন – উত্তরে বদ্রীনাথ, দক্ষিণে রামেশ্বরম) সারা দেশের মানুষকে সাংস্কৃতিকভাবে একত্রিত করে। এই ‘বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্য’ (Unity in Diversity) ভারতের জাতীয় সংহতির মূল ভিত্তি।
৯. টিকা লেখো: ক) চিকেনস নেক খ) পক প্রণালী গ) দশ ডিগ্রি চ্যানেল।
উত্তর:
ক) চিকেনস নেক (Chicken’s Neck): পশ্চিমবঙ্গের উত্তর দিকে অবস্থিত শিলিগুড়ি করিডোরকে ‘চিকেনস নেক’ বলা হয়। এটি একটি অত্যন্ত সংকীর্ণ ভূখণ্ড (প্রায় ২২ কিমি চওড়া), যা ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলিকে ভারতের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে যুক্ত করেছে। এর একদিকে নেপাল ও অন্যদিকে বাংলাদেশ অবস্থিত। সামরিক ও কৌশলগত দিক থেকে এই অঞ্চলটি ভারতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
খ) পক প্রণালী (Palk Strait): পক প্রণালী হল একটি অগভীর জলভাগ যা ভারতের তামিলনাড়ু রাজ্য এবং দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কাকে পৃথক করেছে। এটি বঙ্গোপসাগরকে মান্নার উপসাগরের সঙ্গে যুক্ত করেছে। পৌরাণিক রামসেতু বা অ্যাডামস ব্রিজ এই প্রণালীতেই অবস্থিত।
গ) দশ ডিগ্রি চ্যানেল (Ten Degree Channel): ১০° উত্তর অক্ষাংশ রেখাটি আন্দামান দ্বীপপুঞ্জ এবং নিকোবর দ্বীপপুঞ্জকে একে অপরের থেকে পৃথক করেছে। এই অক্ষাংশ বরাবর বিস্তৃত চ্যানেল বা জলভাগটিই দশ ডিগ্রি চ্যানেল নামে পরিচিত। এটি বঙ্গোপসাগরকে আন্দামান সাগরের সঙ্গে যুক্ত করেছে।
১০. সার্ক (SAARC) গঠনের উদ্দেশ্য ও ভারতের ভূমিকা আলোচনা করো।
উত্তর:
SAARC গঠনের উদ্দেশ্য: ১৯৮৫ সালে গঠিত দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থা বা সার্ক-এর প্রধান উদ্দেশ্যগুলি হল:
১. সদস্য দেশগুলির (ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, নেপাল, ভুটান, মালদ্বীপ, আফগানিস্তান) জনগণের কল্যাণ সাধন করা এবং তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নত করা।
২. দেশগুলির মধ্যে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, সামাজিক অগ্রগতি এবং সাংস্কৃতিক উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করা।
৩. সদস্য দেশগুলির মধ্যে সম্মিলিত আত্মনির্ভরশীলতা গড়ে তোলা এবং পারস্পরিক বিশ্বাস ও বোঝাপড়া বৃদ্ধি করা।
৪. বিজ্ঞান, প্রযুক্তি এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে সক্রিয় সহযোগিতা ও আদান-প্রদান বাড়ানো।
ভারতের ভূমিকা:
সার্ক-এর বৃহত্তম ও শক্তিশালী সদস্য হিসেবে ভারতের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
১. ভারত এই সংস্থার প্রধান আর্থিক সহায়তাকারী এবং সদস্য দেশগুলিকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রযুক্তিগত ও অর্থনৈতিক সাহায্য প্রদান করে।
২. ভারত তার বিশাল বাজারকে সদস্য দেশগুলির জন্য উন্মুক্ত করে আঞ্চলিক বাণিজ্য বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
৩. সন্ত্রাসবাদ দমন, দুর্যোগ মোকাবিলা এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা রক্ষায় ভারত নেতৃত্বদানকারী ভূমিকা পালন করে। যদিও রাজনৈতিক কারণে (বিশেষত ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক) সার্ক-এর কার্যকারিতা অনেক সময় ব্যাহত হয়।
ভারত : অবস্থান, প্রশাসনিক বিভাগ class 10 MCQ, অতি-সংক্ষিপ্ত, ও রচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তর : Class 10 Geography ভারত : অবস্থান, প্রশাসনিক বিভাগ Question Answer