ভারতের স্বাভাবিক উদ্ভিদ class 10
ক) বহুবিকল্পভিত্তিক প্রশ্নাবলী (MCQ) – মান ১ (৭০টি)
১. ভারতের বনভূমি গবেষণাগারটি অবস্থিত –
২. একটি ম্যানগ্রোভ অরণ্যের উদ্ভিদ হল –
৩. ভারতের কোন অরণ্য সর্বাধিক অঞ্চল জুড়ে রয়েছে?
৪. চন্দন গাছ দেখা যায় যে অরণ্যে, তা হল –
৫. শ্বাসমূল ও ঠেস মূল দেখা যায় –
৬. ভারতে সামাজিক বনসৃজন কর্মসূচি শুরু হয় –
৭. ভারতের কোন রাজ্যে অরণ্যের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি?
৮. একটি আলপাইন উদ্ভিদ হল –
৯. ভারতের মরু অঞ্চলের উদ্ভিদকে বলা হয় –
১০. শাল ও সেগুন হল –
১১. ভারতের কোন রাজ্যে শতাংশের হিসাবে অরণ্যের পরিমাণ সর্বাধিক?
১২. ‘বনমহোৎসব’ পালিত হয় –
১৩. বাবলা, ফণীমনসা ইত্যাদি উদ্ভিদ দেখা যায় –
১৪. ভারতের কোন অরণ্যে সিংহ দেখা যায়?
১৫. চিরহরিৎ অরণ্য অঞ্চলে বার্ষিক বৃষ্টিপাতের পরিমাণ হল –
১৬. জরায়ুজ অঙ্কুরোদ্গম দেখা যায় –
১৭. ভারতের একটি বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী অরণ্য হল –
১৮. সরলবর্গীয় অরণ্যের একটি বৈশিষ্ট্য হল –
১৯. কৃষ্ণ মৃত্তিকায় যে অরণ্য বেশি দেখা যায়, তা হল –
২০. কোন অরণ্যের কাঠ সবচেয়ে নরম হয়?
২১. কৃষি বনসৃজন হল –
২২. ভারতের কোন অরণ্যকে ‘মৌসুমী অরণ্য’ বলা হয়?
২৩. রোজউড, মেহগনি, আয়রনউড ইত্যাদি গাছ দেখা যায় –
২৪. ভারতের কোন রাজ্যে বনভূমির পরিমাণ সবচেয়ে কম?
২৫. ‘ভ্যালি অফ ফ্লাওয়ার্স’ জাতীয় উদ্যানটি অবস্থিত –
২৬. ভারতের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ অরণ্য হল –
২৭. কোন উদ্ভিদকে ‘মরুভূমির জাহাজ’ বলা হয়?
২৮. যৌথ বন ব্যবস্থাপনা (JFM) প্রথম শুরু হয় –
২৯. যে অরণ্যে গাছের পাতা ঝরে যায় না, তা হল –
৩০. রোডোডেনড্রন হল একটি –
৩১. ভারতের প্রথম জাতীয় উদ্যান হল –
৩২. পর্ণমোচী অরণ্যকে কটি ভাগে ভাগ করা হয়?
৩৩. ভারতের কোন রাজ্যে সাভানা প্রকৃতির অরণ্য দেখা যায়?
৩৪. একটি লবণাম্বু উদ্ভিদ হল –
৩৫. ‘সাইলেন্ট ভ্যালি’ আন্দোলন হয়েছিল –
৩৬. ভারতের কোন জাতীয় উদ্যানে একশৃঙ্গ গন্ডার দেখা যায়?
৩৭. যে উদ্ভিদের পাতা কাঁটায় রূপান্তরিত হয়, তা হল –
৩৮. ভারতের কোন রাজ্যে চিরহরিৎ অরণ্য দেখা যায়?
৩৯. কোন অরণ্যের কাঠ আসবাবপত্র তৈরির জন্য সবচেয়ে উপযোগী?
৪০. ভারতের জাতীয় উদ্ভিদ কোনটি?
৪১. ‘ঝুম’ চাষ হল এক প্রকার –
৪২. ভারতের কোন রাজ্যে ম্যানগ্রোভ অরণ্যের পরিমাণ সর্বাধিক?
৪৩. ‘চিপকো’ আন্দোলনের নেতা ছিলেন –
৪৪. পর্ণমোচী উদ্ভিদ বছরে নির্দিষ্ট ঋতুতে পাতা ঝরায় কেন?
৪৫. ভারতের কোন রাজ্যে রয়েল বেঙ্গল টাইগার দেখা যায়?
৪৬. কোন অরণ্যের অপর নাম ‘শোলা’?
৪৭. একটি ঔষধী গাছের উদাহরণ হল –
৪৮. ভারতের কোন রাজ্যে বনভূমির পরিমাণ (শতাংশের হিসাবে) সবচেয়ে কম?
৪৯. কোন অরণ্যের উদ্ভিদের পাতা মোমযুক্ত হয়?
৫০. পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার জন্য মোট আয়তনের কত শতাংশ বনভূমি থাকা প্রয়োজন?
৫১. কোন অরণ্যকে ‘বর্ষারণ্য’ বা ‘Rainforest’ বলা হয়?
৫২. হিমালয়ের পাদদেশীয় তরাই অঞ্চলে যে অরণ্য দেখা যায়, তা হল –
৫৩. কোন উদ্ভিদের কাঠ দিয়াশলাই কাঠি তৈরিতে ব্যবহৃত হয়?
৫৪. ‘অ্যাপিকো’ আন্দোলন কোন রাজ্যে হয়েছিল?
৫৫. ভারতের কোন রাজ্যে ‘সাইলেন্ট ভ্যালি’ অবস্থিত?
৫৬. হিমালয়ের কোন অংশে আলপাইন অরণ্য দেখা যায়?
৫৭. কোন অরণ্যের কাঠ সবচেয়ে শক্ত হয়?
৫৮. ভারতের কোন রাজ্যে কাঁটাঝোপ ও গুল্মজাতীয় উদ্ভিদ জন্মায়?
৫৯. কাগজ শিল্পের প্রধান কাঁচামাল আসে –
৬০. একটি সংরক্ষিত বনভূমির উদাহরণ হল –
৬১. কোন অরণ্যের উদ্ভিদ লবণাক্ত জল সহ্য করতে পারে?
৬২. ভারতের জাতীয় বননীতি কবে গৃহীত হয়?
৬৩. ভারতের কোন রাজ্যে ‘পতঙ্গভুক উদ্ভিদ’ দেখা যায়?
৬৪. কোন অরণ্য রেলের স্লিপার তৈরিতে ব্যবহৃত হয়?
৬৫. ‘সবুজ সোনা’ বলা হয় –
৬৬. ভারতের জাতীয় পশু কোনটি?
৬৭. কোন গাছের ছাল ম্যালেরিয়ার ঔষধ তৈরিতে ব্যবহৃত হয়?
৬৮. শুষ্ক পর্ণমোচী অরণ্য দেখা যায় এমন একটি রাজ্য হল –
৬৯. কোন উদ্ভিদের আঠা থেকে ‘তার্পিন তেল’ তৈরি হয়?
৭০. ভারতের একটি বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভ হল –
খ) অতি-সংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্নাবলী (SAQ) – মান ১ (৬০টি)
১. স্বাভাবিক উদ্ভিদ কাকে বলে?
উত্তর: যে সমস্ত উদ্ভিদ মানুষের হস্তক্ষেপ ছাড়াই কোনো অঞ্চলের প্রাকৃতিক পরিবেশে স্বাভাবিকভাবে জন্মায় ও বেড়ে ওঠে, তাদের স্বাভাবিক উদ্ভিদ বলে।
২. ভারতের অরণ্য গবেষণাগারটি কোথায় অবস্থিত?
উত্তর: উত্তরাখণ্ডের দেরাদুনে।
৩. একটি ম্যানগ্রোভ উদ্ভিদের নাম লেখো।
উত্তর: সুন্দরী বা গরান।
৪. শ্বাসমূল দেখা যায় কোন উদ্ভিদের?
উত্তর: ম্যানগ্রোভ বা লবণাম্বু উদ্ভিদের।
৫. ভারতের কোন অরণ্যকে ‘মৌসুমী অরণ্য’ বলা হয়?
উত্তর: ক্রান্তীয় পর্ণমোচী অরণ্যকে।
৬. জেরোফাইট কী?
উত্তর: মরু অঞ্চলের শুষ্ক পরিবেশে জন্মানো কাঁটাযুক্ত উদ্ভিদকে জেরোফাইট বলে।
৭. ভারতের কোন রাজ্যে বনভূমির পরিমাণ সবচেয়ে বেশি?
উত্তর: মধ্যপ্রদেশ।
৮. সামাজিক বনসৃজন কী?
উত্তর: সমাজের উদ্যোগে ও অংশগ্রহণে পতিত বা অব্যবহৃত জমিতে গাছ লাগিয়ে বনভূমি তৈরি করাকে সামাজিক বনসৃজন বলে।
৯. একটি আলপাইন উদ্ভিদের উদাহরণ দাও।
উত্তর: জুনিপার বা রোডোডেনড্রন।
১০. কোন অরণ্যে শাল ও সেগুন গাছ জন্মায়?
উত্তর: ক্রান্তীয় পর্ণমোচী অরণ্যে।
১১. জরায়ুজ অঙ্কুরোদ্গম কী?
উত্তর: মাতৃগাছে ফল থাকা অবস্থাতেই ফলের মধ্যে বীজের অঙ্কুরোদ্গম হওয়াকে জরায়ুজ অঙ্কুরোদ্গম বলে।
১২. ভারতের কোন রাজ্যে শতাংশের হিসাবে বনভূমি সর্বাধিক?
উত্তর: মিজোরাম।
১৩. বনমহোৎসব কবে পালিত হয়?
উত্তর: জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে।
১৪. সরলবর্গীয় অরণ্যের একটি বৈশিষ্ট্য লেখো।
উত্তর: এই অরণ্যের গাছগুলির আকৃতি মোচার মতো এবং পাতাগুলি সুচের মতো হয়।
১৫. ভারতের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ অরণ্য কোনটি?
উত্তর: সুন্দরবন।
১৬. হ্যালোফাইট কী?
উত্তর: লবণাক্ত মাটিতে জন্মানো উদ্ভিদকে হ্যালোফাইট বা লবণাম্বু উদ্ভিদ বলে।
১৭. ‘বন সংরক্ষণ আইন’ কবে পাস হয়?
উত্তর: ১৯৮০ সালে।
১৮. ভারতের একটি চিরহরিৎ অরণ্য অঞ্চলের নাম লেখো।
উত্তর: পশ্চিমঘাট পর্বতের পশ্চিম ঢাল বা আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ।
১৯. কৃষি বনসৃজন কী?
উত্তর: কৃষিজমির পাশে, বাঁধের ধারে বা ব্যক্তিগত জমিতে ফসল উৎপাদনের পাশাপাশি গাছ লাগানোকে কৃষি বনসৃজন বলে।
২০. কোন অরণ্যের কাঠ নরম প্রকৃতির হয়?
উত্তর: সরলবর্গীয় অরণ্যের।
২১. ঠেস মূল কোন উদ্ভিদের বৈশিষ্ট্য?
উত্তর: ম্যানগ্রোভ উদ্ভিদের।
২২. ভারতের কোন রাজ্যে গির অরণ্য অবস্থিত?
উত্তর: গুজরাট।
২৩. কোন উদ্ভিদের পাতা কাঁটায় রূপান্তরিত হয়?
উত্তর: মরু উদ্ভিদের (যেমন – ফণীমনসা)।
২৪. যৌথ বন ব্যবস্থাপনা (JFM) প্রথম কোথায় শুরু হয়?
উত্তর: পশ্চিমবঙ্গের পশ্চিম মেদিনীপুরের আড়াবাড়ি অরণ্যে।
২৫. একটি পর্ণমোচী উদ্ভিদের নাম লেখো।
উত্তর: শাল বা সেগুন।
২৬. ভারতের জাতীয় বননীতি অনুযায়ী কত শতাংশ বনভূমি থাকা উচিত?
উত্তর: ৩৩ শতাংশ।
২৭. কোন অরণ্যের কাঠ আসবাবপত্র তৈরিতে বেশি ব্যবহৃত হয়?
উত্তর: পর্ণমোচী অরণ্যের কাঠ।
২৮. সুন্দরবনের প্রধান উদ্ভিদ কোনটি?
উত্তর: সুন্দরী গাছ।
২৯. ভারতের প্রথম বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভ কোনটি?
উত্তর: নীলগিরি বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভ।
৩০. ‘চিপকো’ শব্দের অর্থ কী?
উত্তর: জড়িয়ে ধরা।
৩১. কোন গাছের আঠা থেকে ধুনো তৈরি হয়?
উত্তর: শাল গাছের আঠা থেকে।
৩২. পর্ণমোচী উদ্ভিদ পাতা ঝরায় কেন?
উত্তর: শুষ্ক ঋতুতে বাষ্পমোচন রোধ করে জলের অপচয় কমানোর জন্য।
৩৩. ভারতের একটি সংরক্ষিত বনভূমির নাম লেখো।
উত্তর: গরুমারা জাতীয় উদ্যান।
৩৪. ‘শোলা’ অরণ্য কোথায় দেখা যায়?
উত্তর: দক্ষিণ ভারতের নীলগিরি, আনাইমালাই পর্বতের অধিক উচ্চতায়।
৩৫. কোন উদ্ভিদ কাগজ শিল্পের প্রধান কাঁচামাল?
উত্তর: সরলবর্গীয় উদ্ভিদ (যেমন – পাইন, ফার) এবং বাঁশ।
৩৬. ভারতের কোন রাজ্যে সর্বাধিক ম্যানগ্রোভ অরণ্য রয়েছে?
উত্তর: পশ্চিমবঙ্গ।
৩৭. FRI-এর পুরো নাম কী?
উত্তর: Forest Research Institute.
৩৮. কোন অরণ্যের উদ্ভিদের শিকড় মাটির অনেক গভীরে যায়?
উত্তর: মরু উদ্ভিদের।
৩৯. ভারতের কোন রাজ্যে কাজিরাঙা জাতীয় উদ্যান অবস্থিত?
উত্তর: আসাম।
৪০. একটি চিরসবুজ গাছের নাম লেখো।
উত্তর: রোজউড বা মেহগনি।
৪১. ভারতের জাতীয় পশু বাঘ সংরক্ষণের জন্য গৃহীত প্রকল্পের নাম কী?
উত্তর: ব্যাঘ্র প্রকল্প বা Project Tiger (১৯৭৩)।
৪২. ভারতের কোন রাজ্যে বনভূমির পরিমাণ (আয়তনে) সবচেয়ে কম?
উত্তর: হরিয়ানা।
৪৩. ‘চিপকো’ আন্দোলন কোথায় হয়েছিল?
উত্তর: উত্তরাখণ্ডে (তৎকালীন উত্তরপ্রদেশ)।
৪৪. কোন অরণ্যে গাছের পাতাগুলি মোমযুক্ত হয়?
উত্তর: মরু অরণ্যের উদ্ভিদের।
৪৫. কোন গাছের কাঠ নৌকা তৈরির জন্য বিখ্যাত?
উত্তর: সুন্দরী গাছের কাঠ।
৪৬. ভারতের একটি ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানের নাম লেখো।
উত্তর: সুন্দরবন বা নন্দাদেবী বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভ।
৪৭. কোন গাছের পাতা সুচালো হয়?
উত্তর: সরলবর্গীয় গাছের (যেমন – পাইন)।
৪৮. কোন অরণ্যে গাছের ঘনত্ব সবচেয়ে বেশি?
উত্তর: ক্রান্তীয় চিরহরিৎ অরণ্যে।
৪৯. ভারতের কোন কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে বনভূমির পরিমাণ সবচেয়ে বেশি?
উত্তর: আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ।
৫০. কোন মৃত্তিকা ম্যানগ্রোভ অরণ্যের জন্য আদর্শ?
উত্তর: লবণাক্ত ও কর্দমাক্ত মৃত্তিকা।
৫১. একটি অর্থকরী বনজ সম্পদের নাম লেখো।
উত্তর: কাঠ বা মধু।
৫২. কোন অরণ্যকে ‘বর্ষারণ্য’ বলা হয়?
উত্তর: ক্রান্তীয় চিরহরিৎ অরণ্যকে।
৫৩. কোন গাছের ছাল থেকে কুইনাইন পাওয়া যায়?
উত্তর: সিঙ্কোনা গাছের ছাল থেকে।
৫৪. ‘অরণ্য সপ্তাহ’ কবে পালিত হয়?
উত্তর: ১৪ই থেকে ২০শে জুলাই।
৫৫. ভারতের কোন রাজ্যে কানহা জাতীয় উদ্যান অবস্থিত?
উত্তর: মধ্যপ্রদেশ।
৫৬. কোন ধরনের অরণ্যকে ‘স্বাভাবিক উদ্ভিদের জঙ্গল’ বলা হয়?
উত্তর: ক্রান্তীয় চিরহরিৎ অরণ্যকে।
৫৭. ‘অ্যাপিকো’ শব্দের অর্থ কী?
উত্তর: জড়িয়ে ধরা (কন্নড় ভাষায়)।
৫৮. কোন অরণ্যের কাঠ খুব হালকা হয়?
উত্তর: সরলবর্গীয় অরণ্যের কাঠ।
৫৯. ভারতের কোন রাজ্যে সিমলিপাল জাতীয় উদ্যান অবস্থিত?
উত্তর: ওড়িশা।
৬০. একটি ঔষধি গাছের নাম লেখো।
উত্তর: সর্পগন্ধা বা নিম।
গ) সংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্নাবলী – মান ২ (২৫টি)
১. সামাজিক বনসৃজনের দুটি উদ্দেশ্য লেখো।
উত্তর: ১. পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করা এবং মৃত্তিকা ক্ষয় রোধ করা। ২. গ্রামীণ মানুষের জন্য জ্বালানি কাঠ, ফল ও পশুখাদ্যের জোগান দেওয়া এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা।
২. ম্যানগ্রোভ অরণ্যের দুটি বৈশিষ্ট্য লেখো।
উত্তর: ১. এই অরণ্যের উদ্ভিদের শ্বাসমূল (নিউম্যাটোফোর) ও ঠেস মূল দেখা যায়। ২. এখানকার উদ্ভিদে জরায়ুজ অঙ্কুরোদ্গম হয়।
৩. ভারতের অরণ্য সংরক্ষণের দুটি প্রধান উপায় লেখো।
উত্তর: ১. আইন প্রণয়ন: কঠোর আইন প্রণয়ন করে নির্বিচারে গাছ কাটা ও চোরাচালান বন্ধ করা। ২. বনসৃজন: সামাজিক বনসৃজন ও কৃষি বনসৃজনের মতো প্রকল্পের মাধ্যমে প্রচুর পরিমাণে গাছ লাগানো।
৪. ক্রান্তীয় চিরহরিৎ ও ক্রান্তীয় পর্ণমোচী অরণ্যের দুটি পার্থক্য লেখো।
উত্তর: চিরহরিৎ: এখানে ২০০ সেমি-এর বেশি বৃষ্টিপাত হয় এবং গাছগুলির পাতা সারা বছর সবুজ থাকে। পর্ণমোচী: এখানে ১০০-২০০ সেমি বৃষ্টিপাত হয় এবং শুষ্ক ঋতুতে গাছগুলির পাতা ঝরে যায়।
৫. মরু উদ্ভিদের দুটি অভিযোজনগত বৈশিষ্ট্য লেখো।
উত্তর: ১. বাষ্পমোচন রোধ করার জন্য এদের পাতা কাঁটায় রূপান্তরিত হয়। ২. মাটির অনেক গভীর থেকে জল সংগ্রহের জন্য এদের শিকড় খুব দীর্ঘ হয়।
৬. ‘যৌথ বন ব্যবস্থাপনা’ (JFM) বলতে কী বোঝো?
উত্তর: সরকারি বনদপ্তরের সঙ্গে স্থানীয় গ্রামবাসীদের সম্মিলিত উদ্যোগে বনভূমি সংরক্ষণ, পরিচর্যা ও ব্যবস্থাপনার পদ্ধতিকে যৌথ বন ব্যবস্থাপনা বলে। এতে গ্রামবাসীরা বনজ সম্পদ ব্যবহারের অধিকার পায়।
৭. পার্বত্য অঞ্চলের উদ্ভিদের উচ্চতা অনুযায়ী পরিবর্তন হয় কেন?
উত্তর: পার্বত্য অঞ্চলে উচ্চতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে উষ্ণতা ও বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কমতে থাকে এবং জলবায়ুর প্রকৃতি পরিবর্তিত হয়। এই জলবায়ুর তারতম্যের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার জন্য উদ্ভিদের প্রকৃতিও পরিবর্তিত হতে থাকে।
৮. বনভূমি विनाशের দুটি প্রধান কারণ লেখো।
উত্তর: ১. নগরায়ন ও শিল্পায়ন: জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে বাসস্থান, রাস্তাঘাট ও কলকারখানা তৈরির জন্য নির্বিচারে বনভূমি ধ্বংস করা হচ্ছে। ২. অবৈজ্ঞানিক কৃষিকাজ: ঝুম চাষের মতো স্থানান্তর কৃষির ফলে অরণ্য পুড়িয়ে ফেলা হয়।
৯. ‘চিপকো’ আন্দোলন সম্পর্কে যা জানো লেখো।
উত্তর: ১৯৭৩ সালে বর্তমান উত্তরাখণ্ডের গাড়োয়াল হিমালয়ে গাছ কাটার বিরুদ্ধে স্থানীয় গ্রামবাসীরা এক অহিংস আন্দোলন শুরু করেন। তাঁরা গাছকে জড়িয়ে ধরে (হিন্দিতে ‘চিপকো’) গাছ কাটা বন্ধ করেন। সুন্দরলাল বহুগুণার নেতৃত্বে এই আন্দোলন সারা ভারতে বন সংরক্ষণের প্রতীক হয়ে ওঠে।
১০. কৃষি বনসৃজন ও সামাজিক বনসৃজনের মধ্যে পার্থক্য কী?
উত্তর: কৃষি বনসৃজন: এটি ব্যক্তিগত উদ্যোগে নিজের কৃষিজমিতে ফসল চাষের পাশাপাশি গাছ লাগানোর পদ্ধতি। সামাজিক বনসৃজন: এটি সরকারি বা সামাজিক উদ্যোগে পতিত বা সরকারি জমিতে (যেমন – রাস্তার ধার, রেললাইনের পাশ) গাছ লাগানোর পদ্ধতি।
১১. সরলবর্গীয় অরণ্যের দুটি অর্থনৈতিক গুরুত্ব লেখো।
উত্তর: ১. এই অরণ্যের নরম কাঠ কাগজ, দেশলাই, প্যাকিং বাক্স ইত্যাদি তৈরির প্রধান কাঁচামাল। ২. পাইন, ফার ইত্যাদি গাছ থেকে প্রাপ্ত রজন, তার্পিন তেল ইত্যাদি বাণিজ্যিক দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ।
১২. সুন্দরবন অঞ্চলের দুটি পরিবেশগত সমস্যা উল্লেখ করো।
উত্তর: ১. বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলে সমুদ্রের জলস্তর বৃদ্ধি পাওয়ায় সুন্দরবনের অনেক দ্বীপ জলমগ্ন হয়ে যাচ্ছে। ২. নদীর মিষ্টি জলের জোগান কমে যাওয়ায় এবং সমুদ্রে লবণাক্ততা বৃদ্ধি পাওয়ায় সুন্দরী গাছের মতো ম্যানগ্রোভ উদ্ভিদের বৃদ্ধি ব্যাহত হচ্ছে।
১৩. অরণ্য সংরক্ষণে শিক্ষার্থীদের দুটি ভূমিকা লেখো।
উত্তর: ১. নিজেদের স্কুল বা বাড়ির আশেপাশে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া এবং তাদের পরিচর্যা করা। ২. পোস্টার, নাটক বা আলোচনার মাধ্যমে সাধারণ মানুষের মধ্যে গাছ কাটার কুফল ও বন সংরক্ষণের গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা।
১৪. ভারতের কোন কোন অঞ্চলে চিরহরিৎ অরণ্য দেখা যায়?
উত্তর: ভারতে যেখানে বার্ষিক বৃষ্টিপাত ২০০ সেমি-এর বেশি এবং উষ্ণতা বেশি, সেখানে চিরহরিৎ অরণ্য দেখা যায়। যেমন – পশ্চিমঘাট পর্বতমালার পশ্চিম ঢাল, উত্তর-পূর্ব ভারতের মেঘালয়, অরুণাচল প্রদেশ এবং আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ।
১৫. ভারতের পর্ণমোচী অরণ্যকে ‘আর্দ্র’ ও ‘শুষ্ক’ এই দুই ভাগে ভাগ করা হয় কেন?
উত্তর: বৃষ্টিপাতের পরিমাণের উপর ভিত্তি করে পর্ণমোচী অরণ্যকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়। যেখানে বার্ষিক বৃষ্টিপাত ১০০-২০০ সেমি, সেখানে আর্দ্র পর্ণমোচী অরণ্য (শাল, সেগুন) দেখা যায়। আর যেখানে বৃষ্টিপাত ৭০-১০০ সেমি, সেখানে শুষ্ক পর্ণমোচী অরণ্য (মহুয়া, পলাশ) দেখা যায়।১৬. ম্যানগ্রোভ অরণ্যের পরিবেশগত গুরুত্ব কী?
উত্তর: ম্যানগ্রোভ অরণ্য উপকূলীয় পরিবেশ রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এর ঘন জঙ্গল এবং জালের মতো ছড়ানো শিকড় সামুদ্রিক ঝড়, সাইক্লোন ও সুনামির তীব্রতাকে প্রতিহত করে উপকূলকে রক্ষা করে। এটি উপকূলীয় অঞ্চলের মৃত্তিকা ক্ষয়ও রোধ করে।১৭. ‘বন সংরক্ষণ’ ও ‘বনসৃজন’-এর মধ্যে পার্থক্য কী?
উত্তর: বন সংরক্ষণ: এটি হল বিদ্যমান বনভূমিকে নির্বিচারে কাটা বা ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করার প্রক্রিয়া। বনসৃজন: এটি হল পতিত বা অরণ্যবিহীন জমিতে নতুন করে গাছ লাগিয়ে বনভূমি তৈরি করার প্রক্রিয়া।১৮. ভারতের দুটি প্রধান বনজ সম্পদের নাম ও তাদের ব্যবহার লেখো।
উত্তর: ১. কাঠ: শাল, সেগুন, মেহগনির মতো শক্ত কাঠ আসবাবপত্র ও রেলের স্লিপার তৈরিতে এবং পাইনের মতো নরম কাঠ কাগজ ও প্যাকিং বাক্স তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। ২. মধু ও মোম: সুন্দরবনের মতো অরণ্য থেকে প্রচুর পরিমাণে মধু ও মোম সংগ্রহ করা হয়, যা অর্থনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ।
১৯. ভারতের দুটি জাতীয় উদ্যান ও দুটি অভয়ারণ্যের নাম লেখো।
উত্তর: জাতীয় উদ্যান: ১. করবেট জাতীয় উদ্যান (উত্তরাখণ্ড), ২. গির জাতীয় উদ্যান (গুজরাট)। অভয়ারণ্য: ১. জলদাপাড়া অভয়ারণ্য (পশ্চিমবঙ্গ), ২. পেরিয়ার অভয়ারণ্য (কেরালা)।২০. আলপাইন অরণ্যের দুটি বৈশিষ্ট্য লেখো।
উত্তর: ১. এটি হিমালয়ের অধিক উচ্চতায় (৩০০০-৪০০০ মিটার) দেখা যায়। ২. এখানকার গাছগুলি মূলত গুল্ম ও তৃণ জাতীয় হয়, যেমন – জুনিপার, রোডোডেনড্রন, বার্চ।
২১. স্বাভাবিক উদ্ভিদের উপর জলবায়ুর প্রভাব কী?
উত্তর: স্বাভাবিক উদ্ভিদের বণ্টন ও প্রকৃতি সম্পূর্ণরূপে জলবায়ু, বিশেষত উষ্ণতা ও বৃষ্টিপাতের উপর নির্ভরশীল। বেশি বৃষ্টিপাত ও উষ্ণতাযুক্ত অঞ্চলে ঘন চিরহরিৎ অরণ্য, মাঝারি বৃষ্টিপাতযুক্ত অঞ্চলে পর্ণমোচী অরণ্য এবং কম বৃষ্টিপাতযুক্ত অঞ্চলে কাঁটাঝোপ ও গুল্ম জন্মায়।
২২. সুন্দরবনের নামকরণ কীভাবে হয়েছে?
উত্তর: এই অঞ্চলের প্রধান ও বিখ্যাত উদ্ভিদ হল ‘সুন্দরী’ গাছ। এই সুন্দরী গাছের নাম অনুসারেই এই সুবিশাল ম্যানগ্রোভ অরণ্যের নাম হয়েছে ‘সুন্দরবন’ বলে মনে করা হয়।
২৩. সংরক্ষিত বন (Reserved Forest) ও সুরক্ষিত বন (Protected Forest)-এর পার্থক্য কী?
উত্তর: সংরক্ষিত বন: এই বনে সরকারের অনুমতি ছাড়া সাধারণ মানুষের প্রবেশ এবং গাছ কাটা বা পশুচারণ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। এটি সবচেয়ে কঠোরভাবে সুরক্ষিত। সুরক্ষিত বন: এই বনে স্থানীয় মানুষ কিছু নির্দিষ্ট শর্ত মেনে জ্বালানি কাঠ সংগ্রহ ও পশুচারণ করতে পারে, তবে বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে গাছ কাটা নিষিদ্ধ।
২৪. ভারতের দুটি বিপন্ন প্রাণীর নাম ও তাদের সংরক্ষণ কেন্দ্রের নাম লেখো।
উত্তর: ১. রয়েল বেঙ্গল টাইগার: সংরক্ষণ কেন্দ্র – সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্প (পশ্চিমবঙ্গ)। ২. একশৃঙ্গ গন্ডার: সংরক্ষণ কেন্দ্র – কাজিরাঙা জাতীয় উদ্যান (আসাম)।
২৫. ‘পশ্চিমবঙ্গের আড়াবাড়ি অরণ্য’ কেন বিখ্যাত?
উত্তর: পশ্চিমবঙ্গের পশ্চিম মেদিনীপুরের আড়াবাড়ি অরণ্যে ১৯৭২ সালে বনদপ্তর ও স্থানীয় গ্রামবাসীদের উদ্যোগে ভারতের প্রথম ‘যৌথ বন ব্যবস্থাপনা’ (JFM) প্রকল্পটি সফলভাবে রূপায়িত হয়েছিল। এই সফল মডেলটি পরবর্তীকালে সারা ভারতে বন সংরক্ষণের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদ্ধতি হিসেবে গৃহীত হয়।
ঘ) সংক্ষিপ্ত রচনাধর্মী প্রশ্নাবলী – মান ৩ (২৫টি)
১. ভারতের স্বাভাবিক উদ্ভিদের উপর জলবায়ুর প্রভাব আলোচনা করো।
উত্তর: ভারতের স্বাভাবিক উদ্ভিদের বণ্টন ও প্রকৃতি নির্ধারণে জলবায়ুর, বিশেষত উষ্ণতা ও বৃষ্টিপাতের, প্রভাব সর্বাধিক।
ক) বৃষ্টিপাতের প্রভাব:
১. অতিবৃষ্টিযুক্ত অঞ্চল (>২০০ সেমি): পশ্চিমঘাট পর্বতের পশ্চিম ঢাল, উত্তর-পূর্ব ভারত ও আন্দামানে ক্রান্তীয় চিরহরিৎ অরণ্য দেখা যায়।
২. মাঝারি বৃষ্টিযুক্ত অঞ্চল (১০০-২০০ সেমি): ভারতের বেশিরভাগ অংশ জুড়ে ক্রান্তীয় আর্দ্র পর্ণমোচী অরণ্য দেখা যায়।
৩. স্বল্প বৃষ্টিযুক্ত অঞ্চল (<১০০ সেমি): দাক্ষিণাত্য মালভূমির অভ্যন্তরীণ অংশ ও উত্তর-পশ্চিম ভারতে শুষ্ক পর্ণমোচী ও কাঁটাঝোপ জন্মায়।
খ) উষ্ণতার প্রভাব:
উচ্চতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে উষ্ণতা কমে, তাই পার্বত্য অঞ্চলে উদ্ভিদের উল্লম্ব বন্টন দেখা যায়। পাদদেশে পর্ণমোচী, মাঝারি উচ্চতায় সরলবর্গীয় এবং অধিক উচ্চতায় আলপাইন তৃণভূমি দেখা যায়।
২. ভারতের ক্রান্তীয় চিরহরিৎ অরণ্যের বণ্টন, বৈশিষ্ট্য ও প্রধান উদ্ভিদ সম্পর্কে লেখো।
উত্তর: বণ্টন: এই অরণ্য ভারতের সেইসব অঞ্চলে দেখা যায় যেখানে বার্ষিক বৃষ্টিপাত ২০০ সেমি-এর বেশি এবং গড় উষ্ণতা ২৫°-২৭° সেলসিয়াস। যেমন – পশ্চিমঘাট পর্বতের পশ্চিম ঢাল, উত্তর-পূর্ব ভারতের মেঘালয়, অরুণাচল প্রদেশ এবং আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ।
বৈশিষ্ট্য:
১. এখানকার গাছগুলির পাতা সারা বছর সবুজ থাকে, তাই একে চিরহরিৎ অরণ্য বলে।
২. গাছের ঘনত্ব খুব বেশি হওয়ায় সূর্যের আলো মাটিতে পৌঁছাতে পারে না, তাই অরণ্যের তলদেশ অন্ধকার ও স্যাঁতস্যাঁতে থাকে।
৩. এখানে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ একসঙ্গে জন্মায়।
প্রধান উদ্ভিদ: রোজউড, মেহগনি, আয়রনউড, শিশু, গর্জন, আবলুস ইত্যাদি।
৩. ভারতের ক্রান্তীয় পর্ণমোচী অরণ্যের শ্রেণিবিভাগ করে আলোচনা করো।
উত্তর: ক্রান্তীয় পর্ণমোচী অরণ্য ভারতের বৃহত্তম অরণ্য। বৃষ্টিপাতের পরিমাণের উপর ভিত্তি করে একে দুটি ভাগে ভাগ করা হয়:
ক) আর্দ্র পর্ণমোচী অরণ্য:
অবস্থান: যেখানে বার্ষিক বৃষ্টিপাত ১০০-২০০ সেমি হয়, যেমন – হিমালয়ের পাদদেশের তরাই ও ডুয়ার্স অঞ্চল, ছোটনাগপুর মালভূমি এবং পশ্চিমঘাট পর্বতের পূর্ব ঢাল।
উদ্ভিদ: শাল, সেগুন, মহুয়া, পলাশ, আম, জাম ইত্যাদি। এই অরণ্যের কাঠ খুব মূল্যবান।
খ) শুষ্ক পর্ণমোচী অরণ্য:
অবস্থান: যেখানে বার্ষিক বৃষ্টিপাত ৭০-১০০ সেমি হয়, যেমন – মধ্যপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশের কিছু অংশ এবং দাক্ষিণাত্য মালভূমির শুষ্কতর অঞ্চল।
উদ্ভিদ: এখানকার গাছগুলি মূলত কাঁটাযুক্ত হয়। যেমন – বাবলা, কুল, পলাশ, খয়ের ইত্যাদি।
৪. ভারতের বনভূমি সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা কী?
উত্তর: ভারতের অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষার জন্য বনভূমি সংরক্ষণ অত্যন্ত প্রয়োজনীয়:
১. পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষা: বনভূমি বায়ুমণ্ডল থেকে কার্বন ডাইঅক্সাইড শোষণ করে অক্সিজেনের জোগান দেয় এবং বিশ্ব উষ্ণায়ন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
২. মৃত্তিকা ক্ষয় রোধ: গাছের শিকড় মাটিকে ধরে রেখে ভূমিক্ষয় রোধ করে এবং বন্যার প্রকোপ কমায়।
৩. জীববৈচিত্র্য রক্ষা: অরণ্য হল অসংখ্য বন্যপ্রাণীর বাসস্থান। বনভূমি সংরক্ষণ করলে জীববৈচিত্র্যও সংরক্ষিত হয়।
৪. জলসম্পদ সংরক্ষণ: বনভূমি বৃষ্টির জলকে শোষণ করে ভৌমজলের ভাণ্ডার বৃদ্ধি করে এবং নদীতে জলের জোগান স্বাভাবিক রাখে।
৫. অর্থনৈতিক গুরুত্ব: অরণ্য থেকে কাঠ, মধু, ফল, ঔষধ ইত্যাদি মূল্যবান সম্পদ পাওয়া যায়, যা দেশের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করে এবং বহু মানুষের জীবিকা নির্বাহ করে।
৫. ম্যানগ্রোভ অরণ্যের অভিযোজনগত বৈশিষ্ট্যগুলি লেখো।
উত্তর: ম্যানগ্রোভ অরণ্য উপকূলের লবণাক্ত ও কর্দমাক্ত মাটিতে জন্মায়, তাই এদের কিছু বিশেষ অভিযোজনগত বৈশিষ্ট্য দেখা যায়:১. শ্বাসমূল বা নিউম্যাটোফোর: কর্দমাক্ত মাটিতে অক্সিজেনের অভাব থাকায় শ্বাসকার্য চালানোর জন্য এদের কিছু মূল মাটি ফুঁড়ে সোজা উপরে উঠে আসে, এগুলিকে শ্বাসমূল বলে।
২. ঠেস মূল: নরম মাটিতে গাছকে সোজাভাবে ধরে রাখার জন্য কাণ্ডের নীচের অংশ থেকে অনেক অস্থানিক মূল বেরিয়ে মাটিতে প্রবেশ করে, এগুলিকে ঠেস মূল বলে।
৩. জরায়ুজ অঙ্কুরোদ্গম: লবণাক্ত মাটিতে বীজের অঙ্কুরোদ্গম বাধা পেতে পারে, তাই মাতৃগাছে ফল থাকা অবস্থাতেই ফলের মধ্যে বীজের অঙ্কুরোদ্গম হয়। পরে ওই চারাগাছ মাটিতে পড়ে সহজেই আটকে যায়।
৪. লবণ সহনশীলতা: এদের পাতা ও কোষে লবণ সঞ্চয় করে রাখার বিশেষ ক্ষমতা থাকে।
৬. ভারতের মরু অঞ্চলের উদ্ভিদের অভিযোজনগত বৈশিষ্ট্যগুলি আলোচনা করো।
উত্তর: মরু অঞ্চলের শুষ্ক জলবায়ুতে বেঁচে থাকার জন্য এখানকার উদ্ভিদরা (জেরোফাইট) বিশেষভাবে অভিযোজিত হয়েছে:
১. দীর্ঘ মূল: মাটির অনেক গভীর থেকে জল সংগ্রহের জন্য এদের মূল খুব দীর্ঘ হয়।
২. পাতার রূপান্তর: বাষ্পমোচনের মাধ্যমে জলের অপচয় কমানোর জন্য এদের পাতাগুলি আকারে ছোট হয় বা কাঁটায় রূপান্তরিত হয় (যেমন – ফণীমনসা)।
৩. কাণ্ডের প্রকৃতি: কাণ্ড সবুজ ও রসালো হয়, যা সালোকসংশ্লেষ করতে পারে এবং জল সঞ্চয় করে রাখতে পারে (যেমন – ক্যাকটাস)।
৪. মোমের আস্তরণ: পাতা ও কাণ্ডের উপর মোমের আস্তরণ থাকে, যা বাষ্পমোচন রোধ করে।
৭. ভারতের পার্বত্য অঞ্চলের উদ্ভিদের উল্লম্ব বন্টন সম্পর্কে লেখো।
উত্তর: হিমালয় পার্বত্য অঞ্চলে উচ্চতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তিত হয়, তাই উদ্ভিদের প্রকৃতিও পরিবর্তিত হতে থাকে। একে উদ্ভিদের উল্লম্ব বন্টন বলে:
১. পাদদেশ (১০০০ মিটার পর্যন্ত): এখানে উষ্ণ ও আর্দ্র জলবায়ুতে পর্ণমোচী অরণ্য (শাল, সেগুন) দেখা যায়।
২. মাঝারি উচ্চতা (১০০০-৩০০০ মিটার): এখানে নাতিশীতোষ্ণ জলবায়ুতে চিরহরিৎ (ওক, ম্যাপল) এবং সরলবর্গীয় (পাইন, ফার, দেবদারু) অরণ্য দেখা যায়।
৩. অধিক উচ্চতা (৩০০০-৪০০০ মিটার): এখানে শীতল জলবায়ুতে আলপাইন অরণ্য (জুনিপার, রোডোডেনড্রন) জন্মায়।
৪. সর্বোচ্চ উচ্চতা (>৪০০০ মিটার): এখানে প্রচণ্ড ঠাণ্ডার কারণে কোনো গাছ জন্মায় না, শুধুমাত্র শৈবাল ও মস জাতীয় উদ্ভিদ দেখা যায়।
৮. বনভূমি विनाशের কারণ ও তার ফলাফল আলোচনা করো।
উত্তর: কারণ:
১. জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও নগরায়ন: বাড়তি জনসংখ্যার জন্য বাসস্থান, রাস্তাঘাট, কলকারখানা তৈরির জন্য নির্বিচারে বনভূমি ধ্বংস করা হচ্ছে।
২. কৃষিজমির সম্প্রসারণ: কৃষিজমির চাহিদা মেটাতে অরণ্য পরিষ্কার করা হচ্ছে। ঝুম চাষের মতো স্থানান্তর কৃষিও বনভূমি ধ্বংসের অন্যতম কারণ।
৩. অবকাঠামো নির্মাণ: বড় বাঁধ, খনি ইত্যাদি নির্মাণের জন্য বিস্তীর্ণ বনভূমি নষ্ট হয়।
৪. দাবানল ও চোরাচালান: প্রাকৃতিক বা মনুষ্যসৃষ্ট দাবানল এবং চোরাচালানকারীদের দ্বারা গাছ কাটাও বনভূমি ধ্বংসের কারণ।
ফলাফল:
১. পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হয় এবং বিশ্ব উষ্ণায়ন বৃদ্ধি পায়।
২. মৃত্তিকা ক্ষয় ও বন্যার প্রকোপ বাড়ে।
৩. অসংখ্য বন্যপ্রাণী তাদের বাসস্থান হারায় এবং জীববৈচিত্র্য হ্রাস পায়।
৪. জলচক্র ব্যাহত হয় এবং বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কমে যায়।
৯. সামাজিক বনসৃজন ও কৃষি বনসৃজনের মধ্যে পার্থক্য লেখো।
উত্তর: | বৈশিষ্ট্য | সামাজিক বনসৃজন (Social Forestry) | কৃষি বনসৃজন (Agro-Forestry) | |—|—|—| | **সংজ্ঞা** | সমাজের উদ্যোগে ও অংশগ্রহণে পতিত বা সরকারি জমিতে বনভূমি তৈরি করা। | ব্যক্তিগত উদ্যোগে নিজের কৃষিজমিতে ফসল চাষের পাশাপাশি গাছ লাগানো। | | **উদ্দেশ্য** | প্রধান উদ্দেশ্য হল পরিবেশের উন্নতি, জ্বালানি ও পশুখাদ্যের জোগান এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টি। | প্রধান উদ্দেশ্য হল কৃষি উৎপাদন বাড়ানোর পাশাপাশি কাঠ, ফল ইত্যাদি থেকে অতিরিক্ত আয় করা। | | **জমির মালিকানা** | সাধারণত সরকারি বা সামাজিক জমিতে (রাস্তার ধার, রেললাইনের পাশ) করা হয়। | সাধারণত ব্যক্তিগত মালিকানাধীন কৃষিজমিতে করা হয়। | | **উদাহরণ** | পঞ্চায়েতের উদ্যোগে পতিত জমিতে বৃক্ষরোপণ। | একজন কৃষক তার জমির আলে বা ফসলের মাঝে গাছ লাগালে। |
১০. যৌথ বন ব্যবস্থাপনা (JFM)-এর মূল উদ্দেশ্য ও কার্যকারিতা আলোচনা করো।
উত্তর: মূল উদ্দেশ্য: যৌথ বন ব্যবস্থাপনার মূল উদ্দেশ্য হল বনদপ্তরের সঙ্গে স্থানীয় গ্রামবাসীদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় অবক্ষয়িত বনভূমির পুনরুদ্ধার ও সংরক্ষণ করা। এর মাধ্যমে বনভূমি রক্ষা করার পাশাপাশি স্থানীয় মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ঘটানোও একটি প্রধান লক্ষ্য।
কার্যকারিতা:
১. এই পদ্ধতিতে স্থানীয় গ্রামবাসীরা বনভূমি সংরক্ষণের কাজে সরাসরি অংশগ্রহণ করে, ফলে চোরাচালান ও বেআইনিভাবে গাছ কাটা বন্ধ হয়।
২. গ্রামবাসীরা বন থেকে শুকনো ডালপালা, ফল, মধু ইত্যাদি গৌণ বনজ সম্পদ সংগ্রহের অধিকার পায়, যা তাদের জীবিকা নির্বাহে সাহায্য করে।
৩. এই ব্যবস্থার ফলে বনভূমির ঘনত্ব বৃদ্ধি পায়, পরিবেশের উন্নতি ঘটে এবং সরকার ও স্থানীয় মানুষের মধ্যে একটি সহযোগিতামূলক সম্পর্ক তৈরি হয়। পশ্চিমবঙ্গের আড়াবাড়ি মডেল এর সফল উদাহরণ।
১১. ভারতের চিরহরিৎ অরণ্য ও পর্ণমোচী অরণ্যের মধ্যে পার্থক্য করো।
উত্তর: | বৈশিষ্ট্য | চিরহরিৎ অরণ্য | পর্ণমোচী অরণ্য | |—|—|—| | **বৃষ্টিপাত** | বার্ষিক বৃষ্টিপাত ২০০ সেমি-এর বেশি। | বার্ষিক বৃষ্টিপাত ৭০-২০০ সেমি। | | **পাতার প্রকৃতি** | গাছগুলির পাতা সারা বছর সবুজ থাকে, একসঙ্গে ঝরে যায় না। | শুষ্ক ঋতুতে (শীতকালে) গাছগুলির পাতা ঝরে যায়। | | **ঘনত্ব** | গাছের ঘনত্ব খুব বেশি এবং অরণ্য দুর্গম। | গাছের ঘনত্ব তুলনামূলকভাবে কম। | | **প্রধান উদ্ভিদ** | রোজউড, মেহগনি, আয়রনউড, গর্জন। | শাল, সেগুন, মহুয়া, পলাশ, চন্দন। | | **অর্থনৈতিক গুরুত্ব** | কাঠ খুব শক্ত ও ভারী হওয়ায় আহরণ করা কঠিন। | কাঠ মূল্যবান এবং আসবাবপত্র তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। |
১২. সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ অরণ্যের বৈশিষ্ট্য ও গুরুত্ব লেখো।
উত্তর: বৈশিষ্ট্য:
১. এটি বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ অরণ্য এবং একটি ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান।
২. এখানকার মাটি লবণাক্ত ও কর্দমাক্ত।
৩. সুন্দরী, গরান, গেওয়া, হেতাল ইত্যাদি এখানকার প্রধান উদ্ভিদ।
৪. এখানকার উদ্ভিদের শ্বাসমূল, ঠেস মূল ও জরায়ুজ অঙ্কুরোদ্গম দেখা যায়।
গুরুত্ব:
১. এই অরণ্য ভয়ঙ্কর সামুদ্রিক ঝড় ও সুনামির বিরুদ্ধে প্রাকৃতিক প্রাচীর হিসেবে কাজ করে উপকূলকে রক্ষা করে।
২. এটি বিশ্বখ্যাত রয়েল বেঙ্গল টাইগারের প্রাকৃতিক বাসস্থান।
৩. এখানকার বন থেকে মূল্যবান কাঠ, মধু, মোম ইত্যাদি সংগ্রহ করা হয়, যা স্থানীয় মানুষের জীবিকা।
১৩. অরণ্য সংরক্ষণে ‘চিপকো’ ও ‘অ্যাপিকো’ আন্দোলনের ভূমিকা লেখো।
উত্তর: চিপকো আন্দোলন: ১৯৭৩ সালে বর্তমান উত্তরাখণ্ডের গাড়োয়াল হিমালয়ে গাছ কাটার বিরুদ্ধে স্থানীয় গ্রামবাসীরা, বিশেষত মহিলারা, এক অহিংস আন্দোলন শুরু করেন। তাঁরা গাছকে জড়িয়ে ধরে (‘চিপকো’) ঠিকাদারদের গাছ কাটতে বাধা দেন। সুন্দরলাল বহুগুণা ও চণ্ডীপ্রসাদ ভট্টের নেতৃত্বে এই আন্দোলন সারা ভারতে বন সংরক্ষণের প্রতীক হয়ে ওঠে এবং সরকারকে বননীতি পরিবর্তন করতে বাধ্য করে।
অ্যাপিকো আন্দোলন: চিপকো আন্দোলনের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে ১৯৮৩ সালে কর্ণাটকে এই আন্দোলন শুরু হয়। কন্নড় ভাষায় ‘অ্যাপিকো’ শব্দের অর্থও ‘জড়িয়ে ধরা’। পাণ্ডুরঙ্গ হেগড়ের নেতৃত্বে এই আন্দোলন পশ্চিমঘাট পর্বতমালার অরণ্যকে বাণিজ্যিক কারণে কাটার বিরুদ্ধে গড়ে ওঠে এবং বন সংরক্ষণে সাফল্য লাভ করে।
১৪. ভারতের জাতীয় বননীতির (১৯৮৮) প্রধান উদ্দেশ্যগুলি কী ছিল?
উত্তর: ১৯৮৮ সালের ভারতের জাতীয় বননীতির প্রধান উদ্দেশ্যগুলি ছিল:
১. পরিবেশগত ভারসাম্য বজায় রাখা এবং বায়ুমণ্ডলীয় স্থিতিশীলতা রক্ষা করা।
২. দেশের মোট ভৌগোলিক আয়তনের অন্তত এক-তৃতীয়াংশ (৩৩%) অঞ্চলকে বনভূমির আওতায় আনা।
৩. মৃত্তিকা ক্ষয় রোধ করা, মরুভূমির প্রসার আটকানো এবং বন্যা ও খরা নিয়ন্ত্রণ করা।
৪. স্থানীয় মানুষের জ্বালানি, পশুখাদ্য ও অন্যান্য বনজ সম্পদের চাহিদা মেটানো এবং বন ব্যবস্থাপনায় তাদের সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা (যৌথ বন ব্যবস্থাপনা)।
৫. জীববৈচিত্র্য ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ করা।
১৫. ভারতের কোন কোন অঞ্চলে মরু উদ্ভিদ দেখা যায়? এদের বৈশিষ্ট্য কী?
উত্তর: অবস্থান: ভারতে মরু উদ্ভিদ বা জেরোফাইট মূলত রাজস্থানের থর মরুভূমি এবং তার সংলগ্ন গুজরাট, পাঞ্জাব, হরিয়ানার শুষ্ক অংশে দেখা যায়। এছাড়া দাক্ষিণাত্য মালভূমির বৃষ্টিচ্ছায় অঞ্চলেও কাঁটাঝোপ ও গুল্ম দেখা যায়।বৈশিষ্ট্য:
১. জলের সন্ধানে এদের মূল মাটির অনেক গভীরে প্রবেশ করে।
২. বাষ্পমোচন রোধ করার জন্য পাতাগুলি আকারে ছোট হয়, কাঁটায় রূপান্তরিত হয় বা মোমের আস্তরণযুক্ত হয়।
৩. কাণ্ড সবুজ, রসালো ও জল সঞ্চয়কারী হয়।
৪. এরা লবণাক্ততা সহ্য করতে পারে। বাবলা, ফণীমনসা, খেজুর, ক্যাকটাস ইত্যাদি এখানকার প্রধান উদ্ভিদ।
১৬. বনভূমির প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ গুরুত্ব আলোচনা করো।
উত্তর: প্রত্যক্ষ গুরুত্ব (অর্থনৈতিক):
১. বনভূমি থেকে মূল্যবান কাঠ (আসবাবপত্র, কাগজ, দেশলাই), ফল, মধু, মোম, ভেষজ ঔষধ, রজন, আঠা ইত্যাদি সংগ্রহ করা হয়, যা দেশের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করে।
২. বনভিত্তিক শিল্প (যেমন – কাগজ শিল্প, আসবাব শিল্প) গড়ে ওঠে এবং বহু মানুষের কর্মসংস্থান হয়।
পরোক্ষ গুরুত্ব (পরিবেশগত):
১. বনভূমি পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে, বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণ করে এবং বিশ্ব উষ্ণায়ন কমায়।
২. এটি মৃত্তিকা ক্ষয় রোধ করে, বন্যার প্রকোপ কমায় এবং ভৌমজলের স্তর বাড়াতে সাহায্য করে।
৩. অরণ্য হল অসংখ্য বন্যপ্রাণীর বাসস্থান, তাই এটি জীববৈচিত্র্য রক্ষা করে।
১৭. ভারতের জাতীয় উদ্যান ও অভয়ারণ্যের মধ্যে পার্থক্য লেখো।
উত্তর: | বৈশিষ্ট্য | জাতীয় উদ্যান (National Park) | অভয়ারণ্য (Sanctuary) | |—|—|—| | **সুরক্ষার মাত্রা** | এটি সর্বোচ্চ স্তরের সুরক্ষিত এলাকা। এখানে সমস্ত মানবিক কার্যকলাপ কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। | এটিও সুরক্ষিত, তবে নির্দিষ্ট শর্ত মেনে পর্যটন, গবেষণা বা স্থানীয় মানুষের সীমিত কার্যকলাপের অনুমতি দেওয়া হয়। | | **প্রধান লক্ষ্য** | এখানকার সমগ্র বাস্তুতন্ত্র, অর্থাৎ উদ্ভিদ, প্রাণী ও প্রাকৃতিক পরিবেশকে একসঙ্গে সংরক্ষণ করা। | মূলত কোনো একটি নির্দিষ্ট বিপন্ন প্রজাতি বা কয়েকটি প্রজাতিকে সংরক্ষণ করার উপর জোর দেওয়া হয়। | | **সীমানা** | এর সীমানা আইন দ্বারা স্পষ্টভাবে নির্ধারিত এবং পরিবর্তন করা যায় না। | এর সীমানা তুলনামূলকভাবে কম কঠোর এবং প্রয়োজন অনুসারে পরিবর্তন করা যেতে পারে। | | **উদাহরণ** | করবেট জাতীয় উদ্যান (উত্তরাখণ্ড)। | জলদাপাড়া অভয়ারণ্য (পশ্চিমবঙ্গ)। |
১৮. পর্ণমোচী অরণ্যের অর্থনৈতিক গুরুত্ব চিরহরিৎ অরণ্যের থেকে বেশি কেন?
উত্তর: পর্ণমোচী অরণ্যের অর্থনৈতিক গুরুত্ব চিরহরিৎ অরণ্যের থেকে বেশি হওয়ার কারণ:
১. গাছের প্রকৃতি: পর্ণমোচী অরণ্যে শাল, সেগুন, চন্দনের মতো মূল্যবান ও টেকসই কাঠ পাওয়া যায়, যা আসবাবপত্র, রেলের স্লিপার ইত্যাদি তৈরিতে বহুল ব্যবহৃত হয়। চিরহরিৎ অরণ্যের কাঠ খুব শক্ত ও ভারী হওয়ায় তা ব্যবহার করা কঠিন।
২. গাছের সমাবেশ: পর্ণমোচী অরণ্যে একই প্রজাতির গাছ সাধারণত একসঙ্গে পাওয়া যায়, ফলে কাঠ সংগ্রহ করা সহজ ও লাভজনক। চিরহরিৎ অরণ্যে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ একসঙ্গে জন্মায়, যা কাঠ সংগ্রহকে কঠিন করে তোলে।
৩. অরণ্যের প্রবেশ্যতা: চিরহরিৎ অরণ্য অত্যন্ত দুর্গম ও ঘন, কিন্তু পর্ণমোচী অরণ্য তুলনামূলকভাবে কম ঘন হওয়ায় এখানে পরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তোলা সহজ।
১৯. ভারতের স্বাভাবিক উদ্ভিদকে কয়টি ভাগে ভাগ করা যায় ও কী কী?
উত্তর: ভারতের স্বাভাবিক উদ্ভিদকে জলবায়ু ও ভূপ্রকৃতির উপর ভিত্তি করে প্রধানত পাঁচটি ভাগে ভাগ করা যায়:
১. ক্রান্তীয় চিরহরিৎ অরণ্য: যেখানে বৃষ্টিপাত ২০০ সেমি-এর বেশি।
২. ক্রান্তীয় পর্ণমোচী অরণ্য: যেখানে বৃষ্টিপাত ৭০-২০০ সেমি। একে আর্দ্র ও শুষ্ক—এই দুই ভাগে ভাগ করা হয়।
৩. ক্রান্তীয় মরু উদ্ভিদ: যেখানে বৃষ্টিপাত ৫০ সেমি-এর কম।
৪. পার্বত্য অরণ্য: হিমালয় ও অন্যান্য পার্বত্য অঞ্চলে উচ্চতা অনুসারে এই অরণ্য দেখা যায়।
৫. ম্যানগ্রোভ বা লবণাম্বু অরণ্য: উপকূলের লবণাক্ত, কর্দমাক্ত মাটিতে এই অরণ্য জন্মায়।
২০. ভারতের বনভূমি কমে যাওয়ার দুটি প্রধান কারণ ও তার প্রতিকারের উপায় লেখো।
উত্তর: কারণ:
১. জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও নগরায়ন: ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার জন্য বাসস্থান, রাস্তাঘাট ও শহর তৈরির প্রয়োজনে প্রচুর পরিমাণে বনভূমি পরিষ্কার করা হচ্ছে।
২. কৃষিজমির সম্প্রসারণ ও শিল্পায়ন: কৃষিজমির চাহিদা মেটাতে এবং খনি ও কলকারখানা স্থাপনের জন্য অরণ্য ধ্বংস করা হচ্ছে।
প্রতিকারের উপায়:
১. বনসৃজন: পতিত বা অব্যবহৃত জমিতে ব্যাপক হারে বৃক্ষরোপণ করা এবং সামাজিক বনসৃজন প্রকল্পকে উৎসাহিত করা।
২. কঠোর আইন প্রয়োগ: বন সংরক্ষণ আইনকে কঠোরভাবে প্রয়োগ করে বেআইনিভাবে গাছ কাটা ও চোরাচালান বন্ধ করা।
২১. শ্বাসমূল ও ঠেস মূলের কার্যকারিতা কী?
উত্তর: এগুলি ম্যানগ্রোভ উদ্ভিদের বিশেষ বৈশিষ্ট্য।
শ্বাসমূল (Pneumatophore): উপকূলের কর্দমাক্ত মাটিতে অক্সিজেনের পরিমাণ খুব কম থাকে। তাই শ্বাসকার্য চালানোর জন্য ম্যানগ্রোভ উদ্ভিদের কিছু মূল মাটির উপরে সোজা হয়ে উঠে আসে এবং বায়ুমণ্ডল থেকে সরাসরি অক্সিজেন গ্রহণ করে।
ঠেস মূল (Stilt Root): উপকূলের নরম ও কর্দমাক্ত মাটিতে গাছ যাতে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে পারে এবং সামুদ্রিক ঢেউয়ের আঘাত সহ্য করতে পারে, তার জন্য কাণ্ডের গোড়া থেকে অনেক অস্থানিক মূল বেরিয়ে এসে মাটিতে প্রবেশ করে গাছকে অতিরিক্ত দৃঢ়তা প্রদান করে।
২২. সুন্দরবনের পরিবেশগত গুরুত্ব আলোচনা করো।
উত্তর: সুন্দরবন শুধুমাত্র ভারতের নয়, বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বাস্তুতন্ত্র।
১. প্রাকৃতিক প্রাচীর: এটি বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ভয়ঙ্কর ঘূর্ণিঝড় ও সুনামির বিরুদ্ধে একটি প্রাকৃতিক প্রাচীর হিসেবে কাজ করে কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গকে রক্ষা করে।
২. জীববৈচিত্র্যের ভাণ্ডার: এটি বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ অরণ্য এবং বিশ্বখ্যাত রয়েল বেঙ্গল টাইগারের প্রাকৃতিক বাসস্থান। এছাড়া, এখানে অসংখ্য প্রজাতির মাছ, পাখি, সরীসৃপ ও অন্যান্য প্রাণী রয়েছে।
৩. পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণ: এই বিশাল বনভূমি বায়ুমণ্ডল থেকে প্রচুর পরিমাণে কার্বন ডাইঅক্সাইড শোষণ করে পরিবেশকে দূষণমুক্ত রাখতে সাহায্য করে।
৪. অর্থনৈতিক গুরুত্ব: এখান থেকে মধু, মোম, কাঠ সংগ্রহ করে স্থানীয় মানুষের জীবিকা নির্বাহ হয়।
২৩. ভারতের বনজ সম্পদভিত্তিক দুটি শিল্পের নাম লেখো ও তাদের অবস্থান উল্লেখ করো।
উত্তর: ১. কাগজ শিল্প:
কাঁচামাল: এই শিল্পের প্রধান কাঁচামাল হল সরলবর্গীয় অরণ্যের নরম কাঠ (পাইন, ফার) এবং বাঁশ ও সাবাই ঘাস।
অবস্থান: পশ্চিমবঙ্গ (টিটাগড়, নৈহাটি), মহারাষ্ট্র, অন্ধ্রপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশে এই শিল্প গড়ে উঠেছে।
২. দেশলাই শিল্প:
কাঁচামাল: গেওয়া, শিমূল, ছাতিমের মতো নরম কাঠ দেশলাই কাঠি তৈরির জন্য ব্যবহৃত হয়।
অবস্থান: পশ্চিমবঙ্গ (কলকাতা), তামিলনাড়ু (শিবকাশী), মহারাষ্ট্র ও উত্তরপ্রদেশে এই শিল্পকেন্দ্র গড়ে উঠেছে।
২৪. আলপাইন ও সরলবর্গীয় অরণ্যের মধ্যে পার্থক্য লেখো।
উত্তর: আলপাইন অরণ্য: এটি হিমালয়ের অধিক উচ্চতায় (৩০০০-৪০০০ মিটার) বৃক্ষসীমার কাছে দেখা যায়। এখানকার গাছগুলি মূলত গুল্ম ও তৃণ জাতীয় হয়, যেমন – জুনিপার, রোডোডেনড্রন।
সরলবর্গীয় অরণ্য: এটি হিমালয়ের মাঝারি উচ্চতায় (২০০০-৩০০০ মিটার) দেখা যায়। এখানকার গাছগুলি দীর্ঘ, মোচাকৃতি এবং পাতাগুলি সুচের মতো হয়, যেমন – পাইন, ফার, দেবদারু।
২৫. ভারতের জাতীয় উদ্যান, অভয়ারণ্য ও বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভের মধ্যে মূল পার্থক্য কী?
উত্তর: জাতীয় উদ্যান: এটি সর্বোচ্চ স্তরের সুরক্ষিত এলাকা, যেখানে সমগ্র বাস্তুতন্ত্রকে সংরক্ষণ করা হয় এবং সমস্ত মানবিক কার্যকলাপ নিষিদ্ধ।
অভয়ারণ্য: এখানে মূলত কোনো একটি নির্দিষ্ট বিপন্ন প্রজাতিকে সংরক্ষণের উপর জোর দেওয়া হয় এবং কিছু নিয়ন্ত্রিত মানবিক কার্যকলাপের (যেমন – পর্যটন) অনুমতি থাকে।
বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভ: এটি একটি সুবিশাল এলাকা যেখানে উদ্ভিদ ও প্রাণী সংরক্ষণের পাশাপাশি স্থানীয় মানুষের জীবনযাত্রা ও অর্থনৈতিক উন্নয়নকেও গুরুত্ব দেওয়া হয়। এর তিনটি অংশ থাকে – কোর, বাফার ও ট্রানজিশন অঞ্চল।
ঙ) রচনাধর্মী প্রশ্নাবলী – মান ৫ (১০টি)
১. ভারতের স্বাভাবিক উদ্ভিদের শ্রেণিবিভাগ করো এবং যেকোনো দুটি বিভাগের বণ্টন, বৈশিষ্ট্য ও প্রধান উদ্ভিদ সম্পর্কে আলোচনা করো।
উত্তর:
ভারতের জলবায়ু, ভূপ্রকৃতি ও মৃত্তিকার উপর ভিত্তি করে স্বাভাবিক উদ্ভিদকে প্রধানত পাঁচটি ভাগে ভাগ করা যায়:
১. ক্রান্তীয় চিরহরিৎ অরণ্য, ২. ক্রান্তীয় পর্ণমোচী অরণ্য, ৩. ক্রান্তীয় মরু উদ্ভিদ, ৪. পার্বত্য অরণ্য, ৫. ম্যানগ্রোভ অরণ্য।
নিচে দুটি প্রধান বিভাগের আলোচনা করা হল:
ক) ক্রান্তীয় পর্ণমোচী অরণ্য (Tropical Deciduous Forest):
এটি ভারতের বৃহত্তম অরণ্য।
বণ্টন: যেখানে বার্ষিক বৃষ্টিপাত ৭০-২০০ সেমি হয়, সেইসব অঞ্চলে এই অরণ্য দেখা যায়। যেমন – ছোটনাগপুর মালভূমি, ছত্তিশগড়, মধ্যপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশ, বিহার এবং পশ্চিমঘাট পর্বতের পূর্ব ঢাল।
বৈশিষ্ট্য: ① এই অরণ্যের গাছগুলি শুষ্ক ঋতুতে (শীতকালে) বাষ্পমোচন রোধ করার জন্য তাদের পাতা ঝরিয়ে দেয়, তাই একে পর্ণমোচী বা পতনশীল অরণ্য বলে। ② এই অরণ্য চিরহরিৎ অরণ্যের মতো দুর্গম নয়। ③ এখানকার কাঠ অত্যন্ত মূল্যবান।
প্রধান উদ্ভিদ: শাল, সেগুন, চন্দন, মহুয়া, পলাশ, শিশু, আম, জাম ইত্যাদি।
খ) ম্যানগ্রোভ অরণ্য (Mangrove Forest):
বণ্টন: উপকূলের লবণাক্ত ও কর্দমাক্ত মাটিতে, বিশেষত নদীর বদ্বীপ অঞ্চলে এই অরণ্য জন্মায়। ভারতের সুন্দরবন (গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র বদ্বীপ), মহানদী, গোদাবরী-কৃষ্ণার বদ্বীপ এবং গুজরাট ও আন্দামানের উপকূলে এই অরণ্য দেখা যায়।
বৈশিষ্ট্য: ① এখানকার উদ্ভিদের লবণাক্ত পরিবেশে বেঁচে থাকার জন্য বিশেষ অভিযোজনগত বৈশিষ্ট্য দেখা যায়, যেমন – শ্বাসমূল (নিউম্যাটোফোর), ঠেস মূল এবং জরায়ুজ অঙ্কুরোদ্গম। ② এই অরণ্য অত্যন্ত ঘন হয়।
প্রধান উদ্ভিদ: সুন্দরী, গরান, গেওয়া, হেতাল, হোগলা ইত্যাদি।
২. ভারতের বনভূমি সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা এবং গৃহীত পদ্ধতিগুলি আলোচনা করো।
উত্তর:
বনভূমি সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা:
ভারতের মতো একটি বিশাল ও জনবহুল দেশে অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষার জন্য বনভূমি সংরক্ষণ অত্যন্ত জরুরি।
১. পরিবেশগত কারণ: বনভূমি পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে, বায়ুমণ্ডলে অক্সিজেন ও কার্বন ডাইঅক্সাইডের সমতা বজায় রাখে, বিশ্ব উষ্ণায়ন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে, বৃষ্টিপাত ঘটাতে সহায়তা করে এবং জীববৈচিত্র্য রক্ষা করে।
২. অর্থনৈতিক কারণ: অরণ্য থেকে কাঠ, মধু, ফল, ঔষধ ইত্যাদি মূল্যবান সম্পদ পাওয়া যায়। বনভিত্তিক শিল্প গড়ে ওঠে এবং বহু মানুষের কর্মসংস্থান হয়।
৩. সামাজিক কারণ: বনভূমি মৃত্তিকা ক্ষয় রোধ করে, বন্যার প্রকোপ কমায় এবং ভৌমজলের ভাণ্ডার বৃদ্ধি করে, যা মানুষের জীবনযাত্রাকে সুরক্ষিত করে।
সংরক্ষণের জন্য গৃহীত পদ্ধতি:
১. আইন প্রণয়ন ও প্রয়োগ: ভারত সরকার ১৯৮০ সালে ‘বন সংরক্ষণ আইন’ এবং ১৯৮৮ সালে ‘জাতীয় বননীতি’ গ্রহণ করেছে। এই আইনগুলির মাধ্যমে নির্বিচারে গাছ কাটা ও চোরাচালান কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হয়।
২. বনসৃজন কর্মসূচি: পতিত বা অব্যবহৃত জমিতে নতুন করে বনভূমি তৈরির জন্য ‘সামাজিক বনসৃজন’ ও ‘কৃষি বনসৃজন’ প্রকল্প চালু করা হয়েছে।
৩. যৌথ বন ব্যবস্থাপনা (JFM): বনদপ্তর ও স্থানীয় গ্রামবাসীদের সম্মিলিত উদ্যোগে বনভূমি সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের আড়াবাড়ি এর সফল উদাহরণ।
৪. সংরক্ষিত এলাকা ঘোষণা: জাতীয় উদ্যান, অভয়ারণ্য ও বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভ ঘোষণা করে বন্যপ্রাণী ও তাদের বাসস্থানকে সুরক্ষিত করা হয়েছে।
৫. জনসচেতনতা বৃদ্ধি: বনমহোৎসব, অরণ্য সপ্তাহ পালন এবং চিপকো, অ্যাপিকোর মতো গণ-আন্দোলনের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের মধ্যে বন সংরক্ষণের গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানো হচ্ছে।
৩. ভারতের পার্বত্য অঞ্চলের উদ্ভিদের শ্রেণিবিভাগ করে তাদের বৈশিষ্ট্য আলোচনা করো।
উত্তর:
হিমালয় পার্বত্য অঞ্চলে উচ্চতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে উষ্ণতা ও বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কমে যায়, তাই উদ্ভিদের প্রকৃতিও পরিবর্তিত হতে থাকে। এই উল্লম্ব বন্টন অনুযায়ী পার্বত্য অরণ্যকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করা যায়:
ক) চিরহরিৎ ও পর্ণমোচী অরণ্য (১০০০ – ২০০০ মিটার):
অবস্থান: হিমালয়ের পাদদেশ থেকে মাঝারি উচ্চতা পর্যন্ত এই অরণ্য দেখা যায়।
বৈশিষ্ট্য: এখানকার জলবায়ু উষ্ণ ও আর্দ্র হওয়ায় ওক, ম্যাপল, চেস্টনাট, বার্চের মতো চওড়া পাতাযুক্ত চিরহরিৎ এবং শাল, সেগুনের মতো পর্ণমোচী গাছ জন্মায়।
খ) সরলবর্গীয় অরণ্য (২০০০ – ৩০০০ মিটার):
অবস্থান: মাঝারি থেকে অধিক উচ্চতার শীতল নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে এই অরণ্য দেখা যায়।
বৈশিষ্ট্য: এখানকার গাছগুলি বরফ পড়ার সুবিধার জন্য মোচাকৃতি হয় এবং পাতাগুলি সুচের মতো হয়। কাঠ নরম প্রকৃতির।
উদ্ভিদ: পাইন, ফার, স্প্রুস, দেবদারু, সিডার ইত্যাদি।
গ) আলপাইন অরণ্য (৩০০০ – ৪০০০ মিটার):
অবস্থান: হিমালয়ের অধিক উচ্চতায় বৃক্ষসীমার কাছে এই অরণ্য দেখা যায়।
বৈশিষ্ট্য: এখানে ঠাণ্ডা খুব বেশি হওয়ায় বড় গাছ জন্মায় না। মূলত ছোট ছোট গুল্ম ও তৃণ জন্মায়।
উদ্ভিদ: জুনিপার, রোডোডেনড্রন, বার্চ, লার্চ এবং বিভিন্ন ধরনের ঘাস।
ঘ) তুন্দ্রা উদ্ভিদ (>৪০০০ মিটার):
অবস্থান: হিমালয়ের সর্বোচ্চ অংশে, হিমরেখার নীচে এই উদ্ভিদ দেখা যায়।
বৈশিষ্ট্য: এখানে প্রায় সারাবছর বরফ জমে থাকে। গ্রীষ্মকালে অল্প সময়ের জন্য বরফ গলে গেলে শৈবাল, মস, লাইকেন ইত্যাদি জন্মায়।
৪. সামাজিক বনসৃজন ও কৃষি বনসৃজনের উদ্দেশ্য ও গুরুত্ব আলোচনা করো।
উত্তর:
সামাজিক বনসৃজন (Social Forestry):
সংজ্ঞা: সমাজের প্রয়োজন মেটানোর জন্য এবং পরিবেশের উন্নতিকল্পে, সমাজের উদ্যোগে ও অংশগ্রহণে পতিত বা সরকারি জমিতে (যেমন – রাস্তার ধার, রেললাইনের পাশ, খালের পার) বনভূমি তৈরি করাকে সামাজিক বনসৃজন বলে।
উদ্দেশ্য ও গুরুত্ব:
১. পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষা করা, বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণ করা এবং মৃত্তিকা ক্ষয় রোধ করা।
২. গ্রামীণ মানুষের জন্য জ্বালানি কাঠ, ফল, পশুখাদ্য ও অন্যান্য গৌণ বনজ সম্পদের জোগান দেওয়া।
৩. পতিত জমির সদ্ব্যবহার করা এবং গ্রামীণ কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা।
৪. পরিবেশ সম্পর্কে সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করা।
কৃষি বনসৃজন (Agro-Forestry):
সংজ্ঞা: এটি সামাজিক বনসৃজনেরই একটি অংশ, যেখানে কৃষকরা নিজেদের ব্যক্তিগত জমিতে ফসল চাষের পাশাপাশি ফল, কাঠ বা পশুখাদ্যের জন্য গাছ লাগান।
উদ্দেশ্য ও গুরুত্ব:
১. একই জমি থেকে ফসল ও বনজ সম্পদ (কাঠ, ফল) উভয়ই পাওয়া যায়, যা কৃষকদের আয় বাড়াতে সাহায্য করে।
২. এই গাছগুলি বায়ুপ্রবাহের গতি কমিয়ে এবং মাটির আর্দ্রতা বজায় রেখে ফসল উৎপাদনে সহায়তা করে।
৩. এটি কৃষকদের জ্বালানি ও পশুখাদ্যের চাহিদা মেটায় এবং প্রাকৃতিক সম্পদের উপর চাপ কমায়।
৫. ভারতের অরণ্য विनाशের কারণগুলি কী কী? এর ফলাফল আলোচনা করো।
উত্তর:
অরণ্য विनाशের কারণ:
১. জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও নগরায়ন: দ্রুত জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে বাসস্থান, রাস্তাঘাট, স্কুল, হাসপাতাল ও শহর তৈরির প্রয়োজনে প্রচুর পরিমাণে বনভূমি পরিষ্কার করা হচ্ছে।
২. কৃষিজমির সম্প্রসারণ: ক্রমবর্ধমান খাদ্য চাহিদা মেটানোর জন্য কৃষিজমির সীমানা বাড়ানো হচ্ছে, যার জন্য অরণ্য ধ্বংস করা হচ্ছে।
৩. স্থানান্তর কৃষি: উত্তর-পূর্ব ভারতের ‘ঝুম’ চাষের মতো অবৈজ্ঞানিক কৃষি পদ্ধতিতে অরণ্য পুড়িয়ে ফেলা হয়।
৪. শিল্পায়ন ও খনিজ উত্তোলন: কলকারখানা স্থাপন এবং খনি থেকে খনিজ সম্পদ উত্তোলনের জন্য বিস্তীর্ণ বনভূমি নষ্ট করা হয়।
৫. পরিকাঠামো নির্মাণ: বড় বাঁধ, জলাধার, রেললাইন ইত্যাদি নির্মাণের ফলে বিশাল অরণ্য অঞ্চল জলমগ্ন বা ধ্বংস হয়ে যায়।
৬. অনিয়ন্ত্রিত পশুচারণ ও চোরাচালান: অতিরিক্ত পশুচারণের ফলে চারাগাছ নষ্ট হয় এবং চোরাচালানকারীদের দ্বারা মূল্যবান গাছ বেআইনিভাবে কেটে ফেলা হয়।
৭. দাবানল: প্রাকৃতিক বা মনুষ্যসৃষ্ট দাবানলের ফলে প্রতি বছর বিশাল বনভূমি পুড়ে যায়।
ফলাফল:
অরণ্য विनाशের ফলাফল অত্যন্ত ভয়াবহ। এর ফলে বিশ্ব উষ্ণায়ন, জলবায়ু পরিবর্তন, মৃত্তিকা ক্ষয়, বন্যা, খরা, জীববৈচিত্র্য হ্রাস এবং পরিবেশের সামগ্রিক ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে।
৬. ভারতের স্বাভাবিক উদ্ভিদের উপর ভূপ্রকৃতির প্রভাব আলোচনা করো।
উত্তর:
ভারতের স্বাভাবিক উদ্ভিদের বণ্টন ও প্রকৃতি নির্ধারণে ভূপ্রকৃতির প্রভাব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
১. পার্বত্য অঞ্চল:
উচ্চতা: পার্বত্য অঞ্চলে উচ্চতা পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে উষ্ণতা ও বৃষ্টিপাত পরিবর্তিত হয়, তাই উদ্ভিদের প্রকৃতিও পরিবর্তিত হয় (উল্লম্ব বন্টন)। যেমন – হিমালয়ের পাদদেশে পর্ণমোচী, মাঝারি উচ্চতায় সরলবর্গীয় এবং অধিক উচ্চতায় আলপাইন উদ্ভিদ দেখা যায়।
ঢাল: পাহাড়ের খাড়া ঢালে মৃত্তিকার স্তর পাতলা হওয়ায় গাছপালা কম জন্মায়, কিন্তু মৃদু ঢালে ঘন অরণ্য দেখা যায়।
২. মালভূমি অঞ্চল:
দাক্ষিণাত্য মালভূমির মতো প্রাচীন, কঠিন শিলাযুক্ত অঞ্চলে মূলত পর্ণমোচী অরণ্য (শাল, সেগুন) জন্মায়। এখানকার ঢেউখেলানো ভূপ্রকৃতি উদ্ভিদের ঘনত্বকে প্রভাবিত করে।
৩. সমভূমি অঞ্চল:
উত্তরের উর্বর পলিমাটি সমৃদ্ধ সমভূমি অঞ্চল কৃষিকাজের জন্য অত্যন্ত উপযোগী হওয়ায় এখানকার স্বাভাবিক উদ্ভিদ প্রায় বিলুপ্ত এবং কৃষিজমিই প্রধান।
৪. উপকূলীয় সমভূমি ও বদ্বীপ অঞ্চল:
উপকূলের লবণাক্ত ও কর্দমাক্ত মাটিতে বিশেষ ধরনের লবণাম্বু বা ম্যানগ্রোভ উদ্ভিদ (সুন্দরী, গরান) জন্মায়, যাদের শ্বাসমূল ও ঠেস মূল থাকে।
৫. মরু অঞ্চল:
রাজস্থানের বালুকাময় ও শুষ্ক ভূপ্রকৃতিতে কাঁটাযুক্ত জেরোফাইট উদ্ভিদ (বাবলা, ফণীমনসা) জন্মায়।
৭. ভারতের চিরহরিৎ অরণ্য ও ম্যানগ্রোভ অরণ্যের মধ্যে পার্থক্য লেখো।
উত্তর:
| বৈশিষ্ট্য | ক্রান্তীয় চিরহরিৎ অরণ্য | ম্যানগ্রোভ অরণ্য |
|—|—|—|
| **অবস্থান** | অতিবৃষ্টিযুক্ত অঞ্চলে (পশ্চিমঘাট, উত্তর-পূর্ব ভারত) দেখা যায়। | উপকূলের লবণাক্ত ও কর্দমাক্ত বদ্বীপ অঞ্চলে দেখা যায়। |
| **মৃত্তিকা** | সাধারণত ল্যাটেরাইট বা লোহিত মৃত্তিকায় জন্মায়। | লবণাক্ত ও কাদামাটিতে জন্মায়। |
| **উদ্ভিদের অভিযোজন** | বিশেষ কোনো অভিযোজনগত বৈশিষ্ট্য নেই। | শ্বাসমূল, ঠেস মূল ও জরায়ুজ অঙ্কুরোদ্গম দেখা যায়। |
| **পাতার প্রকৃতি** | গাছগুলির পাতা চওড়া এবং সারা বছর সবুজ থাকে। | এদের পাতাগুলি পুরু ও রসালো হয়। |
| **ঘনত্ব** | গাছের ঘনত্ব অত্যন্ত বেশি এবং অরণ্য দুর্গম। | গাছের ঘনত্ব বেশি এবং অরণ্য দুর্ভেদ্য। |
| **প্রধান উদ্ভিদ** | রোজউড, মেহগনি, আয়রনউড, গর্জন। | সুন্দরী, গরান, গেওয়া, হেতাল। |
৮. ভারতের অর্থনীতিতে অরণ্যের গুরুত্ব আলোচনা করো।
উত্তর:
ভারতের অর্থনীতিতে অরণ্যের গুরুত্ব অপরিসীম। অরণ্য থেকে প্রাপ্ত সম্পদকে দুটি ভাগে ভাগ করা যায়:
ক) মুখ্য বনজ সম্পদ:
১. কাঠ: শাল, সেগুন, মেহগনির মতো মূল্যবান ও শক্ত কাঠ আসবাবপত্র, ঘরের দরজা-জানালা এবং রেলের স্লিপার তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। পাইন, স্প্রুসের মতো নরম কাঠ কাগজ, দেশলাই ও প্যাকিং বাক্স শিল্পের প্রধান কাঁচামাল।
২. জ্বালানি: গ্রামীণ ভারতে এখনো বহু মানুষ জ্বালানি হিসেবে কাঠের উপর নির্ভরশীল।
খ) গৌণ বনজ সম্পদ:
১. শিল্পদ্রব্য: অরণ্য থেকে প্রাপ্ত বাঁশ, বেত, কেন্দু পাতা, সাবাই ঘাস কাগজ, আসবাবপত্র ও বিড়ি শিল্পের কাঁচামাল। শাল ও পাইন গাছ থেকে প্রাপ্ত রজন, আঠা, তার্পিন তেল ইত্যাদি শিল্পে ব্যবহৃত হয়।
২. খাদ্য ও ঔষধ: অরণ্য থেকে মধু, মোম, ফল, মূল ইত্যাদি সংগ্রহ করা হয়। সিঙ্কোনা, সর্পগন্ধা, তুলসীর মতো ভেষজ উদ্ভিদ থেকে মূল্যবান ঔষধ তৈরি হয়।
গ) কর্মসংস্থান:
বনজ সম্পদ সংগ্রহ, বনভিত্তিক শিল্প এবং পর্যটন শিল্পকে কেন্দ্র করে লক্ষ লক্ষ মানুষের কর্মসংস্থান হয়।
৯. ভারতের জাতীয় উদ্যান ও অভয়ারণ্য গড়ে তোলার উদ্দেশ্য কী?
উত্তর:
ভারতে জাতীয় উদ্যান ও অভয়ারণ্য গড়ে তোলার প্রধান উদ্দেশ্যগুলি হল:
১. বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ: বাঘ, সিংহ, গন্ডার, হাতির মতো বিপন্ন এবং অন্যান্য বন্যপ্রাণীদের তাদের নিজস্ব প্রাকৃতিক পরিবেশে সুরক্ষিত রাখা এবং তাদের বংশবৃদ্ধি নিশ্চিত করা।
২. জীববৈচিত্র্য রক্ষা: শুধুমাত্র প্রাণী নয়, একটি নির্দিষ্ট অঞ্চলের সমগ্র উদ্ভিদজগৎ, প্রাণীজগৎ এবং তাদের বাস্তুতন্ত্রকে (Ecosystem) ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করা।
৩. প্রাকৃতিক ভারসাম্য বজায় রাখা: বনভূমি ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের মাধ্যমে পরিবেশের সামগ্রিক ভারসাম্য বজায় রাখা।
৪. গবেষণা ও শিক্ষা: এই সুরক্ষিত অঞ্চলগুলি জীববিজ্ঞান, পরিবেশ বিজ্ঞান ইত্যাদি বিষয়ে গবেষণা ও শিক্ষার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র হিসেবে কাজ করে।
৫. পরিবেশবান্ধব পর্যটন (Eco-tourism): নিয়ন্ত্রিত পর্যটনের মাধ্যমে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগের সুযোগ করে দেওয়া এবং স্থানীয় মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা।
১০. টিকা লেখো: ক) সামাজিক বনসৃজন খ) যৌথ বন ব্যবস্থাপনা গ) চিপকো আন্দোলন।
উত্তর:
ক) সামাজিক বনসৃজন: এটি একটি বনসৃজন কর্মসূচি যার মূল লক্ষ্য হল সমাজের প্রয়োজন মেটানো এবং পরিবেশের উন্নয়ন। এই পদ্ধতিতে পতিত সরকারি বা সামাজিক জমিতে (যেমন – রাস্তার ধার, রেললাইনের পাশ) স্থানীয় মানুষের সক্রিয় অংশগ্রহণে গাছ লাগানো হয়। এর প্রধান উদ্দেশ্য হল জ্বালানি কাঠ, পশুখাদ্য ও ফলের জোগান দেওয়া, পরিবেশ দূষণ রোধ করা এবং গ্রামীণ কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা।
খ) যৌথ বন ব্যবস্থাপনা (JFM): এটি বন সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনার একটি পদ্ধতি, যেখানে সরকারি বনদপ্তর এবং স্থানীয় গ্রামবাসীরা সম্মিলিতভাবে কাজ করে। এই ব্যবস্থায় গ্রামবাসীরা বনভূমি রক্ষা ও পরিচর্যার দায়িত্ব নেয় এবং তার বিনিময়ে তারা বন থেকে শুকনো ডালপালা, ফল, মধু ইত্যাদি গৌণ বনজ সম্পদ সংগ্রহের অধিকার পায়। পশ্চিমবঙ্গের আড়াবাড়ি অরণ্যে এই প্রকল্প প্রথম সফল হয়।
গ) চিপকো আন্দোলন: এটি ভারতের অন্যতম বিখ্যাত পরিবেশ আন্দোলন। ১৯৭৩ সালে বর্তমান উত্তরাখণ্ডের গাড়োয়াল হিমালয়ে ঠিকাদারদের দ্বারা নির্বিচারে গাছ কাটার বিরুদ্ধে স্থানীয় গ্রামবাসীরা, বিশেষত মহিলারা, এক অহিংস আন্দোলন শুরু করেন। তাঁরা গাছকে জড়িয়ে ধরে (‘চিপকো’) গাছ কাটা বন্ধ করেন। সুন্দরলাল বহুগুণা ও চণ্ডীপ্রসাদ ভট্টের নেতৃত্বে এই আন্দোলন বন সংরক্ষণের ক্ষেত্রে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করে।
ভারতের স্বাভাবিক উদ্ভিদ class 10 প্রশ্ন উত্তর MCQ, অতি-সংক্ষিপ্ত, ও রচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তর : Class 10 Geography ভারতের স্বাভাবিক উদ্ভিদ Question Answer