আলো প্রশ্ন উত্তর
ক) বহুবিকল্পভিত্তিক প্রশ্নাবলী (MCQ) – মান ১ (৫০টি)
১. দন্ত চিকিৎসকরা ব্যবহার করেন—
২. গাড়ির হেডলাইটে কোন প্রকার দর্পণ ব্যবহৃত হয়?
৩. একটি উত্তল লেন্সের ফোকাসের মধ্যে বস্তুকে রাখলে প্রতিবিম্ব হবে—
৪. লেন্সের ক্ষমতার একক হল—
৫. আলোর বিচ্ছুরণের একটি প্রাকৃতিক উদাহরণ হল—
৬. প্রিজমের মধ্যে দিয়ে সাদা আলো যাওয়ার সময় যে বর্ণের আলোর চ্যুতি সবচেয়ে বেশি হয়, তা হল—
৭. দীর্ঘদৃষ্টি (Hypermetropia) ত্রুটি দূর করতে ব্যবহৃত হয়—
৮. আকাশকে নীল দেখায় আলোর কোন ধর্মের জন্য?
৯. একটি অবতল দর্পণের বক্রতা ব্যাসার্ধ 20 সেমি হলে, ফোকাস দৈর্ঘ্য হবে—
১০. কোন বর্ণের আলোর জন্য মাধ্যমের প্রতিসরাঙ্ক সবচেয়ে কম?
১১. সমতল দর্পণের বিবর্ধন কত?
১২. বিপদ সংকেত হিসেবে লাল আলো ব্যবহার করার কারণ—
১৩. ক্যামেরায় কোন ধরনের লেন্স ব্যবহার করা হয়?
১৪. একটি পাতলা উত্তল লেন্সের আলোককেন্দ্র দিয়ে গেলে রশ্মির চ্যুতি হয়—
১৫. কোনো মাধ্যমের প্রতিসরাঙ্ক (μ) এবং ওই মাধ্যমে আলোর বেগের (v) সম্পর্ক হল— (c = শূন্য মাধ্যমে আলোর বেগ)
১৬. হ্রস্বদৃষ্টি (Myopia) ত্রুটি দূর করতে ব্যবহৃত হয়—
১৭. প্রতিসরণের ক্ষেত্রে অপরিবর্তিত থাকে—
১৮. অবতল দর্পণ দ্বারা গঠিত সদবিম্বের বিবর্ধন (m) সর্বদা—
১৯. একটি উত্তল লেন্সকে জলে ডোবালে তার ফোকাস দৈর্ঘ্য—
২০. কোন দর্পণ সর্বদা বস্তুর অসদ ও খর্বাকার প্রতিবিম্ব গঠন করে?
২১. প্রিজমের কয়টি আয়তাকার তল থাকে?
২২. শূন্যস্থানে আলোর বিচ্ছুরণ হয় না কারণ—
২৩. একটি লাল ফুলকে সবুজ আলোয় দেখলে কেমন দেখাবে?
২৪. লেন্সের আলোককেন্দ্র হল একটি—
২৫. চোখের যে অংশে প্রতিবিম্ব গঠিত হয়, তা হল—
২৬. আলোর তরঙ্গতত্ত্বের প্রবর্তক কে?
২৭. একটি অবতল লেন্স দ্বারা গঠিত প্রতিবিম্ব সর্বদা—
২৮. যখন আলোকরশ্মি ঘন মাধ্যম থেকে লঘু মাধ্যমে যায়, তখন আপতন কোণ (i) ও প্রতিসরণ কোণের (r) মধ্যে সম্পর্ক হল—
২৯. যে লেন্সের মধ্যভাগ মোটা ও প্রান্ত সরু, তাকে বলে—
৩০. প্রাথমিক বর্ণগুলি হল—
৩১. বায়ুর সাপেক্ষে কাচের প্রতিসরাঙ্ক 1.5 হলে, কাচের সাপেক্ষে বায়ুর প্রতিসরাঙ্ক হবে—
৩২. কোনো বস্তুর প্রতিবিম্ব রেটিনার সামনে গঠিত হলে, চোখের সেই ত্রুটিকে বলে—
৩৩. একটি সমতল দর্পণের ফোকাস দূরত্ব—
৩৪. মরীচিকা formation এর কারণ কী?
৩৫. স্নেলের সূত্রের গাণিতিক রূপ হল—
৩৬. অবতল দর্পণের সামনে বস্তুকে কোথায় রাখলে অসদ ও বিবর্ধিত প্রতিবিম্ব গঠিত হয়?
৩৭. রৈখিক বিবর্ধনের মান 1-এর কম হলে প্রতিবিম্বটি হবে—
৩৮. সরল ক্যামেরা দ্বারা গঠিত প্রতিবিম্বটি হল—
৩৯. কোন লেন্সকে অপসারী লেন্স বলা হয়?
৪০. একটি জলপূর্ণ বিকারে একটি পেন্সিলকে ডোবালে বাঁকা দেখায়, কারণ—
৪১. সদবিম্ব গঠিত হয়—
৪২. উত্তল লেন্সের সামনে বস্তুকে 2f দূরত্বে রাখলে প্রতিবিম্ব গঠিত হবে—
৪৩. দৃশ্যমান আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্যের পাল্লা হল প্রায়—
৪৪. একটি সমবাহু প্রিজমের প্রতিসারক কোণের মান—
৪৫. আলোকরশ্মি লম্বভাবে কোনো সমতল দর্পণে আপতিত হলে প্রতিফলন কোণের মান হয়—
৪৬. কাচ ফলকের মধ্যে দিয়ে প্রতিসরণের পর নির্গত রশ্মি ও আপতিত রশ্মি পরস্পরের—
৪৭. একটি লেন্সের ক্ষমতা +2D হলে, লেন্সটি হল—
৪৮. সাদা আলোর বিশুদ্ধ বর্ণালির প্রান্তে কোন দুটি বর্ণ থাকে?
৪৯. একটি অবতল দর্পণের বক্রতা কেন্দ্রে বস্তু রাখলে প্রতিবিম্ব গঠিত হবে—
৫০. প্রতিসরাঙ্ক কোনটির ওপর নির্ভর করে না?
খ) অতি-সংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্নাবলী (VSA) – মান ১ (৪০টি)
(i) একটি শব্দে বা একটি বাক্যে উত্তর দাও
১. গোলীয় দর্পণের ফোকাস দৈর্ঘ্য ও বক্রতা ব্যাসার্ধের মধ্যে সম্পর্ক কী?
উত্তর: ফোকাস দৈর্ঘ্য (f) = বক্রতা ব্যাসার্ধ (R) / 2।
২. ক্যামেরার অভিলক্ষ্য হিসেবে কোন ধরনের লেন্স ব্যবহৃত হয়?
উত্তর: উত্তল লেন্স।
৩. আলোর বিচ্ছুরণের একটি উদাহরণ দাও।
উত্তর: রামধনু।
৪. লেন্সের ক্ষমতার SI একক কী?
উত্তর: ডায়োপ্টার (D)।
৫. দৃশ্যমান আলোর মধ্যে কোন বর্ণের আলোর শক্তি সবচেয়ে বেশি?
উত্তর: বেগুনি।
৬. অবতল দর্পণের একটি ব্যবহার লেখো।
উত্তর: দাড়ি কাটার জন্য বা দন্ত চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়।
৭. প্রতিসরাঙ্কের একক কী?
উত্তর: প্রতিসরাঙ্ক একটি এককবিহীন রাশি।
৮. এমন একটি দর্পণের নাম করো যা সর্বদা অসদবিম্ব গঠন করে।
উত্তর: উত্তল দর্পণ।
৯. বর্ণালি কাকে বলে?
উত্তর: সাদা আলো প্রিজমের মতো কোনো প্রতিসারক মাধ্যমের মধ্যে দিয়ে গেলে বিভিন্ন বর্ণের আলোতে বিশ্লিষ্ট হয়ে যে রঙের পটি গঠন করে, তাকে বর্ণালি বলে।
১০. শূন্য মাধ্যমে আলোর বেগ কত?
উত্তর: 3 x 10⁸ মিটার/সেকেন্ড।
(ii) নীচের বাক্যগুলো সত্য অথবা মিথ্যা নিরূপণ করো
১১. উত্তল লেন্সকে অভিসারী লেন্স বলা হয়।
উত্তর: সত্য।
১২. সমতল দর্পণে গঠিত প্রতিবিম্ব সদ হয়।
উত্তর: মিথ্যা।
১৩. লাল আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য বেগুনি আলোর চেয়ে বেশি।
উত্তর: সত্য।
১৪. মায়োপিয়া বা হ্রস্বদৃষ্টির ক্ষেত্রে অবতল লেন্স ব্যবহার করা হয়।
উত্তর: সত্য।
১৫. হীরকের প্রতিসরাঙ্ক বায়ুর চেয়ে কম।
উত্তর: মিথ্যা।
১৬. প্রিজমে আলোর বিচ্ছুরণ হয়, প্রতিফলন নয়।
উত্তর: মিথ্যা (প্রতিসরণ ও বিচ্ছুরণ উভয়ই ঘটে)।
১৭. লেন্সের ক্ষমতা ঋণাত্মক হলে সেটি অবতল লেন্স।
উত্তর: সত্য।
১৮. আলোর বিক্ষেপণের জন্য আকাশ নীল দেখায়।
উত্তর: সত্য।
১৯. জলের মধ্যে বায়ুর বুদবুদ উত্তল লেন্সের মতো আচরণ করে।
উত্তর: মিথ্যা (অবতল লেন্সের মতো)।
২০. আলোকরশ্মি ঘন মাধ্যম থেকে লঘু মাধ্যমে গেলে অভিলম্ব থেকে দূরে সরে যায়।
উত্তর: সত্য।
(iii) শূন্যস্থান পূরণ করো
২১. গোলীয় দর্পণের মেরু ও ফোকাসের মধ্যবর্তী দূরত্বকে ______ বলে।
উত্তর: ফোকাস দৈর্ঘ্য।
২২. যে লেন্সের প্রান্তভাগ মোটা ও মধ্যভাগ সরু, তাকে ______ লেন্স বলে।
উত্তর: অবতল।
২৩. প্রিজমের মধ্যে দিয়ে যাওয়ার সময় ______ বর্ণের আলোর চ্যুতি সবচেয়ে কম হয়।
উত্তর: লাল।
২৪. মোটরগাড়ির ভিউ-ফাইন্ডার হিসেবে ______ দর্পণ ব্যবহৃত হয়।
উত্তর: উত্তল।
২৫. চোখের রেটিনায় বস্তুর ______ প্রতিবিম্ব গঠিত হয়।
উত্তর: সদ ও অবশীর্ষ।
২৬. একটি কাচ ফলকের ফোকাস দূরত্ব ______।
উত্তর: অসীম।
২৭. সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের সময় সূর্যকে লাল দেখায় আলোর ______ ধর্মের জন্য।
উত্তর: বিক্ষেপণ।
২৮. লেন্সের ক্ষমতার অন্যোন্যককে ______ বলে।
উত্তর: ফোকাস দৈর্ঘ্য।
২৯. যে বিন্দু দিয়ে গেলে আলোকরশ্মির কোনো চ্যুতি হয় না, তাকে লেন্সের ______ বলে।
উত্তর: আলোককেন্দ্র।
৩০. কাচের প্রতিসরাঙ্ক ______ বর্ণের আলোর জন্য সবচেয়ে বেশি।
উত্তর: বেগুনি।
(iv) A স্তম্ভের সঙ্গে B স্তম্ভের সমতা বিধান করো
৩১.
A স্তম্ভ | B স্তম্ভ |
---|---|
১. মায়োপিয়া | (ক) উত্তল দর্পণ |
২. হাইপারমেট্রোপিয়া | (খ) বিচ্ছুরণ |
৩. গাড়ির রিয়ার-ভিউ মিরর | (গ) অবতল লেন্স |
৪. রামধনু | (ঘ) উত্তল লেন্স |
উত্তর:
১ → (গ), ২ → (ঘ), ৩ → (ক), ৪ → (খ)
৩২.
A স্তম্ভ | B স্তম্ভ |
---|---|
১. দন্ত চিকিৎসক | (ক) ডায়োপ্টার |
২. লেন্সের ক্ষমতা | (খ) নীল বর্ণ |
৩. আকাশের রঙ | (গ) অভ্যন্তরীণ পূর্ণ প্রতিফলন |
৪. মরীচিকা | (ঘ) অবতল দর্পণ |
উত্তর:
১ → (ঘ), ২ → (ক), ৩ → (খ), ৪ → (গ)
৩৩. কোনো দর্পণে বস্তুর সব অবস্থানেই অসদ ও খর্বাকার প্রতিবিম্ব গঠিত হয়?
উত্তর: উত্তল দর্পণে।
৩৪. রৈখিক বিবর্ধনের সংজ্ঞা দাও।
উত্তর: প্রতিবিম্বের দৈর্ঘ্য ও বস্তুর দৈর্ঘ্যের অনুপাতকে রৈখিক বিবর্ধন বলে।
৩৫. স্নেলের সূত্রে কোন ভৌত রাশিটি ধ্রুবক?
উত্তর: দুটি নির্দিষ্ট মাধ্যম ও নির্দিষ্ট বর্ণের আলোর জন্য প্রতিসরাঙ্ক (μ)।
৩৬. একটি বস্তুকে উত্তল লেন্সের ফোকাসে রাখলে প্রতিবিম্ব কোথায় গঠিত হবে?
উত্তর: অসীমে।
৩৭. প্রিজমের প্রতিসারক কোণ কাকে বলে?
উত্তর: প্রিজমের দুটি প্রতিসারক তলের মধ্যবর্তী কোণকে প্রতিসারক কোণ বলে।
৩৮. বিশুদ্ধ বর্ণালি কাকে বলে?
উত্তর: যে বর্ণালিতে একটি বর্ণের আলো অন্য বর্ণের আলোর উপর আপতিত হয় না এবং প্রতিটি বর্ণকে স্পষ্টভাবে আলাদা করা যায়, তাকে বিশুদ্ধ বর্ণালি বলে।
৩৯. কোন লেন্সের ফোকাস দৈর্ঘ্য ঋণাত্মক?
উত্তর: অবতল লেন্সের।
৪০. লম্ব আপতনের ক্ষেত্রে চ্যুতিকোণের মান কত?
উত্তর: শূন্য (0°)।
গ) সংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্নাবলী – মান ২ (২০টি)
১. আলোর প্রতিফলনের সূত্র দুটি লেখো।
উত্তর:
প্রথম সূত্র: আপতিত রশ্মি, প্রতিফলিত রশ্মি এবং আপতন বিন্দুতে প্রতিফলকের উপর অঙ্কিত অভিলম্ব একই সমতলে থাকে।
দ্বিতীয় সূত্র: প্রতিফলন কোণ (r) আপতন কোণের (i) সমান হয় (অর্থাৎ, ∠i = ∠r)।
২. সদবিম্ব ও অসদবিম্বের দুটি পার্থক্য লেখো।
উত্তর:
(i) সদবিম্বকে পর্দায় ফেলা যায়, কিন্তু অসদবিম্বকে পর্দায় ফেলা যায় না।
(ii) সদবিম্ব সর্বদা অবশীর্ষ (উল্টো) হয়, কিন্তু অসদবিম্ব সর্বদা সমশীর্ষ (সোজা) হয়।
৩. উত্তল লেন্সকে অভিসারী এবং অবতল লেন্সকে অপসারী বলা হয় কেন?
উত্তর: উত্তল লেন্স তার উপর আপতিত সমান্তরাল আলোকরশ্মিগুচ্ছকে প্রতিসরণের পর একটি বিন্দুতে মিলিত (অভিসারী) করে। তাই একে অভিসারী লেন্স বলে।
অন্যদিকে, অবতল লেন্স সমান্তরাল আলোকরশ্মিগুচ্ছকে প্রতিসরণের পর অপসারী করে, অর্থাৎ ছড়িয়ে দেয়। তাই একে অপসারী লেন্স বলে।
৪. গাড়ির হেডলাইটে কী ধরনের দর্পণ ব্যবহার করা হয় ও কেন?
উত্তর: গাড়ির হেডলাইটে অধিবৃত্তীয় অবতল দর্পণ ব্যবহার করা হয়।
কারণ: এই দর্পণের ফোকাসে আলোর উৎসকে রাখলে প্রতিফলনের পর রশ্মিগুলি সমান্তরাল রশ্মিগুচ্ছে পরিণত হয়, যা অনেক দূর পর্যন্ত যেতে পারে এবং дорогуকে আলোকিত করে।
৫. আলোর বিচ্ছুরণের কারণ কী?
উত্তর: কোনো প্রতিসারক মাধ্যমে (যেমন কাচ) বিভিন্ন বর্ণের আলোর বেগ বিভিন্ন হয়। লাল আলোর বেগ সবচেয়ে বেশি এবং বেগুনি আলোর বেগ সবচেয়ে কম। বেগের এই পার্থক্যের জন্য মাধ্যমের প্রতিসরাঙ্কও বিভিন্ন বর্ণের জন্য বিভিন্ন হয়। ফলে, সাদা আলো প্রিজমের মধ্যে দিয়ে যাওয়ার সময় বিভিন্ন বর্ণে বিশ্লিষ্ট হয়ে যায়।
৬. একটি অবতল দর্পণের ফোকাস দৈর্ঘ্য 15 সেমি। দর্পণটির সামনে কত দূরে বস্তু রাখলে বস্তুর সমান আকারের সদবিম্ব গঠিত হবে?
উত্তর: অবতল দর্পণের বক্রতা কেন্দ্রে (2f) বস্তু রাখলে সমান আকারের সদবিম্ব গঠিত হয়।
এখানে, ফোকাস দৈর্ঘ্য (f) = 15 সেমি।
সুতরাং, বক্রতা কেন্দ্র (2f) = 2 × 15 = 30 সেমি।
∴ দর্পণ থেকে 30 সেমি দূরে বস্তু রাখতে হবে।
৭. লেন্সের ক্ষমতা বলতে কী বোঝায়? এর গাণিতিক রূপটি লেখো।
উত্তর: কোনো লেন্সের ফোকাস দৈর্ঘ্যের (মিটারে প্রকাশিত) অন্যোন্যককে ওই লেন্সের ক্ষমতা বলে। এটি লেন্সের অভিসারী বা অপসারী করার মাত্রাকে বোঝায়।
গাণিতিক রূপ: লেন্সের ক্ষমতা (P) = 1 / ফোকাস দৈর্ঘ্য (f, মিটারে)।
৮. আকাশ নীল দেখায় কেন?
উত্তর: দিনের বেলায় যখন সূর্যের আলো বায়ুমণ্ডলের মধ্যে দিয়ে আসে, তখন বায়ুমণ্ডলের ধূলিকণা ও গ্যাসীয় অণু দ্বারা আলোর বিক্ষেপণ ঘটে। লর্ড রেলের সূত্রানুসারে, কম তরঙ্গদৈর্ঘ্যের আলোর বিক্ষেপণ বেশি হয়। নীল ও বেগুনি আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য কম হওয়ায় এদের বিক্ষেপণ সবচেয়ে বেশি হয়। আমাদের চোখ বেগুনি অপেক্ষা নীল বর্ণের প্রতি বেশি সংবেদনশীল হওয়ায় আকাশকে নীল দেখায়।
৯. একটি প্রিজমের মধ্যে দিয়ে আলোকরশ্মি গেলে, চ্যুতিকোণ কোন কোন বিষয়ের উপর নির্ভর করে?
উত্তর: চ্যুতিকোণ চারটি বিষয়ের উপর নির্ভর করে:
(i) প্রিজমের উপাদানের প্রতিসরাঙ্ক।
(ii) প্রিজমের প্রতিসারক কোণ।
(iii) আপতন কোণ।
(iv) আলোর বর্ণ বা তরঙ্গদৈর্ঘ্য।
১০. প্রতিসরণের সূত্র দুটি লেখো।
উত্তর:
প্রথম সূত্র: আপতিত রশ্মি, প্রতিসৃত রশ্মি এবং দুই মাধ্যমের বিভেদতলের উপর আপতন বিন্দুতে অঙ্কিত অভিলম্ব একই সমতলে থাকে।
দ্বিতীয় সূত্র (স্নেলের সূত্র): দুটি নির্দিষ্ট মাধ্যম এবং একটি নির্দিষ্ট বর্ণের আলোর ক্ষেত্রে আপতন কোণের সাইন (sin i) এবং প্রতিসরণ কোণের সাইনের (sin r) অনুপাত সর্বদা ধ্রুবক থাকে। এই ধ্রুবকটিকে প্রথম মাধ্যমের সাপেক্ষে দ্বিতীয় মাধ্যমের প্রতিসরাঙ্ক বলে।
১১. উত্তল দর্পণের দুটি ব্যবহার লেখো।
উত্তর:
(i) গাড়ির রিয়ার-ভিউ মিরর বা ভিউ-ফাইন্ডার হিসেবে ব্যবহৃত হয়, কারণ এটি একটি বৃহৎ অঞ্চলের ছোটো ও সোজা প্রতিবিম্ব গঠন করে।
(ii) রাস্তার মোড়ে বা দোকানে নিরাপত্তার জন্য ব্যবহৃত হয়।
১২. লেন্সের রৈখিক বিবর্ধন বলতে কী বোঝো?
উত্তর: লেন্স দ্বারা গঠিত প্রতিবিম্বের দৈর্ঘ্য এবং বস্তুর দৈর্ঘ্যের অনুপাতকে রৈখিক বিবর্ধন বলে। এর কোনো একক নেই।
রৈখিক বিবর্ধন (m) = প্রতিবিম্বের দৈর্ঘ্য (I) / বস্তুর দৈর্ঘ্য (O) = v/u।
১৩. একটি বস্তুর দৈর্ঘ্য 5 সেমি। এটিকে একটি উত্তল লেন্সের সামনে রাখলে 10 সেমি দৈর্ঘ্যের প্রতিবিম্ব গঠিত হয়। বিবর্ধন কত?
উত্তর:
বস্তুর দৈর্ঘ্য (O) = 5 সেমি।
প্রতিবিম্বের দৈর্ঘ্য (I) = 10 সেমি।
বিবর্ধন (m) = I / O = 10 / 5 = 2।
∴ বিবর্ধন হল 2।
১৪. অবতল দর্পণ কীভাবে সদবিম্ব গঠন করে? একটি রশ্মিচিত্রের সাহায্যে দেখাও।
উত্তর: অবতল দর্পণের বক্রতা কেন্দ্রের বাইরে বস্তু রাখলে দর্পণের ফোকাস ও বক্রতা কেন্দ্রের মধ্যে একটি সদ, অবশীর্ষ ও খর্বাকার প্রতিবিম্ব গঠিত হয়。
(শিক্ষার্থীরা এখানে একটি রশ্মিচিত্র আঁকবে যেখানে বস্তু 2f এর বাইরে এবং প্রতিবিম্ব f ও 2f এর মধ্যে গঠিত হচ্ছে)।
১৫. কাচ ফলকের মধ্যে দিয়ে প্রতিসরণের ফলে আলোকরশ্মির পার্শ্ব সরণ হয় কেন?
উত্তর: আলোকরশ্মি কাচ ফলকের প্রথম তলে প্রতিসৃত হয়ে অভিলম্বের দিকে বেঁকে যায় এবং দ্বিতীয় তলে পুনরায় প্রতিসৃত হয়ে অভিলম্ব থেকে দূরে সরে যায়। এর ফলে আপতিত রশ্মি ও নির্গত রশ্মি পরস্পর সমান্তরাল হয়, কিন্তু একই সরলরেখায় থাকে না। এই দুটি সমান্তরাল রশ্মির মধ্যবর্তী লম্ব দূরত্বকেই পার্শ্ব সরণ বলে।
১৬. একটি নীল কাচকে সাদা আলোয় দেখলে নীল দেখায় কেন?
উত্তর: সাদা আলো সাতটি বর্ণের আলোর মিশ্রণ। একটি নীল কাচ তার উপর আপতিত সাদা আলোর শুধুমাত্র নীল বর্ণকে প্রতিসরণ বা প্রতিফলন করতে দেয় এবং বাকি বর্ণগুলিকে শোষণ করে নেয়। তাই ওই কাচ থেকে শুধুমাত্র নীল আলো আমাদের চোখে এসে পৌঁছায় এবং আমরা কাচটিকে নীল দেখি।
১৭. একটি লেন্সের ক্ষমতা -2.5 D। লেন্সটির ফোকাস দৈর্ঘ্য ও প্রকৃতি কী?
উত্তর:
লেন্সের ক্ষমতা (P) = -2.5 D।
ফোকাস দৈর্ঘ্য (f) = 1/P = 1 / (-2.5) মিটার = -0.4 মিটার = -40 সেমি।
যেহেতু ক্ষমতা ও ফোকাস দৈর্ঘ্য উভয়ই ঋণাত্মক, তাই লেন্সটি হল একটি অবতল লেন্স।
১৮. আলোর অভ্যন্তরীণ পূর্ণ প্রতিফলন কী?
উত্তর: আলোকরশ্মি ঘন মাধ্যম থেকে লঘু মাধ্যমে যাওয়ার সময় আপতন কোণের মান সংকট কোণের চেয়ে বেশি হলে, রশ্মিটি প্রতিসৃত না হয়ে পুনরায় প্রথম মাধ্যমেই প্রতিফলিত হয়। এই ঘটনাকে আলোর অভ্যন্তরীণ পূর্ণ প্রতিফলন বলে।
১৯. দিনের বেলায় চাঁদ বা অন্যান্য গ্রহদের দেখা যায় না কেন?
উত্তর: দিনের বেলায় বায়ুমণ্ডলে সূর্যের আলোর তীব্র বিক্ষেপণের ফলে আকাশের উজ্জ্বলতা অনেক বেড়ে যায়। চাঁদ বা গ্রহ থেকে আসা ক্ষীণ আলোর তুলনায় আকাশের উজ্জ্বলতা অনেক বেশি হওয়ায়, সেই আলো আমাদের চোখে ধরা পড়ে না। তাই দিনের বেলায় চাঁদ বা গ্রহদের দেখা যায় না।
২০. অবতল দর্পণের ফোকাস ও মেরুর মধ্যে বস্তু রাখলে প্রতিবিম্বের প্রকৃতি কীরূপ হবে?
উত্তর: প্রতিবিম্বটি হবে—
(i) অসদ (দর্পণের পিছনে গঠিত)।
(ii) সমশীর্ষ (সোজা)।
(iii) বিবর্ধিত (বস্তুর চেয়ে বড়)।
ঘ) রচনাধর্মী প্রশ্নাবলী – মান ৩ (১৫টি)
১. রশ্মিচিত্রের সাহায্যে দেখাও কীভাবে একটি উত্তল লেন্স সদ, অবশীর্ষ এবং বস্তুর সমান আকারের প্রতিবিম্ব গঠন করে। প্রতিবিম্বের অবস্থান উল্লেখ করো।
উত্তর: একটি উত্তল লেন্স সদ, অবশীর্ষ এবং বস্তুর সমান আকারের প্রতিবিম্ব গঠন করে যখন বস্তুটিকে লেন্সের বক্রতা কেন্দ্র বা 2f দূরত্বে রাখা হয়।
প্রতিবিম্বের অবস্থান: প্রতিবিম্বটিও লেন্সের অপর পাশে 2f দূরত্বে গঠিত হবে।
(শিক্ষার্থীরা এখানে একটি উপযুক্ত রশ্মিচিত্র আঁকবে। একটি রশ্মি প্রধান অক্ষের সমান্তরাল হয়ে ফোকাস দিয়ে যাবে এবং অন্যটি আলোককেন্দ্র দিয়ে সোজাসুজি চলে যাবে। দুটি রশ্মি 2f দূরত্বে মিলিত হবে)।
২. গোলীয় দর্পণের ক্ষেত্রে প্রমাণ করো যে, f = R/2। (যেখানে f = ফোকাস দৈর্ঘ্য এবং R = বক্রতা ব্যাসার্ধ)
উত্তর: (অবতল দর্পণের ক্ষেত্রে প্রমাণ)
ধরা যাক, একটি অবতল দর্পণের প্রধান অক্ষের সমান্তরাল একটি রশ্মি দর্পণের M বিন্দুতে আপতিত হয়ে ফোকাস F দিয়ে প্রতিফলিত হল। দর্পণের মেরু P এবং বক্রতা কেন্দ্র C।
(এখানে একটি রশ্মিচিত্র আঁকতে হবে)।
আপতিত রশ্মি সমান্তরাল হওয়ায়, ∠MCP = ∠i (একান্তর কোণ)।
প্রতিফলনের সূত্রানুসারে, আপতন কোণ = প্রতিফলন কোণ, অর্থাৎ ∠i = ∠r।
∴ ∠FMC = ∠MCP। সুতরাং, ΔFMC একটি সমদ্বিবাহু ত্রিভুজ।
∴ FC = FM।
ক্ষুদ্র উন্মেষযুক্ত দর্পণের ক্ষেত্রে, M বিন্দু P বিন্দুর খুব কাছে থাকে, তাই FM ≈ FP।
∴ FC ≈ FP।
এখন, বক্রতা ব্যাসার্ধ PC = PF + FC ≈ PF + PF = 2PF।
∴ R = 2f বা f = R/2 (প্রমাণিত)।
৩. হ্রস্বদৃষ্টি বা মায়োপিয়া কী? এই ত্রুটির কারণ কী? কীভাবে এর প্রতিকার করা হয়?
উত্তর:
হ্রস্বদৃষ্টি (Myopia): চোখের যে ত্রুটির জন্য কাছের বস্তু স্পষ্ট দেখা গেলেও দূরের বস্তু ঝাপসা দেখা যায়, তাকে হ্রস্বদৃষ্টি বা মায়োপিয়া বলে।
কারণ: (i) অক্ষিগোলকের আকার স্বাভাবিকের চেয়ে বড় হয়ে যাওয়া। (ii) চোখের লেন্সের ফোকাস দৈর্ঘ্য কমে যাওয়া। এর ফলে দূরের বস্তু থেকে আসা সমান্তরাল রশ্মি রেটিনার সামনেই মিলিত হয়।
প্রতিকার: উপযুক্ত ফোকাস দৈর্ঘ্যের অবতল লেন্সযুক্ত চশমা ব্যবহার করে এই ত্রুটি দূর করা হয়। অবতল লেন্স রশ্মিগুলিকে অপসারী করে প্রতিবিম্বকে রেটিনার উপর গঠন করতে সাহায্য করে। (একটি প্রতিকারের রশ্মিচিত্র দেওয়া যেতে পারে)।
৪. দীর্ঘদৃষ্টি বা হাইপারমেট্রোপিয়া কী? এই ত্রুটির কারণ কী? কীভাবে এর প্রতিকার করা হয়?
উত্তর:
দীর্ঘদৃষ্টি (Hypermetropia): চোখের যে ত্রুটির জন্য দূরের বস্তু স্পষ্ট দেখা গেলেও কাছের বস্তু ঝাপসা দেখা যায়, তাকে দীর্ঘদৃষ্টি বা হাইপারমেট্রোপিয়া বলে।
কারণ: (i) অক্ষিগোলকের আকার স্বাভাবিকের চেয়ে ছোট হয়ে যাওয়া। (ii) চোখের লেন্সের ফোকাস দৈর্ঘ্য বেড়ে যাওয়া। এর ফলে কাছের বস্তু থেকে আসা অপসারী রশ্মি রেটিনার পিছনে মিলিত হয়।
প্রতিকার: উপযুক্ত ফোকাস দৈর্ঘ্যের উত্তল লেন্সযুক্ত চশমা ব্যবহার করে এই ত্রুটি দূর করা হয়। উত্তল লেন্স রশ্মিগুলিকে অভিসারী করে প্রতিবিম্বকে রেটিনার উপর গঠন করতে সাহায্য করে। (একটি প্রতিকারের রশ্মিচিত্র দেওয়া যেতে পারে)।
৫. একটি বস্তুকে একটি উত্তল লেন্স থেকে 30 সেমি দূরে রাখায়, লেন্স থেকে 60 সেমি দূরে একটি সদবিম্ব গঠিত হল। লেন্সটির ফোকাস দৈর্ঘ্য কত?
সমাধান:
এখানে, বস্তুর দূরত্ব (u) = -30 সেমি (চিহ্নের নিয়ম অনুযায়ী)।
প্রতিবিম্বের দূরত্ব (v) = +60 সেমি (সদবিম্ব হওয়ায়)।
লেন্সের সমীকরণ অনুযায়ী, 1/v – 1/u = 1/f
⇒ 1/60 – 1/(-30) = 1/f
⇒ 1/60 + 1/30 = 1/f
⇒ (1 + 2) / 60 = 1/f
⇒ 3 / 60 = 1/f
⇒ 1/20 = 1/f
⇒ f = 20 সেমি।
উত্তর: লেন্সটির ফোকাস দৈর্ঘ্য 20 সেমি।
৬. প্রিজমের মধ্যে দিয়ে আলোর প্রতিসরণের ক্ষেত্রে দেখাও যে, চ্যুতি কোণ (δ) = i₁ + i₂ – A। (চিহ্নগুলি প্রচলিত অর্থ বহন করে)
উত্তর: (শিক্ষার্থীরা এখানে একটি প্রিজমের রশ্মিচিত্র আঁকবে যেখানে আপতন কোণ i₁, প্রতিসরণ কোণ r₁ ও r₂, নির্গমন কোণ i₂, এবং প্রতিসারক কোণ A দেখানো হয়েছে)।
প্রথম তলে চ্যুতি = i₁ – r₁।
দ্বিতীয় তলে চ্যুতি = i₂ – r₂।
মোট চ্যুতি, δ = (i₁ – r₁) + (i₂ – r₂) = (i₁ + i₂) – (r₁ + r₂)।
চতুর্ভুজ AQOR-এ, ∠A + ∠AQO + ∠QOR + ∠ORA = 360°।
যেহেতু অভিলম্ব, ∠AQO = ∠ORA = 90°।
সুতরাং, ∠A + ∠QOR = 180°।
আবার, ΔQOR-এ, r₁ + r₂ + ∠QOR = 180°।
দুটি সমীকরণ তুলনা করে পাই, A = r₁ + r₂।
এই মানটি চ্যুতির সমীকরণে বসিয়ে পাই,
δ = i₁ + i₂ – A (প্রমাণিত)।
৭. বায়ুর সাপেক্ষে কাচের প্রতিসরাঙ্ক 1.5 এবং কাচের সাপেক্ষে জলের প্রতিসরাঙ্ক 0.9। বায়ুর সাপেক্ষে জলের প্রতিসরাঙ্ক কত?
সমাধান:
দেওয়া আছে, বায়ুর সাপেক্ষে কাচের প্রতিসরাঙ্ক (ₐμ₉) = 1.5।
কাচের সাপেক্ষে জলের প্রতিসরাঙ্ক (₉μw) = 0.9।
আমরা জানি, ₐμw = ₐμ₉ × ₉μw।
কিন্তু এখানে দেওয়া আছে কাচের সাপেক্ষে জলের প্রতিসরাঙ্ক। আমাদের প্রয়োজন বায়ুর সাপেক্ষে কাচ ও জলের প্রতিসরাঙ্কের সম্পর্ক।
₉μw = μw / μ₉ (বায়ুর সাপেক্ষে)।
আবার, ₐμ₉ = μ₉ / μₐ = μ₉ (যেহেতু μₐ = 1)।
∴ ₐμw = μw।
সুতরাং, ₉μw = ₐμw / ₐμ₉।
⇒ ₐμw = ₐμ₉ × ₉μw = 1.5 × 0.9 = 1.35।
অন্যভাবে, কাচের সাপেক্ষে জলের প্রতিসরাঙ্ক দেওয়া আছে, যা ভুল। প্রশ্নটি হওয়া উচিত ছিল: বায়ুর সাপেক্ষে কাচের প্রতিসরাঙ্ক 1.5 এবং বায়ুর সাপেক্ষে জলের প্রতিসরাঙ্ক 1.33 হলে, কাচের সাপেক্ষে জলের প্রতিসরাঙ্ক কত?
সেই ক্ষেত্রে, ₉μw = ₐμw / ₐμ₉ = 1.33 / 1.5 ≈ 0.88। (সাধারণত এই ধরনের প্রশ্ন থাকে)।
প্রদত্ত প্রশ্ন অনুযায়ী উত্তর 1.35।
৮. অবতল দর্পণের সামনে কোথায় বস্তু রাখলে (i) সদ ও বিবর্ধিত, (ii) অসদ ও বিবর্ধিত প্রতিবিম্ব গঠিত হবে? রশ্মিচিত্র আঁকো।
উত্তর:
(i) সদ ও বিবর্ধিত প্রতিবিম্ব: বস্তুটিকে দর্পণের ফোকাস (F) ও বক্রতা কেন্দ্রের (C) মধ্যে রাখতে হবে। প্রতিবিম্বটি বক্রতা কেন্দ্রের বাইরে, সদ, অবশীর্ষ ও বিবর্ধিত হবে।
(এখানে একটি রশ্মিচিত্র আঁকতে হবে)।
(ii) অসদ ও বিবর্ধিত প্রতিবিম্ব: বস্তুটিকে দর্পণের ফোকাস (F) ও মেরুর (P) মধ্যে রাখতে হবে। প্রতিবিম্বটি দর্পণের পিছনে, অসদ, সমশীর্ষ ও বিবর্ধিত হবে।
(এখানে দ্বিতীয় একটি রশ্মিচিত্র আঁকতে হবে)।
৯. সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের সময় সূর্যকে লাল দেখায় কেন?
উত্তর: সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের সময় সূর্য দিগন্তরেখার কাছে থাকে। তখন সূর্যরশ্মিকে বায়ুমণ্ডলের অনেক বেশি পথ অতিক্রম করে আমাদের চোখে আসতে হয়। এই দীর্ঘ পথ আসার সময় আলোর বিক্ষেপণ ঘটে। লর্ড রেলের সূত্রানুসারে, কম তরঙ্গদৈর্ঘ্যের নীল বা বেগুনি আলোর বিক্ষেপণ সবচেয়ে বেশি হয়, তাই সেগুলি বিক্ষিপ্ত হয়ে চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে এবং আমাদের চোখ পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে না।
অন্যদিকে, লাল আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য সবচেয়ে বেশি হওয়ায় এর বিক্ষেপণ সবচেয়ে কম হয়। তাই শুধুমাত্র লাল আলোই সরাসরি আমাদের চোখে এসে পৌঁছায়। এই কারণে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের সময় সূর্যকে লাল দেখায়।
১০. 20 সেমি ফোকাস দৈর্ঘ্যের একটি উত্তল লেন্স থেকে কত দূরে একটি বস্তুকে রাখলে, বস্তুর তিনগুণ বিবর্ধিত সদবিম্ব গঠিত হবে?
সমাধান:
দেওয়া আছে, ফোকাস দৈর্ঘ্য (f) = +20 সেমি।
বিবর্ধন (m) = -3 (কারণ সদবিম্ব অবশীর্ষ হয়)।
আমরা জানি, m = v/u ⇒ v = mu = -3u।
লেন্সের সমীকরণ থেকে, 1/v – 1/u = 1/f
⇒ 1/(-3u) – 1/u = 1/20
⇒ (-1 – 3) / 3u = 1/20
⇒ -4 / 3u = 1/20
⇒ 3u = -80
⇒ u = -80/3 ≈ -26.67 সেমি।
উত্তর: লেন্স থেকে 26.67 সেমি দূরে বস্তুটিকে রাখতে হবে।
১১. অভ্যন্তরীণ পূর্ণ প্রতিফলনের দুটি শর্ত লেখো। অপটিক্যাল ফাইবারে এর একটি প্রয়োগ উল্লেখ করো।
উত্তর:
শর্ত দুটি হল:
(i) আলোকরশ্মিকে অবশ্যই ঘন মাধ্যম থেকে লঘু মাধ্যমের দিকে যেতে হবে।
(ii) ঘন মাধ্যমে আপতন কোণের মান অবশ্যই মাধ্যম দুটির সংকট কোণের চেয়ে বেশি হতে হবে।
প্রয়োগ: অপটিক্যাল ফাইবার দ্বারা টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থায় বা ডাক্তারি ক্ষেত্রে এন্ডোস্কোপিতে আলোক সংকেত পাঠাতে অভ্যন্তরীণ পূর্ণ প্রতিফলনকে ব্যবহার করা হয়।
১২. কাচের স্ল্যাবের মধ্যে দিয়ে আলোর প্রতিসরণের একটি পরিষ্কার চিত্র আঁকো এবং পার্শ্ব সরণ দেখাও।
উত্তর: (শিক্ষার্থীরা একটি পরিষ্কার চিত্র আঁকবে যেখানে একটি আয়তাকার কাচ ফলকের উপর একটি আলোকরশ্মি আপতিত হচ্ছে। প্রথম তলে প্রতিসৃত হয়ে রশ্মিটি অভিলম্বের দিকে বেঁকে যাচ্ছে এবং দ্বিতীয় তল থেকে নির্গত হওয়ার সময় অভিলম্ব থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। আপতিত রশ্মির গতিপথ ও নির্গত রশ্মির মধ্যে লম্ব দূরত্বকে ‘পার্শ্ব সরণ’ হিসেবে চিহ্নিত করতে হবে)।
১৩. একটি অবতল দর্পণের মেরু থেকে 15 সেমি দূরে একটি বস্তু রাখার ফলে, দর্পণ থেকে 30 সেমি দূরে একটি সদবিম্ব গঠিত হল। দর্পণের ফোকাস দৈর্ঘ্য কত?
সমাধান:
বস্তুর দূরত্ব (u) = -15 সেমি।
প্রতিবিম্বের দূরত্ব (v) = -30 সেমি (সদবিম্ব দর্পণের সামনে গঠিত হয়)।
দর্পণের সমীকরণ, 1/v + 1/u = 1/f
⇒ 1/(-30) + 1/(-15) = 1/f
⇒ -1/30 – 1/15 = 1/f
⇒ (-1 – 2) / 30 = 1/f
⇒ -3 / 30 = 1/f
⇒ -1 / 10 = 1/f
⇒ f = -10 সেমি।
উত্তর: দর্পণের ফোকাস দৈর্ঘ্য 10 সেমি (অবতল দর্পণ হওয়ায় ঋণাত্মক চিহ্ন)।
১৪. বিশুদ্ধ ও অশুন্ধ বর্ণালির মধ্যে তিনটি পার্থক্য লেখো।
উত্তর:
বিষয় | বিশুদ্ধ বর্ণালি | অশুন্ধ বর্ণালি |
---|---|---|
বর্ণের উপরিপাত | একটি বর্ণ অন্য বর্ণের উপর পড়ে না। | একটি বর্ণ অন্য বর্ণের উপর পড়ে। |
স্পষ্টতা | প্রতিটি বর্ণকে স্পষ্টভাবে আলাদা করা যায়। | বর্ণগুলি একে অপরের সাথে মিশে থাকে। |
গঠন | এটি একটি সরু স্লিট ও উত্তল লেন্স ব্যবহার করে তৈরি করা হয়। | এটি কোনো চওড়া উৎস থেকে সরাসরি প্রিজমের মাধ্যমে তৈরি হয়। |
১৫. কোনো দর্পণের রৈখিক বিবর্ধন +0.5 বলতে কী বোঝায়?
উত্তর: রৈখিক বিবর্ধন +0.5 বলতে বোঝায়:
(i) ‘+’ চিহ্নটি বোঝায় যে প্রতিবিম্বটি অসদ এবং সমশীর্ষ (সোজা)।
(ii) ‘0.5’ মানটি বোঝায় যে প্রতিবিম্বের আকার বস্তুর আকারের অর্ধেক (অর্থাৎ, প্রতিবিম্বটি খর্বাকার)।
এই ধরনের প্রতিবিম্ব শুধুমাত্র উত্তল দর্পণ দ্বারা গঠিত হয়।
Class 10 Physical Science আলো Question Answer MCQ,অতি-সংক্ষিপ্ত, ও রচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তর : class 10 আলো প্রশ্ন উত্তর