ভারতের ভূপ্রাকৃতি Class 10

ক) বহুবিকল্পভিত্তিক প্রশ্নাবলী (MCQ) – মান ১ (৭০টি)

১. ভারতের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ হল –

  • (ক) কাঞ্চনজঙ্ঘা
  • (খ) K2 বা গডউইন অস্টিন
  • (গ) এভারেস্ট
  • (ঘ) নন্দাদেবী

২. দক্ষিণ ভারতের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ হল –

  • (ক) দোদাবেতা
  • (খ) আনাইমুদি
  • (গ) মহেন্দ্রগিরি
  • (ঘ) কলসুবাই

৩. ভারতের একটি আগ্নেয়গিরির উদাহরণ হল –

  • (ক) লাক্ষাদ্বীপ
  • (খ) ব্যারেন দ্বীপ
  • (গ) সাগরদ্বীপ
  • (ঘ) পামবন দ্বীপ

৪. শিবালিক হিমালয়ের পাদদেশীয় অঞ্চলে ক্ষুদ্র শিলাখণ্ড সঞ্চিত হয়ে যে সমভূমি গঠিত হয়েছে, তাকে বলে –

  • (ক) ভাবর
  • (খ) তরাই
  • (গ) খাদার
  • (ঘ) ভাঙ্গর

৫. ভারতের বৃহত্তম কয়াল হল –

  • (ক) অষ্টমুদি
  • (খ) কোলেরু
  • (গ) ভেম্বানাদ
  • (ঘ) চিল্কা

৬. আরাবল্লী পর্বতের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ হল –

  • (ক) ধূপগড়
  • (খ) গুরুশিখর
  • (গ) পরেশনাথ
  • (ঘ) দোদাবেতা

৭. ভারতের দীর্ঘতম হিমবাহ হল –

  • (ক) গঙ্গোত্রী
  • (খ) জেমু
  • (গ) সিয়াচেন
  • (ঘ) যমুনোত্রী

৮. পূর্বঘাট ও পশ্চিমঘাট পর্বতমালা মিলিত হয়েছে –

  • (ক) পালঘাট গ্যাপে
  • (খ) আনাইমালাই পর্বতে
  • (গ) নীলগিরি পর্বতে
  • (ঘ) কার্ডামম পর্বতে

৯. ভারতের একটি লবণাক্ত জলের হ্রদ হল –

  • (ক) ডাল হ্রদ
  • (খ) কোলেরু হ্রদ
  • (গ) প্যাংগং হ্রদ
  • (ঘ) ভীমতাল

১০. মেঘালয় মালভূমির সর্বোচ্চ অংশ হল –

  • (ক) গারো পাহাড়
  • (খ) খাসি পাহাড়
  • (গ) শিলং শৃঙ্গ
  • (ঘ) জয়ন্তিয়া পাহাড়

১১. ভারতের প্রাচীনতম ভঙ্গিল পর্বতটি হল –

  • (ক) হিমালয়
  • (খ) সাতপুরা
  • (গ) আরাবল্লী
  • (ঘ) বিন্ধ্য

১২. ‘ডেকান ট্র্যাপ’ দেখা যায় –

  • (ক) ছোটনাগপুর মালভূমিতে
  • (খ) মেঘালয় মালভূমিতে
  • (গ) মহারাষ্ট্র মালভূমিতে
  • (ঘ) কর্ণাটক মালভূমিতে

১৩. কাশ্মীর উপত্যকা যে দুটি পর্বতশ্রেণীর মধ্যে অবস্থিত, তা হল –

  • (ক) কারাকোরাম ও লাদাখ
  • (খ) জাস্কার ও পিরপাঞ্জাল
  • (গ) শিবালিক ও পিরপাঞ্জাল
  • (ঘ) লাদাখ ও জাস্কার

১৪. গাঙ্গেয় সমভূমির নবীন পলিমাটিকে বলে –

  • (ক) ভাঙ্গর
  • (খ) খাদার
  • (গ) ভাবর
  • (ঘ) তরাই

১৫. ভারতের ‘খনিজ ভাণ্ডার’ বলা হয় –

  • (ক) দাক্ষিণাত্য মালভূমিকে
  • (খ) ছোটনাগপুর মালভূমিকে
  • (গ) মালব মালভূমিকে
  • (ঘ) মেঘালয় মালভূমিকে

১৬. লাক্ষাদ্বীপপুঞ্জ হল –

  • (ক) আগ্নেয় দ্বীপ
  • (খ) প্রবাল দ্বীপ
  • (গ) মহাদেশীয় দ্বীপ
  • (ঘ) বদ্বীপ

১৭. দুন উপত্যকা দেখা যায় –

  • (ক) হিমাদ্রি ও হিমাচল হিমালয়ের মাঝে
  • (খ) হিমাচল ও শিবালিক হিমালয়ের মাঝে
  • (গ) শিবালিক ও তরাইয়ের মাঝে
  • (ঘ) কারাকোরাম ও লাদাখের মাঝে

১৮. পূর্বঘাট পর্বতের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ হল –

  • (ক) মহেন্দ্রগিরি
  • (খ) জিন্দাগাডা
  • (গ) আরমা কোন্ডা
  • (ঘ) অমরকণ্টক

১৯. ভারতের বৃহত্তম উপহ্রদ বা লেগুন হল –

  • (ক) ভেম্বানাদ
  • (খ) কোলেরু
  • (গ) পুলিকট
  • (ঘ) চিল্কা

২০. ভারতের একটি স্তূপ পর্বতের উদাহরণ হল –

  • (ক) আরাবল্লী
  • (খ) হিমালয়
  • (গ) সাতপুরা
  • (ঘ) নীলগিরি

২১. পাঞ্জাব সমভূমির নদী মধ্যবর্তী অঞ্চলের উর্বর অংশকে বলে –

  • (ক) দোয়াב
  • (খ) বেট
  • (গ) ধায়া
  • (ঘ) ভাঙ্গর

২২. ‘পৃথিবীর ছাদ’ বলা হয় –

  • (ক) তিব্বত মালভূমিকে
  • (খ) পামির মালভূমিকে
  • (গ) লাদাখ মালভূমিকে
  • (ঘ) ছোটনাগপুর মালভূমিকে

২৩. ভারতের নবীনতম পর্বতটি হল –

  • (ক) আরাবল্লী
  • (খ) বিন্ধ্য
  • (গ) হিমালয়
  • (ঘ) সাতপুরা

২৪. মালাবার উপকূলের বালিয়াড়িকে স্থানীয় ভাষায় বলে –

  • (ক) কয়াল
  • (খ) টেরিস
  • (গ) রান
  • (ঘ) ধান্দ

২৫. ভারতের একমাত্র সক্রিয় আগ্নেয়গিরি অবস্থিত –

  • (ক) লাক্ষাদ্বীপে
  • (খ) মিনিকয় দ্বীপে
  • (গ) ব্যারেন দ্বীপে
  • (ঘ) নারকোন্ডাম দ্বীপে

২৬. ভারতের মরু অঞ্চলের চলমান বালিয়াড়িকে বলে –

  • (ক) ধান্দ
  • (খ) ধরিয়ান
  • (গ) হামাদা
  • (ঘ) ওয়াদি

২৭. লোকটাক হ্রদ অবস্থিত –

  • (ক) মেঘালয়ে
  • (খ) মিজোরামে
  • (গ) মণিপুরে
  • (ঘ) নাগাল্যান্ডে

২৮. পশ্চিমঘাট পর্বতমালার একটি গুরুত্বপূর্ণ গিরিপথ হল –

  • (ক) নাথুলা
  • (খ) জোজিলা
  • (গ) ভোরঘাট
  • (ঘ) বানিহাল

২৯. গাঙ্গেয় সমভূমির প্রাচীন পলিগঠিত অঞ্চলকে বলে –

  • (ক) খাদার
  • (খ) ভাবর
  • (গ) ভাঙ্গর
  • (ঘ) তরাই

৩০. ভারতের উচ্চতম মালভূমি হল –

  • (ক) দাক্ষিণাত্য
  • (খ) ছোটনাগপুর
  • (গ) লাদাখ
  • (ঘ) মালব

৩১. পূর্ব হিমালয়ের একটি গিরিপথ হল –

  • (ক) রোটাং পাস
  • (খ) জোজি লা
  • (গ) নাথু লা
  • (ঘ) বারালাচা লা

৩২. ভারতের বৃহত্তম নদী দ্বীপ কোনটি?

  • (ক) সাগরদ্বীপ
  • (খ) মাজুলি
  • (গ) নিউমুর
  • (ঘ) পামবন

৩৩. ‘ডেকান’ কথাটির অর্থ হল –

  • (ক) উত্তর
  • (খ) দক্ষিণ
  • (গ) পূর্ব
  • (ঘ) পশ্চিম

৩৪. ছোটনাগপুর মালভূমির সর্বোচ্চ শৃঙ্গ হল –

  • (ক) পরেশনাথ
  • (খ) ধূপগড়
  • (গ) গুরুশিখর
  • (ঘ) মহেন্দ্রগিরি

৩৫. কচ্ছ শব্দের অর্থ হল –

  • (ক) মরুভূমি
  • (খ) জলময় দেশ
  • (গ) লবণাক্ত ভূমি
  • (ঘ) শুষ্ক অঞ্চল

৩৬. হিমালয় পর্বতমালার একেবারে দক্ষিণের অংশটি হল –

  • (ক) হিমাদ্রি
  • (খ) হিমাচল
  • (গ) শিবালিক
  • (ঘ) টেথিস

৩৭. কর্ণাটক মালভূমির পশ্চিমের পার্বত্য অঞ্চলকে বলে –

  • (ক) ময়দান
  • (খ) মালনাদ
  • (গ) টেরিস
  • (ঘ) কয়াল

৩৮. ভারতের কোন উপকূলে বছরে দুবার বৃষ্টিপাত হয়?

  • (ক) মালাবার উপকূল
  • (খ) কোঙ্কন উপকূল
  • (গ) করমণ্ডল উপকূল
  • (ঘ) উত্তর সরকার উপকূল

৩৯. কুমায়ুন হিমালয়ের হ্রদগুলিকে স্থানীয় ভাষায় বলে –

  • (ক) ধান্দ
  • (খ) তাল
  • (গ) কারেওয়া
  • (ঘ) বিল

৪০. ভারতের একটি হোস্ট (horst) পর্বতের উদাহরণ হল –

  • (ক) আরাবল্লী
  • (খ) নীলগিরি
  • (গ) বিন্ধ্য
  • (ঘ) সাতপুরা

৪১. ভারতের ‘মরুস্থলী’ অঞ্চলের বালুকাময় অংশকে বলে –

  • (ক) হামাদা
  • (খ) রেগ
  • (গ) আর্গ
  • (ঘ) বাগার

৪২. ভারতের ছাদ বলা হয় –

  • (ক) লাদাখ মালভূমিকে
  • (খ) পামির মালভূমিকে
  • (গ) তিব্বত মালভূমিকে
  • (ঘ) ছোটনাগপুর মালভূমিকে

৪৩. ‘কারেওয়া’ মৃত্তিকা দেখা যায় –

  • (ক) কুমায়ুন হিমালয়ে
  • (খ) কাশ্মীর হিমালয়ে
  • (গ) পাঞ্জাব হিমালয়ে
  • (ঘ) নেপাল হিমালয়ে

৪৪. সাতপুরা পর্বতের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ হল –

  • (ক) ধূপগড়
  • (খ) অমরকণ্টক
  • (গ) পরেশনাথ
  • (ঘ) গুরুশিখর

৪৫. ভারতের একটি প্রবাল দ্বীপপুঞ্জের নাম হল –

  • (ক) আন্দামান
  • (খ) নিকোবর
  • (গ) লাক্ষাদ্বীপ
  • (ঘ) সাগরদ্বীপ

৪৬. ‘তরাই’ শব্দের অর্থ হল –

  • (ক) শুষ্ক ভূমি
  • (খ) পাথুরে জমি
  • (গ) জলাভূমি
  • (ঘ) স্যাঁতস্যাঁতে ভূমি

৪৭. ভারতের কোন সমভূমিতে ‘খালের সংখ্যা’ সর্বাধিক?

  • (ক) গাঙ্গেয় সমভূমি
  • (খ) ব্রহ্মপুত্র সমভূমি
  • (গ) পাঞ্জাব-হরিয়ানা সমভূমি
  • (ঘ) উপকূলীয় সমভূমি

৪৮. পশ্চিমঘাট পর্বতমালার অপর নাম হল –

  • (ক) বিন্ধ্য
  • (খ) সাতপুরা
  • (গ) সহ্যাদ্রি
  • (ঘ) মলয়াদ্রি

৪৯. ভারতের বৃহত্তম সমভূমি হল –

  • (ক) ব্রহ্মপুত্র সমভূমি
  • (খ) উপকূলীয় সমভূমি
  • (গ) গাঙ্গেয় সমভূমি
  • (ঘ) রাজস্থান সমভূমি

৫০. ভারতের একটি লাভা মালভূমির উদাহরণ হল –

  • (ক) ছোটনাগপুর মালভূমি
  • (খ) মালব মালভূমি
  • (গ) কর্ণাটক মালভূমি
  • (ঘ) মেঘালয় মালভূমি

৫১. নীলগিরি পর্বতের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ কোনটি?

  • (ক) আনাইমুদি
  • (খ) দোদাবেতা
  • (গ) মহেন্দ্রগিরি
  • (ঘ) কলসুবাই

৫২. গঙ্গা নদীর তীরে অবস্থিত নয় কোন শহর?

  • (ক) কানপুর
  • (খ) পাটনা
  • (গ) বারাণসী
  • (ঘ) লখনউ

৫৩. ভারতের একটি পর্বত-বেষ্টিত মালভূমি হল –

  • (ক) কর্ণাটক
  • (খ) লাদাখ
  • (গ) ছোটনাগপুর
  • (ঘ) মেঘালয়

৫৪. ‘র’ শব্দের অর্থ কী?

  • (ক) পাথুরে জমি
  • (খ) উর্বর জমি
  • (গ) ক্ষয়প্রাপ্ত ভূমি
  • (ঘ) বালুকাময় ভূমি

৫৫. ভারতের কোন উপকূলে কয়াল দেখা যায়?

  • (ক) কোঙ্কন উপকূল
  • (খ) করমণ্ডল উপকূল
  • (গ) মালাবার উপকূল
  • (ঘ) উত্তর সরকার উপকূল

৫৬. ‘রুরকেল্লা’ স্টিল প্ল্যান্ট কোন মালভূমিতে অবস্থিত?

  • (ক) দাক্ষিণাত্য
  • (খ) ছোটনাগপুর
  • (গ) মালব
  • (ঘ) কর্ণাটক

৫৭. ভারতের দুটি নদীর মধ্যবর্তী ভূভাগকে কী বলে?

  • (ক) দোয়াב
  • (খ) ভাবর
  • (গ) তরাই
  • (ঘ) খাদার

৫৮. ভারতের কোন অংশে ‘ডুয়ার্স’ দেখা যায়?

  • (ক) কাশ্মীর হিমালয়
  • (খ) কুমায়ুন হিমালয়
  • (গ) পূর্ব হিমালয়
  • (ঘ) পশ্চিম হিমালয়

৫৯. ভারতের কোন মালভূমি ‘টেবিল ল্যান্ড’ নামে পরিচিত?

  • (ক) লাদাখ মালভূমি
  • (খ) দাক্ষিণাত্য মালভূমি
  • (গ) ছোটনাগপুর মালভূমি
  • (ঘ) মালব মালভূমি

৬০. ভারতের কোন ভূপ্রাকৃতিক বিভাগটি গন্ডোয়ানা ল্যান্ডের অংশ?

  • (ক) উত্তরের পার্বত্য অঞ্চল
  • (খ) উত্তরের সমভূমি অঞ্চল
  • (গ) উপদ্বীপীয় মালভূমি অঞ্চল
  • (ঘ) উপকূলীয় সমভূমি অঞ্চল

৬১. অমরকণ্টক শৃঙ্গ থেকে কোন নদীর উৎপত্তি হয়েছে?

  • (ক) গোদাবরী
  • (খ) মহানদী
  • (গ) নর্মদা
  • (ঘ) তাপ্তি

৬২. ভারতের শীতল মরুভূমি কোনটি?

  • (ক) থর
  • (খ) কচ্ছের রান
  • (গ) লাদাখ
  • (ঘ) স্পিতি উপত্যকা

৬৩. আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ হল –

  • (ক) মাউন্ট হ্যারিয়েট
  • (খ) মাউন্ট থুলিয়ার
  • (গ) স্যাডল পিক
  • (ঘ) মাউন্ট ডায়াভোলো

৬৪. ‘ভ্যালি অফ ফ্লাওয়ার্স’ কোন হিমালয়ে অবস্থিত?

  • (ক) কাশ্মীর হিমালয়
  • (খ) পাঞ্জাব হিমালয়
  • (গ) কুমায়ুন হিমালয়
  • (ঘ) আসাম হিমালয়

৬৫. ভারতের বৃহত্তম সমভূমি বদ্বীপ কোনটি?

  • (ক) গোদাবরী বদ্বীপ
  • (খ) মহানদী বদ্বীপ
  • (গ) কাবেরী বদ্বীপ
  • (ঘ) গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র বদ্বীপ

৬৬. ভারতের কোন মালভূমিকে ‘ভারতের রুর’ বলা হয়?

  • (ক) মালব
  • (খ) দাক্ষিণাত্য
  • (গ) কর্ণাটক
  • (ঘ) ছোটনাগপুর

৬৭. পূর্বাচলের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ কোনটি?

  • (ক) দাফাবুম
  • (খ) সারামতী
  • (গ) ব্লু মাউন্টেন
  • (ঘ) পাটকাই বুম

৬৮. ভারতের একটি ব্যবচ্ছিন্ন মালভূমির উদাহরণ হল –

  • (ক) লাদাখ মালভূমি
  • (খ) কর্ণাটক মালভূমি
  • (গ) ছোটনাগপুর মালভূমি
  • (ঘ) মালব মালভূমি

৬৯. কোন উপকূল ‘ভারতের শস্য ভাণ্ডার’ নামে পরিচিত?

  • (ক) কোঙ্কন উপকূল
  • (খ) মালাবার উপকূল
  • (গ) করমণ্ডল উপকূল
  • (ঘ) অন্ধ্র উপকূল

৭০. ভারতের কোন ভূ-প্রাকৃতিক বিভাগটি নবীনতম?

  • (ক) উপদ্বীপীয় মালভূমি
  • (খ) উত্তরের পার্বত্য অঞ্চল
  • (গ) উত্তরের সমভূমি অঞ্চল
  • (ঘ) উপকূলীয় সমভূমি

খ) অতি-সংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্নাবলী (SAQ) – মান ১ (৬০টি)

১. ভারতের সর্বোচ্চ মালভূমির নাম কী?

উত্তর: লাদাখ মালভূমি।

২. দুন কী?

উত্তর: হিমাচল ও শিবালিক হিমালয়ের মধ্যবর্তী দীর্ঘ ও সংকীর্ণ উপত্যকাগুলিকে দুন বলে। যেমন – দেরাদুন।

৩. কয়াল কী?

উত্তর: মালাবার উপকূলের উপহ্রদ বা লেগুনগুলিকে স্থানীয় ভাষায় কয়াল বলে। যেমন – ভেম্বানাদ।

৪. ভারতের একটি প্রবাল দ্বীপের নাম লেখো।

উত্তর: লাক্ষাদ্বীপ।

৫. ভাবর কী?

উত্তর: শিবালিকের পাদদেশে নুড়ি, পাথর, বালি ইত্যাদি জমে যে অমসৃণ ও সচ্ছিদ্র ভূভাগ তৈরি হয়েছে, তাকে ভাবর বলে।

৬. পশ্চিমঘাট পর্বতমালার সর্বোচ্চ শৃঙ্গের নাম কী?

উত্তর: আনাইমুদি।

৭. ভারতের বৃহত্তম সমভূমির নাম কী?

উত্তর: উত্তরের গাঙ্গেয় সমভূমি।

৮. ভারতের একটি জীবন্ত আগ্নেয়গিরির নাম লেখো।

উত্তর: ব্যারেন দ্বীপ।

৯. ভারতের প্রাচীনতম পর্বতের নাম কী?

উত্তর: আরাবল্লী পর্বত।

১০. ‘ডেকান ট্র্যাপ’ কোন শিলা দ্বারা গঠিত?

উত্তর: ব্যাসল্ট শিলা।

১১. ‘মরুস্থলী’ কী?

উত্তর: রাজস্থান মরুভূমির পশ্চিমের প্রায় বালুকাময় অংশকে মরুস্থলী বলে।

১২. থর মরুভূমির লবণাক্ত হ্রদগুলিকে কী বলে?

উত্তর: ধান্দ বা রান।

১৩. ভারতের কোন রাজ্যে লোকটাক হ্রদ অবস্থিত?

উত্তর: মণিপুর।

১৪. ভারতের বৃহত্তম মিষ্টি জলের হ্রদ কোনটি?

উত্তর: উলার হ্রদ (জম্মু ও কাশ্মীর)।

১৫. খাদার ও ভাঙ্গরের মধ্যে কোনটি বেশি উর্বর?

উত্তর: খাদার।

১৬. ‘সহ্যাদ্রি’ কোন পর্বতমালার অপর নাম?

উত্তর: পশ্চিমঘাট পর্বতমালার।

১৭. ভারতের একটি গ্রস্ত উপত্যকার নাম লেখো।

উত্তর: নর্মদা নদীর উপত্যকা।

১৮. ভারতের সর্বোচ্চ গিরিপথ কোনটি?

উত্তর: खारदुंग লা।

১৯. ভারতের কোন উপকূলে পুলিকট হ্রদ অবস্থিত?

উত্তর: করমণ্ডল উপকূলে।

২০. ‘কারেওয়া’ কী?

উত্তর: কাশ্মীর উপত্যকায় হ্রদের তলদেশে সঞ্চিত পলিস্তরকে কারেওয়া বলে, যা জাফরান চাষের জন্য বিখ্যাত।

২১. মালনাদ কী?

উত্তর: কর্ণাটক মালভূমির পশ্চিমের পাহাড়ি ও ঢেউখেলানো অঞ্চলকে স্থানীয় ভাষায় মালনাদ বলে।

২২. ‘রান’ কী?

উত্তর: গুজরাটের কচ্ছ উপদ্বীপের লবণাক্ত, কর্দমাক্ত নিচু জলাভূমিকে রান বলে।

২৩. ভারতের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কোনটি?

উত্তর: চেন্নাইয়ের মেরিনা বিচ।

২৪. শিবালিক ও হিমাচল হিমালয় কোন চ্যুতি দ্বারা বিচ্ছিন্ন?

উত্তর: প্রধান সীমান্ত চ্যুতি (Main Boundary Fault)।

২৫. ভারতের কোন রাজ্যকে ‘ভারতের আপেল রাজ্য’ বলা হয়?

উত্তর: হিমাচল প্রদেশ।

২৬. ভারতের কোন রাজ্য জাফরান চাষের জন্য বিখ্যাত?

উত্তর: জম্মু ও কাশ্মীর।

২৭. কোন দুটি নদীর মাঝে দোab অবস্থিত?

উত্তর: গঙ্গা ও যমুনা নদীর মাঝে।

২৮. ভারতের কোন মালভূমিকে ‘ভারতের রুর’ বলা হয়?

উত্তর: ছোটনাগপুর মালভূমি।

২৯. পূর্বাচলের একটি পাহাড়ের নাম লেখো।

উত্তর: পাটকাই বা নাগা পাহাড়।

৩০. ভারতের কোন মালভূমিতে ল্যাটেরাইট মৃত্তিকা দেখা যায়?

উত্তর: ছোটনাগপুর মালভূমি বা মেঘালয় মালভূমিতে।

৩১. ভারতের বৃহত্তম উপদ্বীপীয় নদী কোনটি?

উত্তর: গোদাবরী।

৩২. ভারতের একটি নিষ্ক্রিয় আগ্নেয়গিরির নাম কী?

উত্তর: নারকোন্ডাম।

৩৩. ‘ভুর’ কী?

উত্তর: গাঙ্গেয় সমভূমির পশ্চিমাংশে বায়ুর ক্ষয়কার্যের ফলে সৃষ্ট ছোট ছোট বালিয়াড়িকে ভুর বলে।

৩৪. কোন প্রণালী ভারতকে শ্রীলঙ্কা থেকে বিচ্ছিন্ন করেছে?

উত্তর: পক প্রণালী।

৩৫. ভারতের বৃহত্তম ভূ-প্রাকৃতিক বিভাগ কোনটি?

উত্তর: উপদ্বীপীয় মালভূমি অঞ্চল।

৩৬. হিমাদ্রি হিমালয়ের অপর নাম কী?

উত্তর: গ্রেটার হিমালয় বা উচ্চ হিমালয়।

৩৭. পামির মালভূমিকে ‘পৃথিবীর ছাদ’ বলা হয় কেন?

উত্তর: কারণ এটি বিশ্বের সর্বোচ্চ মালভূমি।

৩৮. ভারতের কোন রাজ্যে সম্বর হ্রদ অবস্থিত?

উত্তর: রাজস্থান।

৩৯. কোন উপকূলের অপর নাম পায়ান ঘাট?

উত্তর: করমণ্ডল উপকূল।

৪০. ভারতের একটি গিরিসঙ্কটের (gorge) উদাহরণ দাও।

উত্তর: সিন্ধু বা শতদ্রু নদীর গিরিসঙ্কট।

৪১. ‘বাগার’ কী?

উত্তর: রাজস্থান সমভূমির পূর্বের অর্ধ-মরুভূমি অঞ্চলকে বাগার বলে।

৪২. ভারতের কোন উপকূলে ম্যানগ্রোভ অরণ্য দেখা যায়?

উত্তর: পূর্ব উপকূলে (বিশেষত পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশা)।

৪৩. ভারতের কোন মালভূমি মাকড়সার জালের মতো জলনির্গম প্রণালী প্রদর্শন করে?

উত্তর: ছোটনাগপুর মালভূমি (অমরকণ্টক অঞ্চল)।

৪৪. জোজি লা গিরিপথ কোন দুটি স্থানকে যুক্ত করেছে?

উত্তর: শ্রীনগর ও লেহ।

৪৫. ভারতের কোন ভূ-প্রাকৃতিক বিভাগটি খনিজ তেলে সমৃদ্ধ?

উত্তর: উত্তরের সমভূমি অঞ্চল (বিশেষত আসাম) এবং উপকূলীয় সমভূমি (মুম্বাই হাই)।

৪৬. ‘কলেরা হ্রদ’ কোন দুটি নদীর বদ্বীপের মাঝে অবস্থিত?

উত্তর: গোদাবরী ও কৃষ্ণা।

৪৭. ভারতের কোন রাজ্যে ‘ডুয়ার্স’ সমভূমি দেখা যায়?

উত্তর: পশ্চিমবঙ্গ (আলিপুরদুয়ার ও জলপাইগুড়ি জেলায়)।

৪৮. টেথিস সাগর কী?

উত্তর: হিমালয় পর্বতের উত্থানের আগে গন্ডোয়ানা ল্যান্ড ও আঙ্গারাল্যান্ডের মাঝে অবস্থিত একটি প্রাচীন অগভীর সাগর।

৪৯. কোন শহরকে ‘দাক্ষিণাত্যের রানী’ বলা হয়?

উত্তর: পুনে।

৫০. ভারতের কোন অংশে ‘তাল’ দেখা যায়?

উত্তর: কুমায়ুন হিমালয়ে।

৫১. ছোটনাগপুর মালভূমির সর্বোচ্চ পাহাড় কোনটি?

উত্তর: পরেশনাথ পাহাড়।

৫২. গঙ্গার বদ্বীপ কী ধরনের বদ্বীপ?

উত্তর: ধনুকাকৃতি বদ্বীপ।

৫৩. বিন্ধ্য ও সাতপুরা পর্বতের মাঝে কোন নদী প্রবাহিত?

উত্তর: নর্মদা নদী।

৫৪. কোন মৃত্তিকা ‘রেগুর’ নামে পরিচিত?

উত্তর: কৃষ্ণ মৃত্তিকা।

৫৫. ভারতের কোন রাজ্যে সর্বাধিক কফি উৎপাদিত হয়?

উত্তর: কর্ণাটক।

৫৬. পিরপাঞ্জাল পর্বতশ্রেণী কোন হিমালয়ের অংশ?

উত্তর: হিমাচল হিমালয়।

৫৭. ভারতের দুটি উপকূলীয় রাজ্যের নাম লেখো।

উত্তর: পশ্চিমবঙ্গ ও মহারাষ্ট্র।

৫৮. ‘Luni’ নদীর উৎস কোথায়?

উত্তর: আরাবল্লী পর্বতের কাছে আনা সাগর হ্রদ থেকে।

৫৯. ভারতের কোন রাজ্যে সর্বাধিক লবণাক্ত মৃত্তিকা দেখা যায়?

উত্তর: গুজরাট।

৬০. ভারতের একটি ব্যবচ্ছিন্ন মালভূমির নাম লেখো।

উত্তর: ছোটনাগপুর মালভূমি।


গ) সংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্নাবলী – মান ২ (২৫টি)

১. ভাবর ও তরাই-এর মধ্যে পার্থক্য লেখো।

উত্তর: ভাবর: এটি শিবালিকের পাদদেশে অবস্থিত নুড়ি-পাথরযুক্ত সচ্ছিদ্র অঞ্চল, যেখানে নদী অদৃশ্য হয়ে যায়। তরাই: এটি ভাবরের দক্ষিণে অবস্থিত একটি স্যাঁতস্যাঁতে ও জলাভূমি অঞ্চল, যেখানে ভাবরের লুপ্ত নদীগুলি পুনরায় ভূপৃষ্ঠে আত্মপ্রকাশ করে।

২. পশ্চিমঘাট ও পূর্বঘাট পর্বতমালার দুটি পার্থক্য লেখো।

উত্তর: পশ্চিমঘাট: এটি একটি অবিচ্ছিন্ন পর্বতমালা এবং এর গড় উচ্চতা বেশি (৯০০-১৬০০ মি)। পূর্বঘাট: এটি নদী দ্বারা বিচ্ছিন্ন একটি পর্বতমালা এবং এর গড় উচ্চতা কম (প্রায় ৬০০ মি)।

৩. খাদার ও ভাঙ্গরের মধ্যে পার্থক্য কী?

উত্তর: খাদার: এটি নদীর তীরবর্তী নবীন পলিগঠিত নিচু অঞ্চল, যা প্রতি বছর বন্যার ফলে প্লাবিত হয়। এটি খুব উর্বর। ভাঙ্গর: এটি নদী থেকে দূরে অবস্থিত প্রাচীন পলিগঠিত উঁচু অঞ্চল, যা সাধারণত প্লাবিত হয় না। এটি খাদারের চেয়ে কম উর্বর।

৪. দুন উপত্যকা কীভাবে সৃষ্টি হয়?

উত্তর: হিমালয় পর্বত উত্থানের সময় হিমাচল ও শিবালিক হিমালয়ের মাঝের অংশে নদী দ্বারা বাহিত পলি, বালি, নুড়ি ইত্যাদি জমে কিছু হ্রদের সৃষ্টি হয়। পরবর্তীকালে এই হ্রদগুলি শুকিয়ে গিয়ে যে দীর্ঘ ও প্রশস্ত উপত্যকা তৈরি করে, তাকে দুন বলে। যেমন – দেরাদুন।

৫. ডেকান ট্র্যাপ কী?

উত্তর: প্রায় ৬-৭ কোটি বছর আগে ক্রিটেশিয়াস যুগে উপদ্বীপীয় ভারতের উত্তর-পশ্চিম অংশে বিদার অগ্ন্যুৎপাতের ফলে নির্গত লাভা বিশাল অঞ্চল জুড়ে সঞ্চিত হয়ে যে সিঁড়ির ধাপের মতো ভূমিরূপ তৈরি করেছে, তাকে ডেকান ট্র্যাপ বলে। এটি মূলত মহারাষ্ট্র মালভূমিতে দেখা যায়।

৬. ‘কচ্ছের রান’ বলতে কী বোঝায়?

উত্তর: গুজরাটের কচ্ছ উপদ্বীপের উত্তর ও পূর্ব দিকে অবস্থিত লবণাক্ত, কর্দমাক্ত, অগভীর জলাভূমিকে ‘কচ্ছের রান’ বলে। বর্ষাকালে এটি জলে ডুবে থাকে এবং অন্য সময়ে শুকিয়ে গিয়ে সাদা লবণের আস্তরণে ঢেকে যায়।

৭. মালনাদ ও ময়দান কী?

উত্তর: কর্ণাটক মালভূমির দুটি ভূপ্রাকৃতিক ভাগ।
মালনাদ: পশ্চিমের পাহাড়ি, ঢেউখেলানো, ঘন অরণ্যে ঢাকা অঞ্চলকে স্থানীয় ভাষায় মালনাদ (পাহাড়ের দেশ) বলে।
ময়দান: পূর্বের মৃদু তরঙ্গায়িত, প্রায় সমতল ও শুষ্ক অঞ্চলকে ময়দান বলে।

৮. ভারতের দ্বীপপুঞ্জগুলির দুটি বৈশিষ্ট্য লেখো।

উত্তর: ১. বঙ্গোপসাগরের আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ মূলত সমুদ্রের নীচে থাকা পর্বতের চূড়া এবং আগ্নেয় প্রকৃতির। ২. আরব সাগরের লাক্ষাদ্বীপপুঞ্জ সম্পূর্ণরূপে প্রবাল বা কোরাল দ্বারা গঠিত।

৯. ভারতের সমভূমি অঞ্চলের দুটি অর্থনৈতিক গুরুত্ব লেখো।

উত্তর: ১. এই অঞ্চলের উর্বর পলিমাটি কৃষিকাজের জন্য অত্যন্ত উপযোগী, তাই এটি ভারতের ‘শস্য ভাণ্ডার’ নামে পরিচিত। ২. সমতল ভূপ্রকৃতির জন্য এখানে উন্নত পরিবহন ব্যবস্থা (সড়ক ও রেলপথ) এবং শিল্প ও জনবসতি গড়ে উঠেছে।

১০. ‘কারেওয়া’ মৃত্তিকার গুরুত্ব কী?

উত্তর: কাশ্মীর উপত্যকায় প্রাপ্ত কারেওয়া মৃত্তিকা অত্যন্ত উর্বর। এই মৃত্তিকা জাফরান, আপেল, আখরোট, আমন্ড ইত্যাদি মূল্যবান ফসল চাষের জন্য বিখ্যাত, যা এই অঞ্চলের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করেছে।

১১. পূর্ব উপকূল ও পশ্চিম উপকূলের মধ্যে পার্থক্য লেখো।

উত্তর: পূর্ব উপকূল: এটি অপেক্ষাকৃত চওড়া এবং এখানে বড় বড় নদীর বদ্বীপ (যেমন – গঙ্গা, গোদাবরী) দেখা যায়। এটি একটি উত্থিত উপকূল। পশ্চিম উপকূল: এটি সংকীর্ণ এবং এখানে বদ্বীপ প্রায় নেই বললেই চলে। এটি একটি নিমজ্জিত উপকূল।

১২. ‘টেরিস’ ও ‘কয়াল’-এর পার্থক্য কী?

উত্তর: টেরিস: এটি করমণ্ডল উপকূলের লাল রঙের বালিয়াড়িকে স্থানীয় ভাষায় বলা হয়। কয়াল: এটি মালাবার উপকূলের উপহ্রদ বা লেগুনগুলিকে স্থানীয় ভাষায় বলা হয়।

১৩. হিমালয়কে ‘নবীন ভঙ্গিল পর্বত’ বলা হয় কেন?

উত্তর: অন্যান্য প্রাচীন পর্বতের (যেমন – আরাবল্লী) তুলনায় হিমালয় অনেক নবীন (টার্সিয়ারি যুগে সৃষ্ট) এবং এর গঠনকার্য এখনও চলছে। ভারতীয় পাত ও ইউরেশীয় পাতের সংঘর্ষের ফলে টেথিস সাগরের পলি ভাঁজ খেয়ে এই পর্বতের সৃষ্টি হয়েছে। তাই একে নবীন ভঙ্গিল পর্বত বলা হয়।

১৪. ভারতের মরু অঞ্চলের দুটি বৈশিষ্ট্য লেখো।উত্তর: ১. এখানে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ অত্যন্ত কম (বার্ষিক ২৫ সেমি-এর কম) এবং উষ্ণতা খুব বেশি। ২. চলমান বালিয়াড়ি বা ধরিয়ান, লবণাক্ত হ্রদ বা ধান্দ এখানকার প্রধান ভূমিরূপ।

১৫. হিমালয়ের দুটি গিরিপথের নাম ও তাদের সংযোগকারী স্থান লেখো।

উত্তর: ১. জোজি লা: এটি শ্রীনগর ও লেহকে যুক্ত করেছে। ২. নাথু লা: এটি সিকিম ও তিব্বতকে (চিন) যুক্ত করেছে।

১৬. ‘ভারতের খনিজ ভাণ্ডার’ কাকে এবং কেন বলা হয়?

উত্তর: ছোটনাগপুর মালভূমিকে ‘ভারতের খনিজ ভাণ্ডার’ বলা হয়। কারণ এই অঞ্চলে ভারতের বেশিরভাগ গুরুত্বপূর্ণ খনিজ সম্পদ যেমন – কয়লা, লোহা, অভ্র, ম্যাঙ্গানিজ, বক্সাইট ইত্যাদি পাওয়া যায়।

১৭. ভারতের দুটি লবণাক্ত জলের হ্রদের নাম লেখো।

উত্তর: ভারতের দুটি লবণাক্ত জলের হ্রদ হল – রাজস্থানের সম্বর হ্রদ এবং লাদাখের প্যাংগং সো।

১৮. ভারতের দুটি ভূ-প্রাকৃতিক বিভাগের নাম লেখো যা গন্ডোয়ানা ল্যান্ডের অংশ।

উত্তর: উপদ্বীপীয় মালভূমি অঞ্চল এবং মেঘালয় মালভূমি—এই দুটি ভূ-প্রাকৃতিক বিভাগ প্রাচীন গন্ডোয়ানা ল্যান্ডের অংশ।

১৯. ‘ডুয়ার্স’ কী? এর গুরুত্ব কী?

উত্তর: পূর্ব হিমালয়ের পাদদেশে তিস্তা নদীর পূর্বদিকের অংশকে ‘ডুয়ার্স’ বলে। ‘ডুয়ার্স’ শব্দের অর্থ দরজা বা প্রবেশদ্বার। এই অঞ্চলটি চা চাষের জন্য বিখ্যাত এবং ভুটানে প্রবেশের পথ হিসেবে কাজ করে।

২০. গাঙ্গেয় সমভূমির ভূ-প্রাকৃতিক বিভাগগুলির নাম লেখো।

উত্তর: গাঙ্গেয় সমভূমিকে তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়:
১. উচ্চ গাঙ্গেয় সমভূমি (উত্তরপ্রদেশের পশ্চিমাংশ)
২. মধ্য গাঙ্গেয় সমভূমি (উত্তরপ্রদেশের পূর্বাংশ ও বিহার)
৩. নিম্ন গাঙ্গেয় সমভূমি (পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশ)।

২১. আরাবল্লী পর্বতকে ক্ষয়জাত পর্বত বলা হয় কেন?

উত্তর: আরাবল্লী পর্বত একসময় হিমালয়ের মতো উঁচু ভঙ্গিল পর্বত ছিল। কিন্তু লক্ষ লক্ষ বছর ধরে নদী, বায়ু ইত্যাদি প্রাকৃতিক শক্তির দ্বারা ক্রমাগত ক্ষয় পেয়ে এটি বর্তমানে একটি নিচু ও বিচ্ছিন্ন পাহাড়ে পরিণত হয়েছে। তাই একে ক্ষয়জাত পর্বত বলা হয়।

২২. ভারতের ‘শীতল মরুভূমি’র দুটি বৈশিষ্ট্য লেখো।

উত্তর: ভারতের শীতল মরুভূমি লাদাখের দুটি বৈশিষ্ট্য হল:
১. এখানে বৃষ্টিপাত অত্যন্ত কম হওয়ায় উদ্ভিদ প্রায় জন্মায় না।
২. শীতকালে তাপমাত্রা হিমাঙ্কের অনেক নীচে নেমে যায় এবং প্রচণ্ড ঠান্ডা থাকে।

২৩. ভারতের উপদ্বীপীয় মালভূমি ও হিমালয় পর্বতের মধ্যে পার্থক্য কী?

উত্তর: উপদ্বীপীয় মালভূমি: এটি প্রাচীন গন্ডোয়ানা ল্যান্ডের অংশ এবং এর শিলা খুব কঠিন। হিমালয় পর্বত: এটি নবীন ভঙ্গিল পর্বত এবং এর শিলা পাললিক ও নরম প্রকৃতির। মালভূমি একটি স্থিতিশীল ভূখণ্ড, কিন্তু হিমালয় ভূমিকম্পপ্রবণ।

২৪. ‘তাল’ কী? এটি কোথায় দেখা যায়?

উত্তর: ‘তাল’ কথার অর্থ হ্রদ। কুমায়ুন হিমালয় অঞ্চলে অবস্থিত অসংখ্য হ্রদকে স্থানীয় ভাষায় তাল বলা হয়। যেমন – নৈনিতাল, সাততাল, ভীমতাল ইত্যাদি।

২৫. ‘পূর্বাচল’ বলতে কী বোঝায়?

উত্তর: ভারতের উত্তর-পূর্ব দিকে অবস্থিত হিমালয়ের প্রসারিত অংশকে পূর্বাচল বলা হয়। এটি অরুণাচল প্রদেশ থেকে মিজোরাম পর্যন্ত বিস্তৃত। পাটকাই, নাগা, লুসাই, গারো, খাসি, জয়ন্তিয়া ইত্যাদি পাহাড়গুলি এর অন্তর্গত।


ঘ) সংক্ষিপ্ত রচনাধর্মী প্রশ্নাবলী – মান ৩ (২৫টি)

১. উত্তরের পার্বত্য অঞ্চলের ভূপ্রাকৃতিক গুরুত্ব আলোচনা করো।

উত্তর: ভারতের জীবনে উত্তরের পার্বত্য অঞ্চলের গুরুত্ব অপরিসীম:
ক) জলবায়ু নিয়ন্ত্রণ: হিমালয় পর্বতমালা মধ্য এশিয়ার তীব্র শীতল বায়ুকে ভারতে প্রবেশ করতে বাধা দেয়।また、দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ুকে বাধা দিয়ে ভারতে বৃষ্টিপাত ঘটাতে সাহায্য করে।
খ) নদনদীর উৎস: গঙ্গা, সিন্ধু, ব্রহ্মপুত্রের মতো ভারতের প্রধান নিত্যবহ নদীগুলির উৎস হিমালয়ের হিমবাহ।
গ) প্রতিরক্ষা: উত্তরের এই সুউচ্চ পর্বতমালা প্রাকৃতিক প্রাচীরের মতো কাজ করে দেশকে বিদেশি আক্রমণ থেকে রক্ষা করে।

২. দাক্ষিণাত্য মালভূমির ভূপ্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য লেখো।

উত্তর: দাক্ষিণাত্য মালভূমি ভারতের বৃহত্তম মালভূমি। এর বৈশিষ্ট্যগুলি হল:
১. অবস্থান ও আকৃতি: এটি নর্মদা নদীর দক্ষিণে অবস্থিত একটি ত্রিভুজাকৃতি মালভূমি।
২. সীমানা: এর উত্তরে সাতপুরা, মহাকাল ও মহাদেব পর্বত; পশ্চিমে পশ্চিমঘাট এবং পূর্বে পূর্বঘাট পর্বতমালা অবস্থিত।
৩. শিলা: এই মালভূমির উত্তর-পশ্চিম অংশ (ডেকান ট্র্যাপ) ব্যাসল্ট শিলা দ্বারা এবং বাকি অংশ প্রাচীন গ্রানাইট ও নিস শিলা দ্বারা গঠিত।
৪. ভূমির ঢাল: এর গড় উচ্চতা ৬০০-৯০০ মিটার এবং ভূমির ঢাল পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে।

৩. ভারতের পশ্চিম উপকূলীয় সমভূমির বিভাগগুলির নাম লেখো ও সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও।

উত্তর: ভারতের পশ্চিম উপকূলীয় সমভূমিকে তিনটি ভাগে ভাগ করা যায়:
ক) কোঙ্কন উপকূল: গুজরাট থেকে গোয়া পর্যন্ত বিস্তৃত এই উপকূল অপেক্ষাকৃত চওড়া এবং এখানে অনেক ছোট ছোট নদী দেখা যায়। মুম্বাই বন্দর এই উপকূলে অবস্থিত।
খ) কর্ণাটক বা কানাড়া উপকূল: গোয়া থেকে ম্যাঙ্গালোর পর্যন্ত বিস্তৃত এই উপকূল অত্যন্ত সংকীর্ণ ও পাথুরে।
গ) মালাবার উপকূল: ম্যাঙ্গালোর থেকে কন্যাকুমারী পর্যন্ত বিস্তৃত এই উপকূলে অনেক উপহ্রদ বা কয়াল দেখা যায়। এটি নারকেল ও মশলা চাষের জন্য বিখ্যাত।

৪. প্রস্থ বরাবর হিমালয়ের শ্রেণিবিভাগ করো।

উত্তর: দক্ষিণ থেকে উত্তরে বা প্রস্থ বরাবর হিমালয়কে চারটি সমান্তরাল পর্বতশ্রেণিতে ভাগ করা যায়:
ক) শিবালিক বা বহির্হিমালয়: এটি হিমালয়ের সবচেয়ে দক্ষিণের এবং নবীনতম অংশ। এর গড় উচ্চতা ৬০০-১৫০০ মিটার।
খ) হিমাচল বা মধ্য হিমালয়: শিবালিকের উত্তরে অবস্থিত এই অংশের গড় উচ্চতা ৩৫০০-৪৫০০ মিটার। পিরপাঞ্জাল, ধৌলাধর ইত্যাদি পর্বতশ্রেণি এখানে অবস্থিত।
গ) হিমাদ্রি বা উচ্চ হিমালয়: এটি হিমালয়ের সবচেয়ে উত্তরের এবং সর্বোচ্চ অংশ। এর গড় উচ্চতা ৬০০০ মিটারের বেশি। এভারেস্ট, কাঞ্চনজঙ্ঘা, নন্দাদেবীর মতো শৃঙ্গগুলি এখানেই অবস্থিত।
ঘ) টেথিস বা তিব্বতীয় হিমালয়: হিমাদ্রির উত্তরে অবস্থিত এই অংশটি ভারতের লাদাখ এবং তিব্বতে বিস্তৃত।

৫. ভারতের উত্তরের সমভূমি অঞ্চল অর্থনৈতিকভাবে উন্নত কেন?

উত্তর: ভারতের উত্তরের সমভূমি অঞ্চল অর্থনৈতিকভাবে উন্নত কারণ:
১. উর্বর মৃত্তিকা: এখানকার পলিমাটি অত্যন্ত উর্বর, যা ধান, গম, আঁখের মতো ফসল চাষের জন্য আদর্শ। তাই এই অঞ্চল ভারতের ‘শস্য ভাণ্ডার’ নামে পরিচিত।
২. জলের প্রাচুর্য: গঙ্গা, যমুনা, ব্রহ্মপুত্রের মতো নিত্যবহ নদীগুলি সেচ ও পানীয় জলের জোগান দেয়।
৩. উন্নত পরিবহন ও যোগাযোগ: সমতল ভূপ্রকৃতির কারণে এখানে সড়কপথ, রেলপথ ও যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলা সহজ হয়েছে, যা শিল্প ও বাণিজ্যের প্রসারে সাহায্য করেছে।
৪. ঘন জনবসতি: অনুকূল পরিবেশের জন্য এই অঞ্চল অত্যন্ত ঘনবসতিপূর্ণ, যা সুলভ শ্রমিকের জোগান দেয়।

৬. পশ্চিমঘাট ও পূর্বঘাট পর্বতমালার মধ্যে পার্থক্য লেখো।

উত্তর: | বৈশিষ্ট্য | পশ্চিমঘাট পর্বতমালা | পূর্বঘাট পর্বতমালা | |—|—|—| | **অবস্থান** | দাক্ষিণাত্য মালভূমির পশ্চিমে আরব সাগরের সমান্তরালে অবস্থিত। | দাক্ষিণাত্য মালভূমির পূর্বে বঙ্গোপসাগরের সমান্তরালে অবস্থিত। | | **প্রকৃতি** | এটি একটি অবিচ্ছিন্ন ও খাড়া পর্বতমালা। | এটি নদী দ্বারা ক্ষয়প্রাপ্ত একটি বিচ্ছিন্ন ও কম খাড়া পর্বতমালা। | | **উচ্চতা** | এর গড় উচ্চতা বেশি (৯০০-১৬০০ মিটার)। | এর গড় উচ্চতা কম (প্রায় ৬০০ মিটার)। | | **সর্বোচ্চ শৃঙ্গ** | আনাইমুদি। | জিন্দাগাডা। |

৭. ভারতের মরু অঞ্চলের সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও।

উত্তর: আরাবল্লী পর্বতের পশ্চিমে, মূলত রাজস্থান রাজ্যে, ভারতের উষ্ণ মরুভূমি বা থর মরুভূমি অবস্থিত।
বৈশিষ্ট্য:
১. এখানে বার্ষিক বৃষ্টিপাত ২৫ সেমি-এর কম হওয়ায় জলবায়ু অত্যন্ত শুষ্ক ও চরমভাবাপন্ন।
২. এখানকার প্রধান ভূমিরূপ হল বালিয়াড়ি বা ধরিয়ান এবং লবণাক্ত জলের হ্রদ বা ধান্দ।
৩. এই অঞ্চলের প্রধান নদী হল লুনি, যা একটি অন্তর্বাহিনী নদী।
৪. এই অঞ্চলের পশ্চিমাংশের বালুকাময় অংশকে ‘মরুস্থলী’ এবং পূর্বাংশের পাথুরে ও ঢেউখেলানো অংশকে ‘বাগার’ বলে।

৮. টিকা লেখো: আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ।

উত্তর: অবস্থান: এটি বঙ্গোপসাগরে অবস্থিত ভারতের একটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল।
গঠন: প্রায় ৫৭২টি দ্বীপ নিয়ে গঠিত এই দ্বীপপুঞ্জটি মূলত সমুদ্রের নীচে থাকা আরাকান ইয়োমা পর্বতের নিমজ্জিত অংশের চূড়া।
ভূপ্রকৃতি: এখানকার দ্বীপগুলি আগ্নেয় প্রকৃতির। ভারতের একমাত্র সক্রিয় আগ্নেয়গিরি ব্যারেন এবং সুপ্ত আগ্নেয়গিরি নারকোন্ডাম এখানেই অবস্থিত। এর সর্বোচ্চ শৃঙ্গ হল স্যাডল পিক।
বিভাজন: ১০ ডিগ্রি চ্যানেল আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জকে পৃথক করেছে। এর রাজধানী হল পোর্ট ব্লেয়ার।

৯. উত্তর-পূর্ব ভারতের পার্বত্য অঞ্চলের (পূর্বাচল) বিবরণ দাও।

উত্তর: ভারতের উত্তর-পূর্বে অবস্থিত হিমালয়ের প্রসারিত অংশকে পূর্বাচল বলে। এটি মূলত অরুণাচল প্রদেশ, নাগাল্যান্ড, মণিপুর ও মিজোরাম রাজ্যে বিস্তৃত।
প্রধান পাহাড়: এখানকার প্রধান পাহাড়গুলি হল – পাটকাই বুম, নাগা পাহাড়, লুসাই পাহাড়, মণিপুর পাহাড় ইত্যাদি। এছাড়া মেঘালয় মালভূমিতে গারো, খাসি ও জয়ন্তিয়া পাহাড় রয়েছে।
বৈশিষ্ট্য: এই পাহাড়গুলির উচ্চতা খুব বেশি নয় (গড়ে ১৫০০-৩০০০ মিটার)। এগুলি ঘন চিরহরিৎ অরণ্যে ঢাকা। এখানকার জলবায়ু আর্দ্র এবং এটি জীববৈচিত্র্যে অত্যন্ত সমৃদ্ধ।

১০. ছোটনাগপুর মালভূমির ভূপ্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য লেখো।

উত্তর: ছোটনাগপুর মালভূমি উপদ্বীপীয় মালভূমির উত্তর-পূর্ব দিকে অবস্থিত।
ভূপ্রকৃতি: এটি একটি ব্যবচ্ছিন্ন মালভূমি, যা দামোদর, সুবর্ণরেখা ইত্যাদি নদী দ্বারা ক্ষয়প্রাপ্ত হয়েছে। এর গড় উচ্চতা প্রায় ৭০০ মিটার।
প্রধান অংশ: এর প্রধান অংশগুলি হল – রাঁচি মালভূমি, হাজারিবাগ মালভূমি এবং রাজমহল পাহাড়। এখানকার গ্রানাইট শিলা দ্বারা গঠিত গোলাকার মাথাযুক্ত পাহাড়গুলিকে ‘প্যাট’ ভূমিরূপ বলে।
সর্বোচ্চ শৃঙ্গ: এই মালভূমির সর্বোচ্চ শৃঙ্গ হল পরেশনাথ (১৩৬৫ মিটার)।
গুরুত্ব: এই অঞ্চলটি খনিজ সম্পদে অত্যন্ত সমৃদ্ধ হওয়ায় একে ‘ভারতের খনিজ ভাণ্ডার’ বলা হয়।

১১. ভাবর, তরাই, ভাঙ্গর ও খাদারের সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও।

উত্তর: এগুলি উত্তরের সমভূমির চারটি প্রধান ভূপ্রাকৃতিক বিভাগ:
ভাবর: শিবালিকের পাদদেশে নুড়ি-পাথরযুক্ত সচ্ছিদ্র অঞ্চল, যেখানে নদীগুলি জলস্রোত হারিয়ে ফেলে।
তরাই: ভাবরের দক্ষিণে অবস্থিত স্যাঁতস্যাঁতে ও জলাভূমি অঞ্চল, যেখানে ভাবরের লুপ্ত নদীগুলি পুনরায় ভূপৃষ্ঠে আত্মপ্রকাশ করে।
ভাঙ্গর: নদী থেকে দূরে অবস্থিত প্রাচীন পলিগঠিত উঁচু অঞ্চল, যা সাধারণত বন্যা প্লাবিত হয় না।
খাদার: নদীর তীরবর্তী নবীন পলিগঠিত নিচু অঞ্চল, যা প্রতি বছর বন্যার ফলে নতুন পলি জমে অত্যন্ত উর্বর হয়।

১২. ভারতের পশ্চিম উপকূলীয় সমভূমির সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও।

উত্তর: ভারতের পশ্চিম উপকূলীয় সমভূমি আরব সাগরের তীরে কচ্ছের রান থেকে কন্যাকুমারী পর্যন্ত বিস্তৃত। এটি তুলনামূলকভাবে সংকীর্ণ। এর প্রধান বিভাগগুলি হল:
১. গুজরাট উপকূল: এটি সবচেয়ে চওড়া এবং কচ্ছ ও কাথিয়াবাড় উপদ্বীপ নিয়ে গঠিত।
২. কোঙ্কন উপকূল: দমন থেকে গোয়া পর্যন্ত বিস্তৃত এই অংশে মুম্বাই বন্দর অবস্থিত।
৩. কর্ণাটক বা কানাড়া উপকূল: এটি সংকীর্ণ ও পাথুরে।
৪. মালাবার উপকূল: এটি সবচেয়ে দক্ষিণে অবস্থিত এবং অসংখ্য কয়াল বা লেগুনের জন্য বিখ্যাত।

১৩. দুন ও ডুয়ার্সের মধ্যে পার্থক্য কী?

উত্তর: দুন: এটি পশ্চিম ও মধ্য হিমালয়ে (হিমাচল ও শিবালিকের মাঝে) অবস্থিত একটি দীর্ঘ ও প্রশস্ত উপত্যকা। যেমন – দেরাদুন।
ডুয়ার্স: এটি পূর্ব হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থিত তিস্তা নদীর পূর্বদিকের অংশকে বলা হয়। ‘ডুয়ার্স’ কথার অর্থ দরজা।
দুন হল একটি উপত্যকা, আর ডুয়ার্স হল একটি পাদদেশীয় সমভূমি। দুন উত্তরাখণ্ড ও হিমাচল প্রদেশে, আর ডুয়ার্স পশ্চিমবঙ্গ ও আসামে দেখা যায়।

১৪. ভারতের উপদ্বীপীয় মালভূমির অর্থনৈতিক গুরুত্ব কী?

উত্তর: ভারতের উপদ্বীপীয় মালভূমির অর্থনৈতিক গুরুত্ব অপরিসীম:
১. খনিজ সম্পদ: এই অঞ্চলটি কয়লা, লোহা, ম্যাঙ্গানিজ, বক্সাইট, অভ্র ইত্যাদি খনিজ সম্পদে অত্যন্ত সমৃদ্ধ, যা দেশের শিল্পায়নের ভিত্তি।
২. কৃষিকাজ: এখানকার কৃষ্ণ মৃত্তিকা কার্পাস ও অন্যান্য ফসল চাষের জন্য বিখ্যাত।
৩. বনজ সম্পদ: এখানকার অরণ্য থেকে মূল্যবান কাঠ (শাল, সেগুন) ও অন্যান্য বনজ সম্পদ পাওয়া যায়।
৪. জলবিদ্যুৎ: এখানকার খরস্রোতা নদীগুলিতে বাঁধ দিয়ে জলবিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়।

১৫. কারাকোরাম পর্বতশ্রেণীর সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও।

উত্তর: কারাকোরাম পর্বতশ্রেণী হিমালয়ের উত্তরে অবস্থিত ট্রান্স-হিমালয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
অবস্থান: এটি ভারতের লাদাখ অঞ্চলে অবস্থিত।
সর্বোচ্চ শৃঙ্গ: ভারতের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ K2 বা গডউইন অস্টিন (৮,৬১১ মিটার) এই পর্বতশ্রেণীতে অবস্থিত।
হিমবাহ: পৃথিবীর দ্বিতীয় দীর্ঘতম হিমবাহ সিয়াচেন সহ অনেক বড় বড় হিমবাহ (যেমন – বালটোরা, বিয়াফো) এখানে দেখা যায়।
গুরুত্ব: এটি ভারতের উত্তর সীমানা নির্ধারণকারী একটি দুর্গম ও উচ্চ পার্বত্য অঞ্চল।

১৬. রাজস্থান সমভূমির ভূপ্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্যগুলি কী কী?

উত্তর: রাজস্থান সমভূমি আরাবল্লী পর্বতের পশ্চিমে অবস্থিত। এর প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলি হল:
১. এই অঞ্চলের পশ্চিমাংশ (মরুস্থলী) প্রায় সম্পূর্ণরূপে বালুকাময় এবং এখানে অনেক চলমান বালিয়াড়ি বা ধরিয়ান দেখা যায়।
২. পূর্বাংশের (বাগার) ভূমিরূপ কিছুটা পাথুরে ও ঢেউখেলানো।
৩. এখানকার লবণাক্ত জলের হ্রদগুলিকে ধান্দ বা রান বলে। যেমন – সম্বর হ্রদ।
৪. এই অঞ্চলের একমাত্র উল্লেখযোগ্য নদী হল লুনি, যা একটি অন্তর্বাহিনী নদী।

১৭. পূর্বঘাট পর্বতমালার ভূপ্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য লেখো।

উত্তর: পূর্বঘাট পর্বতমালা দাক্ষিণাত্য মালভূমির পূর্ব দিকে অবস্থিত।
১. প্রকৃতি: এটি একটি অত্যন্ত প্রাচীন ও ক্ষয়প্রাপ্ত পর্বতমালা। মহানদী, গোদাবরী, কৃষ্ণা, কাবেরী ইত্যাদি নদী দ্বারা এটি বিভিন্ন স্থানে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
২. বিস্তার: এটি ওড়িশা থেকে তামিলনাড়ু পর্যন্ত বিস্তৃত।
৩. উচ্চতা: এর গড় উচ্চতা পশ্চিমঘাটের চেয়ে কম (প্রায় ৬০০ মিটার)।
৪. সর্বোচ্চ শৃঙ্গ: এর সর্বোচ্চ শৃঙ্গ হল জিন্দাগাডা (১৬৯০ মিটার)।

১৮. ভারতের জনজীবনে উত্তরের সমভূমির প্রভাব আলোচনা করো।

উত্তর: ভারতের জনজীবনে উত্তরের সমভূমির প্রভাব অত্যন্ত গভীর:
১. কৃষিকেন্দ্রিক জীবন: উর্বর পলিমাটি ও জলের প্রাচুর্যের কারণে এই অঞ্চলটি কৃষিতে অত্যন্ত উন্নত। এখানকার বেশিরভাগ মানুষের প্রধান জীবিকা কৃষিকাজ।
২. ঘন জনবসতি: কৃষিকাজ, শিল্প ও উন্নত পরিবহনের সুবিধার জন্য এই অঞ্চলটি ভারতের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ।
৩. সভ্যতা ও সংস্কৃতির পীঠস্থান: প্রাচীনকাল থেকেই সিন্ধু, গঙ্গা, যমুনার তীরে অনেক সভ্যতা ও সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে। এটি ভারতের ইতিহাস, ধর্ম ও সংস্কৃতির কেন্দ্রস্থল।

১৯. ‘মালব মালভূমি’র সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও।

উত্তর: মালব মালভূমি মধ্য ভারতে অবস্থিত একটি লাভা গঠিত মালভূমি।
অবস্থান: এর উত্তরে আরাবল্লী পর্বত এবং দক্ষিণে বিন্ধ্য পর্বত অবস্থিত।
ভূপ্রকৃতি: এটি মূলত ব্যাসল্ট শিলা দ্বারা গঠিত। চম্বল, বেতোয়া ইত্যাদি নদী এই অঞ্চলের উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে ক্ষয় সাধন করেছে, ফলে এখানে ‘ব্যাডল্যান্ড’ বা ‘র’ ভূমিরূপ দেখা যায়।
মৃত্তিকা: এখানকার মৃত্তিকা কৃষ্ণ মৃত্তিকা প্রকৃতির, যা তুলা চাষের জন্য উপযোগী।

২০. গাঙ্গেয় বদ্বীপ অঞ্চলের সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও।

উত্তর: গাঙ্গেয় বদ্বীপ অঞ্চল বা সুন্দরবন অঞ্চল হল পৃথিবীর বৃহত্তম বদ্বীপ।
অবস্থান: এটি নিম্ন গাঙ্গেয় সমভূমির দক্ষিণে পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশে বিস্তৃত।
গঠন: গঙ্গা (পদ্মা), ব্রহ্মপুত্র (যমুনা), মেঘনা ও তাদের অসংখ্য শাখা নদীর পলি সঞ্চয়ের ফলে এটি গঠিত হয়েছে।
বৈশিষ্ট্য: এটি একটি সক্রিয় বদ্বীপ, যার গঠনকার্য এখনও চলছে। এই অঞ্চলটি অসংখ্য ছোট ছোট দ্বীপ, নদী, খাঁড়ি ও ম্যানগ্রোভ অরণ্যের জন্য বিখ্যাত। এখানকার ম্যানগ্রোভ অরণ্য ‘সুন্দরবন’ নামে পরিচিত।

২১. মেঘালয় মালভূমির সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও।

উত্তর: মেঘালয় মালভূমি উপদ্বীপীয় মালভূমির একটি বিচ্ছিন্ন অংশ, যা রাজমহল-গারো গ্যাপ দ্বারা মূল ভূখণ্ড থেকে পৃথক হয়েছে।
অবস্থান: এটি ভারতের উত্তর-পূর্বে অবস্থিত।
ভূপ্রকৃতি: এটি একটি প্রাচীন মালভূমি। গারো, খাসি ও জয়ন্তিয়া হল এখানকার প্রধান তিনটি পাহাড়। খাসি পাহাড়ে অবস্থিত শিলং শৃঙ্গ (১৯৬১ মিটার) এই অঞ্চলের সর্বোচ্চ অংশ।
জলবায়ু: এই মালভূমির দক্ষিণ ঢালে অবস্থিত মৌসিনরাম বিশ্বের সর্বাধিক বৃষ্টিপাতযুক্ত স্থান।

২২. ভারতের পূর্ব উপকূলীয় সমভূমির বিভাগগুলির নাম লেখো ও সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও।

উত্তর: ভারতের পূর্ব উপকূলীয় সমভূমিকে তিনটি ভাগে ভাগ করা যায়:
ক) উৎকল উপকূল: ওড়িশায় অবস্থিত এই উপকূলে চিল্কা উপহ্রদ রয়েছে।
খ) অন্ধ্র উপকূল: এটি গোদাবরী ও কৃষ্ণা নদীর বদ্বীপ নিয়ে গঠিত এবং কৃষিকাজে খুব উন্নত। কোলেরু হ্রদ এখানে অবস্থিত।
গ) করমণ্ডল উপকূল: তামিলনাড়ুতে অবস্থিত এই উপকূলে পুলিকট হ্রদ রয়েছে এবং এখানে বছরে দুবার বৃষ্টিপাত হয়।

২৩. হিমালয়ের পার্বত্য অঞ্চলে ভূমিক্ষয় ও ধসের কারণ কী?উত্তর: হিমালয়ের পার্বত্য অঞ্চলে ভূমিক্ষয় ও ধসের প্রধান কারণগুলি হল:
১. প্রাকৃতিক কারণ: হিমালয় একটি নবীন ভঙ্গিল পর্বত হওয়ায় এটি ভূমিকম্পপ্রবণ। প্রবল বৃষ্টিপাত এবং নদীর তীব্র স্রোতও ভূমিক্ষয়ের অন্যতম কারণ।
২. মনুষ্যসৃষ্ট কারণ: নির্বিচারে বনভূমি ধ্বংস, অবৈজ্ঞানিকভাবে রাস্তাঘাট ও বাড়িঘর নির্মাণ, ঝুম চাষ এবং অনিয়ন্ত্রিত পর্যটনের ফলে পাহাড়ের ঢাল আলগা হয়ে যায়, যা ধসের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।

২৪. ভারতের পশ্চিম ও পূর্ব হিমালয়ের মধ্যে পার্থক্য লেখো।

উত্তর: পশ্চিম হিমালয়: এটি সিন্ধু নদ থেকে কালী নদী পর্যন্ত বিস্তৃত। এটি অপেক্ষাকৃত চওড়া এবং এখানে বৃষ্টিপাত কম হয়। কাশ্মীর, পাঞ্জাব ও কুমায়ুন হিমালয় এর অংশ।
পূর্ব হিমালয়: এটি কালী নদী থেকে ব্রহ্মপুত্র নদ পর্যন্ত বিস্তৃত। এটি অপেক্ষাকৃত সংকীর্ণ এবং এখানে বৃষ্টিপাত অনেক বেশি হয়। নেপাল, সিকিম, ভুটান ও অরুণাচল হিমালয় এর অংশ।

২৫. ‘la’ শব্দের অর্থ কী? ভারতের দুটি বিখ্যাত ‘লা’-এর নাম লেখো।

উত্তর: তিব্বতি ভাষায় ‘লা’ শব্দের অর্থ হল গিরিপথ বা পাস (Pass)।
ভারতের দুটি বিখ্যাত ‘লা’ বা গিরিপথ হল:
১. জোজি লা (Zoji La): এটি জম্মু ও কাশ্মীরে অবস্থিত, যা শ্রীনগরকে লেহ-এর সঙ্গে যুক্ত করেছে।
২. নাথু লা (Nathu La): এটি সিকিমে অবস্থিত, যা ভারতকে চিনের তিব্বতের সঙ্গে যুক্ত করেছে।


ঙ) রচনাধর্মী প্রশ্নাবলী – মান ৫ (১০টি)

১. ভারতের ভূপ্রকৃতির বৈচিত্র্য আলোচনা করো এবং প্রধান ভূপ্রাকৃতিক বিভাগগুলির নাম লেখো।

উত্তর:
ভূপ্রকৃতির বৈচিত্র্য: ভারত ভূপ্রকৃতিগতভাবে অত্যন্ত বৈচিত্র্যময় একটি দেশ। এর একদিকে যেমন রয়েছে বিশ্বের সর্বোচ্চ পর্বতমালা হিমালয়, তেমনই অন্যদিকে রয়েছে প্রাচীন মালভূমি, সুবিশাল সমভূমি, দীর্ঘ উপকূল এবং দ্বীপপুঞ্জ।
১. পার্বত্য অঞ্চল: উত্তরে সুউচ্চ, বরফাবৃত হিমালয় পর্বতমালা অবস্থিত।
২. সমভূমি: হিমালয়ের দক্ষিণে অবস্থিত সিন্ধু-গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র বিধৌত উর্বর সমভূমি বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম সমভূমি।
৩. মালভূমি: ভারতের দক্ষিণ অংশটি প্রাচীন শিলা দ্বারা গঠিত উপদ্বীপীয় মালভূমি, যা খনিজ সম্পদে পরিপূর্ণ।
৪. মরুভূমি: পশ্চিমে রয়েছে শুষ্ক থর মরুভূমি।
৫. উপকূলীয় সমভূমি: পূর্ব ও পশ্চিমে রয়েছে সংকীর্ণ উপকূলীয় সমভূমি।
৬. দ্বীপপুঞ্জ: বঙ্গোপসাগরে আন্দামান ও নিকোবর এবং আরব সাগরে লাক্ষাদ্বীপপুঞ্জ অবস্থিত।
প্রধান ভূপ্রাকৃতিক বিভাগ: ভারতের ভূপ্রকৃতিকে প্রধানত ৫টি ভাগে ভাগ করা হয়:
১. উত্তরের পার্বত্য অঞ্চল।
২. উত্তরের সমভূমি অঞ্চল।
৩. উপদ্বীপীয় মালভূমি অঞ্চল।
৪. উপকূলীয় সমভূমি অঞ্চল।
৫. দ্বীপপুঞ্জ।

২. দৈর্ঘ্য বরাবর হিমালয়ের শ্রেণিবিভাগ করে প্রত্যেকটির বিবরণ দাও।

উত্তর:
নদীর অবস্থান অনুসারে পশ্চিম থেকে পূর্বে হিমালয়কে চারটি প্রধান ভাগে ভাগ করা হয়:
ক) পশ্চিম হিমালয়: সিন্ধু নদ থেকে কালী নদী পর্যন্ত বিস্তৃত এই অংশটিকে আবার তিনটি উপবিভাগে ভাগ করা হয়:
১. কাশ্মীর হিমালয়: এখানে কারাকোরাম, লাদাখ, জাস্কার, পিরপাঞ্জাল পর্বতশ্রেণি এবং উলার, ডালের মতো হ্রদ রয়েছে। কারেওয়া মৃত্তিকা ও জাফরান চাষ এখানকার বৈশিষ্ট্য।
২. পাঞ্জাব ও হিমাচল হিমালয়: রাভি থেকে শতদ্রু নদী পর্যন্ত বিস্তৃত এই অংশে কুলু, কাংড়া উপত্যকা দেখা যায়।
৩. কুমায়ুন হিমালয়: শতদ্রু থেকে কালী নদী পর্যন্ত বিস্তৃত এই অংশে নন্দাদেবী, ত্রিশূলের মতো শৃঙ্গ এবং নৈনিতাল, ভীমতালের মতো হ্রদ (তাল) রয়েছে।
খ) মধ্য হিমালয়: কালী নদী থেকে তিস্তা নদী পর্যন্ত বিস্তৃত এই অংশটি মূলত নেপালে অবস্থিত। বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্ট এখানেই অবস্থিত।
গ) পূর্ব হিমালয়: তিস্তা নদী থেকে ব্রহ্মপুত্র নদ পর্যন্ত বিস্তৃত এই অংশটি সিকিম, ভুটান ও অরুণাচল প্রদেশ জুড়ে অবস্থিত। কাঞ্চনজঙ্ঘা এই অংশের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ। এখানে বৃষ্টিপাত খুব বেশি হয়।
ঘ) উত্তর-পূর্ব পার্বত্য অঞ্চল (পূর্বাচল): ব্রহ্মপুত্রের পূর্বে অবস্থিত পাটকাই, নাগা, লুসাই ইত্যাদি পাহাড় নিয়ে এই অঞ্চল গঠিত।

৩. ভারতের উত্তরের সমভূমি অঞ্চলের ভূপ্রাকৃতিক শ্রেণিবিভাগ করে আলোচনা করো।

উত্তর:
সিন্ধু, গঙ্গা ও ব্রহ্মপুত্র নদী এবং তাদের উপনদীগুলির পলি সঞ্চয়ের ফলে ভারতের উত্তরের সুবিশাল সমভূমি অঞ্চল গঠিত হয়েছে। ভূপ্রকৃতি অনুসারে একে দুটি প্রধান ভাগে ভাগ করা যায়:
ক) আঞ্চলিক বিভাগ:
১. রাজস্থান সমভূমি: আরাবল্লীর পশ্চিমে অবস্থিত এই সমভূমির পশ্চিমাংশ বালুকাময় (মরুস্থলী) এবং পূর্বাংশ অর্ধ-শুষ্ক (বাগার)।
২. পাঞ্জাব-হরিয়ানা সমভূমি: শতদ্রু, বিপাশা, ইরাবতী ইত্যাদি নদীর পলি দ্বারা গঠিত। এখানকার নদী মধ্যবর্তী উর্বর অংশকে ‘দোয়াב’ বলে।
৩. গাঙ্গেয় সমভূমি: এটি ভারতের বৃহত্তম সমভূমি। একে উচ্চ, মধ্য ও নিম্ন গাঙ্গেয় সমভূমিতে ভাগ করা হয়।
৪. ব্রহ্মপুত্র সমভূমি: আসামে অবস্থিত এই সমভূমি ব্রহ্মপুত্র নদের পলি দ্বারা গঠিত।
খ) মৃত্তিকার প্রকৃতি অনুসারে বিভাগ:
১. ভাবর: শিবালিকের পাদদেশে অবস্থিত নুড়ি-পাথরযুক্ত সচ্ছিদ্র অঞ্চল।
২. তরাই: ভাবরের দক্ষিণে অবস্থিত স্যাঁতস্যাঁতে, ঘন অরণ্যময় জলাভূমি।
৩. ভাঙ্গর: নদী থেকে দূরে অবস্থিত প্রাচীন পলিগঠিত উঁচু অঞ্চল।
৪. খাদার: নদীর তীরবর্তী নবীন পলিগঠিত উর্বর নিচু অঞ্চল।

৪. উপদ্বীপীয় মালভূমি অঞ্চলের ভূপ্রাকৃতিক বৈচিত্র্য বর্ণনা করো।

উত্তর:
ভারতের উপদ্বীপীয় মালভূমি অঞ্চলটি ভূপ্রকৃতিগতভাবে অত্যন্ত বৈচিত্র্যময়। এটিকে প্রধান দুটি ভাগে ভাগ করা যায়:
ক) মধ্য ভারতের উচ্চভূমি:
১. আরাবল্লী পর্বত: এটি ভারতের প্রাচীনতম ভঙ্গিল পর্বত, যা বর্তমানে ক্ষয়প্রাপ্ত। এর সর্বোচ্চ শৃঙ্গ গুরুশিখর।
২. মালব মালভূমি: আরাবল্লী ও বিন্ধ্য পর্বতের মাঝে অবস্থিত একটি লাভা গঠিত মালভূমি।
৩. বিন্ধ্য ও সাতপুরা পর্বত: বিন্ধ্য একটি ক্ষয়জাত পর্বত এবং সাতপুরা একটি স্তূপ পর্বত। এদের মাঝ দিয়ে নর্মদা নদী গ্রস্ত উপত্যকার মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।
৪. ছোটনাগপুর মালভূমি: এটি একটি ব্যবচ্ছিন্ন মালভূমি এবং খনিজ সম্পদে সমৃদ্ধ। এর সর্বোচ্চ শৃঙ্গ পরেশনাথ।
খ) দাক্ষিণাত্য মালভূমি:
১. মহারাষ্ট্র মালভূমি (ডেকান ট্র্যাপ): ব্যাসল্ট শিলা দ্বারা গঠিত একটি লাভা মালভূমি।
২. কর্ণাটক মালভূমি: এর পশ্চিমের পার্বত্য অংশ ‘মালনাদ’ এবং পূর্বের সমপ্রায় ভূমি ‘ময়দান’ নামে পরিচিত।
৩. তেলেঙ্গানা মালভূমি: এটিও একটি ব্যবচ্ছিন্ন মালভূমি।
৪. পশ্চিমঘাট পর্বতমালা: এটি একটি অবিচ্ছিন্ন পর্বতমালা (সহ্যাদ্রি) যা দাক্ষিণাত্য মালভূমির পশ্চিম সীমানা নির্ধারণ করে। এর সর্বোচ্চ শৃঙ্গ আনাইমুদি।
৫. পূর্বঘাট পর্বতমালা: এটি একটি বিচ্ছিন্ন ও ক্ষয়প্রাপ্ত পর্বতমালা যা পূর্ব সীমানা নির্ধারণ করে। এর সর্বোচ্চ শৃঙ্গ জিন্দাগাডা।

৫. ভারতের পূর্ব উপকূল ও পশ্চিম উপকূলীয় সমভূমির ভূপ্রকৃতির পার্থক্য আলোচনা করো।

উত্তর:
ভারতের পূর্ব উপকূল ও পশ্চিম উপকূলীয় সমভূমির মধ্যে ভূপ্রকৃতিগতভাবে অনেক পার্থক্য দেখা যায়:
| বৈশিষ্ট্য | পূর্ব উপকূলীয় সমভূমি | পশ্চিম উপকূলীয় সমভূমি | |—|—|—| | **বিস্তার** | এটি সুবর্ণরেখা নদীর মোহনা থেকে কন্যাকুমারী পর্যন্ত বিস্তৃত। | এটি কচ্ছের রান থেকে কন্যাকুমারী পর্যন্ত বিস্তৃত। | | **প্রস্থ** | এটি অপেক্ষাকৃত বেশি চওড়া (গড়ে ৮০-১০০ কিমি)। | এটি অপেক্ষাকৃত সংকীর্ণ (গড়ে ১০-৮০ কিমি)। | | **প্রকৃতি** | এটি একটি উত্থিত উপকূল। | এটি একটি নিমজ্জিত উপকূল। | | **বদ্বীপ গঠন** | মহানদী, গোদাবরী, কৃষ্ণা, কাবেরীর মতো বড় বড় নদীগুলি এখানে সুবিশাল বদ্বীপ তৈরি করেছে। | নর্মদা ও তাপ্তির মতো নদীগুলি খাড়ি তৈরি করেছে, এখানে কোনো উল্লেখযোগ্য বদ্বীপ নেই। | | **উপহ্রদ** | এখানে চিল্কা, কোলেরু, পুলিকটের মতো বৃহৎ উপহ্রদ বা লেগুন দেখা যায়। | এখানে কয়াল (যেমন – ভেম্বানাদ) নামক অসংখ্য ছোট ছোট উপহ্রদ দেখা যায়। | | **বালিয়াড়ি** | এখানে বালিয়াড়ির পরিমাণ বেশি। | এখানে বালিয়াড়ির পরিমাণ কম। |

৬. হিমালয় পর্বতমালার অর্থনৈতিক গুরুত্ব আলোচনা করো।

উত্তর:
ভারতের অর্থনীতিতে হিমালয় পর্বতমালার গুরুত্ব অপরিসীম:
১. কৃষি: হিমালয়ের পার্বত্য ঢালে ধাপ কেটে চা, আপেল, কমলালেবু, মশলা ইত্যাদি চাষ করা হয়। এখানকার নদীগুলি থেকে খাল কেটে উত্তরের সমভূমিতে জলসেচ করা হয়।
২. বনজ সম্পদ: হিমালয়ের অরণ্য থেকে শাল, সেগুন, দেবদারু, পাইনের মতো মূল্যবান কাঠ এবং বিভিন্ন ঔষধি গাছ পাওয়া যায়।
৩. খনিজ সম্পদ: হিমালয়ের কিছু অংশে চুনাপাথর, ডলোমাইট, কয়লা ইত্যাদি খনিজ পাওয়া যায়।
৪. জলবিদ্যুৎ: এখানকার খরস্রোতা নদীগুলিতে বাঁধ দিয়ে প্রচুর পরিমাণে জলবিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব।
৫. পর্যটন শিল্প: সিমলা, মুসৌরি, দার্জিলিং, নৈনিতালের মতো মনোরম পর্যটন কেন্দ্রগুলি এবং বদ্রীনাথ, কেদারনাথের মতো তীর্থক্ষেত্রগুলি পর্যটন শিল্পকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে, যা বহু মানুষের কর্মসংস্থান করে।
৬. পশুপালন: পার্বত্য অঞ্চলের তৃণভূমিতে মেষ, ছাগল ইত্যাদি পালন করা হয়।

৭. ভারতের উত্তরের সমভূমি কীভাবে গঠিত হয়েছে? এর ভূপ্রাকৃতিক বৈচিত্র্য লেখো।

উত্তর:
গঠন প্রক্রিয়া: হিমালয় পর্বত উত্থানের সময় পর্বতের দক্ষিণে এবং উপদ্বীপীয় মালভূমির উত্তরে একটি বিশাল গর্ত বা নিম্নভূমির সৃষ্টি হয়। পরবর্তীকালে হিমালয় থেকে সৃষ্ট নদনদী (সিন্ধু, গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র) এবং উপদ্বীপীয় মালভূমি থেকে সৃষ্ট নদীগুলি লক্ষ লক্ষ বছর ধরে পলি সঞ্চয় করে এই গর্তটি ভরাট করে বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম ও উর্বর সমভূমিটি তৈরি করেছে।
ভূপ্রাকৃতিক বৈচিত্র্য:
এই সমভূমির সর্বত্র ভূপ্রকৃতি একরকম নয়। মৃত্তিকার প্রকৃতি অনুসারে একে চারটি ভাগে ভাগ করা যায়:
১. ভাবর: শিবালিকের পাদদেশে অবস্থিত নুড়ি-পাথরযুক্ত অঞ্চল।
২. তরাই: ভাবরের দক্ষিণে অবস্থিত স্যাঁতস্যাঁতে ও ঘন অরণ্যময় জলাভূমি।
৩. ভাঙ্গর: নদী থেকে দূরে অবস্থিত প্রাচীন পলিগঠিত উঁচু অঞ্চল।
৪. খাদার: নদীর তীরবর্তী নবীন পলিগঠিত উর্বর নিচু অঞ্চল, যা প্রতি বছর প্লাবিত হয়।
এছাড়া পাঞ্জাব সমভূমিতে নদী মধ্যবর্তী উর্বর ‘দোয়াב’ এবং গাঙ্গেয় সমভূমির পশ্চিমাংশে ছোট ছোট বালিয়াড়ি বা ‘ভুর’ দেখা যায়।

৮. ভারতের পশ্চিমঘাট পর্বতমালার ভূপ্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য এবং গুরুত্ব আলোচনা করো।

উত্তর:
ভূপ্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য:
১. অবস্থান ও বিস্তার: পশ্চিমঘাট পর্বতমালা বা সহ্যাদ্রি দাক্ষিণাত্য মালভূমির পশ্চিমে আরব সাগরের সমান্তরালে তাপ্তি নদীর মোহনা থেকে কন্যাকুমারী পর্যন্ত প্রায় ১৬০০ কিমি দীর্ঘ।
২. প্রকৃতি: এটি একটি খাড়া ঢালযুক্ত ও অবিচ্ছিন্ন পর্বতমালা, যা কয়েকটি গিরিপথ (থলঘাট, ভোরঘাট, পালঘাট) দ্বারা বিচ্ছিন্ন।
৩. উচ্চতা ও শৃঙ্গ: এর গড় উচ্চতা ৯০০-১৬০০ মিটার। এর সর্বোচ্চ শৃঙ্গ হল আনাইমালাই পর্বতের আনাইমুদি (২৬৯৫ মিটার), যা দক্ষিণ ভারতেরও সর্বোচ্চ শৃঙ্গ।
গুরুত্ব:
১. জলবায়ু নিয়ন্ত্রণ: এটি দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ুকে বাধা দিয়ে পশ্চিম উপকূলে প্রচুর বৃষ্টিপাত ঘটায়। এর পূর্ব ঢালটি বৃষ্টিচ্ছায় অঞ্চলের অন্তর্গত।
২. নদনদীর উৎস: গোদাবরী, কৃষ্ণা, কাবেরীর মতো দক্ষিণ ভারতের প্রধান নদীগুলির উৎস হল পশ্চিমঘাট পর্বতমালা।
৩. জীববৈচিত্র্য: এটি বিশ্বের অন্যতম প্রধান জীববৈচিত্র্য হটস্পট, যা ঘন চিরহরিৎ অরণ্যে ঢাকা।
৪. জলবিদ্যুৎ: এখানকার খরস্রোতা নদীগুলি জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য আদর্শ।

৯. ভারতের মরু অঞ্চলের প্রসারের কারণ এবং তার প্রতিরোধের উপায়গুলি লেখো।

উত্তর:
মরু অঞ্চলের প্রসারের কারণ (মরুভবন):
১. প্রাকৃতিক কারণ: দীর্ঘস্থায়ী খরা, অনাবৃষ্টি এবং বায়ুপ্রবাহের মাধ্যমে বালি উড়ে গিয়ে পার্শ্ববর্তী উর্বর জমিতে জমা হওয়া।
২. মনুষ্যসৃষ্ট কারণ:
ক) নির্বিচারে বৃক্ষচ্ছেদন: গাছপালা মাটিকে ধরে রাখে। গাছ কাটার ফলে মাটি আলগা হয়ে যায় এবং ক্ষয়প্রাপ্ত হয়।
খ) অনিয়ন্ত্রিত পশুচারণ: অতিরিক্ত পশুচারণের ফলে তৃণভূমির আচ্ছাদন নষ্ট হয়ে যায়।
গ) অবৈজ্ঞানিক কৃষিকাজ: ভুল পদ্ধতিতে জলসেচ ও চাষাবাদের ফলে জমির লবণাক্ততা বাড়ে এবং জমি অনুর্বর হয়ে পড়ে।
প্রতিরোধের উপায়:
১. বৃক্ষরোপণ: মরুভূমির প্রান্তে প্রচুর পরিমাণে গাছ লাগিয়ে ‘সবুজ প্রাচীর’ বা ‘Shelter Belt’ তৈরি করা।
২. পশুচারণ নিয়ন্ত্রণ: নিয়ন্ত্রিত পশুচারণের ব্যবস্থা করা।
৩. জল সংরক্ষণ: জল বিভাজিকা উন্নয়ন এবং বৃষ্টির জল সংরক্ষণের মাধ্যমে মাটির আর্দ্রতা বজায় রাখা।
৪. বৈজ্ঞানিক কৃষিপদ্ধতি: বিন্দু সেচ ও স্প্রিংকলার সেচের মতো বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি গ্রহণ করা এবং উপযুক্ত ফসল চাষ করা।

১০. টিকা লেখো: ক) কয়াল খ) রান গ) দুন।

উত্তর:
ক) কয়াল: ভারতের পশ্চিম উপকূলের মালাবার অংশে (কেরালা উপকূল) সমুদ্রের জল স্থলভাগের মধ্যে প্রবেশ করে যে অসংখ্য উপহ্রদ বা লেগুন তৈরি করেছে, তাদের স্থানীয় ভাষায় ‘কয়াল’ বলা হয়। এগুলি অগভীর এবং লবণাক্ত জলের হ্রদ। ভেম্বানাদ ভারতের বৃহত্তম কয়াল। কয়ালগুলি অভ্যন্তরীণ জলপথ, মৎস্য চাষ ও পর্যটনের জন্য বিখ্যাত।
খ) রান: ‘রান’ একটি গুজরাটি শব্দ, যার অর্থ লবণাক্ত কর্দমাক্ত জলাভূমি। গুজরাটের কচ্ছ উপদ্বীপের উত্তর ও পূর্ব দিকে অবস্থিত বিশাল লবণাক্ত ও অগভীর জলাভূমিকে ‘রান’ বলে। এর দুটি অংশ – উত্তরের বৃহৎ রান এবং পূর্বের ক্ষুদ্র রান। বর্ষাকালে এটি জলে ডুবে থাকে এবং অন্য সময় শুকিয়ে গিয়ে সাদা লবণের আস্তরণে ঢেকে যায়।
গ) দুন: হিমালয় পর্বতমালার হিমাচল ও শিবালিক অংশের মাঝখানে অবস্থিত দীর্ঘ, প্রশস্ত ও সমতল তলদেশযুক্ত উপত্যকাগুলিকে ‘দুন’ বলে। পর্বত উত্থানের সময় নদী দ্বারা বাহিত নুড়ি, বালি, পলি জমে এই উপত্যকাগুলি তৈরি হয়েছে। দেরাদুন ভারতের বৃহত্তম দুন উপত্যকা। এই উপত্যকাগুলি কৃষিকাজ ও জনবসতির জন্য অত্যন্ত উপযোগী।

ভারত : ভূপ্রাকৃতি class 10 MCQ, অতি-সংক্ষিপ্ত, ও রচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তর : Class 10 Geography ভারত : ভূপ্রাকৃতি Question Answer

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top