পরিবেশ তার সম্পদ এবং তাদের সংরক্ষণ প্রশ্ন উত্তর
ক) বহুবিকল্পভিত্তিক প্রশ্নাবলী (MCQ) – মান ১ (৭০টি)
১. নাইট্রোজেন স্থিতিকরণে সাহায্যকারী একটি স্বাধীনজীবী ব্যাকটেরিয়া হল–
২. নাইট্রিফিকেশনে সাহায্যকারী ব্যাকটেরিয়া হল–
৩. ডিনাইট্রিফাইং ব্যাকটেরিয়া কোনটি?
৪. কোনটি গ্রিনহাউস গ্যাস নয়?
৫. অ্যাসিড বৃষ্টির জন্য দায়ী গ্যাসটি হল–
৬. ইউট্রোফিকেশনের ফলে জলে দ্রবীভূত অক্সিজেনের পরিমাণ–
৭. ভারতের একটি বায়োডাইভারসিটি হটস্পট হল–
৮. কোনটি ইন-সিটু সংরক্ষণের উদাহরণ?
৯. পশ্চিমবঙ্গের সুন্দরবন হল একটি–
১০. ক্রায়োসংরক্ষণে ব্যবহৃত হয়–
১১. সিম্ব গোত্রীয় উদ্ভিদের মূলে বসবাসকারী নাইট্রোজেন স্থিতিকারী ব্যাকটেরিয়া হল–
১২. জলদূষণের ফলে সৃষ্ট একটি রোগ হল–
১৩. JFM প্রকল্পটি প্রথম চালু হয় কোন রাজ্যে?
১৪. ভারতের কোন জাতীয় উদ্যানে একশৃঙ্গ গণ্ডার সংরক্ষণ করা হয়?
১৫. কোনটি এক্স-সিটু সংরক্ষণের উদাহরণ?
১৬. বায়ুমণ্ডলের নাইট্রোজেনের পরিমাণ কত?
১৭. BOD-এর পুরো নাম কী?
১৮. জীববৈচিত্র্য বা বায়োডাইভারসিটি শব্দটি প্রথম কে প্রবর্তন করেন?
১৯. একটি অভঙ্গুর প্রকৃতির দূষক হল–
২০. ভারতে বাঘ সংরক্ষণের জন্য যে প্রকল্প চালু হয়েছে তার নাম কী?
২১. নাইট্রোজেন চক্রের কোন ধাপে বায়ুমণ্ডলে নাইট্রোজেন ফিরে যায়?
২২. ফুসফুসের ক্যান্সারের জন্য দায়ী একটি বায়ুদূষক হল–
২৩. ভারতের বিপন্ন প্রজাতির একটি উদাহরণ হল–
২৪. বায়ুমণ্ডলে ওজোন স্তর ধ্বংসের জন্য প্রধানত দায়ী কোনটি?
২৫. অ্যামোনিয়া থেকে নাইট্রাইট তৈরিতে সাহায্য করে কোন ব্যাকটেরিয়া?
২৬. জীববিবর্ধন (Biomagnification) সবচেয়ে বেশি ঘটে কোন ক্ষেত্রে?
২৭. নিম্নলিখিত কোনটি স্থানীয় জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি করে?
২৮. পৃথিবীর ফুসফুস বলা হয় কাকে?
২৯. PBR-এর সম্পূর্ণ নাম কী?
৩০. পরাগরেণু, শুক্রাণু, ডিম্বাণু ইত্যাদিকে সংরক্ষণ করা হয়–
৩১. সাইলেন্ট ভ্যালি জাতীয় উদ্যানটি কোন রাজ্যে অবস্থিত?
৩২. শব্দদূষণের একক কী?
৩৩. অ্যাজমা বা হাঁপানি হল এক প্রকার–
৩৪. কোনটি গৌণ দূষক?
৩৫. গঙ্গা অ্যাকশন প্ল্যান (GAP) কবে চালু হয়?
৩৬. অ্যামোনিফিকেশনে সাহায্যকারী ব্যাকটেরিয়া হল–
৩৭. মিনামাটা রোগ হয় কোন ধাতুর দূষণের ফলে?
৩৮. পশ্চিমবঙ্গের একটি পক্ষী অভয়ারণ্য হল–
৩৯. কুমির সংরক্ষণের জন্য একটি প্রকল্প হল–
৪০. নাইট্রাইট থেকে নাইট্রেট তৈরিতে সাহায্য করে–
৪১. বায়ুদূষণের সঙ্গে জড়িত একটি রোগ হল–
৪২. কোনটি জীববৈচিত্র্য হ্রাসের কারণ নয়?
৪৩. ভারতের প্রথম বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভ কোনটি?
৪৪. কোনটি ক্যান্সারের কারণ হতে পারে?
৪৫. একটি বহিরাগত প্রজাতি হল–
৪৬. SPM এর একটি উৎস হল–
৪৭. শৈবাল ব্লুম (Algal bloom) এর কারণ হল–
৪৮. করবেট জাতীয় উদ্যান বিখ্যাত কোন প্রাণীর জন্য?
৪৯. একটি নাইট্রোজেন স্থিতিকারী নীলাভ-সবুজ শৈবালের নাম হল–
৫০. বিশ্ব পরিবেশ দিবস কবে পালিত হয়?
৫১. তাজমহলের ক্ষয়ের জন্য দায়ী কোনটি?
৫২. জীবগোষ্ঠীর ঘনত্ব বৃদ্ধিকে কী বলে?
৫৩. ভারতের প্রথম জাতীয় উদ্যান কোনটি?
৫৪. নাইট্রোজেন চক্রের কোন ধাপে অ্যামোনিয়া উৎপন্ন হয়?
৫৫. বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভের কোন অঞ্চলে মানুষের প্রবেশ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ?
৫৬. বিশ্ব উষ্ণায়নের একটি ফলাফল হল–
৫৭. পূর্ব হিমালয় হটস্পটের একটি বিপন্ন প্রজাতি হল–
৫৮. কোনটি অভঙ্গুর দূষকের উদাহরণ?
৫৯. নাইট্রোজেন স্থিতিকারী উৎসেচক কোনটি?
৬০. জলাভূমিতে শৈবালের সংখ্যাধিক্যকে কী বলে?
৬১. পশ্চিমবঙ্গের গরুমারা একটি–
৬২. বায়ুতে ভাসমান ধূলিকণা, পরাগরেণু ইত্যাদিকে একত্রে কী বলে?
৬৩. জাতীয় উদ্যান বা ন্যাশনাল পার্কে কোনটি নিষিদ্ধ?
৬৪. নিম্নলিখিত কোন প্রাণীটি ভারতের জন্য এন্ডেমিক?
৬৫. কোনটি গ্রিনহাউস গ্যাস ও ওজোন স্তর ধ্বংসকারী উভয়ই?
৬৬. মটর গাছের মূলে রাইজোবিয়ামের বসবাস হল এক প্রকার–
৬৭. যে বইতে বিপন্ন প্রজাতিদের তালিকা থাকে, তাকে বলে–
৬৮. ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার একটি সমস্যা হল–
৬৯. জলাশয়ে পুষ্টি উপাদানের বৃদ্ধিকে কী বলে?
৭০. কোনটি বায়োডাইভারসিটির α-বৈচিত্র্যকে বোঝায়?
খ) অতি-সংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্নাবলী (VSA) – মান ১ (৭০টি)
i) একটি শব্দে বা একটি বাক্যে উত্তর দাও (২০টি)
১. একটি গ্রিনহাউস গ্যাসের নাম লেখো।
উত্তর: কার্বন ডাইঅক্সাইড (CO₂)।
২. নাইট্রিফিকেশন কাকে বলে?
উত্তর: যে প্রক্রিয়ায় ব্যাকটেরিয়া দ্বারা মাটির অ্যামোনিয়া প্রথমে নাইট্রাইট ও পরে নাইট্রেট যৌগে পরিণত হয়, তাকে নাইট্রিফিকেশন বলে।
৩. ভারতের একটি অভয়ারণ্যের নাম লেখো।
উত্তর: জলদাপাড়া অভয়ারণ্য (বর্তমানে জাতীয় উদ্যান)।
৪. জীববৈচিত্র্যের একটি গুরুত্ব লেখো।
উত্তর: জীববৈচিত্র্য বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য রক্ষা করে।
৫. JFM-এর পুরো নাম কী?
উত্তর: জয়েন্ট ফরেস্ট ম্যানেজমেন্ট (Joint Forest Management)।
৬. একটি ভঙ্গুর দূষকের উদাহরণ দাও।
উত্তর: কাগজ (বা সবজির খোসা)।
৭. ভারতের কোন অরণ্যে সিংহ সংরক্ষণ করা হয়?
উত্তর: গুজরাটের গির অরণ্যে।
৮. বায়ুমণ্ডলের কোন স্তরে ওজোন গ্যাসের ঘনত্ব সবচেয়ে বেশি?
উত্তর: স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার।
৯. দুটি ডিনাইট্রিফাইং ব্যাকটেরিয়ার নাম লেখো।
উত্তর: সিউডোমোনাস ও থায়োব্যাসিলাস।
১০. জীববিবর্ধন বা বায়োম্যাগনিফিকেশন কী?
উত্তর: খাদ্যশৃঙ্খলে ক্ষতিকারক রাসায়নিক পদার্থের (যেমন DDT) ঘনত্ব ক্রমশ বৃদ্ধি পাওয়ার ঘটনাকে জীববিবর্ধন বলে।
১১. ফুসফুসের রোগের জন্য দায়ী একটি বায়ুদূষকের নাম লেখো।
উত্তর: SPM (Suspended Particulate Matter)।
১২. পশ্চিমবঙ্গের একটি বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভের নাম লেখো।
উত্তর: সুন্দরবন।
১৩. একটি স্থানীয় বা এন্ডেমিক প্রজাতির উদাহরণ দাও।
উত্তর: ভারতের এশিয়াটিক লায়ন।
১৪. বিশ্ব উষ্ণায়নের একটি কারণ লেখো।
উত্তর: বায়ুমণ্ডলে গ্রিনহাউস গ্যাসের (যেমন CO₂) পরিমাণ বৃদ্ধি।
১৫. ক্রায়োসংরক্ষণের তাপমাত্রা কত?
উত্তর: -196° সেলসিয়াস।
১৬. একটি বহিরাগত প্রজাতির নাম লেখো যা স্থানীয় জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি করে।
উত্তর: পার্থেনিয়াম।
১৭. হটস্পট শব্দটি কে প্রথম ব্যবহার করেন?
উত্তর: নরম্যান মায়ার্স।
১৮. ভারতের একটি বিপন্ন স্তন্যপায়ী প্রাণীর নাম লেখো।
উত্তর: রয়েল বেঙ্গল টাইগার।
১৯. শব্দের প্রাবল্য মাপার একক কী?
উত্তর: ডেসিবল (dB)।
২০. নাইট্রোজেন চক্রের কোন পর্যায়টি নাইট্রিফিকেশনের বিপরীত?
উত্তর: ডিনাইট্রিফিকেশন।
ii) নীচের বাক্যগুলো সত্য অথবা মিথ্যা নিরূপণ করো (২০টি)
২১. অ্যাজোটোব্যাক্টর একটি মিথোজীবী ব্যাকটেরিয়া।
উত্তর: মিথ্যা (সঠিক: এটি একটি স্বাধীনজীবী ব্যাকটেরিয়া)।
২২. চিড়িয়াখানা একটি ইন-সিটু সংরক্ষণের উদাহরণ।
উত্তর: মিথ্যা (সঠিক: এটি এক্স-সিটু সংরক্ষণের উদাহরণ)।
২৩. অ্যাসিড বৃষ্টির ফলে মাটির অম্লতা বৃদ্ধি পায়।
উত্তর: সত্য।
২৪. JFM-এ স্থানীয় মানুষের অংশগ্রহণের কোনো ভূমিকা নেই।
উত্তর: মিথ্যা (সঠিক: JFM-এ স্থানীয় মানুষের সক্রিয় অংশগ্রহণ জরুরি)।
২৫. CO₂ একটি গ্রিনহাউস গ্যাস।
উত্তর: সত্য।
২৬. রেড পান্ডা ভারতের একটি বিপন্ন প্রজাতি।
উত্তর: সত্য।
২৭. ডিনাইট্রিফিকেশনের ফলে মাটিতে নাইট্রেট যৌগের পরিমাণ বাড়ে।
উত্তর: মিথ্যা (সঠিক: নাইট্রেট ভেঙে নাইট্রোজেন গ্যাস উৎপন্ন হয়, ফলে মাটিতে নাইট্রেটের পরিমাণ কমে)।
২৮. সুন্দরবন একটি ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট।
উত্তর: সত্য।
২৯. ইউট্রোফিকেশনের ফলে জলে দ্রবীভূত O₂-এর পরিমাণ বেড়ে যায়।
উত্তর: মিথ্যা (সঠিক: কমে যায়)।
৩০. জাতীয় উদ্যান কেন্দ্রীয় সরকার দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়।
উত্তর: সত্য (এবং রাজ্য সরকার দ্বারা পরিচালিত)।
৩১. পার্থেনিয়াম একটি বহিরাগত প্রজাতি।
উত্তর: সত্য।
৩২. নাইট্রোজেন স্থিতিকরণ একটি ভৌত প্রক্রিয়া।
উত্তর: মিথ্যা (সঠিক: এটি মূলত একটি জৈবনিক প্রক্রিয়া, যদিও প্রাকৃতিক ও শিল্প প্রক্রিয়াও আছে)।
৩৩. বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভের কোর অঞ্চলে গবেষণার কাজ চলে।
উত্তর: মিথ্যা (সঠিক: কোর অঞ্চলে প্রবেশ নিষিদ্ধ, বাফার অঞ্চলে নিয়ন্ত্রিত গবেষণার কাজ চলে)।
৩৪. DDT হল একটি ভঙ্গুর দূষক।
উত্তর: মিথ্যা (সঠিক: এটি একটি অভঙ্গুর দূষক)।
৩৫. বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলে সমুদ্রের জলস্তর কমে যায়।
উত্তর: মিথ্যা (সঠিক: জলস্তর বেড়ে যায়)।
৩৬. বোটানিক্যাল গার্ডেন একটি ইন-সিটু সংরক্ষণ।
উত্তর: মিথ্যা (সঠিক: এটি একটি এক্স-সিটু সংরক্ষণ)।
৩৭. রাইজোবিয়াম একটি স্বাধীনজীবী ব্যাকটেরিয়া।
উত্তর: মিথ্যা (সঠিক: এটি একটি মিথোজীবী ব্যাকটেরিয়া)।
৩৮. জীববৈচিত্র্যের প্রাচুর্যযুক্ত অঞ্চলকে হটস্পট বলে।
উত্তর: সত্য।
৩৯. ফুসফুসের ক্যান্সারের জন্য CO দায়ী।
উত্তর: মিথ্যা (সঠিক: CO শ্বাসরোধ করে, ক্যান্সারের জন্য কার্সিনোজেন দায়ী)।
৪০. অভয়ারণ্যে সাধারণ মানুষের প্রবেশ নিয়ন্ত্রিত।
উত্তর: সত্য।
iii) নীচের বাক্যগুলোর শূন্যস্থানগুলোতে উপযুক্ত শব্দ বসাও (১৫টি)
৪১. নাইট্রোজেন চক্রের ________ পর্যায়ে নাইট্রেট যৌগ ভেঙে নাইট্রোজেন গ্যাস উৎপন্ন হয়।
উত্তর: ডিনাইট্রিফিকেশন
৪২. ________ সংরক্ষণে জীবদের তাদের নিজস্ব প্রাকৃতিক বাসস্থানে সংরক্ষণ করা হয়।
উত্তর: ইন-সিটু
৪৩. বায়ুমণ্ডলের ওজোন স্তর ________ রশ্মি শোষণ করে।
উত্তর: অতিবেগুনি (UV)
৪৪. ________ -এর প্রভাবে তাজমহলের ক্ষয় হয়।
উত্তর: অ্যাসিড বৃষ্টি
৪৫. পশ্চিমবঙ্গের ________ অরণ্যে JFM প্রথম শুরু হয়।
উত্তর: আরাবাড়ি
৪৬. জীববৈচিত্র্যের সর্বাধিক প্রাচুর্যযুক্ত অঞ্চলকে ________ বলে।
উত্তর: হটস্পট
৪৭. DDT-র মতো অভঙ্গুর দূষকের খাদ্যশৃঙ্খলে সঞ্চয়নকে ________ বলে।
উত্তর: জীববিবর্ধন (বায়োম্যাগনিফিকেশন)
৪৮. ভারতের প্রথম জাতীয় উদ্যান হল ________।
উত্তর: করবেট জাতীয় উদ্যান
৪৯. ________ একটি প্রধান গ্রিনহাউস গ্যাস।
উত্তর: কার্বন ডাইঅক্সাইড (CO₂)
৫০. মটর গাছের মূলে ________ ব্যাকটেরিয়া বাস করে।
উত্তর: রাইজোবিয়াম
৫১. জলদূষণের ফলে সৃষ্ট একটি রোগের নাম ________।
উত্তর: কলেরা
৫২. চিড়িয়াখানা হল এক প্রকার ________ সংরক্ষণ।
উত্তর: এক্স-সিটু
৫৩. ________ প্রক্রিয়ায় অ্যামোনিয়া থেকে নাইট্রেট উৎপন্ন হয়।
উত্তর: নাইট্রিফিকেশন
৫৪. একশৃঙ্গ গণ্ডার পশ্চিমবঙ্গের ________ জাতীয় উদ্যানে সংরক্ষিত।
উত্তর: জলদাপাড়া (বা গরুমারা)
৫৫. বায়ুতে ভাসমান সূক্ষ্ম ধূলিকণাকে ________ বলে।
উত্তর: SPM
iv) A স্তম্ভের সঙ্গে B স্তম্ভ মেলাও (৩ সেট x ৫টি = ১৫টি)
সেট – ১
A স্তম্ভ | B স্তম্ভ |
---|---|
৫৬. নাইট্রিফিকেশন | (ক) সিউডোমোনাস |
৫৭. ডিনাইট্রিফিকেশন | (খ) চিড়িয়াখানা |
৫৮. N₂ স্থিতিকরণ | (গ) জাতীয় উদ্যান |
৫৯. ইন-সিটু সংরক্ষণ | (ঘ) নাইট্রোব্যাক্টর |
৬০. এক্স-সিটু সংরক্ষণ | (ঙ) রাইজোবিয়াম |
উত্তর:
৫৬. নাইট্রিফিকেশন – (ঘ) নাইট্রোব্যাক্টর
৫৭. ডিনাইট্রিফিকেশন – (ক) সিউডোমোনাস
৫৮. N₂ স্থিতিকরণ – (ঙ) রাইজোবিয়াম
৫৯. ইন-সিটু সংরক্ষণ – (গ) জাতীয় উদ্যান
৬০. এক্স-সিটু সংরক্ষণ – (খ) চিড়িয়াখানা
সেট – ২
A স্তম্ভ | B স্তম্ভ |
---|---|
৬১. বাঘ | (ক) গির অরণ্য |
৬২. সিংহ | (খ) আরাবাড়ি |
৬৩. গণ্ডার | (গ) সুন্দরবন |
৬৪. কুমির | (ঘ) ভিতরকণিকা |
৬৫. JFM | (ঙ) জলদাপাড়া |
উত্তর:
৬১. বাঘ – (গ) সুন্দরবন
৬২. সিংহ – (ক) গির অরণ্য
৬৩. গণ্ডার – (ঙ) জলদাপাড়া
৬৪. কুমির – (ঘ) ভিতরকণিকা
৬৫. JFM – (খ) আরাবাড়ি
সেট – ৩
A স্তম্ভ | B স্তম্ভ |
---|---|
৬৬. বিশ্ব উষ্ণায়ন | (ক) ওজোন স্তর ক্ষয় |
৬৭. অ্যাসিড বৃষ্টি | (খ) ব্রঙ্কাইটিস |
৬৮. CFC | (গ) সমুদ্রের জলস্তর বৃদ্ধি |
৬৯. SPM | (ঘ) ইউট্রোফিকেশন |
৭০. ফসফেট যৌগ | (ঙ) SO₂ |
উত্তর:
৬৬. বিশ্ব উষ্ণায়ন – (গ) সমুদ্রের জলস্তর বৃদ্ধি
৬৭. অ্যাসিড বৃষ্টি – (ঙ) SO₂
৬৮. CFC – (ক) ওজোন স্তর ক্ষয়
৬৯. SPM – (খ) ব্রঙ্কাইটিস
৭০. ফসফেট যৌগ – (ঘ) ইউট্রোফিকেশন
গ) সংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্নাবলী – মান ২ (৩৫টি)
১. নাইট্রোজেন চক্রে ব্যাকটেরিয়ার দুটি ভূমিকা লেখো।
উত্তর:
১. নাইট্রোজেন স্থিতিকরণ: রাইজোবিয়াম, অ্যাজোটোব্যাক্টর ইত্যাদি ব্যাকটেরিয়া বায়ুর মুক্ত নাইট্রোজেনকে অ্যামোনিয়া যৌগে আবদ্ধ করে।
২. নাইট্রিফিকেশন: নাইট্রোসোমোনাস ও নাইট্রোব্যাক্টর ব্যাকটেরিয়া মাটির অ্যামোনিয়াকে নাইট্রেট যৌগে পরিণত করে, যা উদ্ভিদ গ্রহণ করতে পারে।
২. গ্রিনহাউস প্রভাব বলতে কী বোঝ?
উত্তর: বায়ুমণ্ডলে উপস্থিত CO₂, CH₄, CFC ইত্যাদি গ্রিনহাউস গ্যাসগুলি সূর্য থেকে আসা ক্ষুদ্র তরঙ্গদৈর্ঘ্যের আলোকরশ্মিকে পৃথিবীতে আসতে দেয়, কিন্তু পৃথিবী থেকে বিকিরিত দীর্ঘ তরঙ্গদৈর্ঘ্যের তাপকে মহাশূন্যে ফিরে যেতে বাধা দেয়। এর ফলে পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়। এই ঘটনাকে গ্রিনহাউস প্রভাব বলে।
৩. ইন-সিটু ও এক্স-সিটু সংরক্ষণের দুটি পার্থক্য লেখো।
উত্তর:
১. স্থান: ইন-সিটু সংরক্ষণে জীবদের তাদের নিজস্ব প্রাকৃতিক বাসস্থানে সংরক্ষণ করা হয়। এক্স-সিটু সংরক্ষণে জীবদের তাদের প্রাকৃতিক বাসস্থান থেকে দূরে কৃত্রিম পরিবেশে সংরক্ষণ করা হয়।
২. উদাহরণ: ইন-সিটু সংরক্ষণের উদাহরণ হল জাতীয় উদ্যান, অভয়ারণ্য। এক্স-সিটু সংরক্ষণের উদাহরণ হল চিড়িয়াখানা, বোটানিক্যাল গার্ডেন।
৪. জীববৈচিত্র্যের দুটি গুরুত্ব লেখো।
উত্তর:
১. বাস্তুতান্ত্রিক গুরুত্ব: জীববৈচিত্র্য বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য রক্ষা করে, পরাগযোগ, মৃত্তিকা গঠন এবং জলবায়ু নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
২. অর্থনৈতিক গুরুত্ব: জীববৈচিত্র্য থেকে আমরা খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, ঔষধ এবং শিল্পের কাঁচামাল পেয়ে থাকি।
৫. ইউট্রোফিকেশন কাকে বলে?
উত্তর: জলাশয়ে ডিটারজেন্ট, কৃষিজ বর্জ্য ইত্যাদি থেকে ফসফেট ও নাইট্রেট জাতীয় পুষ্টি উপাদান মিশে যাওয়ার ফলে শৈবাল ও অন্যান্য জলজ উদ্ভিদের অত্যাধিক বৃদ্ধি ঘটে। এর ফলে জলে দ্রবীভূত অক্সিজেনের পরিমাণ কমে যায় এবং জলজ প্রাণীর মৃত্যু হয়। এই ঘটনাকে ইউট্রোফিকেশন বলে।
৬. বায়োডাইভারসিটি হটস্পট বলতে কী বোঝ? ভারতের দুটি হটস্পটের নাম লেখো।
উত্তর:
হটস্পট: যে সমস্ত অঞ্চলে অত্যাধিক সংখ্যায় এন্ডেমিক প্রজাতিসহ প্রচুর জীববৈচিত্র্য রয়েছে এবং যেগুলি বর্তমানে মানুষের কার্যকলাপের ফলে বিপন্ন, সেই অঞ্চলগুলিকে বায়োডাইভারসিটি হটস্পট বলে।
উদাহরণ: (i) পূর্ব হিমালয়, (ii) পশ্চিমঘাট পর্বতমালা ও শ্রীলঙ্কা।
৭. বায়ুদূষণের দুটি কারণ লেখো।
উত্তর:
১. যানবাহন: গাড়ি, বাস, ট্রেন ইত্যাদি থেকে নির্গত ধোঁয়ায় কার্বন মনোক্সাইড (CO), নাইট্রোজেন অক্সাইড (NOx) ইত্যাদি ক্ষতিকারক গ্যাস থাকে।
২. শিল্প ও কলকারখানা: শিল্প ও বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র থেকে সালফার ডাইঅক্সাইড (SO₂), কার্বন ডাইঅক্সাইড (CO₂) এবং প্রচুর ধূলিকণা (SPM) বায়ুতে মেশে।
৮. JFM ও PBR-এর উদ্দেশ্য কী?
উত্তর:
JFM-এর উদ্দেশ্য: স্থানীয় মানুষদের সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে অরণ্য সংরক্ষণ করা এবং অরণ্যজাত সম্পদ ব্যবহার করে তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন করা।
PBR-এর উদ্দেশ্য: স্থানীয় জীববৈচিত্র্য এবং তার সঙ্গে জড়িত পরম্পরাগত জ্ঞান নথিভুক্ত করে রাখা।
৯. জীববৈচিত্র্য হ্রাসের দুটি প্রধান কারণ উল্লেখ করো।
উত্তর:
১. বাসস্থান ধ্বংস: নগরায়ন, শিল্পায়ন, কৃষিক্ষেত্র সম্প্রসারণ ও অরণ্য নিধনের ফলে জীবদের প্রাকৃতিক বাসস্থান ধ্বংস হচ্ছে।
২. দূষণ: জল, বায়ু ও মৃত্তিকা দূষণের ফলে অনেক প্রজাতির জীব বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে।
১০. বিশ্ব উষ্ণায়নের দুটি ফলাফল লেখো।
উত্তর:
১. জলবায়ুর পরিবর্তন: বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলে ঋতুচক্রের পরিবর্তন, অতিবৃষ্টি, অনাবৃষ্টি, খরা ইত্যাদি চরম আবহাওয়ার ঘটনা বাড়ছে।
২. সমুদ্রের জলস্তর বৃদ্ধি: মেরু অঞ্চলের বরফ গলে যাওয়ার ফলে সমুদ্রের জলস্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা উপকূলবর্তী নিচু এলাকাগুলিকে প্লাবিত করছে।
১১. অ্যামোনিফিকেশন কী?
উত্তর: যে প্রক্রিয়ায় মৃত জীবদেহ বা তাদের রেচন পদার্থে থাকা প্রোটিন ও নিউক্লিক অ্যাসিডকে অণুজীব (যেমন—ব্যাসিলাস মাইকয়ডিস) বিয়োজিত করে অ্যামোনিয়ায় পরিণত করে, তাকে অ্যামোনিফিকেশন বলে।
১২. জাতীয় উদ্যান ও অভয়ারণ্যের মধ্যে দুটি পার্থক্য লেখো।
উত্তর:
১. নিয়ন্ত্রণ: জাতীয় উদ্যান কেন্দ্রীয় সরকারের আইন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত ও অধিক কঠোরভাবে পরিচালিত হয়। অভয়ারণ্য রাজ্য সরকারের আইন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত এবং তুলনামূলকভাবে কম কঠোর।
২. মানুষের প্রবেশ: জাতীয় উদ্যানে সাধারণ মানুষের প্রবেশাধিকার অত্যন্ত নিয়ন্ত্রিত। অভয়ারণ্যে নির্দিষ্ট শর্ত সাপেক্ষে সাধারণ মানুষের প্রবেশ অনুমোদিত।
১৩. অ্যাসিড বৃষ্টি কী? এর একটি ক্ষতিকারক প্রভাব লেখো।
উত্তর:
অ্যাসিড বৃষ্টি: কলকারখানা ও যানবাহন থেকে নির্গত SO₂ ও NO₂ গ্যাস বায়ুমণ্ডলের জলীয় বাষ্পের সঙ্গে বিক্রিয়া করে যথাক্রমে সালফিউরিক অ্যাসিড (H₂SO₄) ও নাইট্রিক অ্যাসিড (HNO₃) উৎপন্ন করে এবং বৃষ্টির জলের সঙ্গে পৃথিবীতে নেমে আসে। একে অ্যাসিড বৃষ্টি বলে।
ক্ষতিকারক প্রভাব: এটি সৌধ, মূর্তি (যেমন—তাজমহল) এবং ঐতিহাসিক স্থাপত্যের ক্ষতি করে।
১৪. বায়ুমণ্ডলে নাইট্রোজেন গ্যাসের গুরুত্ব কী?
উত্তর: নাইট্রোজেন হল প্রোটিন, নিউক্লিক অ্যাসিড (DNA, RNA) ও ক্লোরোফিলের একটি অপরিহার্য উপাদান, যা জীবের বৃদ্ধি ও বেঁচে থাকার জন্য অত্যাবশ্যক। এছাড়া বায়ুমণ্ডলে নাইট্রোজেন অক্সিজেনের দাহিকা শক্তিকে নিয়ন্ত্রণ করে।
১৫. শব্দদূষণের দুটি উৎস লেখো।
উত্তর: (i) যানবাহনের হর্ন ও ইঞ্জিনের আওয়াজ এবং (ii) কলকারখানার যন্ত্রপাতির আওয়াজ। (এছাড়া লাউডস্পিকার, বাজি ইত্যাদি)।
১৬. জীববৈচিত্র্যের তিনটি স্তর কী কী?
উত্তর: জীববৈচিত্র্যের তিনটি স্তর হল: (i) জিনগত বৈচিত্র্য (Gene diversity), (ii) প্রজাতিগত বৈচিত্র্য (Species diversity) এবং (iii) বাস্তুতান্ত্রিক বৈচিত্র্য (Ecosystem diversity)।
১৭. জনসংখ্যা বৃদ্ধির দুটি সমস্যা উল্লেখ করো।
উত্তর:
১. প্রাকৃতিক সম্পদের উপর চাপ: জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে জল, জমি, অরণ্য ইত্যাদি প্রাকৃতিক সম্পদের উপর প্রচণ্ড চাপ সৃষ্টি হয়।
২. দূষণ বৃদ্ধি: অতিরিক্ত জনসংখ্যা বায়ু, জল ও মৃত্তিকা দূষণের অন্যতম প্রধান কারণ।
১৮. ক্রায়োসংরক্ষণের সুবিধা কী?
উত্তর: ক্রায়োসংরক্ষণের মাধ্যমে অত্যন্ত কম তাপমাত্রায় (-196°C) শুক্রাণু, ডিম্বাণু, পরাগরেণু, বীজ বা ভ্রূণকে দীর্ঘদিন ধরে অবিকৃত অবস্থায় সংরক্ষণ করা যায়। এটি বিপন্ন প্রজাতির বংশরক্ষায় এবং জিন ভান্ডার তৈরিতে সাহায্য করে।
১৯. জলদূষণের দুটি উৎস কী কী?
উত্তর: (i) গৃহস্থালির আবর্জনা ও পয়ঃপ্রণালীর বর্জ্য এবং (ii) শিল্প ও কলকারখানা থেকে নির্গত রাসায়নিক পদার্থ।
২০. ওজোন গহ্বর বা ওজোন হোল কী?
উত্তর: বায়ুমণ্ডলের স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারে অবস্থিত ওজোন স্তরটি ক্লোরোফ্লুরোকার্বন (CFC) এবং অন্যান্য দূষকের প্রভাবে পাতলা হয়ে যাওয়া বা ছিদ্র সৃষ্টি হওয়ার ঘটনাকে ওজোন গহ্বর বা ওজোন হোল বলে।
২১. অ্যাজমা বা হাঁপানি রোগের দুটি কারণ লেখো।
উত্তর: (i) বায়ুতে ভাসমান ধূলিকণা, পরাগরেণু, পশুর লোম ইত্যাদি অ্যালার্জেনের উপস্থিতি। (ii) SO₂, NO₂ ইত্যাদি বায়ুদূষকের প্রভাবে শ্বাসনালীর প্রদাহ।
২২. রেড ডেটা বুক ও গ্রিন ডেটা বুকের মধ্যে পার্থক্য কী?
উত্তর:
রেড ডেটা বুক: যে পুস্তিকায় বিপন্ন বা বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির তালিকা নথিভুক্ত করা হয়, তাকে রেড ডেটা বুক বলে।
গ্রিন ডেটা বুক: যে পুস্তিকায় সংরক্ষিত এবং বিপদ থেকে মুক্ত প্রজাতির তালিকা নথিভুক্ত করা হয়, তাকে গ্রিন ডেটা বুক বলে।
২৩. বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভের বিভিন্ন অঞ্চলগুলির নাম লেখো।
উত্তর: বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভের তিনটি প্রধান অঞ্চল হল: (i) কোর অঞ্চল (Core Zone), (ii) বাফার অঞ্চল (Buffer Zone) এবং (iii) ট্রানজিশন অঞ্চল (Transition Zone)।
২৪. হটস্পট নির্ধারণের দুটি শর্ত লেখো।
উত্তর: (i) সেই অঞ্চলে কমপক্ষে ১৫০০টি এন্ডেমিক বা স্থানিক সংবহন কলাযুক্ত উদ্ভিদ প্রজাতি থাকতে হবে। (ii) ওই অঞ্চলের প্রাথমিক বনভূমির ৭০% বা তার বেশি ধ্বংস হয়ে গেছে বা বিপন্ন।
২৫. ডিনাইট্রিফিকেশনের গুরুত্ব কী?
উত্তর: ডিনাইট্রিফিকেশন প্রক্রিয়ায় মাটির নাইট্রেট যৌগ ভেঙে নাইট্রোজেন গ্যাস বায়ুমণ্ডলে ফিরে যায়। এর ফলে নাইট্রোজেন চক্র সম্পন্ন হয় এবং বায়ুমণ্ডলে নাইট্রোজেনের ভারসাম্য বজায় থাকে।
২৬. ব্রঙ্কাইটিস রোগের দুটি লক্ষণ কী?
উত্তর: (i) ক্রমাগত কাশি ও কফ ওঠা এবং (ii) শ্বাসকষ্ট হওয়া।
২৭. ক্যান্সারের দুটি কারণ লেখো।
উত্তর: (i) তামাক সেবন এবং ধূমপান। (ii) তেজস্ক্রিয় পদার্থ এবং ক্ষতিকারক রশ্মির (যেমন—অতিবেগুনি রশ্মি) সংস্পর্শে আসা।
২৮. গঙ্গা দূষণের দুটি কারণ উল্লেখ করো।
উত্তর: (i) গঙ্গার তীরে অবস্থিত শহর ও শিল্পাঞ্চল থেকে অপরিশোধিত পয়ঃনিষ্কাশন ও শিল্প-বর্জ্য গঙ্গায় মেশা। (ii) কৃষিজমি থেকে ধুয়ে আসা কীটনাশক ও রাসায়নিক সার গঙ্গায় মেশা।
২৯. বাঘের সংখ্যা কমে যাওয়ার দুটি কারণ লেখো।
উত্তর: (i) চোরাশিকার: বাঘের চামড়া, হাড় ও অন্যান্য অঙ্গপ্রত্যঙ্গের জন্য চোরাশিকার। (ii) বাসস্থান ধ্বংস: অরণ্য নিধনের ফলে বাঘের স্বাভাবিক বাসস্থান ও শিকারের অভাব।
৩০. মিথোজীবী নাইট্রোজেন সংবন্ধনকারী ব্যাকটেরিয়ার উদাহরণ দাও।
উত্তর: রাইজোবিয়াম (Rhizobium), যা সিম্ব গোত্রীয় উদ্ভিদের মূলে অর্বুদ গঠন করে বাস করে।
৩১. বায়ুমণ্ডলীয় নাইট্রোজেন কীভাবে মাটিতে আবদ্ধ হয়?
উত্তর: বজ্রপাতের সময় বায়ুর নাইট্রোজেন অক্সিজেনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে নাইট্রোজেন অক্সাইড গঠন করে, যা বৃষ্টির জলের সঙ্গে মিশে অ্যাসিড রূপে মাটিতে আসে এবং নাইট্রেট লবণে পরিণত হয়।
৩২. শব্দদূষণের ফলে মানুষের দুটি শারীরিক সমস্যা উল্লেখ করো।
উত্তর: (i) শ্রবণক্ষমতা হ্রাস এবং স্থায়ী বধিরতা। (ii) উচ্চ রক্তচাপ এবং হৃদরোগের ঝুঁকি বৃদ্ধি।
৩৩. অভঙ্গুর দূষক বলতে কী বোঝ?
উত্তর: যে সমস্ত দূষক পদার্থ প্রকৃতিতে অণুজীব দ্বারা বিয়োজিত হয় না এবং পরিবেশে দীর্ঘদিন ধরে অপরিবর্তিত অবস্থায় থেকে যায়, তাদের অভঙ্গুর দূষক বলে। যেমন—DDT, প্লাস্টিক।
৩৪. অভয়ারণ্য (Sanctuary) কাকে বলে?
উত্তর: যে সংরক্ষিত বনাঞ্চলে কোনো নির্দিষ্ট বিপন্ন প্রজাতিকে সংরক্ষণের জন্য বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয় এবং যেখানে নিয়ন্ত্রিতভাবে পর্যটন ও গবেষণার অনুমতি থাকে, তাকে অভয়ারণ্য বলে। যেমন—জলদাপাড়া অভয়ারণ্য।
৩৫. বন্যপ্রাণী আইন (Wildlife Protection Act) কবে চালু হয়?
উত্তর: ভারতে বন্যপ্রাণী আইন (Wildlife Protection Act) ১৯৭২ সালে চালু হয়।
ঘ) রচনাধর্মী প্রশ্নাবলী – মান ৫ (২০টি)
১. নাইট্রোজেন চক্রের ধাপগুলি একটি রেখাচিত্রের সাহায্যে দেখাও।
উত্তর:
[এখানে নাইট্রোজেন চক্রের একটি সুন্দর ও সুস্পষ্ট রেখাচিত্র আঁকতে হবে।]
রেখাচিত্রের বর্ণনা:
চিত্রের কেন্দ্রে “বায়ুমণ্ডলীয় নাইট্রোজেন (N₂)” লিখে শুরু করতে হবে।
- নাইট্রোজেন স্থিতিকরণ (Fixation): বায়ুমণ্ডলীয় N₂ থেকে মাটিতে অ্যামোনিয়া (NH₃) তৈরির পথগুলি দেখাতে হবে।
- জৈবনিক (Biological): মিথোজীবী (রাইজোবিয়াম) ও স্বাধীনজীবী (অ্যাজোটোব্যাক্টর) ব্যাকটেরিয়া দ্বারা।
- প্রাকৃতিক (Atmospheric): বজ্রপাতের মাধ্যমে।
- শিল্পজাত (Industrial): সার কারখানায়।
- অ্যামোনিফিকেশন (Ammonification): মৃত জীবদেহ ও রেচন পদার্থ থেকে অণুজীব দ্বারা অ্যামোনিয়া (NH₃) উৎপাদন।
- নাইট্রিফিকেশন (Nitrification): অ্যামোনিয়া (NH₃) থেকে নাইট্রাইট (NO₂⁻) এবং নাইট্রাইট থেকে নাইট্রেট (NO₃⁻) রূপান্তর। এই ধাপে নাইট্রোসোমোনাস ও নাইট্রোব্যাক্টর ব্যাকটেরিয়ার ভূমিকা উল্লেখ করতে হবে।
- উদ্ভিদের গ্রহণ: উদ্ভিদ মাটি থেকে নাইট্রেট লবণ শোষণ করে।
- ডিনাইট্রিফিকেশন (Denitrification): মাটির নাইট্রেট যৌগ ভেঙে ডিনাইট্রিফাইং ব্যাকটেরিয়া (সিউডোমোনাস) দ্বারা পুনরায় বায়ুমণ্ডলে N₂ গ্যাস মুক্ত হওয়া।
২. বায়ুদূষণের কারণ, ফলাফল এবং নিয়ন্ত্রণের দুটি উপায় আলোচনা করো।
উত্তর:
কারণ:
- প্রাকৃতিক কারণ: আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত, দাবানল, ধূলিঝড় ইত্যাদি।
- মনুষ্যসৃষ্ট কারণ:
- যানবাহন: গাড়ি, বাস, বিমান থেকে নির্গত CO, CO₂, NOx, হাইড্রোকার্বন।
- শিল্প: কলকারখানা ও বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে নির্গত SO₂, CO₂ ও SPM।
- CFC নির্গমন: রেফ্রিজারেটর, এসি থেকে ক্লোরোফ্লুরোকার্বন নির্গমন।
- মানব স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব: ফুসফুসের রোগ (ব্রঙ্কাইটিস, অ্যাজমা, ক্যান্সার), হৃদরোগ এবং শ্বাসকষ্ট।
- পরিবেশের উপর প্রভাব: বিশ্ব উষ্ণায়ন, অ্যাসিড বৃষ্টি, ওজোন স্তর ক্ষয় এবং স্মগ সৃষ্টি।
- অচিরাচরিত শক্তির ব্যবহার: जीवाश्म জ্বালানির পরিবর্তে সৌরশক্তি, বায়ুশক্তি ইত্যাদি দূষণহীন শক্তির ব্যবহার বাড়ানো।
- বনসৃজন ও বৃক্ষরোপণ: প্রচুর পরিমাণে গাছ লাগানো, যা বায়ুমণ্ডল থেকে CO₂ শোষণ করে এবং অক্সিজেন সরবরাহ করে।
৩. জলদূষণের কারণ ও ফলাফল আলোচনা করো। জলদূষণ নিয়ন্ত্রণের দুটি উপায় লেখো।
উত্তর:
কারণ:
- গৃহস্থালির বর্জ্য: শহর ও গ্রামের বাড়িঘর থেকে নির্গত মলমূত্র, ডিটারজেন্ট এবং আবর্জনা সরাসরি জলাশয়ে মেশা।
- শিল্প-বর্জ্য: কলকারখানা থেকে নির্গত অপরিশোধিত রাসায়নিক পদার্থ, ভারী ধাতু (পারদ, সিসা) এবং গরম জল।
- কৃষিজ বর্জ্য: কৃষিক্ষেত্রে ব্যবহৃত অতিরিক্ত রাসায়নিক সার ও কীটনাশক (DDT) বৃষ্টির জলের সঙ্গে ধুয়ে জলাশয়ে মেশা।
- রোগের বিস্তার: দূষিত জল পানের ফলে কলেরা, টাইফয়েড, জন্ডিস, আমাশয় ইত্যাদি জলবাহিত রোগের বিস্তার ঘটে।
- ইউট্রোফিকেশন: জলাশয়ে পুষ্টি উপাদানের পরিমাণ বেড়ে গিয়ে শৈবাল ও অন্যান্য জলজ উদ্ভিদের অত্যাধিক বৃদ্ধি ঘটে, যা জলে দ্রবীভূত O₂-এর পরিমাণ কমিয়ে দেয় এবং জলজ প্রাণীর মৃত্যু ঘটায়।
- জীববিবর্ধন (বায়োম্যাগনিফিকেশন): অভঙ্গুর দূষক (যেমন—DDT) খাদ্যশৃঙ্খলে প্রবেশ করে প্রতিটি স্তরে তার ঘনত্ব বৃদ্ধি করে, যা সর্বোচ্চ খাদকদের ক্ষতি করে।
- বর্জ্য পরিশোধন: কলকারখানা ও পৌরসভার বর্জ্য জলকে শোধন করে তবেই জলাশয়ে ফেলা উচিত।
- সচেতনতা বৃদ্ধি: জলাশয়ে আবর্জনা ফেলা, গবাদি পশুর স্নান করানো ইত্যাদি বন্ধ করার জন্য জনসচেতনতা বাড়ানো প্রয়োজন।
৪. জীববৈচিত্র্য কী? জীববৈচিত্র্যের গুরুত্ব এবং জীববৈচিত্র্য হ্রাসের প্রধান কারণগুলি আলোচনা করো।
উত্তর:
জীববৈচিত্র্য (Biodiversity): পৃথিবীর সমস্ত প্রকার জীবের (উদ্ভিদ, প্রাণী, অণুজীব) মধ্যে যে বিভিন্নতা দেখা যায়, অর্থাৎ জিনগত, প্রজাতিগত ও বাস্তুতান্ত্রিক বৈচিত্র্যকে সম্মিলিতভাবে জীববৈচিত্র্য বলে।
গুরুত্ব:
- বাস্তুতান্ত্রিক ভারসাম্য রক্ষা: জীববৈচিত্র্য খাদ্যশৃঙ্খল, শক্তিপ্রবাহ ও বিভিন্ন জৈব-ভূ-রাসায়নিক চক্রকে সচল রেখে বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য রক্ষা করে।
- অর্থনৈতিক উৎস: জীববৈচিত্র্য থেকে আমরা খাদ্য, কাঠ, ঔষধ, বস্ত্র, শিল্পের কাঁচামাল ইত্যাদি পেয়ে থাকি, যা দেশের অর্থনীতিকে সচল রাখে।
- জলবায়ু নিয়ন্ত্রণ: অরণ্য ও উদ্ভিদকুল বায়ুমণ্ডলের CO₂ শোষণ করে এবং বৃষ্টিপাত ঘটিয়ে জলবায়ু নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
- নান্দনিক ও শিক্ষাগত মূল্য: প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ এবং গবেষণা ও শিক্ষার ক্ষেত্রে জীববৈচিত্র্যের গুরুত্ব অপরিসীম।
- বাসস্থান ধ্বংস: নগরায়ন, শিল্পায়ন, কৃষিজমি সম্প্রসারণের জন্য অরণ্য নিধন হল জীববৈচিত্র্য হ্রাসের প্রধান কারণ।
- দূষণ: বায়ু, জল ও মৃত্তিকা দূষণের ফলে অনেক সংবেদনশীল প্রজাতি বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে।
- বিশ্ব উষ্ণায়ন ও জলবায়ু পরিবর্তন: পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে অনেক প্রজাতির পক্ষে মানিয়ে নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
- চোরাশিকার ও অতিরিক্ত ব্যবহার: বাণিজ্যিক কারণে অতিরিক্ত হারে চোরাশিকার এবং বনজ সম্পদের অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহার।
- বহিরাগত প্রজাতির অনুপ্রবেশ: বহিরাগত প্রজাতির আগমনের ফলে স্থানীয় প্রজাতির অস্তিত্ব বিপন্ন হচ্ছে।
৫. ইন-সিটু ও এক্স-সিটু সংরক্ষণ পদ্ধতির সুবিধা ও অসুবিধাগুলি লেখো।
উত্তর:
ইন-সিটু সংরক্ষণ:
সুবিধা:
- জীবেরা তাদের নিজস্ব প্রাকৃতিক পরিবেশে বেড়ে ওঠার সুযোগ পায়, যা তাদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ও প্রজননের জন্য সহায়ক।
- একটি নির্দিষ্ট প্রজাতিকে সংরক্ষণ করার পাশাপাশি সমগ্র বাস্তুতন্ত্র এবং তার অন্তর্গত অন্যান্য প্রজাতিরাও সংরক্ষিত হয়।
- এটি তুলনামূলকভাবে কম ব্যয়সাপেক্ষ এবং বৃহৎ সংখ্যার জীব সংরক্ষণে কার্যকরী।
- প্রাকৃতিক দুর্যোগ (দাবানল, বন্যা) বা রোগের প্রাদুর্ভাবে সংরক্ষিত প্রজাতির বিলুপ্তির আশঙ্কা থাকে।
- চোরাশিকার ও মানুষের অবৈধ অনুপ্রবেশ সম্পূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রণ করা অনেক সময় কঠিন হয়।
এক্স-সিটু সংরক্ষণ:
সুবিধা:
- অত্যন্ত বিপন্ন বা বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতিদের বিশেষ যত্ন ও সুরক্ষার মাধ্যমে সংরক্ষণ করা যায়।
- কৃত্রিম প্রজনন (Captive Breeding) এবং ক্রায়োসংরক্ষণের মাধ্যমে প্রজাতির সংখ্যা বৃদ্ধি করা ও তাদের জিনগত উপাদান সংরক্ষণ করা সম্ভব।
- গবেষণা, শিক্ষা এবং জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
- এটি অত্যন্ত ব্যয়সাপেক্ষ এবং সীমিত সংখ্যক জীব সংরক্ষণের জন্য উপযুক্ত।
- কৃত্রিম পরিবেশে জীবদের স্বাভাবিক আচরণ ও প্রজনন ব্যাহত হতে পারে।
- সংরক্ষিত জীবদের পুনরায় প্রাকৃতিক পরিবেশে ফিরিয়ে দেওয়া (Reintroduction) অনেক সময় সফল হয় না।
৬. বিশ্ব উষ্ণায়ন বা গ্লোবাল ওয়ার্মিং-এর কারণ ও ফলাফল আলোচনা করো।
উত্তর:
বিশ্ব উষ্ণায়ন: বায়ুমণ্ডলে গ্রিনহাউস গ্যাসগুলির (যেমন—CO₂, CH₄, CFC) ঘনত্ব বৃদ্ধির ফলে পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা ক্রমশ বৃদ্ধি পাওয়ার ঘটনাকে বিশ্ব উষ্ণায়ন বলে।
কারণ:
- জীবাশ্ম জ্বালানির দহন: বিদ্যুৎ উৎপাদন, যানবাহন ও শিল্পে কয়লা, পেট্রোলিয়াম ইত্যাদি জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যাপক ব্যবহারের ফলে প্রচুর পরিমাণে CO₂ নির্গত হয়।
- অরণ্য নিধন: গাছপালা CO₂ শোষণ করে। ব্যাপক হারে অরণ্য ধ্বংসের ফলে বায়ুমণ্ডলে CO₂-এর পরিমাণ বাড়ছে।
- CFC নির্গমন: রেফ্রিজারেটর, এয়ার কন্ডিশনার, স্প্রে ইত্যাদি থেকে নির্গত ক্লোরোফ্লুরোকার্বন (CFC) একটি শক্তিশালী গ্রিনহাউস গ্যাস।
- কৃষিকাজ: কৃষিক্ষেত্রে ব্যবহৃত নাইট্রোজেন ঘটিত সার থেকে নাইট্রাস অক্সাইড (N₂O) এবং গবাদি পশুর মল ও ধানক্ষেত থেকে মিথেন (CH₄) গ্যাস নির্গত হয়।
- মেরু অঞ্চলের বরফ গলন ও সমুদ্রের জলস্তর বৃদ্ধি: তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে মেরু অঞ্চলের বরফ ও হিমবাহ গলে যাচ্ছে, যা সমুদ্রের জলস্তর বাড়িয়ে দিচ্ছে এবং উপকূলবর্তী এলাকাগুলিকে প্লাবিত করছে।
- জলবায়ুর চরম ভাবাপন্নতা: অতিবৃষ্টি, অনাবৃষ্টি, খরা, বন্যা, ঘূর্ণিঝড়ের মতো চরম আবহাওয়ার ঘটনা বাড়ছে।
- জীববৈচিত্র্য হ্রাস: অনেক প্রজাতি পরিবর্তিত পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতে না পেরে বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে।
- কৃষিতে প্রভাব: ফসলের উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে এবং নতুন নতুন রোগপোকার উপদ্রব বাড়ছে।
৭. ভারতের জীববৈচিত্র্যের উপর জনসংখ্যা বৃদ্ধির প্রভাব আলোচনা করো।
উত্তর:
ভারতের ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা জীববৈচিত্র্যের উপর মারাত্মক প্রভাব ফেলছে। প্রধান প্রভাবগুলি হল:
(i) বাসস্থান ধ্বংস: অতিরিক্ত জনসংখ্যার জন্য বাসস্থান, রাস্তাঘাট, কৃষিজমি এবং শিল্পাঞ্চল তৈরির প্রয়োজনে ব্যাপক হারে অরণ্য নিধন করা হচ্ছে। এর ফলে বন্যপ্রাণীদের স্বাভাবিক বাসস্থান ধ্বংস হচ্ছে এবং তারা বিপন্ন হয়ে পড়ছে।
(ii) প্রাকৃতিক সম্পদের অত্যাধিক ব্যবহার: জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে জল, কাঠ, খনিজ পদার্থ ইত্যাদি প্রাকৃতিক সম্পদের উপর প্রচণ্ড চাপ সৃষ্টি হয়েছে। বনজ সম্পদের অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহারের ফলে অনেক উদ্ভিদ ও প্রাণী প্রজাতি বিলুপ্তির পথে।
(iii) দূষণ বৃদ্ধি: জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে শিল্প ও যানবাহনের সংখ্যা বাড়ছে, যা বায়ু, জল ও মৃত্তিকা দূষণ ঘটাচ্ছে। এই দূষণ অনেক সংবেদনশীল প্রজাতির মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে এবং বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য নষ্ট করছে।
(iv) কৃষিক্ষেত্রের সম্প্রসারণ: ক্রমবর্ধমান খাদ্যের চাহিদা মেটাতে কৃষিক্ষেত্র সম্প্রসারণ করা হচ্ছে। এর জন্য যেমন বনভূমি ধ্বংস হচ্ছে, তেমনই অতিরিক্ত রাসায়নিক সার ও কীটনাশকের ব্যবহার পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি করছে।
(v) মানব-বন্যপ্রাণী সংঘাত: মানুষের বসতি বনাঞ্চলের কাছাকাছি চলে আসায় হাতি, বাঘ, চিতাবাঘের মতো প্রাণীদের সঙ্গে মানুষের সংঘাত বাড়ছে, যা উভয়পক্ষের জন্যই ক্ষতিকর।
৮. জাতীয় উদ্যান, অভয়ারণ্য ও বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভের মধ্যে তুলনা করো।
উত্তর:
বিষয় | জাতীয় উদ্যান (National Park) | অভয়ারণ্য (Sanctuary) | বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভ (Biosphere Reserve) |
---|---|---|---|
সংরক্ষণের উদ্দেশ্য | একটি নির্দিষ্ট অঞ্চলের সমগ্র বাস্তুতন্ত্র, বন্যপ্রাণী ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য সংরক্ষণ করা। | প্রধানত একটি বা কয়েকটি নির্দিষ্ট বিপন্ন প্রজাতিকে সংরক্ষণ করা। | একটি বৃহৎ ভৌগোলিক অঞ্চলের সমগ্র জীববৈচিত্র্য, বাস্তুতন্ত্র এবং স্থানীয় মানুষের সংস্কৃতি ও জীবনযাত্রা সহ সংরক্ষণ করা। |
নিয়ন্ত্রণ | কেন্দ্রীয় সরকারের আইন দ্বারা কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত। | রাজ্য সরকারের আইন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত, নিয়মকানুন তুলনামূলকভাবে কম কঠোর। | আন্তর্জাতিক নিয়ম (UNESCO-এর MAB) মেনে চলা হয়, অত্যন্ত বৃহৎ এলাকা নিয়ে গঠিত। |
মানুষের কার্যকলাপ | চাষবাস, গবাদি পশু চারণ, বনজ সম্পদ সংগ্রহ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। নিয়ন্ত্রিত পর্যটনের অনুমতি থাকে। | নির্দিষ্ট শর্তসাপেক্ষে ব্যক্তিগত মালিকানা ও নিয়ন্ত্রিতভাবে বনজ সম্পদ সংগ্রহের অনুমতি থাকতে পারে। | কোর অঞ্চলে প্রবেশ নিষিদ্ধ। বাফার ও ট্রানজিশন অঞ্চলে নিয়ন্ত্রিতভাবে মানুষের বসবাস, গবেষণা ও অর্থনৈতিক কার্যকলাপ অনুমোদিত। |
উদাহরণ | করবেট জাতীয় উদ্যান, গরুমারা জাতীয় উদ্যান। | চাপড়ামারি অভয়ারণ্য, সজনেখালি অভয়ারণ্য। | সুন্দরবন বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভ, নীলগিরি বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভ। |
৯. ভারতে বাঘ ও গণ্ডার সংরক্ষণের প্রচেষ্টাগুলি আলোচনা করো।
উত্তর:
বাঘ সংরক্ষণ (প্রজেক্ট টাইগার):
ভারতে বাঘের সংখ্যা উদ্বেগজনকভাবে কমে যাওয়ায় ১৯৭৩ সালে “প্রজেক্ট টাইগার” বা ব্যাঘ্র প্রকল্প চালু করা হয়।
- উদ্দেশ্য: বাঘ ও তাদের প্রাকৃতিক বাসস্থানকে রক্ষা করা, বাঘের সংখ্যা বৃদ্ধি করা এবং বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য বজায় রাখা।
- পদক্ষেপ:
- দেশজুড়ে একাধিক টাইগার রিজার্ভ (যেমন—সুন্দরবন, করবেট, কানহা) স্থাপন করা হয়েছে।
- এই রিজার্ভগুলিতে চোরাশিকার বন্ধ করার জন্য কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
- বাঘের বাসস্থান ও তাদের শিকারের সংখ্যা বাড়ানোর জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
- স্থানীয় মানুষদের সচেতন করা এবং সংরক্ষণে তাদের যুক্ত করা হচ্ছে।
গণ্ডার সংরক্ষণ (প্রজেক্ট রাইনো):
ভারতে একশৃঙ্গ গণ্ডারের সংখ্যা কমে যাওয়ায় তাদের সংরক্ষণের জন্য বিশেষ প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে।
- উদ্দেশ্য: একশৃঙ্গ গণ্ডারকে বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষা করা এবং তাদের সংখ্যা বৃদ্ধি করা।
- পদক্ষেপ:
- আসামের কাজিরাঙা জাতীয় উদ্যান এবং পশ্চিমবঙ্গের জলদাপাড়া ও গরুমারা জাতীয় উদ্যানে গণ্ডার সংরক্ষণের উপর বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে।
- চোরাশিকার রোধ করার জন্য সশস্ত্র বনরক্ষী মোতায়েন করা হয়েছে এবং আধুনিক প্রযুক্তি (যেমন—ড্রোন) ব্যবহার করা হচ্ছে।
- ইন্ডিয়ান রাইনো ভিশন (IRV) 2020-এর মতো প্রকল্পের মাধ্যমে গণ্ডারের বাসস্থান বৃদ্ধি করা এবং তাদের নতুন সুরক্ষিত অঞ্চলে স্থানান্তরিত করার চেষ্টা করা হয়েছে।
১০. জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে JFM এবং PBR-এর ভূমিকা আলোচনা করো।
উত্তর:
জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে স্থানীয় মানুষের অংশগ্রহণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। JFM এবং PBR হল এই অংশগ্রহণের দুটি সফল মডেল।
জয়েন্ট ফরেস্ট ম্যানেজমেন্ট (JFM)-এর ভূমিকা:
- ধারণা: JFM হল বনদপ্তর এবং স্থানীয় গ্রামবাসীদের একটি যৌথ পরিচালন ব্যবস্থা।
- কার্যকারিতা:
- স্থানীয় গ্রামবাসীরা বন সুরক্ষার কাজে বনদপ্তরকে সাহায্য করে, যেমন—চোরাশিকার ও অবৈধ গাছ কাটা রোধ করা।
- বিনিময়ে, গ্রামবাসীরা নিয়ন্ত্রিতভাবে বন থেকে জ্বালানি কাঠ, মধু, শালপাতা ইত্যাদি অ-কাষ্ঠল বনজ সম্পদ সংগ্রহ করার অধিকার পায়।
- এর ফলে একদিকে যেমন বন সুরক্ষিত হয়, তেমনই স্থানীয় মানুষের জীবনযাত্রার মানও উন্নত হয়। পশ্চিমবঙ্গের আরাবাড়ি অরণ্যে এই প্রকল্প প্রথম সাফল্য লাভ করে।
পিপল’স বায়োডাইভারসিটি রেজিস্টার (PBR)-এর ভূমিকা:
- ধারণা: PBR হল একটি নথি যেখানে স্থানীয় মানুষের অংশগ্রহণের মাধ্যমে কোনো অঞ্চলের জীববৈচিত্র্য এবং তার সঙ্গে জড়িত পরম্পরাগত জ্ঞান নথিভুক্ত করা হয়।
- কার্যকারিতা:
- এই নথি থেকে কোনো অঞ্চলের উদ্ভিদ, প্রাণী এবং তাদের ব্যবহার সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়, যা সংরক্ষণ পরিকল্পনায় সাহায্য করে।
- স্থানীয় প্রজাতির বাণিজ্যিক ব্যবহারের ক্ষেত্রে এই নথি থেকে প্রাপ্ত তথ্যের উপর ভিত্তি করে স্থানীয় মানুষরা তাদের ন্যায্য অধিকার দাবি করতে পারে (Benefit Sharing)।
- এটি পরম্পরাগত জ্ঞানকে রক্ষা করে এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ভান্ডার হিসেবে কাজ করে।
১১. নাইট্রোজেন চক্রের গুরুত্ব লেখো এবং এই চক্রে মানুষের কার্যকলাপের প্রভাব আলোচনা করো।
উত্তর:
নাইট্রোজেন চক্রের গুরুত্ব:
- পুষ্টির জোগান: নাইট্রোজেন হল প্রোটিন ও নিউক্লিক অ্যাসিডের অপরিহার্য উপাদান। নাইট্রোজেন চক্রের মাধ্যমে জীবেরা এই অত্যাবশ্যকীয় উপাদানটি পেয়ে থাকে।
- বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য: এই চক্রের মাধ্যমে পরিবেশে নাইট্রোজেনের ভারসাম্য বজায় থাকে, যা বাস্তুতন্ত্রের স্থিতিশীলতার জন্য জরুরি।
- মৃত্তিকার উর্বরতা বৃদ্ধি: নাইট্রোজেন স্থিতিকরণ ও নাইট্রিফিকেশনের মাধ্যমে মাটিতে নাইট্রোজেন ঘটিত যৌগের পরিমাণ বাড়ে, যা মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি করে।
- অতিরিক্ত সার ব্যবহার: কৃষিক্ষেত্রে অতিরিক্ত নাইট্রোজেন ঘটিত সার ব্যবহারের ফলে অতিরিক্ত নাইট্রেট যৌগ বৃষ্টির জলের সঙ্গে ধুয়ে জলাশয়ে মেশে এবং ইউট্রোফিকেশন ঘটায়।
- জীবাশ্ম জ্বালানির দহন: যানবাহন ও কলকারখানায় জীবাশ্ম জ্বালানি দহনের ফলে প্রচুর পরিমাণে নাইট্রোজেন অক্সাইড (NOx) বায়ুমণ্ডলে নির্গত হয়, যা অ্যাসিড বৃষ্টির অন্যতম কারণ।
- অরণ্য নিধন: অরণ্য ধ্বংসের ফলে মাটির ক্ষয় হয় এবং মাটি থেকে নাইট্রোজেন ধুয়ে বেরিয়ে যায়। এছাড়া, মিথোজীবী নাইট্রোজেন সংবন্ধনকারী ব্যাকটেরিয়ার বাসস্থানও নষ্ট হয়।
১২. সুন্দরবনের পরিবেশগত সমস্যাগুলি এবং তার সমাধানের উপায় আলোচনা করো।
উত্তর:
সুন্দরবন বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ অরণ্য এবং একটি গুরুত্বপূর্ণ বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভ। কিন্তু এটি বর্তমানে বিভিন্ন পরিবেশগত সমস্যার সম্মুখীন।
পরিবেশগত সমস্যা:
- বিশ্ব উষ্ণায়ন ও সমুদ্রের জলস্তর বৃদ্ধি: বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলে সমুদ্রের জলস্তর বাড়ছে, যা সুন্দরবনের অনেক দ্বীপকে প্লাবিত করছে এবং ম্যানগ্রোভ অরণ্যের ক্ষতি করছে।
- লবণাক্ততা বৃদ্ধি: সমুদ্রের জলস্তর বৃদ্ধির ফলে নদী ও মাটির লবণাক্ততা বাড়ছে। এর ফলে মিষ্টি জলের মাছ এবং লবণ-অসহনশীল উদ্ভিদ (যেমন—সুন্দরী গাছ) ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
- ঘূর্ণিঝড় ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ: জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ের সংখ্যা বাড়ছে, যা অরণ্য ও স্থানীয় মানুষের জীবনযাত্রার ব্যাপক ক্ষতি করছে।
- দূষণ: পর্যটকদের ফেলা প্লাস্টিক এবং নদীপথে আসা শিল্প-বর্জ্য ও তেল দূষণ ঘটাচ্ছে।
- মানব-বন্যপ্রাণী সংঘাত: মানুষের বসতি বাড়ার ফলে বাঘ, কুমিরের মতো প্রাণীদের সঙ্গে মানুষের সংঘাত বাড়ছে।
- ম্যানগ্রোভ অরণ্য সৃজন: নদীর তীরে এবং খালি জায়গায় ব্যাপক হারে ম্যানগ্রোভ গাছ (যেমন—গরান, গেঁওয়া) রোপণ করে ভূমিক্ষয় রোধ করা এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলা।
- নদীবাঁধ নির্মাণ ও সংস্কার: দ্বীপগুলিকে রক্ষা করার জন্য কংক্রিটের মজবুত নদীবাঁধ নির্মাণ ও নিয়মিত সংস্কার করা।
- দূষণ নিয়ন্ত্রণ: প্লাস্টিক ব্যবহার নিষিদ্ধ করা এবং দূষণ সম্পর্কে পর্যটক ও স্থানীয় মানুষদের সচেতন করা।
- বিকল্প জীবিকার ব্যবস্থা: স্থানীয় মানুষদের জন্য বিকল্প জীবিকার (যেমন—পরিবেশ-বান্ধব পর্যটন, মধু চাষ) ব্যবস্থা করে অরণ্যের উপর চাপ কমানো।
১৩. ভারতে কুমির ও রেড পান্ডা সংরক্ষণের প্রচেষ্টাগুলি আলোচনা করো।
উত্তর:
কুমির সংরক্ষণ প্রকল্প (Project Crocodile):
ভারতে কুমিরের সংখ্যা কমে যাওয়ায় ১৯৭৫ সালে কুমির সংরক্ষণ প্রকল্প চালু হয়।
- উদ্দেশ্য: নোনা জলের কুমির, ঘড়িয়াল এবং স্বাদুজলের কুমিরকে বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষা করা এবং তাদের সংখ্যা বৃদ্ধি করা।
- পদক্ষেপ:
- ওড়িশার ভিতরকণিকা, পশ্চিমবঙ্গের সুন্দরবন এবং উত্তরপ্রদেশের কুকরাইল-এর মতো জায়গায় কুমির সংরক্ষণ ও প্রজনন কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে।
- এই কেন্দ্রগুলিতে কুমিরের ডিম সংগ্রহ করে কৃত্রিমভাবে বাচ্চা ফোটানো হয় এবং তাদের বড় করে প্রাকৃতিক পরিবেশে ছেড়ে দেওয়া হয়।
- কুমিরের বাসস্থান রক্ষা করা এবং চোরাশিকার বন্ধ করার জন্য কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
রেড পান্ডা সংরক্ষণ প্রকল্প (Project Red Panda):
পূর্ব হিমালয় অঞ্চলের এই বিপন্ন প্রজাতিকে রক্ষা করার জন্য ১৯৯৬ সালে এই প্রকল্প চালু হয়।
- উদ্দেশ্য: রেড পান্ডা ও তাদের বাসস্থান (বাঁশবন) রক্ষা করা এবং তাদের সংখ্যা বৃদ্ধি করা।
- পদক্ষেপ:
- পশ্চিমবঙ্গের সিঙ্গালিলা জাতীয় উদ্যান এবং সিকিমের কাঞ্চনজঙ্ঘা জাতীয় উদ্যানে রেড পান্ডা সংরক্ষণের উপর বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে।
- দার্জিলিং-এর পদ্মজা নাইডু হিমালয়ান জুলজিক্যাল পার্কে কৃত্রিম প্রজনন (Captive Breeding) কর্মসূচির মাধ্যমে রেড পান্ডার সংখ্যা বৃদ্ধি করা হচ্ছে।
- স্থানীয় মানুষদের সচেতন করে চোরাশিকার ও তাদের বাসস্থান ধ্বংস রোধ করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
১৪. এজমা বা হাঁপানি, ব্রঙ্কাইটিস এবং ক্যান্সারের কারণ ও লক্ষণ আলোচনা করো।
উত্তর:
এজমা বা হাঁপানি:
- কারণ: এটি একটি অ্যালার্জিজনিত রোগ। বায়ুতে উপস্থিত ধূলিকণা, পরাগরেণু, পশুর লোম ইত্যাদি অ্যালার্জেনের সংস্পর্শে এলে শ্বাসনালী সংকুচিত হয়ে এই রোগ হয়। বায়ুদূষণ একে বাড়িয়ে তোলে।
- লক্ষণ: হঠাৎ শ্বাসকষ্ট, সাঁই সাঁই শব্দ করে শ্বাস নেওয়া, বুকে চাপ বোধ এবং কাশি।
- কারণ: এটি শ্বাসনালীর (Bronchi) প্রদাহজনিত রোগ। ধূমপান এবং SO₂, NO₂-এর মতো বায়ুদূষক এর প্রধান কারণ।
- লক্ষণ: ক্রমাগত কাশি, শ্বাসকষ্ট, বুকে ব্যথা এবং প্রচুর পরিমাণে কফ ওঠা।
- কারণ: ধূমপান হল ফুসফুসের ক্যান্সারের প্রধান কারণ। এছাড়া, অ্যাসবেস্টস, বেঞ্জোপাইরিন, তেজস্ক্রিয় পদার্থ এবং অন্যান্য কার্সিনোজেনের সংস্পর্শে আসাও এর কারণ।
- লক্ষণ: দীর্ঘস্থায়ী কাশি, কাশির সঙ্গে রক্ত পড়া, বুকে ব্যথা, ওজন কমে যাওয়া এবং শ্বাসকষ্ট।
১৫. শব্দদূষণের উৎস, ক্ষতিকারক প্রভাব এবং নিয়ন্ত্রণের উপায়গুলি লেখো।
উত্তর:
উৎস:
- যানবাহন: গাড়ি, বাস, ট্রেন, বিমানের তীব্র হর্ন ও ইঞ্জিনের শব্দ।
- শিল্প: কলকারখানার ভারী যন্ত্রপাতির আওয়াজ।
- নির্মাণকার্য: বাড়িঘর ও রাস্তা নির্মাণের সময় সৃষ্ট শব্দ।
- অন্যান্য: মাইক বা লাউডস্পিকারের উচ্চগ্রামের শব্দ, বাজি ফাটানোর আওয়াজ ইত্যাদি।
- শারীরিক প্রভাব: শ্রবণক্ষমতা হ্রাস, স্থায়ী বধিরতা, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ, অনিদ্রা এবং মানসিক চাপ।
- মানসিক প্রভাব: মনোযোগের অভাব, বিরক্তি, উদ্বেগ এবং কাজের ক্ষমতা কমে যাওয়া।
- অন্যান্য প্রাণীর উপর প্রভাব: পশুপাখিরা ভয় পেয়ে তাদের স্বাভাবিক আচরণ ও প্রজনন ব্যাহত হয়।
- উৎস নিয়ন্ত্রণ: যানবাহনে সাইলেন্সার ব্যবহার করা, অপ্রয়োজনে হর্ন না বাজানো এবং শিল্পাঞ্চলে শব্দনিরোধক যন্ত্র ব্যবহার করা।
- সবুজ বলয় সৃষ্টি: রাস্তা ও শিল্পাঞ্চলের পাশে প্রচুর গাছপালা লাগিয়ে সবুজ বলয় (Green Belt) তৈরি করা, যা শব্দ শোষণ করে।
- আইন প্রয়োগ: নির্দিষ্ট সীমার বেশি জোরে মাইক বা বাজি বাজানোর বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রয়োগ করা এবং ‘সাইলেন্স জোন’ (হাসপাতাল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান) ঘোষণা করা।
১৬. ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা কীভাবে পরিবেশের উপর প্রভাব ফেলে? জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের দুটি উপায় লেখো।
উত্তর:
পরিবেশের উপর প্রভাব:
- প্রাকৃতিক সম্পদের অবক্ষয়: অতিরিক্ত জনসংখ্যার খাদ্যের জোগান, বাসস্থান নির্মাণ এবং জীবনযাত্রার মান বজায় রাখার জন্য বনভূমি, কৃষিজমি, জল এবং খনিজ সম্পদের উপর প্রচণ্ড চাপ সৃষ্টি হয়, যা এই সম্পদগুলির দ্রুত অবক্ষয় ঘটায়।
- দূষণ বৃদ্ধি: জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে শিল্প, যানবাহন এবং বর্জ্য পদার্থের পরিমাণ বাড়ে। এর ফলে বায়ু, জল এবং মৃত্তিকা দূষণের মাত্রা মারাত্মকভাবে বৃদ্ধি পায়।
- জীববৈচিত্র্য হ্রাস: মানুষের কার্যকলাপের প্রসারের জন্য বন্যপ্রাণীদের বাসস্থান সংকুচিত ও ধ্বংস হয়, যা বহু প্রজাতির বিলুপ্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
- জলবায়ু পরিবর্তন: জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে শক্তির চাহিদা বাড়ে এবং জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার বৃদ্ধি পায়। এর ফলে গ্রিনহাউস গ্যাসের নির্গমন বেড়ে যায় এবং বিশ্ব উষ্ণায়ন ও জলবায়ু পরিবর্তন ত্বরান্বিত হয়।
- শিক্ষা ও সচেতনতা বৃদ্ধি: জনসংখ্যা বৃদ্ধির কুফল সম্পর্কে সাধারণ মানুষকে, বিশেষ করে মহিলাদের শিক্ষিত ও সচেতন করে তোলা এবং পরিবার পরিকল্পনার গুরুত্ব বোঝানো।
- জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতির প্রসার: সরকারি ও বেসরকারি স্তরে বিভিন্ন জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতিকে সহজলভ্য করা এবং এর সঠিক ব্যবহার সম্পর্কে প্রচার চালানো।
১৭. মৃত্তিকা দূষণের কারণ ও ফলাফল আলোচনা করো।
উত্তর:
কারণ:
- কৃষিজ রাসায়নিক: কৃষিক্ষেত্রে অতিরিক্ত পরিমাণে রাসায়নিক সার (নাইট্রেট, ফসফেট) এবং কীটনাশক (DDT, BHC) ব্যবহার করার ফলে মাটি দূষিত হয়।
- শিল্প-বর্জ্য: শিল্প-কারখানা থেকে নির্গত ভারী ধাতু (পারদ, সিসা, ক্যাডমিয়াম) এবং অন্যান্য রাসায়নিক বর্জ্য মাটিতে মিশে দূষণ ঘটায়।
- গৃহস্থালির আবর্জনা: প্লাস্টিক, পলিথিন, কাচ এবং অন্যান্য অভঙ্গুর পদার্থ মাটিতে মিশে মাটির স্বাভাবিক গঠন নষ্ট করে।
- অ্যাসিড বৃষ্টি: বায়ুদূষণের ফলে সৃষ্ট অ্যাসিড বৃষ্টি মাটিতে মিশে মাটির অম্লত্ব বাড়িয়ে দেয় এবং উর্বরতা নষ্ট করে।
- উর্বরতা হ্রাস: দূষণের ফলে মাটির উর্বরতা নষ্ট হয় এবং ফসলের উৎপাদন কমে যায়।
- খাদ্যশৃঙ্খলে দূষকের প্রবেশ: মাটিতে থাকা ক্ষতিকারক রাসায়নিক পদার্থ (যেমন—কীটনাশক) ফসলের মাধ্যমে খাদ্যশৃঙ্খলে প্রবেশ করে এবং জীববিবর্ধন ঘটায়।
- জলদূষণ: মাটির দূষক পদার্থগুলি চুইয়ে ভূগর্ভস্থ জলে এবং বৃষ্টির জলের সঙ্গে ধুয়ে জলাশয়ে মিশে জলকে দূষিত করে।
- অণুজীবের ক্ষতি: মাটির উপকারী অণুজীবগুলি (যেমন—নাইট্রোজেন সংবন্ধনকারী ব্যাকটেরিয়া) দূষণের ফলে মারা যায়, যা মাটির স্বাভাবিক জৈবনিক প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করে।
১৮. হটস্পট কাকে বলে? ভারতের চারটি হটস্পটের নাম ও অবস্থান লেখো।
উত্তর:
হটস্পট (Hotspot): যে সমস্ত অঞ্চলে অত্যাধিক সংখ্যায় এন্ডেমিক বা স্থানিক প্রজাতিসহ প্রচুর জীববৈচিত্র্য রয়েছে এবং যেগুলি বর্তমানে মানুষের কার্যকলাপের ফলে মারাত্মকভাবে বিপন্ন, সেই অতি সংবেদনশীল অঞ্চলগুলিকে বায়োডাইভারসিটি হটস্পট বলে।
ভারতের চারটি হটস্পট হল:
- পূর্ব হিমালয় (Eastern Himalayas):
- অবস্থান: উত্তর-পূর্ব ভারত (সিকিম, অরুণাচল প্রদেশ, পশ্চিমবঙ্গ), নেপাল, ভুটান।
- বৈশিষ্ট্য: এই অঞ্চলে রেড পান্ডা, তুষার চিতা, বিভিন্ন প্রজাতির রডোডেনড্রন ও অর্কিড পাওয়া যায়।
- পশ্চিমঘাট পর্বতমালা ও শ্রীলঙ্কা (Western Ghats and Sri Lanka):
- অবস্থান: ভারতের পশ্চিম উপকূল বরাবর বিস্তৃত পর্বতমালা এবং শ্রীলঙ্কা।
- বৈশিষ্ট্য: এই অঞ্চলে এশিয়াটিক হাতি, নীলগিরি থর, সিংহলেজি ম্যাকাও এবং প্রচুর উভচর প্রজাতি দেখা যায়।
- ইন্দো-বার্মা (Indo-Burma):
- অবস্থান: উত্তর-পূর্ব ভারত (আসাম ছাড়া), মায়ানমার, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম।
- বৈশিষ্ট্য: এই অঞ্চলটি প্রচুর পরিমাণে স্বাদুজলের কচ্ছপ এবং পাখির জন্য বিখ্যাত।
- সুন্দাল্যান্ড (Sundaland):
- অবস্থান: ভারতের আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ এবং ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর।
- বৈশিষ্ট্য: এই অঞ্চলে ওরাংওটান এবং বিভিন্ন প্রজাতির ম্যানগ্রোভ উদ্ভিদ ও প্রবাল প্রাচীর দেখা যায়।
১৯. ওজোন স্তর ধ্বংসের কারণ ও ফলাফল আলোচনা করো।
উত্তর:
ওজোন স্তর ধ্বংসের কারণ:
স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারে অবস্থিত ওজোন স্তর ধ্বংসের প্রধান কারণ হল মানুষের দ্বারা সৃষ্ট কিছু রাসায়নিক পদার্থ।
- ক্লোরোফ্লুরোকার্বন (CFC): এটি প্রধান কারণ। রেফ্রিজারেটর, এসি, স্প্রে থেকে নির্গত CFC বায়ুমণ্ডলের উপরে গিয়ে অতিবেগুনি রশ্মির প্রভাবে ভেঙে সক্রিয় ক্লোরিন পরমাণু তৈরি করে। একটি ক্লোরিন পরমাণু লক্ষ লক্ষ ওজোন (O₃) অণুকে ভেঙে অক্সিজেনে (O₂) পরিণত করে।
- নাইট্রাস অক্সাইড (N₂O): জেট বিমান এবং নাইট্রোজেন সার থেকে নির্গত N₂O ওজোন স্তর ক্ষয়ে সাহায্য করে।
- অন্যান্য পদার্থ: হ্যালন (অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র থেকে), কার্বন টেট্রাক্লোরাইড ইত্যাদিও ওজোন স্তর ধ্বংস করে।
ওজোন স্তর ক্ষয়ের ফলে ক্ষতিকারক অতিবেগুনি (UV) রশ্মি সরাসরি পৃথিবীতে এসে পৌঁছায়, যার ফল মারাত্মক।
- মানব স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব: মানুষের ত্বকের ক্যান্সার (মেলানোমা), চোখে ছানি পড়া এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস পায়।
- উদ্ভিদের উপর প্রভাব: উদ্ভিদের সালোকসংশ্লেষ প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়, ফলে ফসলের উৎপাদন কমে যায়।
- প্রাণীদের উপর প্রভাব: অনেক প্রাণীর ত্বকের ক্ষতি হয় এবং সামুদ্রিক প্রাণীদের (যেমন—ফাইটোপ্ল্যাঙ্কটন) মৃত্যু ঘটে, যা সামুদ্রিক খাদ্যশৃঙ্খলকে নষ্ট করে।
- জলবায়ুর পরিবর্তন: ওজোন স্তর ক্ষয় পরোক্ষভাবে বিশ্ব উষ্ণায়ন ও জলবায়ু পরিবর্তনেও প্রভাব ফেলে।
২০. “ভারত একটি মেগাডাইভারসিটি নেশন” – উক্তিটির যথার্থতা বিচার করো।
উত্তর:
যেসব দেশে পৃথিবীর মোট জীব প্রজাতির একটি বড় অংশ পাওয়া যায়, তাদের মেগাডাইভারসিটি নেশন বা অতি জীববৈচিত্র্যপূর্ণ দেশ বলা হয়। ভারত এই তালিকার অন্যতম একটি দেশ। এর যথার্থতার কারণগুলি হল:
- ভৌগোলিক অবস্থান ও বৈচিত্র্য: ভারতের ভৌগোলিক অবস্থান এবং জলবায়ু, ভূপ্রকৃতি ও মৃত্তিকার 엄청 বৈচিত্র্য (যেমন—হিমালয় পর্বতমালা, মরুভূমি, উপকূল, মালভূমি, গাঙ্গেয় সমভূমি) বিভিন্ন ধরনের বাস্তুতন্ত্র তৈরি করেছে, যা বিভিন্ন প্রজাতির জীবের বসবাসের জন্য আদর্শ।
- প্রজাতির প্রাচুর্য: ভারত পৃথিবীর মোট স্থলভাগের মাত্র ২.৪% স্থান অধিকার করলেও, এখানে পৃথিবীর প্রায় ৭-৮% প্রজাতি বাস করে। ভারতে প্রায় ৪৫,০০০ উদ্ভিদ প্রজাতি এবং ৯১,০০০ প্রাণী প্রজাতি রয়েছে।
- বায়োডাইভারসিটি হটস্পট: পৃথিবীতে চিহ্নিত ৩৬টি হটস্পটের মধ্যে ৪টি হটস্পট (পূর্ব হিমালয়, পশ্চিমঘাট, ইন্দো-বার্মা, সুন্দাল্যান্ড) ভারতেই অবস্থিত, যা এর 엄청 জীববৈচিত্র্যকে প্রমাণ করে।
- এন্ডেমিক প্রজাতির উপস্থিতি: ভারতে প্রচুর পরিমাণে এন্ডেমিক বা স্থানিক প্রজাতি (যারা শুধুমাত্র ভারতেই পাওয়া যায়) রয়েছে। যেমন—এশিয়াটিক লায়ন, নীলগিরি থর, সিংহলেজি ম্যাকাও।
- বাস্তুতান্ত্রিক বৈচিত্র্য: ভারতে বিভিন্ন প্রকার বাস্তুতন্ত্র, যেমন—ম্যানগ্রোভ অরণ্য (সুন্দরবন), বৃষ্টি অরণ্য (পশ্চিমঘাট), আলপাইন তৃণভূমি (হিমালয়), প্রবাল প্রাচীর (আন্দামান, লাক্ষাদ্বীপ) এবং মরুভূমি (থর) রয়েছে, যা এর বাস্তুতান্ত্রিক বৈচিত্র্যকে তুলে ধরে।
class 10 life science chapter 5
Class 10 Life Science পরিবেশ, তার সম্পদ এবং তাদের সংরক্ষণ Question Answer MCQ,অতি-সংক্ষিপ্ত, ও রচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তর : class 10 পরিবেশ, তার সম্পদ এবং তাদের সংরক্ষণ প্রশ্ন উত্তর