ভারতের জনসংখ্যা Class 10

ভারতের জনসংখ্যা Class 10

ক) বহুবিকল্পভিত্তিক প্রশ্নাবলী (MCQ) – মান ১ (৭০টি)

১. ২০১১ সালের জনগণনা অনুসারে ভারতের সর্বাধিক জনবহুল রাজ্য হল –

  • (ক) মহারাষ্ট্র
  • (খ) পশ্চিমবঙ্গ
  • (গ) বিহার
  • (ঘ) উত্তরপ্রদেশ

২. ভারতের কোন রাজ্যে জনঘনত্ব সর্বাধিক?

  • (ক) পশ্চিমবঙ্গ
  • (খ) কেরালা
  • (গ) উত্তরপ্রদেশ
  • (ঘ) বিহার

৩. ভারতের কোন রাজ্যে সাক্ষরতার হার সর্বাধিক?

  • (ক) পশ্চিমবঙ্গ
  • (খ) গোয়া
  • (গ) কেরালা
  • (ঘ) মিজোরাম

৪. ভারতের সবচেয়ে কম জনবহুল রাজ্য কোনটি?

  • (ক) গোয়া
  • (খ) অরুণাচল প্রদেশ
  • (গ) মিজোরাম
  • (ঘ) সিকিম

৫. ভারতের কোন রাজ্যে জনঘনত্ব সর্বনিম্ন?

  • (ক) সিকিম
  • (খ) মিজোরাম
  • (গ) নাগাল্যান্ড
  • (ঘ) অরুণাচল প্রদেশ

৬. ভারতের একটি মেগা সিটির উদাহরণ হল –

  • (ক) পুনে
  • (খ) কলকাতা
  • (গ) আহমেদাবাদ
  • (ঘ) সুরাট

৭. ২০১১ সালের জনগণনা অনুসারে ভারতের নারী-পুরুষের অনুপাত হল –

  • (ক) ১০০০ : ৯৩৩
  • (খ) ১০০০ : ৯৪০
  • (গ) ১০০০ : ৯২৭
  • (ঘ) ১০০০ : ৯৪৭

৮. ভারতের কোন শহরে প্রথম পাতাল রেল চালু হয়?

  • (ক) দিল্লি
  • (খ) মুম্বাই
  • (গ) চেন্নাই
  • (ঘ) কলকাতা

৯. ভারতের বৃহত্তম মহানগর হল –

  • (ক) দিল্লি
  • (খ) কলকাতা
  • (গ) মুম্বাই
  • (ঘ) চেন্নাই

১০. আদমশুমারি বা জনগণনা ভারতে কত বছর অন্তর হয়?

  • (ক) ৫ বছর
  • (খ) ৮ বছর
  • (গ) ১০ বছর
  • (ঘ) ১২ বছর

১১. ভারতের কোন রাজ্যে নারী-পুরুষের অনুপাত সর্বাধিক?

  • (ক) তামিলনাড়ু
  • (খ) অন্ধ্রপ্রদেশ
  • (গ) কেরালা
  • (ঘ) পশ্চিমবঙ্গ

১২. ভারতের কোন রাজ্যে নারী-পুরুষের অনুপাত সর্বনিম্ন?

  • (ক) পাঞ্জাব
  • (খ) হরিয়ানা
  • (গ) রাজস্থান
  • (ঘ) উত্তরপ্রদেশ

১৩. ২০১১ সালের জনগণনা অনুসারে ভারতের মোট জনসংখ্যা ছিল প্রায় –

  • (ক) ১০০ কোটি
  • (খ) ১১০ কোটি
  • (গ) ১২১ কোটি
  • (ঘ) ১৩০ কোটি

১৪. ভারতের কোন রাজ্যে সাক্ষরতার হার সর্বনিম্ন?

  • (ক) উত্তরপ্রদেশ
  • (খ) রাজস্থান
  • (গ) ঝাড়খণ্ড
  • (ঘ) বিহার

১৫. জনসংখ্যায় পৃথিবীতে ভারতের স্থান –

  • (ক) প্রথম
  • (খ) দ্বিতীয়
  • (গ) তৃতীয়
  • (ঘ) চতুর্থ

১৬. একটি শহরের জনসংখ্যা ১০ লক্ষের বেশি হলে তাকে বলে –

  • (ক) শহর
  • (খ) নগর
  • (গ) মহানগর
  • (ঘ) মেগা সিটি

১৭. ভারতের একটি পরিকল্পিত শহরের উদাহরণ হল –

  • (ক) কলকাতা
  • (খ) মুম্বাই
  • (গ) চণ্ডীগড়
  • (ঘ) দিল্লি

১৮. ভারতের কোন রাজ্যে ঋণাত্মক জনসংখ্যা বৃদ্ধি দেখা গেছে (২০১১)?

  • (ক) কেরালা
  • (খ) নাগাল্যান্ড
  • (গ) সিকিম
  • (ঘ) মিজোরাম

১৯. ভারতের সর্বাধিক জনবহুল কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হল –

  • (ক) পুদুচেরি
  • (খ) চণ্ডীগড়
  • (গ) দিল্লি
  • (ঘ) জম্মু ও কাশ্মীর

২০. কোন দশকে ভারতের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার সর্বাধিক ছিল?

  • (ক) ১৯১১-১৯২১
  • (খ) ১৯৫১-১৯৬১
  • (গ) ১৯৬১-১৯৭১
  • (ঘ) ২০০১-২০১১

২১. জনসংখ্যার বিচারে ভারতের বৃহত্তম মহানগর কোনটি?

  • (ক) দিল্লি
  • (খ) মুম্বাই
  • (গ) কলকাতা
  • (ঘ) চেন্নাই

২২. ২০১১ সালের জনগণনা অনুসারে ভারতের গড় জনঘনত্ব হল –

  • (ক) ৩২৫ জন/বর্গ কিমি
  • (খ) ৩৮২ জন/বর্গ কিমি
  • (গ) ৪১৪ জন/বর্গ কিমি
  • (ঘ) ৩৫০ জন/বর্গ কিমি

২৩. ভারতে প্রথম সম্পূর্ণ জনগণনা হয় –

  • (ক) ১৮৭২ সালে
  • (খ) ১৮৮১ সালে
  • (গ) ১৯০১ সালে
  • (ঘ) ১৯৪৭ সালে

২৪. নগরায়নের হার সবচেয়ে বেশি যে রাজ্যে, তা হল –

  • (ক) মহারাষ্ট্র
  • (খ) তামিলনাড়ু
  • (গ) গোয়া
  • (ঘ) পশ্চিমবঙ্গ

২৫. ‘কাম্য জনসংখ্যা’ বলতে বোঝায় –

  • (ক) দেশের মোট জনসংখ্যা
  • (খ) দেশের সর্বোচ্চ জনসংখ্যা
  • (গ) সম্পদের তুলনায় আদর্শ জনসংখ্যা
  • (ঘ) দেশের সর্বনিম্ন জনসংখ্যা

২৬. ভারতের কোন রাজ্যে গ্রামীণ জনসংখ্যা সর্বাধিক?

  • (ক) বিহার
  • (খ) উত্তরপ্রদেশ
  • (গ) পশ্চিমবঙ্গ
  • (ঘ) হিমাচল প্রদেশ

২৭. ২০১১ জনগণনা অনুসারে ভারতের গড় সাক্ষরতার হার হল –

  • (ক) ৬৬%
  • (খ) ৭০.০৪%
  • (গ) ৭৪.০৪%
  • (ঘ) ৮২.১৪%

২৮. জনসংখ্যা পিরামিডের ভূমি প্রশস্ত হলে বোঝায় –

  • (ক) জন্মহার কম
  • (খ) জন্মহার বেশি
  • (গ) মৃত্যুহার বেশি
  • (ঘ) জনসংখ্যা স্থিতিশীল

২৯. ভারতের কোন রাজ্যে তপশিলি জাতির জনসংখ্যা সর্বাধিক?

  • (ক) পশ্চিমবঙ্গ
  • (খ) বিহার
  • (গ) উত্তরপ্রদেশ
  • (ঘ) পাঞ্জাব

৩০. ভারতের জনসংখ্যা বন্টনের প্রধান নিয়ন্ত্রক হল –

  • (ক) ভূপ্রকৃতি
  • (খ) জলবায়ু
  • (গ) অর্থনৈতিক কার্যকলাপ
  • (ঘ) সবকটিই ঠিক

৩১. একটি শহরের ন্যূনতম জনসংখ্যা কত হওয়া প্রয়োজন?

  • (ক) ১০০০ জন
  • (খ) ৫০০০ জন
  • (গ) ১০,০০০ জন
  • (ঘ) ১ লক্ষ জন

৩২. ভারতের কোন রাজ্যে লিঙ্গানুপাত নারীদের অনুকূলে?

  • (ক) পশ্চিমবঙ্গ
  • (খ) তামিলনাড়ু
  • (গ) গোয়া
  • (ঘ) কেরালা

৩৩. ‘Great Divide Year’ বা ‘মহাবিভাজনের বছর’ বলা হয় –

  • (ক) ১৯১১ সালকে
  • (খ) ১৯২১ সালকে
  • (গ) ১৯৪৭ সালকে
  • (ঘ) ১৯৫১ সালকে

৩৪. ভারতের দ্বিতীয় সর্বাধিক জনবহুল রাজ্য হল –

  • (ক) বিহার
  • (খ) পশ্চিমবঙ্গ
  • (গ) মহারাষ্ট্র
  • (ঘ) মধ্যপ্রদেশ

৩৫. ভারতের কোন রাজ্যে তপশিলি উপজাতির জনসংখ্যা সর্বাধিক?

  • (ক) ঝাড়খণ্ড
  • (খ) ছত্তিশগড়
  • (গ) মধ্যপ্রদেশ
  • (ঘ) ওড়িশা

৩৬. ভারতের কোন ধর্মীয় গোষ্ঠীর জনসংখ্যা সর্বাধিক?

  • (ক) মুসলিম
  • (খ) খ্রিস্টান
  • (গ) শিখ
  • (ঘ) হিন্দু

৩৭. ভারতের পরিব্রাজন বা মাইগ্রেশনের প্রধান কারণ হল –

  • (ক) শিক্ষা
  • (খ) বিবাহ
  • (গ) জীবিকা বা কর্মসংস্থান
  • (ঘ) স্বাস্থ্য

৩৮. ভারতের কোন মহানগরে জনসংখ্যা সবচেয়ে বেশি?

  • (ক) দিল্লি
  • (খ) কলকাতা
  • (গ) চেন্নাই
  • (ঘ) মুম্বাই

৩৯. ভারতের কোন রাজ্যে শহরের সংখ্যা সর্বাধিক?

  • (ক) মহারাষ্ট্র
  • (খ) পশ্চিমবঙ্গ
  • (গ) তামিলনাড়ু
  • (ঘ) উত্তরপ্রদেশ

৪০. ভারতের সবচেয়ে কম জনঘনত্বপূর্ণ কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হল –

  • (ক) লাদাখ
  • (খ) পুদুচেরি
  • (গ) আন্দামান ও নিকোবর
  • (ঘ) চণ্ডীগড়

৪১. ভারতের কোন রাজ্যে পুরুষ সাক্ষরতার হার সর্বাধিক?

  • (ক) মিজোরাম
  • (খ) গোয়া
  • (গ) লাক্ষাদ্বীপ
  • (ঘ) কেরালা

৪২. ভারতের কোন রাজ্যে নারী সাক্ষরতার হার সর্বনিম্ন?

  • (ক) বিহার
  • (খ) রাজস্থান
  • (গ) উত্তরপ্রদেশ
  • (ঘ) ঝাড়খণ্ড

৪৩. ভারতের কোন শহরকে ‘অর্থনৈতিক রাজধানী’ বলা হয়?

  • (ক) দিল্লি
  • (খ) কলকাতা
  • (গ) মুম্বাই
  • (ঘ) বেঙ্গালুরু

৪৪. জনগণনা অনুযায়ী, একটি শহরের কর্মক্ষম জনসংখ্যার কত শতাংশ অকৃষি কাজে যুক্ত থাকা প্রয়োজন?

  • (ক) ৫০%
  • (খ) ৬০%
  • (গ) ৭৫%
  • (ঘ) ৯০%

৪৫. ভারতের কোন রাজ্যে মোট জনসংখ্যার হিসাবে গ্রামীণ জনসংখ্যা সবচেয়ে বেশি?

  • (ক) বিহার
  • (খ) আসাম
  • (গ) ওড়িশা
  • (ঘ) হিমাচল প্রদেশ

৪৬. ভারতের কোন রাজ্যে জন্মহার সর্বাধিক?

  • (ক) উত্তরপ্রদেশ
  • (খ) বিহার
  • (গ) রাজস্থান
  • (ঘ) মধ্যপ্রদেশ

৪৭. ভারতের কোন রাজ্যে মৃত্যুহার সর্বনিম্ন?

  • (ক) গোয়া
  • (খ) কেরালা
  • (গ) নাগাল্যান্ড
  • (ঘ) মিজোরাম

৪৮. ভারতের কোন অঞ্চলে জনসংখ্যা বন্টন সবচেয়ে বেশি?

  • (ক) পার্বত্য অঞ্চল
  • (খ) মালভূমি অঞ্চল
  • (গ) সমভূমি অঞ্চল
  • (ঘ) উপকূলীয় অঞ্চল

৪৯. ‘জনবিস্ফোরণ’ বলতে বোঝায় –

  • (ক) জন্মহার ও মৃত্যুহার উভয়ই বেশি
  • (খ) জন্মহার ও মৃত্যুহার উভয়ই কম
  • (গ) জন্মহার কম ও মৃত্যুহার বেশি
  • (ঘ) জন্মহার বেশি ও মৃত্যুহার কম

৫০. কোন শহরকে ‘ভারতের উদ্যান নগরী’ বলা হয়?

  • (ক) হায়দ্রাবাদ
  • (খ) পুনে
  • (গ) চণ্ডীগড়
  • (ঘ) বেঙ্গালুরু

৫১. ২০১১ জনগণনা অনুসারে ভারতের কোন কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে জনঘনত্ব সর্বাধিক?

  • (ক) চণ্ডীগড়
  • (খ) পুদুচেরি
  • (গ) দিল্লি
  • (ঘ) দমন ও দিউ

৫২. ভারতের কোন রাজ্যে জনসংখ্যার ঘনত্ব পশ্চিমবঙ্গের চেয়ে বেশি?

  • (ক) কেরালা
  • (খ) উত্তরপ্রদেশ
  • (গ) বিহার
  • (ঘ) কোনোটিই নয়

৫৩. ভারতের কোন কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে সাক্ষরতার হার সর্বাধিক?

  • (ক) দিল্লি
  • (খ) চণ্ডীগড়
  • (গ) লাক্ষাদ্বীপ
  • (ঘ) পুদুচেরি

৫৪. ভারতের কোন রাজ্যে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার সর্বাধিক (২০১১)?

  • (ক) বিহার
  • (খ) উত্তরপ্রদেশ
  • (গ) মেঘালয়
  • (ঘ) রাজস্থান

৫৫. ভারতের কোন শহরে সর্বাধিক জনসংখ্যা বাস করে?

  • (ক) দিল্লি
  • (খ) কলকাতা
  • (গ) চেন্নাই
  • (ঘ) মুম্বাই

৫৬. একটি মেগা সিটির জনসংখ্যা কত হওয়া প্রয়োজন?

  • (ক) ১০ লক্ষের বেশি
  • (খ) ২০ লক্ষের বেশি
  • (গ) ৫০ লক্ষের বেশি
  • (ঘ) ১ কোটির বেশি

৫৭. ‘সোনালী চতুর্ভুজ’ দ্বারা যুক্ত নয় কোন শহর?

  • (ক) দিল্লি
  • (খ) কলকাতা
  • (গ) চেন্নাই
  • (ঘ) হায়দ্রাবাদ

৫৮. ভারতের কোন কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে লিঙ্গানুপাত সর্বাধিক?

  • (ক) দিল্লি
  • (খ) চণ্ডীগড়
  • (গ) লাক্ষাদ্বীপ
  • (ঘ) পুদুচেরি

৫৯. ভারতের দ্বিতীয় সর্বাধিক জনঘনত্বপূর্ণ রাজ্য কোনটি?

  • (ক) কেরালা
  • (খ) উত্তরপ্রদেশ
  • (গ) পশ্চিমবঙ্গ
  • (ঘ) হরিয়ানা

৬০. জনসংখ্যা পিরামিডের শীর্ষভাগ সূচালো হলে কী বোঝায়?

  • (ক) জন্মহার কম
  • (খ) জন্মহার বেশি
  • (গ) বয়স্ক জনসংখ্যা কম
  • (ঘ) বয়স্ক জনসংখ্যা বেশি

৬১. ভারতের কোন রাজ্যে সর্বাধিক সংখ্যক মহানগর রয়েছে?

  • (ক) মহারাষ্ট্র
  • (খ) পশ্চিমবঙ্গ
  • (গ) উত্তরপ্রদেশ
  • (ঘ) কেরালা

৬২. ভারতের পরিব্রাজনের ক্ষেত্রে কোন ধারাটি সবচেয়ে বেশি দেখা যায়?

  • (ক) গ্রাম থেকে শহর
  • (খ) শহর থেকে গ্রাম
  • (গ) গ্রাম থেকে গ্রাম
  • (ঘ) শহর থেকে শহর

৬৩. স্বাধীন ভারতের প্রথম জনগণনা কবে হয়?

  • (ক) ১৯৪৭ সালে
  • (খ) ১৯৫০ সালে
  • (গ) ১৯৫১ সালে
  • (ঘ) ১৯৬১ সালে

৬৪. ভারতের কোন রাজ্যে সর্বাধিক খ্রিস্টান জনসংখ্যা বাস করে?

  • (ক) গোয়া
  • (খ) নাগাল্যান্ড
  • (গ) কেরালা
  • (ঘ) মিজোরাম

৬৫. ‘जनगणना भवन’ কোথায় অবস্থিত?

  • (ক) কলকাতা
  • (খ) মুম্বাই
  • (গ) চেন্নাই
  • (ঘ) নতুন দিল্লি

৬৬. ভারতের কোন রাজ্যে নারী সাক্ষরতার হার সর্বাধিক?

  • (ক) গোয়া
  • (খ) মিজোরাম
  • (গ) ত্রিপুরা
  • (ঘ) কেরালা

৬৭. ভারতের কোন রাজ্যে শহরের জনসংখ্যা সবচেয়ে বেশি?

  • (ক) উত্তরপ্রদেশ
  • (খ) তামিলনাড়ু
  • (গ) পশ্চিমবঙ্গ
  • (ঘ) মহারাষ্ট্র

৬৮. জনঘনত্ব নির্ণয়ের সূত্রটি হল –

  • (ক) মোট জনসংখ্যা / মোট আয়তন
  • (খ) মোট আয়তন / মোট জনসংখ্যা
  • (গ) মোট জনসংখ্যা × মোট আয়তন
  • (ঘ) মোট জনসংখ্যা – মোট আয়তন

৬৯. ভারতের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার বর্তমানে –

  • (ক) বাড়ছে
  • (খ) কমছে
  • (গ) স্থিতিশীল
  • (ঘ) বলা যায় না

৭০. ভারতের কোন ধর্মীয় গোষ্ঠীর জনসংখ্যা দ্বিতীয় স্থানে?

  • (ক) খ্রিস্টান
  • (খ) শিখ
  • (গ) বৌদ্ধ
  • (ঘ) মুসলিম

খ) অতি-সংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্নাবলী (SAQ) – মান ১ (৬০টি)

১. জনঘনত্ব কাকে বলে?

উত্তর: কোনো অঞ্চলের প্রতি বর্গ কিলোমিটারে যতজন লোক বাস করে, তাকে সেই অঞ্চলের জনঘনত্ব বলে।

২. ভারতের কোন রাজ্যে জনঘনত্ব সবচেয়ে কম?

উত্তর: অরুণাচল প্রদেশ।

৩. আদমশুমারি বা জনগণনা কী?

উত্তর: একটি নির্দিষ্ট সময়ে কোনো দেশের জনসংখ্যা সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য (যেমন – বয়স, লিঙ্গ, সাক্ষরতা) সংগ্রহ, গণনা ও প্রকাশ করার পদ্ধতিকে আদমশুমারি বলে।

৪. সাক্ষরতা কী?

উত্তর: জনগণনা অনুসারে, ৭ বছর বা তার বেশি বয়সী যে কোনো ব্যক্তি যিনি যেকোনো ভাষায় পড়তে, লিখতে ও বুঝতে পারেন, তাকে সাক্ষর বলা হয়।

৫. নগর বা শহর কাকে বলে?

উত্তর: জনগণনা অনুসারে, যে জনবসতির জনসংখ্যা কমপক্ষে ৫০০০, জনঘনত্ব প্রতি বর্গ কিমিতে কমপক্ষে ৪০০ জন এবং ৭৫% পুরুষ কর্মী অকৃষি কাজে নিযুক্ত, তাকে নগর বা শহর বলে।

৬. লিঙ্গানুপাত (Sex Ratio) কী?

উত্তর: কোনো দেশে প্রতি ১০০০ জন পুরুষে নারীর সংখ্যাকে লিঙ্গানুপাত বলে।

৭. ভারতের কোন রাজ্যে সাক্ষরতার হার সর্বনিম্ন?

উত্তর: বিহার।

৮. ভারতের একটি পরিকল্পিত শহরের নাম লেখো।

উত্তর: চণ্ডীগড় বা গান্ধীনগর।

৯. ‘কাম্য জনসংখ্যা’ কী?

উত্তর: কোনো দেশের প্রাকৃতিক সম্পদের পূর্ণ ব্যবহারের জন্য যে পরিমাণ জনসংখ্যা থাকা আদর্শ, তাকে সেই দেশের কাম্য জনসংখ্যা বলে।

১০. মহানগর (Metropolitan City) কাকে বলে?

উত্তর: যে শহরের জনসংখ্যা ১০ লক্ষ বা তার বেশি, তাকে মহানগর বলে। যেমন – কলকাতা, মুম্বাই।

১১. ভারতের কোন রাজ্যে নারী-পুরুষের অনুপাত সবচেয়ে কম?

উত্তর: হরিয়ানা।

১২. ‘জনবিস্ফোরণ’ কী?

উত্তর: যখন কোনো দেশে উচ্চ জন্মহার এবং নিম্ন মৃত্যুহারের কারণে জনসংখ্যা খুব দ্রুতগতিতে বাড়তে থাকে, সেই অবস্থাকে জনবিস্ফোরণ বলে।

১৩. ভারতে প্রথম জনগণনা কবে হয়?

উত্তর: ১৮৭২ সালে (লর্ড মেয়োর আমলে)।

১৪. মেগা সিটি (Mega City) কাকে বলে?

উত্তর: যে মহানগরের জনসংখ্যা ১ কোটি বা তার বেশি, তাকে মেগা সিটি বলে। যেমন – দিল্লি, মুম্বাই।

১৫. ভারতের কোন রাজ্যে জনসংখ্যার স্বাভাবিক বৃদ্ধি ঋণাত্মক ছিল?

উত্তর: নাগাল্যান্ড (২০১১ জনগণনা অনুসারে)।

১৬. ভারতের কোন রাজ্যে তপশিলি জাতির জনসংখ্যা শতাংশের হিসাবে সর্বাধিক?

উত্তর: পাঞ্জাব।

১৭. ভারতের একটি জনসংখ্যা বিরল অঞ্চলের নাম লেখো।

উত্তর: লাদাখ বা অরুণাচল প্রদেশ।

১৮. ভারতের কোন রাজ্যে গ্রামীণ জনসংখ্যার হার সর্বাধিক?

উত্তর: হিমাচল প্রদেশ।

১৯. ‘মহাবিভাজনের বছর’ কাকে বলা হয়?

উত্তর: ১৯২১ সালকে, কারণ এই বছরের পর থেকে ভারতের জনসংখ্যা একটানা বাড়তে থাকে।

২০. নগরায়ন কী?

উত্তর: কোনো দেশের মোট জনসংখ্যার মধ্যে শহুরে জনসংখ্যার অনুপাত ক্রমশ বৃদ্ধি পাওয়ার প্রক্রিয়াকে নগরায়ন বলে।

২১. Census কথাটি কোন শব্দ থেকে এসেছে?

উত্তর: ল্যাটিন শব্দ ‘Censere’ থেকে, যার অর্থ ‘মূল্যায়ন করা’।

২২. ভারতের কোন রাজ্যে নগরায়নের হার সবচেয়ে কম?

উত্তর: হিমাচল প্রদেশ।

২৩. ভারতের কর্মক্ষম জনসংখ্যার বয়সসীমা কত?

উত্তর: ১৫ থেকে ৫৯ বছর।

২৪. জনসংখ্যা পিরামিড কী?

উত্তর: কোনো দেশের বয়স ও লিঙ্গ অনুসারে জনসংখ্যার বণ্টন যে স্তম্ভ লেখচিত্রের মাধ্যমে দেখানো হয়, তাকে জনসংখ্যা পিরামিড বলে।

২৫. সোনালী চতুর্ভুজ দ্বারা যুক্ত চারটি প্রধান মহানগরের নাম লেখো।

উত্তর: দিল্লি, মুম্বাই, চেন্নাই ও কলকাতা।

২৬. ভারতের কোন রাজ্যে শহরের জনসংখ্যা সর্বাধিক?

উত্তর: মহারাষ্ট্র।

২৭. পরিব্রাজন বা মাইগ্রেশন কাকে বলে?

উত্তর: যখন মানুষ স্থায়ী বা অস্থায়ীভাবে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে বসবাস করার জন্য চলে যায়, তখন তাকে পরিব্রাজন বলে।

২৮. ভারতের কোন রাজ্যে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার সর্বনিম্ন (২০১১)?

উত্তর: কেরালা।

২৯. ভারতের একটি মিলিয়ন প্লাস শহরের নাম লেখো।

উত্তর: পুনে বা সুরাট।

৩০. ভারতের কোন অঞ্চলে জনবসতি সবচেয়ে বেশি?

উত্তর: উত্তরের গাঙ্গেয় সমভূমি অঞ্চলে।

৩১. জনসংখ্যা পরিবর্তনের দুটি নিয়ামক কী কী?

উত্তর: জন্মহার ও মৃত্যুহার।

৩২. ভারতের সবচেয়ে কম জনঘনত্বপূর্ণ রাজ্য কোনটি?

উত্তর: অরুণাচল প্রদেশ।

৩৩. ভারতের কোন রাজ্যে তপশিলি উপজাতির (ST) জনসংখ্যা শতাংশের হিসাবে সর্বাধিক?

উত্তর: মিজোরাম।

৩৪. ভারতের কোন কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে জনঘনত্ব সর্বনিম্ন?

উত্তর: আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ।

৩৫. ‘শূন্য জনসংখ্যা বৃদ্ধি’ বলতে কী বোঝায়?

উত্তর: যখন কোনো দেশের জন্মহার ও মৃত্যুহার প্রায় সমান হয়ে যায়, তখন তাকে শূন্য জনসংখ্যা বৃদ্ধি বলে।

৩৬. নির্ভরশীল জনসংখ্যা কারা?

উত্তর: ০-১৪ বছর বয়সী শিশু এবং ৬০ বছরের বেশি বয়সী বৃদ্ধ-বৃদ্ধারা কর্মক্ষম জনসংখ্যার উপর নির্ভরশীল হওয়ায় তাদের নির্ভরশীল জনসংখ্যা বলে।

৩৭. ভারতের কোন রাজ্যে লিঙ্গানুপাত সবচেয়ে কম?

উত্তর: হরিয়ানা।

৩৮. ভারতের কোন প্রতিবেশী দেশের জনঘনত্ব সর্বাধিক?

উত্তর: বাংলাদেশ।

৩৯. জনসংখ্যা বৃদ্ধির একটি কারণ লেখো।

উত্তর: চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নতির ফলে মৃত্যুহার হ্রাস।

৪০. ভারতের কোন কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে সাক্ষরতার হার সর্বনিম্ন?

উত্তর: দাদরা ও নগর হাভেলি এবং দমন ও দিউ।

৪১. ‘জনসংখ্যার অভিক্ষেপ’ (Projection) কী?

উত্তর: বর্তমান জন্মহার, মৃত্যুহার ও পরিব্রাজনের প্রবণতার উপর ভিত্তি করে ভবিষ্যতের জনসংখ্যা কেমন হবে তার পূর্বাভাস দেওয়াকে জনসংখ্যার অভিক্ষেপ বলে।

৪২. ভারতের কোন রাজ্যে মুসলিম জনসংখ্যা সর্বাধিক?

উত্তর: উত্তরপ্রদেশ।

৪৩. ‘মানব-জমি অনুপাত’ কী?

উত্তর: কোনো অঞ্চলের মোট জনসংখ্যা ও মোট কার্যকারী জমির (যেমন – কৃষিজমি) অনুপাতকে মানব-জমি অনুপাত বলে।

৪৪. ভারতের কোন রাজ্যে বৌদ্ধ জনসংখ্যা সর্বাধিক?

উত্তর: মহারাষ্ট্র।

৪৫. ভারতের একটি যমজ শহর (Twin City) এর উদাহরণ দাও।

উত্তর: কলকাতা-হাওড়া বা হায়দ্রাবাদ-সেকেন্দ্রাবাদ।

৪৬. ‘Push Factor’ ও ‘Pull Factor’ কী?

উত্তর: পরিব্রাজনের ক্ষেত্রে যে কারণগুলি মানুষকে কোনো স্থান ছাড়তে বাধ্য করে (যেমন – বেকারত্ব), তা হল Push Factor। আর যে কারণগুলি মানুষকে কোনো স্থানে আসতে আকর্ষণ করে (যেমন – কর্মসংস্থান), তা হল Pull Factor।

৪৭. ভারতের কোন রাজ্যে শিখ জনসংখ্যা সর্বাধিক?

উত্তর: পাঞ্জাব।

৪৮. ভারতের কোন রাজ্যে জন্মহার সর্বনিম্ন?

উত্তর: কেরালা।

৪৯. একটি অতি জনবহুল অঞ্চলের উদাহরণ দাও।

উত্তর: গাঙ্গেয় সমভূমি।

৫০. ভারতের কোন দশককে ‘জনসংখ্যা বিস্ফোরণের দশক’ বলা হয়?

উত্তর: ১৯৬১-১৯৭১ দশক।

৫১. কোন শহরকে ‘ভারতের সাংস্কৃতিক রাজধানী’ বলা হয়?

উত্তর: কলকাতা।

৫২. ২০১১ জনগণনা অনুসারে ভারতের কোন রাজ্যে মহিলা সাক্ষরতার হার সবচেয়ে কম?

উত্তর: রাজস্থান।

৫৩. ভারতের জনসংখ্যা বন্টনে ভূপ্রকৃতির প্রভাবের একটি উদাহরণ দাও।

উত্তর: সমতল গাঙ্গেয় সমভূমিতে জনসংখ্যা ঘন, কিন্তু পার্বত্য হিমালয় অঞ্চলে জনসংখ্যা বিরল।

৫৪. ভারতের কোন রাজ্যে সর্বাধিক সংখ্যক আদিবাসী গোষ্ঠী বাস করে?

উত্তর: ওড়িশা।

৫৫. ভারতের কোন শহরে প্রথম মেট্রো রেল চালু হয়?

উত্তর: কলকাতা।

৫৬. ‘জনসংখ্যার ঘনত্ব’ কোন এককে প্রকাশ করা হয়?

উত্তর: জন প্রতি বর্গ কিলোমিটারে।

৫৭. ভারতে কোন ধরণের পরিব্রাজন সবচেয়ে বেশি হয়?

উত্তর: গ্রাম থেকে শহরে পরিব্রাজন।

৫৮. ভারতের কোন রাজ্যে মৃত্যুহার সর্বাধিক?

উত্তর: ওড়িশা।

৫৯. একটি দেশের উন্নয়নের সূচক কী?

উত্তর: সাক্ষরতার হার বা মাথাপিছু আয়।

৬০. ভারতের কোন রাজ্যে কোনো তপশিলি জাতি (SC) নেই?

উত্তর: নাগাল্যান্ড বা অরুণাচল প্রদেশ।


গ) সংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্নাবলী – মান ২ (২৫টি)

১. জনঘনত্ব ও মানুষ-জমি অনুপাতের পার্থক্য কী?

উত্তর: জনঘনত্ব: এটি কোনো অঞ্চলের মোট জনসংখ্যা ও মোট আয়তনের অনুপাত। মানুষ-জমি অনুপাত: এটি কোনো অঞ্চলের মোট জনসংখ্যা ও মোট কার্যকারী জমির (কৃষিজমি) অনুপাত। জনঘনত্ব জনসংখ্যার চাপ বোঝার একটি সাধারণ ধারণা দেয়, কিন্তু মানুষ-জমি অনুপাত সম্পদের উপর জনসংখ্যার চাপের একটি বাস্তব চিত্র দেয়।

২. ভারতের জনসংখ্যা বন্টনের তারতম্যের দুটি প্রধান কারণ লেখো।

উত্তর: ১. ভূপ্রকৃতি: উর্বর সমভূমি অঞ্চলে (যেমন – গাঙ্গেয় সমভূমি) কৃষিকাজ ও বসবাসের সুবিধা থাকায় জনসংখ্যা খুব ঘন। কিন্তু পার্বত্য বা মরু অঞ্চলে প্রতিকূল পরিবেশের কারণে জনসংখ্যা বিরল। ২. অর্থনৈতিক কারণ: শিল্পোন্নত এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ বেশি থাকা অঞ্চলগুলিতে (যেমন – মুম্বাই, দিল্লি) জনসংখ্যা কেন্দ্রীভূত হয়।

৩. নগরায়ন কী? এর দুটি সুফল লেখো।

উত্তর: কোনো দেশের মোট জনসংখ্যার মধ্যে শহুরে জনসংখ্যার অনুপাত ক্রমশ বৃদ্ধি পাওয়ার প্রক্রিয়াকে নগরায়ন বলে।
সুফল: ১. শহরে উন্নত শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কর্মসংস্থানের সুযোগ পাওয়া যায়। ২. নগরায়ন আধুনিক জীবনযাত্রা ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের সূচক।

৪. কাম্য জনসংখ্যা ও জনবিস্ফোরণের মধ্যে পার্থক্য কী?

উত্তর: কাম্য জনসংখ্যা: এটি হল কোনো দেশের সম্পদের পূর্ণ ব্যবহারের জন্য একটি আদর্শ জনসংখ্যার ধারণা, যেখানে জীবনযাত্রার মান সর্বোচ্চ হয়। জনবিস্ফোরণ: এটি হল উচ্চ জন্মহার ও নিম্ন মৃত্যুহারের কারণে জনসংখ্যার দ্রুত অনিয়ন্ত্রিত বৃদ্ধি, যা সম্পদের উপর প্রচণ্ড চাপ সৃষ্টি করে।

৫. ভারতের জনসংখ্যা বৃদ্ধির দুটি প্রধান কারণ লেখো।

উত্তর: ১. উচ্চ জন্মহার ও নিম্ন মৃত্যুহার: চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নতির ফলে মৃত্যুহার অনেক কমে গেলেও, অশিক্ষা ও দারিদ্র্যের কারণে জন্মহার সেই অনুপাতে কমেনি। ২. সামাজিক কারণ: বাল্যবিবাহ, পুত্রসন্তানের আকাঙ্ক্ষা এবং ধর্মীয় গোঁড়ামিও জনসংখ্যা বৃদ্ধিতে সহায়ক।

৬. পরিব্রাজনের দুটি ‘Push Factor’ ও দুটি ‘Pull Factor’ উল্লেখ করো।

উত্তর: Push Factor (বিকর্ষক কারণ): এগুলি মানুষকে কোনো স্থান ছাড়তে বাধ্য করে। যেমন – বেকারত্ব, দারিদ্র্য। Pull Factor (আকর্ষক কারণ): এগুলি মানুষকে কোনো স্থানে আসতে আকর্ষণ করে। যেমন – উন্নত কর্মসংস্থান, উন্নত জীবনযাত্রার মান।

৭. ২০১১ সালের জনগণনা অনুসারে ভারতের জনসংখ্যার দুটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য লেখো।

উত্তর: ১. ভারত বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বাধিক জনবহুল দেশ (বর্তমান প্রথম)। ২. ভারতের সাক্ষরতার হার (৭৪.০৪%) ক্রমশ বাড়ছে, তবে নারী ও পুরুষের মধ্যে সাক্ষরতার হারে এখনো পার্থক্য রয়েছে।

৮. ভারতের নগরায়নের দুটি প্রধান সমস্যা কী?উত্তর: ১. অপরিকল্পিত নগরায়ন: দ্রুত নগরায়নের ফলে অনেক শহরে অপরিকল্পিতভাবে ঘিঞ্জি বসতি বা বস্তি গড়ে উঠেছে। ২. পরিকাঠামোর উপর চাপ: অতিরিক্ত জনসংখ্যার কারণে শহরের জল সরবরাহ, নিকাশি ব্যবস্থা, পরিবহন ও বাসস্থানের উপর প্রচণ্ড চাপ সৃষ্টি হচ্ছে।

৯. ‘জনসংখ্যার অভিক্ষেপ’ বলতে কী বোঝায়?

উত্তর: বর্তমান জন্মহার, মৃত্যুহার, পরিব্রাজনের প্রবণতা এবং বয়স ও লিঙ্গ কাঠামো বিশ্লেষণ করে ভবিষ্যতের জনসংখ্যা কেমন হতে পারে, তার একটি বিজ্ঞানসম্মত পূর্বাভাস দেওয়ার পদ্ধতিকে ‘জনসংখ্যার অভিক্ষেপ’ বা Population Projection বলে। এটি দেশের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা গ্রহণের জন্য অপরিহার্য।

১০. লিঙ্গানুপাত (Sex Ratio) কেন গুরুত্বপূর্ণ?

উত্তর: লিঙ্গানুপাত একটি দেশের সামাজিক সুস্থতার গুরুত্বপূর্ণ সূচক। এটি সমাজে নারীর অবস্থান ও মর্যাদা নির্দেশ করে। প্রতিকূল লিঙ্গানুপাত (নারীর সংখ্যা কম) কন্যাভ্রূণ হত্যা, নারী নির্যাতন এবং সামাজিক ভারসাম্যহীনতার মতো সমস্যার ইঙ্গিত দেয়।

১১. ভারতের কোন কোন অঞ্চলে জনসংখ্যা বিরল?

উত্তর: ভারতের জনসংখ্যা বিরল অঞ্চলগুলি হল:
১. উত্তরের পার্বত্য অঞ্চল (যেমন – লাদাখ, অরুণাচল প্রদেশ, সিকিম)।
২. পশ্চিমের থর মরুভূমি অঞ্চল (রাজস্থানের পশ্চিমাংশ)।
৩. দণ্ডকারণ্য ও ছোটনাগপুর মালভূমির গভীর অরণ্য অঞ্চল।

১২. ‘সোনালী চতুর্ভুজ’ প্রকল্পের দুটি গুরুত্ব লেখো।

উত্তর: ১. এটি ভারতের চারটি প্রধান মহানগরকে (দিল্লি, মুম্বাই, চেন্নাই, কলকাতা) যুক্ত করে দেশের পরিবহন ব্যবস্থাকে দ্রুত ও উন্নত করেছে। ২. এর ফলে শিল্প ও বাণিজ্যের প্রসার ঘটেছে এবং যাতায়াতের সময় ও খরচ কমেছে।

১৩. বয়স-লিঙ্গ পিরামিডের গুরুত্ব কী?

উত্তর: বয়স-লিঙ্গ পিরামিডের মাধ্যমে কোনো দেশের জনসংখ্যার গঠন সহজেই বোঝা যায়। এটি থেকে দেশের জন্মহার, মৃত্যুহার, কর্মক্ষম ও নির্ভরশীল জনসংখ্যার অনুপাত এবং ভবিষ্যৎ জনসংখ্যা বৃদ্ধির প্রবণতা সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়, যা দেশের পরিকল্পনা রচনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

১৪. ভারতের জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে গৃহীত দুটি সরকারি পদক্ষেপ লেখো।

উত্তর: ১. পরিবার পরিকল্পনা কর্মসূচি: ‘আমরা দুই, আমাদের দুই’ নীতির প্রচার এবং গর্ভনিরোধক সামগ্রীর সহজলভ্যতা নিশ্চিত করা। ২. নারী শিক্ষা ও ক্ষমতায়ন: নারীশিক্ষার প্রসার এবং নারীদের অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করে তোলার মাধ্যমে সচেতনতা বৃদ্ধি করা, যা জন্মহার কমাতে সহায়ক।

১৫. শহর ও মহানগরের মধ্যে পার্থক্য কী?

উত্তর: শহর (Town): জনগণনা অনুসারে, যে জনবসতির জনসংখ্যা ৫০০০ থেকে ১ লক্ষের মধ্যে থাকে, তাকে শহর বলে। মহানগর (Metropolitan City): যে শহরের জনসংখ্যা ১০ লক্ষ বা তার বেশি, তাকে মহানগর বলে।

১৬. ভারতে দ্রুত জনসংখ্যা বৃদ্ধির দুটি কুফল লেখো।

উত্তর: ১. প্রাকৃতিক সম্পদের (জল, জমি, বনভূমি) উপর প্রচণ্ড চাপ সৃষ্টি হচ্ছে। ২. বেকারত্ব, দারিদ্র্য, বাসস্থান ও খাদ্যের মতো মৌলিক সমস্যাগুলি আরও তীব্র হচ্ছে।

১৭. ভারতের আদমশুমারি কারা পরিচালনা করে?

উত্তর: ভারতের আদমশুমারি পরিচালনা করে ভারত সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অধীনস্থ ‘Office of the Registrar General and Census Commissioner of India’।

১৮. ভারতের কোন কোন রাজ্যে নগরায়নের হার বেশি?

উত্তর: শতাংশের হিসাবে গোয়া (৬২.২%) এবং মিজোরামে (৫২.১%) নগরায়নের হার সবচেয়ে বেশি। এছাড়া মহারাষ্ট্র, গুজরাট ও তামিলনাড়ুর মতো শিল্পোন্নত রাজ্যগুলিতেও নগরায়নের হার খুব বেশি।

১৯. ‘স্বর্ণ চতুর্ভুজ’ দ্বারা যুক্ত প্রধান চারটি শহরের নাম কী?

উত্তর: ‘স্বর্ণ চতুর্ভুজ’ বা ‘সোনালী চতুর্ভুজ’ দ্বারা যুক্ত প্রধান চারটি শহর হল – দিল্লি, মুম্বাই, চেন্নাই এবং কলকাতা।

২০. ভারতের কোন অঞ্চলে জনবসতি সবচেয়ে ঘন?

উত্তর: ভারতের সবচেয়ে ঘন জনবসতিপূর্ণ অঞ্চল হল উত্তরের গাঙ্গেয় সমভূমি। এখানকার উর্বর মাটি, অনুকূল জলবায়ু, জলের প্রাচুর্য এবং উন্নত পরিবহন ব্যবস্থা ঘন জনবসতি গড়ে তুলতে সাহায্য করেছে।

২১. জনসংখ্যা পিরামিডের আকৃতি দেখে কী বোঝা যায়?

উত্তর: জনসংখ্যা পিরামিডের আকৃতি দেখে দেশের জনসংখ্যার গঠন ও বৃদ্ধির হার বোঝা যায়। প্রশস্ত ভূমিযুক্ত পিরামিড ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা নির্দেশ করে, প্রায় আয়তাকার পিরামিড স্থিতিশীল জনসংখ্যা নির্দেশ করে এবং সংকীর্ণ ভূমিযুক্ত পিরামিড ক্রমহ্রাসমান জনসংখ্যা নির্দেশ করে।

২২. সাক্ষরতার হার বলতে কী বোঝায়?

উত্তর: কোনো দেশের মোট জনসংখ্যার মধ্যে ৭ বছর বা তার বেশি বয়সী যতজন সাক্ষর ব্যক্তি রয়েছেন, তার শতাংশকে সাক্ষরতার হার বলে। এর সূত্র হল: (সাক্ষর ব্যক্তির সংখ্যা ÷ ৭+ বয়সী মোট জনসংখ্যা) × ১০০।

২৩. ভারতে পরিব্রাজনের দুটি ফলাফল লেখো।

উত্তর: ১. সুফল: পরিব্রাজনের ফলে শ্রমিকরা জীবিকার সন্ধান পায় এবং তাদের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি হয়। ২. কুফল: গ্রাম থেকে শহরে অতিরিক্ত পরিব্রাজনের ফলে শহরের উপর চাপ বাড়ে এবং বস্তি, যানজট, দূষণের মতো সমস্যা তৈরি হয়।

২৪. ভারতের জনসংখ্যা বন্টনে জলবায়ুর প্রভাব কী?

উত্তর: জলবায়ু জনসংখ্যা বন্টনকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করে। আরামদায়ক ও সমভাবাপন্ন জলবায়ুযুক্ত উপকূলীয় অঞ্চলে এবং কৃষিকাজের উপযোগী মৌসুমী জলবায়ুযুক্ত সমভূমি অঞ্চলে জনবসতি ঘন। কিন্তু চরমভাবাপন্ন জলবায়ুযুক্ত মরু অঞ্চল বা অত্যন্ত শীতল পার্বত্য অঞ্চলে জনবসতি বিরল।

২৫. ‘জনসংখ্যার স্থিতিশীল পর্যায়’ বলতে কী বোঝায়?

উত্তর: যখন কোনো দেশের জন্মহার এবং মৃত্যুহার উভয়ই খুব কমে যায় এবং প্রায় সমান হয়ে যায়, তখন জনসংখ্যা বৃদ্ধি প্রায় থেমে যায়। এই অবস্থাকে জনসংখ্যার স্থিতিশীল পর্যায় বা Zero Population Growth বলে। উন্নত দেশগুলিতে এই অবস্থা দেখা যায়।


ঘ) সংক্ষিপ্ত রচনাধর্মী প্রশ্নাবলী – মান ৩ (২৫টি)

১. ভারতের জনসংখ্যা বন্টনের তারতম্যের প্রধান তিনটি কারণ আলোচনা করো।

উত্তর: ভারতে জনসংখ্যার বন্টন অত্যন্ত অসম। এর প্রধান তিনটি কারণ হল:
ক) ভূপ্রকৃতি: উর্বর সমভূমি অঞ্চলে (যেমন – গাঙ্গেয় সমভূমি) কৃষিকাজ, পরিবহন ও বসবাসের সুবিধা থাকায় জনসংখ্যা অত্যন্ত ঘন। অন্যদিকে, বন্ধুর পার্বত্য অঞ্চল (হিমালয়), মালভূমি বা শুষ্ক মরু অঞ্চলে প্রতিকূল পরিবেশের কারণে জনসংখ্যা বিরল।
খ) জলবায়ু: আরামদায়ক ও সমভাবাপন্ন জলবায়ুযুক্ত উপকূলীয় অঞ্চলে এবং কৃষিকাজের উপযোগী মৌসুমী জলবায়ুযুক্ত অঞ্চলে জনবসতি ঘন। কিন্তু চরমভাবাপন্ন জলবায়ুযুক্ত (অতিরিক্ত উষ্ণ বা শীতল) অঞ্চলে জনবসতি কম।
গ) অর্থনৈতিক কারণ: শিল্পোন্নত, খনিজ সম্পদে সমৃদ্ধ এবং উন্নত পরিবহন ও যোগাযোগ ব্যবস্থা সম্পন্ন অঞ্চলগুলিতে (যেমন – মুম্বাই-পুনে, হুগলি শিল্পাঞ্চল) কর্মসংস্থানের সুযোগ বেশি থাকায় জনসংখ্যা কেন্দ্রীভূত হয়।

২. ভারতের দ্রুত জনসংখ্যা বৃদ্ধির সুফল ও কুফলগুলি লেখো।

উত্তর: সুফল (Advantages):
১. বিশাল কর্মক্ষম জনসংখ্যা: ভারতের জনসংখ্যার একটি বড় অংশ যুবক ও কর্মক্ষম (১৫-৫৯ বছর), যা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য একটি বিরাট সম্ভাবনা তৈরি করে।
২. বিরাট বাজার: বিশাল জনসংখ্যা শিল্প ও পরিষেবা ক্ষেত্রের জন্য একটি বৃহৎ অভ্যন্তরীণ বাজার তৈরি করে, যা বিনিয়োগকে আকর্ষণ করে।
৩. সুলভ শ্রমিক: প্রচুর জনসংখ্যা থাকায় কৃষি ও শিল্পে সুলভ শ্রমিক পাওয়া যায়।
কুফল (Disadvantages):
১. সম্পদের উপর চাপ: অতিরিক্ত জনসংখ্যা দেশের সীমিত প্রাকৃতিক সম্পদের (জল, জমি, বনভূমি) উপর প্রচণ্ড চাপ সৃষ্টি করছে।
২. মৌলিক চাহিদার সংকট: বেকারত্ব, দারিদ্র্য, বাসস্থান, খাদ্য, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের মতো মৌলিক সমস্যাগুলি আরও তীব্র হচ্ছে।
৩. পরিবেশ দূষণ: নগরায়ন ও শিল্পায়নের ফলে সৃষ্ট দূষণ এবং বর্জ্যের পরিমাণ বাড়ছে।

৩. ভারতের নগরায়নের প্রধান সমস্যাগুলি কী কী?

উত্তর: ভারতে দ্রুত ও অপরিকল্পিত নগরায়নের ফলে বেশ কিছু গুরুতর সমস্যা দেখা দিয়েছে:
১. অপরিকল্পিত বসতি ও বস্তি সমস্যা: গ্রাম থেকে আসা দরিদ্র মানুষ শহরে বাসস্থানের অভাবে অস্বাস্থ্যকর ও ঘিঞ্জি বস্তি এলাকায় বসবাস করতে বাধ্য হয়।
২. পরিকাঠামোর উপর চাপ: অতিরিক্ত জনসংখ্যার কারণে শহরের জল সরবরাহ, বিদ্যুৎ, নিকাশি ব্যবস্থা, পরিবহন ও বাসস্থানের উপর প্রচণ্ড চাপ সৃষ্টি হচ্ছে।
৩. পরিবেশ দূষণ: যানবাহন ও কলকারখানার ধোঁয়ায় বায়ুদূষণ, বর্জ্যের কারণে জল ও মাটি দূষণ এবং যানজটের কারণে শব্দদূষণ শহরের জীবনযাত্রাকে দুর্বিষহ করে তুলছে।
৪. সামাজিক সমস্যা: শহরে বেকারত্ব, অপরাধমূলক কার্যকলাপ এবং সামাজিক বিচ্ছিন্নতা বাড়ছে।

৪. ভারতের জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে গৃহীত যেকোনো তিনটি সরকারি পদক্ষেপ আলোচনা করো।

উত্তর: ভারতের জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য সরকার বিভিন্ন সময়ে একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে:
ক) পরিবার পরিকল্পনা কর্মসূচি: এটি জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের প্রধান সরকারি কর্মসূচি। এর মাধ্যমে ‘আমরা দুই, আমাদের দুই’ নীতির প্রচার, গর্ভনিরোধক সামগ্রীর সহজলভ্যতা নিশ্চিত করা এবং বন্ধ্যাকরণের মতো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।
খ) নারী শিক্ষা ও ক্ষমতায়ন: সরকার নারীশিক্ষার প্রসারের উপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে। ‘বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও’-এর মতো প্রকল্পের মাধ্যমে মেয়েদের শিক্ষার হার বাড়ানো হচ্ছে। শিক্ষিত ও অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী মহিলারা ছোট পরিবার গঠনে আগ্রহী হয়।
গ) জনসচেতনতা বৃদ্ধি: দূরদর্শন, রেডিও, সংবাদপত্র ও অন্যান্য গণমাধ্যমের মাধ্যমে ছোট পরিবারের সুফল এবং জনসংখ্যা বৃদ্ধির কুফল সম্পর্কে সাধারণ মানুষকে সচেতন করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

৫. শহর, নগর ও মহানগরের মধ্যে পার্থক্য লেখো।

উত্তর: | বৈশিষ্ট্য | শহর (Town) | নগর (City) | মহানগর (Metropolitan City) | |—|—|—|—| | **জনসংখ্যা** | জনসংখ্যা ৫,০০০ থেকে ১ লক্ষের মধ্যে থাকে। | জনসংখ্যা ১ লক্ষ থেকে ১০ লক্ষের মধ্যে থাকে। | জনসংখ্যা ১০ লক্ষ বা তার বেশি থাকে। | | **জনঘনত্ব** | প্রতি বর্গ কিমিতে কমপক্ষে ৪০০ জন। | শহরের তুলনায় জনঘনত্ব বেশি হয়। | জনঘনত্ব অত্যন্ত বেশি হয়। | | **অর্থনৈতিক কার্যকলাপ**| মূলত স্থানীয় ব্যবসা-বাণিজ্য ও পরিষেবা কেন্দ্র। | শিল্প, বাণিজ্য, প্রশাসন ও শিক্ষার প্রধান কেন্দ্র। | দেশের প্রধান অর্থনৈতিক, বাণিজ্যিক, প্রশাসনিক ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। | | **উদাহরণ** | শিলিগুড়ি, আসানসোল। | দুর্গাপুর, চণ্ডীগড়। | কলকাতা, মুম্বাই, দিল্লি। |

৬. ভারতের জনসংখ্যা বৃদ্ধির বিভিন্ন পর্যায়গুলি আলোচনা করো।

উত্তর: ভারতের জনসংখ্যা বৃদ্ধির ইতিহাসকে চারটি প্রধান পর্যায়ে ভাগ করা যায়:
১. স্থিতিশীল জনসংখ্যা (১৯০১-১৯২১): এই সময়ে উচ্চ জন্মহারের পাশাপাশি মহামারী, দুর্ভিক্ষ ও যুদ্ধের কারণে মৃত্যুহারও খুব বেশি ছিল। ফলে জনসংখ্যা প্রায় বাড়েনি। ১৯২১ সালে জনসংখ্যা ঋণাত্মক বৃদ্ধি পাওয়ায় একে ‘মহাবিভাজনের বছর’ বলা হয়।
২. ধীরগতিতে বৃদ্ধি (১৯২১-১৯৫১): এই সময়ে চিকিৎসা ব্যবস্থার সামান্য উন্নতির ফলে মৃত্যুহার কমতে শুরু করে, কিন্তু জন্মহার বেশি থাকায় জনসংখ্যা ধীরগতিতে বাড়তে থাকে।
৩. দ্রুত বৃদ্ধি বা জনবিস্ফোরণ (১৯৫১-১৯৮১): স্বাধীনতার পর চিকিৎসা ব্যবস্থার ব্যাপক উন্নতির ফলে মৃত্যুহার খুব দ্রুত কমে যায়, কিন্তু জন্মহার বেশিই থেকে যায়। এর ফলে জনসংখ্যা অত্যন্ত দ্রুতগতিতে বাড়তে থাকে, যা ‘জনবিস্ফোরণ’ নামে পরিচিত।
৪. নিয়ন্ত্রিত বৃদ্ধি (১৯৮১-বর্তমান): এই সময়ে পরিবার পরিকল্পনা কর্মসূচি ও শিক্ষার প্রসারের ফলে জন্মহার কমতে শুরু করেছে। যদিও জনসংখ্যা এখনো বাড়ছে, তবে বৃদ্ধির হার ক্রমশ কমছে।

৭. পরিব্রাজনের কারণ ও ফলাফল আলোচনা করো।উত্তর: কারণ (Causes of Migration):
পরিব্রাজনের কারণগুলিকে দুটি ভাগে ভাগ করা যায়:
১. বিকর্ষক কারণ (Push Factors): যে কারণগুলি মানুষকে তার বাসস্থান ছাড়তে বাধ্য করে। যেমন – গ্রামে বেকারত্ব, দারিদ্র্য, কৃষিজমির অভাব, বন্যা, খরা, রাজনৈতিক অস্থিরতা।
২. আকর্ষক কারণ (Pull Factors): যে কারণগুলি মানুষকে নতুন স্থানে আসতে আকর্ষণ করে। যেমন – শহরে উন্নত কর্মসংস্থানের সুযোগ, উন্নত শিক্ষা ও স্বাস্থ্য পরিষেবা, উন্নত জীবনযাত্রার মান।
ফলাফল (Consequences of Migration):
১. উৎস অঞ্চলে: গ্রাম থেকে কর্মক্ষম যুবকরা শহরে চলে যাওয়ায় গ্রামে শ্রমিকের অভাব দেখা দেয় এবং কৃষি উৎপাদন ব্যাহত হয়। তবে বাইরে থেকে পাঠানো অর্থে গ্রামের অর্থনৈতিক উন্নতি ঘটে।
২. গন্তব্যস্থলে: শহরের উপর জনসংখ্যার চাপ বাড়ে। এর ফলে বস্তি, যানজট, দূষণ, পানীয় জলের সংকট এবং সামাজিক সমস্যা তৈরি হয়।

৮. ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে জনঘনত্বের তারতম্যের কারণ কী?উত্তর: ভারতে জনঘনত্বের তারতম্যের প্রধান কারণগুলি হল:
১. ভূপ্রকৃতি: উর্বর গাঙ্গেয় সমভূমিতে কৃষির সুবিধার জন্য জনঘনত্ব খুব বেশি (যেমন – বিহার, পশ্চিমবঙ্গ, উত্তরপ্রদেশ)। কিন্তু বন্ধুর পার্বত্য অঞ্চল (অরুণাচল প্রদেশ) বা মালভূমি অঞ্চলে জনঘনত্ব কম।
২. জলবায়ু: আরামদায়ক ও অনুকূল জলবায়ুযুক্ত অঞ্চলে (যেমন – কেরালা) জনঘনত্ব বেশি। কিন্তু চরমভাবাপন্ন জলবায়ুযুক্ত মরু অঞ্চল বা অত্যন্ত শীতল অঞ্চলে জনঘনত্ব কম।
৩. অর্থনৈতিক কারণ: শিল্পোন্নত এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ বেশি থাকা রাজ্যগুলিতে (যেমন – পশ্চিমবঙ্গ) জনঘনত্ব বেশি।
৪. ঐতিহাসিক কারণ: প্রাচীন সভ্যতার কেন্দ্রস্থলগুলিতে (যেমন – গাঙ্গেয় উপত্যকা) বহুকাল ধরে জনবসতি গড়ে ওঠায় জনঘনত্ব বেশি।

৯. ভারতের নগর ও মহানগর গড়ে ওঠার প্রধান কারণগুলি কী কী?

উত্তর: ভারতে নগর ও মহানগর গড়ে ওঠার প্রধান কারণগুলি হল:
১. শিল্পায়ন: কোনো অঞ্চলে বড় শিল্পকেন্দ্র গড়ে উঠলে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হয় এবং তাকে কেন্দ্র করে নগর গড়ে ওঠে। যেমন – জামশেদপুর, দুর্গাপুর।
২. বাণিজ্য ও পরিবহন: উন্নত পরিবহন ব্যবস্থা এবং বন্দরের নৈকট্য বাণিজ্য কেন্দ্র হিসেবে শহর গড়ে তুলতে সাহায্য করে। যেমন – মুম্বাই, কলকাতা।
৩. প্রশাসনিক কেন্দ্র: রাজ্যের বা দেশের রাজধানী প্রশাসনিক কেন্দ্র হওয়ায় সেখানে সরকারি অফিস, আদালত ইত্যাদি গড়ে ওঠে এবং জনসংখ্যা বাড়ে। যেমন – দিল্লি, চণ্ডীগড়।
৪. শিক্ষা, সংস্কৃতি ও পর্যটন: উন্নত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ঐতিহাসিক স্থান বা পর্যটন কেন্দ্রকে ঘিরেও নগর গড়ে উঠতে পারে। যেমন – বারাণসী, সিমলা।

১০. ভারতের জনসংখ্যা সমস্যার সমাধানের উপায়গুলি আলোচনা করো।

উত্তর: ভারতের জনসংখ্যা সমস্যার সমাধানের জন্য একটি বহুমুখী পদক্ষেপ প্রয়োজন:
১. জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ: পরিবার পরিকল্পনা কর্মসূচিকে আরও কার্যকর করতে হবে। জন্মহার কমানোর জন্য গর্ভনিরোধক সামগ্রীর সহজলভ্যতা ও সচেতনতা বাড়াতে হবে।
২. শিক্ষা ও স্বাস্থ্য: নারীশিক্ষার প্রসার এবং সার্বিক সাক্ষরতার হার বাড়াতে হবে। উন্নত স্বাস্থ্য পরিষেবার মাধ্যমে শিশুমৃত্যুর হার কমালে ছোট পরিবারের প্রতি আগ্রহ বাড়বে।
৩. অর্থনৈতিক উন্নয়ন: কৃষির উন্নতি এবং শিল্পের প্রসারের মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে হবে, যাতে মানুষের আয় বাড়ে এবং জীবনযাত্রার মান উন্নত হয়।
৪. সামাজিক সংস্কার: বাল্যবিবাহ, পুত্রসন্তানের আকাঙ্ক্ষার মতো সামাজিক কুপ্রথাগুলির বিরুদ্ধে জনসচেতনতা গড়ে তুলতে হবে।

১১. বয়স-লিঙ্গ পিরামিড কী? ভারতের জনসংখ্যা পিরামিডের বৈশিষ্ট্য লেখো।

উত্তর: বয়স-লিঙ্গ পিরামিড: কোনো দেশের বয়স ও লিঙ্গ অনুসারে জনসংখ্যার বণ্টন যে স্তম্ভ লেখচিত্রের মাধ্যমে দেখানো হয়, তাকে বয়স-লিঙ্গ পিরামিড বা জনসংখ্যা পিরামিড বলে। এর উল্লম্ব অক্ষে বয়স এবং অনুভূমিক অক্ষে নারী ও পুরুষের সংখ্যা বা শতাংশ দেখানো হয়।
ভারতের জনসংখ্যা পিরামিডের বৈশিষ্ট্য:
১. ভারতের জনসংখ্যা পিরামিডের ভূমি অত্যন্ত প্রশস্ত, যা দেশের উচ্চ জন্মহারকে নির্দেশ করে।
২. পিরামিডের শীর্ষভাগ ক্রমশ সরু হয়ে গেছে, যা বয়স্ক জনসংখ্যার স্বল্পতা এবং কম গড় আয়ুকে নির্দেশ করে।
৩. পিরামিডের মধ্যভাগ (কর্মক্ষম জনসংখ্যা) ক্রমশ স্ফীত হচ্ছে, যা ভবিষ্যতের অর্থনৈতিক উন্নয়নের সম্ভাবনা বা ‘Demographic Dividend’-এর ইঙ্গিত দেয়।
এই আকৃতি নির্দেশ করে যে भारत এখনো জনবিবর্তনের দ্বিতীয় বা তৃতীয় পর্যায়ের মধ্যে রয়েছে এবং জনসংখ্যা ক্রমবর্ধমান।

১২. ভারতে অসম জনবন্টনের জন্য দায়ী প্রাকৃতিক কারণগুলি কী কী?

উত্তর: ভারতে অসম জনবন্টনের জন্য দায়ী প্রধান প্রাকৃতিক কারণগুলি হল:
১. ভূপ্রকৃতি: সমতল, উর্বর ভূপ্রকৃতি কৃষিকাজ ও বসবাসের জন্য আদর্শ হওয়ায় গাঙ্গেয় সমভূমিতে জনবসতি খুব ঘন। কিন্তু বন্ধুর পার্বত্য অঞ্চল (হিমালয়) বা মালভূমি অঞ্চলে প্রতিকূলতার কারণে জনবসতি বিরল।
২. জলবায়ু: আরামদায়ক ও অনুকূল মৌসুমী জলবায়ুযুক্ত অঞ্চলে (উপকূল, সমভূমি) জনবসতি ঘন। কিন্তু চরমভাবাপন্ন জলবায়ুযুক্ত (অতিরিক্ত উষ্ণ বা শীতল) অঞ্চল, যেমন – থর মরুভূমি বা লাদাখে, জনবসতি খুব কম।
৩. জলের সহজলভ্যতা: নদী অববাহিকা বা যেখানে পানীয় ও সেচের জল সহজে পাওয়া যায়, সেখানে জনবসতি বেশি। কিন্তু শুষ্ক অঞ্চলে জলের অভাবে জনবসতি কম।
৪. মৃত্তিকা: উর্বর পলিমাটিযুক্ত অঞ্চলে কৃষির সুবিধার জন্য জনবসতি ঘন হয়। অনুর্বর মৃত্তিকাযুক্ত অঞ্চলে জনসংখ্যা কম থাকে।

১৩. ভারতে নগরায়নের ইতিবাচক ও নেতিবাচক প্রভাবগুলি লেখো।

উত্তর: ইতিবাচক প্রভাব (সুফল):
১. শহরে উন্নত শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বিনোদন ও আধুনিক জীবনযাত্রার সুযোগ পাওয়া যায়।
২. নগরায়ন শিল্প, বাণিজ্য ও পরিষেবা ক্ষেত্রের প্রসার ঘটায় এবং প্রচুর কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে, যা অর্থনৈতিক উন্নয়নে সাহায্য করে।
৩. বিভিন্ন সংস্কৃতির মানুষের সমাবেশের ফলে আধুনিক ও প্রগতিশীল চিন্তাধারার বিকাশ ঘটে।
নেতিবাচক প্রভাব (কুফল):
১. অপরিকল্পিত নগরায়নের ফলে বস্তি, যানজট, বাসস্থান ও পানীয় জলের সংকট তৈরি হয়।
২. যানবাহন ও কলকারখানার কারণে বায়ু, জল ও শব্দদূষণ মারাত্মক আকার ধারণ করে।
৩. শহরে বেকারত্ব, অপরাধমূলক কার্যকলাপ এবং সামাজিক বিচ্ছিন্নতার মতো সমস্যা বাড়ে।

১৪. ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে লিঙ্গানুপাতের তারতম্যের কারণ কী?

উত্তর: ভারতে বিভিন্ন অঞ্চলে লিঙ্গানুপাতের তারতম্যের প্রধান কারণগুলি সামাজিক ও অর্থনৈতিক।
কম লিঙ্গানুপাতের কারণ (হরিয়ানা, পাঞ্জাব):
১. পুত্রসন্তানের আকাঙ্ক্ষা: পিতৃতান্ত্রিক সমাজে পুত্রসন্তানকে বংশের ধারক ও অর্থনৈতিক সুরক্ষার প্রতীক হিসেবে গণ্য করা হয়।
২. কন্যাভ্রূণ হত্যা: আধুনিক প্রযুক্তির অপব্যবহার করে গর্ভেই কন্যাসন্তানকে হত্যা করা হয়।
৩. নারীদের প্রতি অবহেলা: মেয়েদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পুষ্টির প্রতি অবহেলার কারণে শিশুকন্যার মৃত্যুর হার বেশি।
বেশি লিঙ্গানুপাতের কারণ (কেরালা):
১. নারীশিক্ষার প্রসার: কেরালায় নারীশিক্ষার হার খুব বেশি, যা নারীদের মর্যাদা ও সচেতনতা বাড়িয়েছে।
২. উন্নত স্বাস্থ্য পরিষেবা: উন্নত স্বাস্থ্য পরিষেবার কারণে শিশুকন্যার মৃত্যুর হার কম।
৩. পুরুষদের পরিব্রাজন: কেরালার বহু পুরুষ কাজের জন্য বিদেশে চলে যাওয়ায় রাজ্যে নারীর সংখ্যা আনুপাতিকভাবে বেশি।

১৫. সাক্ষরতার হারের গুরুত্ব কী?

উত্তর: সাক্ষরতার হার একটি দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের অন্যতম প্রধান সূচক। এর গুরুত্ব হল:
১. অর্থনৈতিক উন্নয়ন: শিক্ষিত ও দক্ষ মানব সম্পদ দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে সাহায্য করে।
২. সামাজিক উন্নয়ন: সাক্ষরতা মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়ায়, যা কুসংস্কার, বাল্যবিবাহের মতো সামাজিক সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।
৩. জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ: শিক্ষিত মানুষ, বিশেষত শিক্ষিত মহিলারা, ছোট পরিবারের গুরুত্ব বোঝেন, যা জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
৪. জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন: সাক্ষরতা উন্নত স্বাস্থ্য, পরিচ্ছন্নতা এবং উন্নত জীবনযাত্রা সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ায়।

১৬. ভারতের জনসংখ্যা নীতি সম্পর্কে লেখো।

উত্তর: ভারত সরকার জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য বিভিন্ন সময়ে জনসংখ্যা নীতি গ্রহণ করেছে।
১. প্রথম পর্যায় (১৯৫২): ভারত বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে সরকারিভাবে পরিবার পরিকল্পনা কর্মসূচি গ্রহণ করে।
২. জাতীয় জনসংখ্যা নীতি, ১৯৭৬: এই নীতিতে বিয়ের বয়স বাড়ানো, পরিবার পরিকল্পনার উপর জোর দেওয়া এবং কিছু ক্ষেত্রে বন্ধ্যাকরণকে উৎসাহিত করা হয়।
৩. জাতীয় জনসংখ্যা নীতি, ২০০০: এটি ভারতের সাম্প্রতিকতম জনসংখ্যা নীতি। এর প্রধান লক্ষ্যগুলি হল:
– শিশুমৃত্যুর হার কমানো।
– সার্বিক টিকাকরণ নিশ্চিত করা।
– পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতিকে সহজলভ্য করা।
– ২০৪৫ সালের মধ্যে জনসংখ্যা স্থিতিশীল পর্যায়ে নিয়ে আসা।

১৭. মহানগর ও মেগা সিটির মধ্যে পার্থক্য কী? উদাহরণ দাও।

উত্তর: মহানগর (Metropolitan City): ভারতের জনগণনা অনুসারে, যে শহরের জনসংখ্যা ১০ লক্ষ থেকে ১ কোটির মধ্যে থাকে, তাকে মহানগর বলে। এই শহরগুলি রাজ্য বা অঞ্চলের প্রধান অর্থনৈতিক ও প্রশাসনিক কেন্দ্র হিসেবে কাজ করে। যেমন – পুনে, আহমেদাবাদ, সুরাট, লখনউ।
মেগা সিটি (Mega City): যে মহানগরের জনসংখ্যা ১ কোটি বা তার বেশি, তাকে মেগা সিটি বলা হয়। এই শহরগুলি দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে আন্তর্জাতিক স্তরে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ২০১১ সালের জনগণনা অনুসারে ভারতে ৩টি মেগা সিটি ছিল – মুম্বাই, দিল্লি ও কলকাতা। বর্তমানে বেঙ্গালুরু, চেন্নাই, হায়দ্রাবাদও এই তালিকায় যুক্ত হয়েছে।

১৮. ভারতের নগর ও গ্রামের মধ্যে জনসংখ্যার পার্থক্য লেখো।

উত্তর: | বৈশিষ্ট্য | গ্রামীণ জনসংখ্যা (Rural) | নগরীয় জনসংখ্যা (Urban) | |—|—|—| | **জীবিকা** | বেশিরভাগ মানুষ কৃষিকাজ ও পশুপালনের মতো প্রাথমিক স্তরের কাজের সঙ্গে যুক্ত। | বেশিরভাগ মানুষ শিল্প, বাণিজ্য, পরিষেবা ক্ষেত্রের মতো অকৃষি কাজের সঙ্গে যুক্ত। | | **জনঘনত্ব** | জনঘনত্ব তুলনামূলকভাবে কম। | জনঘনত্ব অত্যন্ত বেশি। | | **জীবনযাত্রা** | জীবনযাত্রা সরল ও প্রকৃতি-নির্ভর। পরিকাঠামো অনুন্নত। | জীবনযাত্রা জটিল ও আধুনিক। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত। | | **সাক্ষরতার হার**| সাক্ষরতার হার তুলনামূলকভাবে কম। | সাক্ষরতার হার বেশি। |

১৯. ভারতের পরিব্রাজনের বিভিন্ন ধারাগুলি উল্লেখ করো।

উত্তর: ভারতে মূলত চার ধরনের অভ্যন্তরীণ পরিব্রাজন দেখা যায়:
১. গ্রাম থেকে শহরে (Rural to Urban): এটি সবচেয়ে প্রধান ধারা। কর্মসংস্থান, শিক্ষা ও উন্নত জীবনযাত্রার জন্য মানুষ গ্রাম থেকে শহরে যায়।
২. গ্রাম থেকে গ্রামে (Rural to Rural): মূলত বিবাহ এবং কৃষিকাজের জন্য (যেমন – কৃষি শ্রমিক) এই ধরনের পরিব্রাজন হয়।
৩. শহর থেকে শহরে (Urban to Urban): উন্নত সুযোগ বা বদলির কারণে মানুষ এক শহর থেকে অন্য বড় শহরে যায়।
৪. শহর থেকে গ্রামে (Urban to Rural): এর হার সবচেয়ে কম। মূলত অবসর গ্রহণের পর বা শহরের কোলাহল এড়াতে কিছু মানুষ গ্রামে ফিরে আসে।

২০. ভারতের জনসংখ্যা বন্টনে পরিবহনের ভূমিকা কী?

উত্তর: ভারতের জনসংখ্যা বন্টনে পরিবহন ব্যবস্থার ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ:
১. যে সমস্ত অঞ্চলে সড়ক, রেল ও জলপথের মাধ্যমে যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত, সেখানে শিল্প ও বাণিজ্য কেন্দ্র গড়ে ওঠে। এই অর্থনৈতিক কার্যকলাপকে কেন্দ্র করে জনবসতিও ঘন হয়। যেমন – হুগলি নদীর তীরে বা সোনালী চতুর্ভুজের পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে জনবসতি বেশি।
২. দুর্গম পার্বত্য বা মালভূমি অঞ্চলে পরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তোলা কঠিন, তাই সেখানে অর্থনৈতিক কার্যকলাপ সীমিত এবং জনবসতিও বিরল।
সুতরাং, উন্নত পরিবহন ব্যবস্থা জনসংখ্যাকে আকর্ষণ করে এবং ঘন জনবসতি গড়ে তুলতে সাহায্য করে।

২১. জনসংখ্যা পিরামিডের তিনটি প্রকারভেদ আলোচনা করো।

উত্তর: জনসংখ্যা পিরামিডের আকৃতি দেখে দেশের জনসংখ্যার গঠন ও বৃদ্ধির হার বোঝা যায়। এর তিনটি প্রধান প্রকার হল:
১. ক্রমবর্ধমান বা প্রশস্ত ভূমিযুক্ত পিরামিড: এর ভূমি প্রশস্ত এবং শীর্ষভাগ খুব সরু হয়। এটি উচ্চ জন্মহার ও উচ্চ মৃত্যুহার নির্দেশ করে। অনুন্নত বা উন্নয়নশীল দেশগুলিতে (যেমন – নাইজেরিয়া) এই ধরনের পিরামিড দেখা যায়।
২. স্থিতিশীল বা প্রায় আয়তাকার পিরামিড: এর ভূমি ও মধ্যভাগ প্রায় সমান চওড়া হয়। এটি নিম্ন জন্মহার ও নিম্ন মৃত্যুহার নির্দেশ করে। উন্নত দেশগুলিতে (যেমন – সুইডেন) এই ধরনের পিরামিড দেখা যায়।
৩. ক্রমহ্রাসমান বা সংকীর্ণ ভূমিযুক্ত পিরামিড: এর ভূমি সংকীর্ণ এবং মধ্যভাগ প্রশস্ত হয়। এটি অত্যন্ত নিম্ন জন্মহার এবং ঋণাত্মক জনসংখ্যা বৃদ্ধি নির্দেশ করে। জাপান, জার্মানির মতো দেশে এই ধরনের পিরামিড দেখা যায়।

২২. ২০১১ সালের জনগণনা অনুসারে ভারতের প্রথম পাঁচটি জনবহুল রাজ্যের নাম লেখো।

উত্তর: ২০১১ সালের জনগণনা অনুসারে ভারতের প্রথম পাঁচটি জনবহুল রাজ্য হল:
১. উত্তরপ্রদেশ (প্রায় ১৯.৯৮ কোটি)
২. মহারাষ্ট্র (প্রায় ১১.২৩ কোটি)
৩. বিহার (প্রায় ১০.৪০ কোটি)
৪. পশ্চিমবঙ্গ (প্রায় ৯.১৩ কোটি)
৫. অন্ধ্রপ্রদেশ (অবিভক্ত) (প্রায় ৮.৪৫ কোটি)

২৩. ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে জনসংখ্যার ঘনত্বের তারতম্য হয় কেন?

উত্তর: ভারতে জনসংখ্যার ঘনত্বের তারতম্যের প্রধান কারণগুলি হল প্রাকৃতিক ও অর্থনৈতিক।
প্রাকৃতিক কারণ: উর্বর সমভূমি, অনুকূল জলবায়ু এবং জলের সহজলভ্যতাযুক্ত অঞ্চলে (যেমন – গাঙ্গেয় সমভূমি) কৃষিকাজ ও বসবাসের সুবিধা থাকায় জনঘনত্ব খুব বেশি। কিন্তু বন্ধুর পার্বত্য অঞ্চল বা শুষ্ক মরু অঞ্চলে প্রতিকূল পরিবেশের কারণে জনঘনত্ব অত্যন্ত কম।
অর্থনৈতিক কারণ: শিল্পোন্নত, খনিজ সমৃদ্ধ এবং উন্নত পরিবহন ব্যবস্থা সম্পন্ন অঞ্চলগুলিতে (যেমন – কলকাতা, মুম্বাই, দিল্লি) কর্মসংস্থানের সুযোগ অনেক বেশি। এই কারণে এই সব শহরাঞ্চলে কাজের খোঁজে প্রচুর মানুষ আসে এবং জনঘনত্ব বেড়ে যায়।

২৪. ভারতের নগরায়নের প্রধান তিনটি কারণ আলোচনা করো।

উত্তর: ভারতে দ্রুত নগরায়নের প্রধান তিনটি কারণ হল:
১. গ্রাম থেকে শহরে পরিব্রাজন: গ্রামে কৃষিক্ষেত্রে কর্মসংস্থানের অভাব এবং দারিদ্র্যের কারণে লক্ষ লক্ষ মানুষ কাজের খোঁজে শহরে চলে আসছে, যা নগরায়নকে ত্বরান্বিত করছে।
২. শিল্পায়ন: স্বাধীনতার পর শিল্পায়নের ফলে অনেক নতুন শিল্পকেন্দ্র গড়ে উঠেছে। এই শিল্পকেন্দ্রগুলিকে ঘিরে ধীরে ধীরে শহর ও নগর তৈরি হয়েছে।
৩. উন্নত জীবনযাত্রার আকর্ষণ: শহরের উন্নত শিক্ষা, স্বাস্থ্য পরিষেবা, বিনোদন এবং আধুনিক জীবনযাত্রার সুযোগ-সুবিধা গ্রামীণ মানুষকে শহরের দিকে আকর্ষণ করে।

২৫. ‘কাম্য জনসংখ্যা’র ধারণাটি ব্যাখ্যা করো।

উত্তর: ‘কাম্য জনসংখ্যা’ বা ‘Optimum Population’ হল একটি তত্ত্বগত ধারণা। এই তত্ত্ব অনুযায়ী, কোনো দেশের প্রাকৃতিক ও অন্যান্য সম্পদের পূর্ণ ব্যবহারের জন্য যে পরিমাণ জনসংখ্যা থাকা আদর্শ, তাকে সেই দেশের কাম্য জনসংখ্যা বলে।
বৈশিষ্ট্য:
১. এই জনসংখ্যায় দেশের মাথাপিছু আয় সর্বোচ্চ হয়।
২. জীবনযাত্রার মান সবচেয়ে উন্নত হয়।
৩. বেকারত্ব ও দারিদ্র্য থাকে না।
যদি জনসংখ্যা কাম্য জনসংখ্যার চেয়ে বেশি হয়, তাকে ‘জনাধিক্য’ বা ‘Overpopulation’ বলে। আর যদি কম হয়, তাকে ‘জনস্বল্পতা’ বা ‘Underpopulation’ বলে।


ঙ) রচনাধর্মী প্রশ্নাবলী – মান ৫ (১০টি)

১. ভারতে জনসংখ্যা বন্টনের তারতম্যের পাঁচটি কারণ বিস্তারিতভাবে আলোচনা করো।

উত্তর:
ভারতে জনসংখ্যার বন্টন অত্যন্ত অসম। কোথাও জনবসতি খুব ঘন, আবার কোথাও প্রায় জনবিরল। এই তারতম্যের প্রধান কারণগুলি হল:
ক) ভূপ্রকৃতি: এটি জনসংখ্যা বন্টনের প্রধান নিয়ন্ত্রক। কৃষিকাজ, পরিবহন ব্যবস্থা ও বসবাসের সুবিধার জন্য উর্বর সমভূমি অঞ্চলে (যেমন – সিন্ধু-গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র সমভূমি) জনবসতি অত্যন্ত ঘন। অন্যদিকে, বন্ধুর পার্বত্য অঞ্চল (হিমালয়), মালভূমি (ছোটনাগপুর) বা জলাভূমিতে (কচ্ছের রান) প্রতিকূল পরিবেশের কারণে জনবসতি বিরল।
খ) জলবায়ু: আরামদায়ক ও অনুকূল জলবায়ুযুক্ত অঞ্চলে জনবসতি ঘন হয়। যেমন – উপকূলীয় অঞ্চলের সমভাবাপন্ন জলবায়ু বা মৌসুমী জলবায়ুযুক্ত সমভূমি অঞ্চল। কিন্তু চরমভাবাপন্ন জলবায়ুযুক্ত (অতিরিক্ত উষ্ণ বা শীতল) অঞ্চল, যেমন – রাজস্থানের থর মরুভূমি বা লাদাখের শীতল মরুভূমিতে, জনবসতি খুব কম।
গ) জলের সহজলভ্যতা: মানুষ বসবাসের জন্য জলের উপর নির্ভরশীল। তাই নদী অববাহিকা বা যেখানে পানীয় ও সেচের জল সহজে পাওয়া যায়, সেখানে ঘন জনবসতি গড়ে ওঠে। যেমন – গঙ্গা, যমুনার তীরে জনবসতি খুব ঘন।
ঘ) অর্থনৈতিক কারণ:
১. শিল্প ও খনিজ: শিল্পোন্নত অঞ্চল (মুম্বাই-পুনে, হুগলি) এবং খনিজ সমৃদ্ধ অঞ্চলে (ছোটনাগপুর) কর্মসংস্থানের সুযোগ বেশি থাকায় জনসংখ্যা কেন্দ্রীভূত হয়।
২. পরিবহন ও যোগাযোগ: উন্নত সড়ক, রেল ও বন্দর কেন্দ্রিক অঞ্চলেও জনবসতি ঘন হয়।
ঙ) সামাজিক ও ঐতিহাসিক কারণ: ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক বা ঐতিহাসিক কারণে গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলিতেও (যেমন – বারাণসী, প্রয়াগরাজ) বহুকাল ধরে ঘন জনবসতি গড়ে উঠেছে। সরকারি নীতি এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতাও জনসংখ্যা বন্টনকে প্রভাবিত করে।

২. ভারতের দ্রুত জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণ ও তার ফলাফল আলোচনা করো।

উত্তর:
দ্রুত জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণ (জনবিস্ফোরণ):
১. উচ্চ জন্মহার: অশিক্ষা, দারিদ্র্য, কুসংস্কার, বাল্যবিবাহ, পুত্রসন্তানের আকাঙ্ক্ষা এবং পরিবার পরিকল্পনা সম্পর্কে সচেতনতার অভাবে ভারতে জন্মহার এখনো তুলনামূলকভাবে বেশি।
২. নিম্ন মৃত্যুহার: স্বাধীনতার পর চিকিৎসা ব্যবস্থার ব্যাপক উন্নতি, টিকার আবিষ্কার, উন্নত স্বাস্থ্য পরিষেবা এবং পুষ্টির উন্নতির ফলে মহামারী নিয়ন্ত্রিত হয়েছে এবং শিশুমৃত্যু ও গড় মৃত্যুহার নাটকীয়ভাবে কমে গেছে।
৩. সামাজিক কারণ: ধর্মীয় গোঁড়ামি এবং পরিবার পরিকল্পনার প্রতি অনীহাও জনসংখ্যা বৃদ্ধিতে সহায়ক হয়েছে।
৪. জনসংখ্যাগত জড়তা (Demographic Inertia): দেশের জনসংখ্যার একটি বড় অংশ যুবক ও প্রজননক্ষম হওয়ায়, জন্মহার কমলেও মোট জনসংখ্যা বাড়তে থাকে।
ফলাফল (সমস্যা):
দ্রুত জনসংখ্যা বৃদ্ধি ভারতের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের পথে একটি বড় বাধা।
১. অর্থনৈতিক সমস্যা: বেকারত্ব, দারিদ্র্য, মাথাপিছু আয় হ্রাস, খাদ্যাভাব, বাসস্থানের সংকট এবং সঞ্চয় ও মূলধন গঠনে বাধা সৃষ্টি হচ্ছে।
২. সামাজিক সমস্যা: অশিক্ষা, অপুষ্টি, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ, অপরাধমূলক কার্যকলাপ এবং পরিকাঠামোর উপর প্রচণ্ড চাপ বাড়ছে।
৩. পরিবেশগত সমস্যা: সীমিত প্রাকৃতিক সম্পদের (জল, জমি, বনভূমি) উপর চাপ বাড়ছে এবং নগরায়ন ও শিল্পায়নের ফলে পরিবেশ দূষণ মারাত্মক আকার ধারণ করছে।

৩. ভারতের নগরায়নের প্রধান কারণ ও তার ফলে সৃষ্ট সমস্যাগুলি আলোচনা করো।

উত্তর:
নগরায়নের কারণ:
ভারতে দ্রুত নগরায়নের প্রধান কারণগুলি হল:
১. গ্রাম থেকে শহরে পরিব্রাজন: এটি নগরায়নের প্রধান কারণ। গ্রামে কৃষিক্ষেত্রে কর্মসংস্থানের অভাব, দারিদ্র্য, জমির অভাব এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে লক্ষ লক্ষ মানুষ কাজের খোঁজে ও উন্নত জীবনযাত্রার আশায় শহরে চলে আসছে।
২. শিল্পায়ন: স্বাধীনতার পর শিল্পায়নের ফলে অনেক নতুন শিল্পকেন্দ্র (যেমন – দুর্গাপুর, ভিলাই) গড়ে উঠেছে। এই শিল্পকেন্দ্রগুলিকে ঘিরে ধীরে ধীরে নতুন শহর ও নগর তৈরি হয়েছে।
৩. উন্নত পরিকাঠামো ও পরিষেবা: শহরের উন্নত শিক্ষা, স্বাস্থ্য পরিষেবা, বিদ্যুৎ, জল সরবরাহ, বিনোদন এবং আধুনিক জীবনযাত্রার সুযোগ-সুবিধা গ্রামীণ মানুষকে শহরের দিকে প্রবলভাবে আকর্ষণ করে।
৪. নতুন শহরের উদ্ভব: পুরোনো শহরের পাশাপাশি অনেক নতুন প্রশাসনিক শহর (যেমন – চণ্ডীগড়) বা শিল্পনগরী গড়ে ওঠাও নগরায়নকে ত্বরান্বিত করেছে।
নগরায়নের ফলে সৃষ্ট সমস্যা:
দ্রুত ও অপরিকল্পিত নগরায়নের ফলে ভারতে বেশ কিছু গুরুতর সমস্যা দেখা দিয়েছে:
১. অপরিকল্পিত বসতি ও বস্তি সমস্যা: শহরে বাসস্থানের অভাবে প্রচুর মানুষ অস্বাস্থ্যকর ও ঘিঞ্জি বস্তি এলাকায় বসবাস করতে বাধ্য হয়, যেখানে পানীয় জল, নিকাশি ও স্বাস্থ্যের ন্যূনতম পরিষেবা থাকে না।
২. পরিকাঠামোর উপর চাপ: অতিরিক্ত জনসংখ্যার কারণে শহরের জল সরবরাহ, বিদ্যুৎ, গণপরিবহন ও বাসস্থানের উপর প্রচণ্ড চাপ সৃষ্টি হচ্ছে।
৩. পরিবেশ দূষণ: বিপুল সংখ্যক যানবাহন ও কলকারখানার কারণে বায়ু, জল ও শব্দদূষণ মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। বর্জ্য ব্যবস্থাপনার সমস্যাও একটি বড় চ্যালেঞ্জ।
৪. সামাজিক সমস্যা: শহরে বেকারত্ব, দারিদ্র্য, যানজট, অপরাধমূলক কার্যকলাপ এবং সামাজিক বিচ্ছিন্নতার মতো সমস্যা ক্রমশ বাড়ছে।

৪. ভারতের জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে কী কী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে?

উত্তর:
ভারতের জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য সরকার বিভিন্ন সময়ে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে:
ক) পরিবার পরিকল্পনা কর্মসূচি:
১৯৫২ সালে ভারত বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে সরকারিভাবে পরিবার পরিকল্পনা কর্মসূচি গ্রহণ করে। এই কর্মসূচির মাধ্যমে ‘আমরা দুই, আমাদের দুই’ নীতির প্রচার, গর্ভনিরোধক সামগ্রী বিনামূল্যে বা স্বল্প মূল্যে বিতরণ এবং বন্ধ্যাকরণের মতো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।
খ) নারী শিক্ষা ও ক্ষমতায়ন:
নারীশিক্ষার প্রসারকে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের অন্যতম প্রধান উপায় হিসেবে গণ্য করা হয়েছে। শিক্ষিত মহিলারা নিজেদের স্বাস্থ্য ও পরিবার সম্পর্কে সচেতন হন এবং ছোট পরিবার গঠনে আগ্রহী হন। ‘সর্বশিক্ষা অভিযান’, ‘বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও’-এর মতো প্রকল্পগুলি নারীশিক্ষার হার বাড়াতে সাহায্য করছে।
গ) স্বাস্থ্য পরিষেবার উন্নতি:
উন্নত স্বাস্থ্য পরিষেবার মাধ্যমে শিশুমৃত্যুর হার কমানো হয়েছে, যা বারবার সন্তান ধারণের প্রবণতা কমিয়েছে। টিকাকরণ, পুষ্টি প্রকল্প ইত্যাদি এই ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
ঘ) আইন প্রণয়ন:
মেয়েদের বিয়ের বয়স আইন করে বাড়িয়ে ১৮ বছর এবং ছেলেদের ২১ বছর করা হয়েছে, যা জন্মহার কমাতে সহায়ক।
ঙ) জনসচেতনতা বৃদ্ধি:
দূরদর্শন, রেডিও, সংবাদপত্র ও অন্যান্য গণমাধ্যমের মাধ্যমে ছোট পরিবারের সুফল এবং জনসংখ্যা বৃদ্ধির কুফল সম্পর্কে সাধারণ মানুষকে নিয়মিতভাবে সচেতন করা হচ্ছে।

৫. ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে অসম জনবন্টনের জন্য দায়ী প্রাকৃতিক কারণগুলি বিস্তারিতভাবে আলোচনা করো।

উত্তর:
ভারতে জনসংখ্যার অসম বন্টনের জন্য দায়ী প্রধান প্রাকৃতিক কারণগুলি হল:
১. ভূপ্রকৃতি: এটি জনসংখ্যা বন্টনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নিয়ন্ত্রক।
ক) সমভূমি: সিন্ধু-গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্রের মতো উর্বর সমভূমি অঞ্চলে কৃষিকাজ, পরিবহন ব্যবস্থা, শিল্প ও বসবাসের সুবিধা থাকায় জনবসতি অত্যন্ত ঘন।
খ) পার্বত্য অঞ্চল: হিমালয়ের মতো বন্ধুর, খাড়া ঢালযুক্ত পার্বত্য অঞ্চলে কৃষিকাজ, যাতায়াত ও জীবনধারণ কঠিন হওয়ায় জনবসতি অত্যন্ত বিরল।
গ) মালভূমি অঞ্চল: উপদ্বীপীয় মালভূমি অঞ্চল অনুর্বর ও বন্ধুর হওয়ায় এখানে জনবসতি মাঝারি ঘনত্বের।
২. জলবায়ু:
ক) অনুকূল জলবায়ু: আরামদায়ক ও সমভাবাপন্ন জলবায়ুযুক্ত উপকূলীয় অঞ্চলে এবং কৃষিকাজের উপযোগী মৌসুমী জলবায়ুযুক্ত অঞ্চলে জনবসতি ঘন হয়।
খ) প্রতিকূল জলবায়ু: চরমভাবাপন্ন (অতিরিক্ত উষ্ণ বা শীতল) ও শুষ্ক জলবায়ুযুক্ত অঞ্চলে জনবসতি কম হয়। যেমন – রাজস্থানের থর মরুভূমি বা লাদাখের শীতল মরুভূমিতে জনসংখ্যা খুব কম।
৩. জলের সহজলভ্যতা:
নদী অববাহিকা বা যেখানে পানীয় ও সেচের জল সহজে পাওয়া যায়, সেখানে কৃষিকাজ ও জীবনধারণ সহজ হওয়ায় ঘন জনবসতি গড়ে ওঠে। যেমন – গঙ্গা, যমুনার তীরে জনবসতি খুব ঘন। কিন্তু শুষ্ক অঞ্চলে জলের অভাবে জনবসতি কম।
৪. মৃত্তিকা:
উর্বর পলিমাটিযুক্ত অঞ্চলে (যেমন – গাঙ্গেয় সমভূমি) কৃষির ব্যাপক প্রসার ঘটায় জনবসতি ঘন হয়। কিন্তু অনুর্বর ল্যাটেরাইট বা মরু মৃত্তিকাযুক্ত অঞ্চলে জনসংখ্যা কম থাকে।

৬. ভারতের পরিবহন ব্যবস্থার গুরুত্ব আলোচনা করো।

উত্তর:
ভারতের মতো একটি বিশাল দেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নে পরিবহন ব্যবস্থার গুরুত্ব অপরিসীম:
১. অর্থনৈতিক গুরুত্ব:
ক) শিল্প ও বাণিজ্য: উন্নত পরিবহন ব্যবস্থা শিল্পের জন্য কাঁচামাল আনা এবং উৎপাদিত পণ্য বাজারে পৌঁছে দিতে সাহায্য করে। এটি অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্যকে গতিশীল করে।
খ) কৃষির উন্নয়ন: কৃষিজাত পণ্য (যেমন – সার, বীজ) কৃষকদের কাছে পৌঁছে দেওয়া এবং উৎপাদিত ফসল বাজারে নিয়ে আসার জন্য পরিবহন অপরিহার্য।
গ) সম্পদের সদ্ব্যবহার: দুর্গম অঞ্চলের খনিজ বা বনজ সম্পদ আহরণ করে তা ব্যবহারযোগ্য করে তোলার জন্য পরিবহন প্রয়োজন।
২. সামাজিক গুরুত্ব:
ক) জাতীয় সংহতি: পরিবহন ব্যবস্থা দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষের মধ্যে যোগাযোগ ও সাংস্কৃতিক আদান-প্রদান ঘটিয়ে জাতীয় সংহতিকে শক্তিশালী করে।
খ) পরিষেবা প্রদান: শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বিনোদনের মতো পরিষেবাগুলি মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য উন্নত পরিবহন প্রয়োজন।
৩. প্রশাসনিক ও সামরিক গুরুত্ব:
দেশের আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখা এবং জরুরি অবস্থায় বা যুদ্ধের সময় দ্রুত সেনা ও রসদ পাঠানোর জন্য উন্নত পরিবহন ব্যবস্থা অপরিহার্য।
এই কারণেই পরিবহন ব্যবস্থাকে ‘দেশের জীবনরেখা’ বলা হয়।

৭. ভারতের প্রধান সড়কপথগুলির (সোনালী চতুর্ভুজ, উত্তর-দক্ষিণ ও পূর্ব-পশ্চিম করিডোর) একটি বিবরণ দাও।

উত্তর:
ভারত সরকার দেশের সড়ক পরিবহন ব্যবস্থাকে উন্নত করার জন্য কয়েকটি বৃহৎ প্রকল্প গ্রহণ করেছে।
ক) সোনালী চতুর্ভুজ (Golden Quadrilateral):
এটি ভারতের বৃহত্তম সড়ক প্রকল্প। এটি একটি প্রায় চতুর্ভুজাকৃতি ৬-লেনের জাতীয় সড়ক যা ভারতের চারটি প্রধান মহানগর – দিল্লি, মুম্বাই, চেন্নাই ও কলকাতাকে যুক্ত করেছে। এর মোট দৈর্ঘ্য ৫৮৪৬ কিমি। এই প্রকল্পটি দেশের প্রধান শিল্প, বাণিজ্য ও কৃষি কেন্দ্রগুলিকে যুক্ত করে অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
খ) উত্তর-দক্ষিণ করিডোর (North-South Corridor):
এটি ভারতের উত্তরের শ্রীনগর থেকে দক্ষিণের কন্যাকুমারী পর্যন্ত বিস্তৃত একটি ৪-লেনের জাতীয় সড়ক। এর মোট দৈর্ঘ্য প্রায় ৪০০০ কিমি। এটি জম্মু ও কাশ্মীর, পাঞ্জাব, হরিয়ানা, দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, তেলেঙ্গানা, অন্ধ্রপ্রদেশ, কর্ণাটক ও তামিলনাড়ু রাজ্যের মধ্যে দিয়ে গেছে।
গ) পূর্ব-পশ্চিম করিডোর (East-West Corridor):
এটি ভারতের পূর্বের শিলচর (আসাম) থেকে পশ্চিমের পোরবন্দর (গুজরাট) পর্যন্ত বিস্তৃত একটি ৪-লেনের জাতীয় সড়ক। এর মোট দৈর্ঘ্য প্রায় ৩৩০০ কিমি। এটি আসাম, পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান ও গুজরাট রাজ্যের মধ্যে দিয়ে গেছে।
এই করিডোরগুলি ভারতের বিভিন্ন প্রান্তের মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থাকে দ্রুত ও মসৃণ করেছে।

৮. ভারতের বিভিন্ন প্রকার পরিব্রাজনের পরিচয় দাও।

উত্তর:
ভারতে মূলত চার ধরনের অভ্যন্তরীণ পরিব্রাজন বা মাইগ্রেশন দেখা যায়:
১. গ্রাম থেকে শহরে (Rural to Urban):
এটি ভারতের সবচেয়ে প্রধান এবং গুরুত্বপূর্ণ পরিব্রাজনের ধারা। গ্রামে কর্মসংস্থানের অভাব, দারিদ্র্য, কৃষিজমির অভাব এবং উন্নত জীবনযাত্রার আকর্ষণে লক্ষ লক্ষ মানুষ গ্রাম থেকে শহরের দিকে চলে আসছে। এর ফলে শহরগুলি দ্রুত বাড়ছে।
২. গ্রাম থেকে গ্রামে (Rural to Rural):
এই ধরনের পরিব্রাজনও ভারতে উল্লেখযোগ্য। এর প্রধান কারণ হল বিবাহ। বিবাহের পর মহিলারা এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রামে চলে যায়। এছাড়া, কৃষি শ্রমিকরা কাজের খোঁজে এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রামে পরিব্রাজন করে।
৩. শহর থেকে শহরে (Urban to Urban):
উন্নত কর্মসংস্থানের সুযোগ, উচ্চশিক্ষা, বদলি বা উন্নত জীবনযাত্রার জন্য মানুষ এক ছোট শহর থেকে বড় শহরে বা এক মহানগর থেকে অন্য মহানগরে পরিব্রাজন করে।
৪. শহর থেকে গ্রামে (Urban to Rural):
এই ধারার পরিব্রাজনের হার সবচেয়ে কম। মূলত চাকরি থেকে অবসর গ্রহণের পর বা শহরের কোলাহলপূর্ণ জীবন এড়িয়ে শান্ত পরিবেশে বসবাসের জন্য কিছু মানুষ গ্রামে ফিরে আসে। কোভিড-১৯ মহামারীর সময় এই ধারাটি সাময়িকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছিল।

৯. ভারতের জনসংখ্যার অসম বন্টনের জন্য দায়ী অর্থনৈতিক কারণগুলি আলোচনা করো।

উত্তর:
ভারতে জনসংখ্যার অসম বন্টনের জন্য প্রাকৃতিক কারণগুলির পাশাপাশি অর্থনৈতিক কারণগুলিও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
১. শিল্পায়ন: যে সমস্ত অঞ্চলে শিল্প উন্নত এবং কলকারখানা বেশি, সেখানে কর্মসংস্থানের সুযোগ অনেক বেশি। এই কারণে শিল্পাঞ্চলগুলিতে (যেমন – মুম্বাই-পুনে শিল্পাঞ্চল, হুগলি শিল্পাঞ্চল, ছোটনাগপুর শিল্পাঞ্চল) দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ কাজের খোঁজে আসে এবং জনবসতি ঘন হয়।
২. খনিজ সম্পদের প্রাচুর্য: খনিজ সমৃদ্ধ অঞ্চলগুলিতে খনি এবং খনিজভিত্তিক শিল্পকে কেন্দ্র করে জনবসতি গড়ে ওঠে। যেমন – ছোটনাগপুর মালভূমির কয়লা ও লোহা খনি অঞ্চলে ঘন জনবসতি দেখা যায়।
৩. উন্নত পরিবহন ও যোগাযোগ: যে সমস্ত অঞ্চলে সড়ক, রেল ও বন্দরের মাধ্যমে যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত, সেখানে বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক কার্যকলাপ বৃদ্ধি পায়। এই অর্থনৈতিক কেন্দ্রগুলিকে ঘিরে ঘন জনবসতি গড়ে ওঠে। যেমন – সোনালী চতুর্ভুজের পার্শ্ববর্তী অঞ্চল।
৪. কৃষির ধরণ: বাণিজ্যিক কৃষি ও বাগিচা কৃষি প্রধান অঞ্চলগুলিতে কৃষি শ্রমিকের চাহিদা বেশি থাকায় জনবসতি ঘন হয়। কিন্তু জীবিকাসত্তাভিত্তিক বা অনুন্নত কৃষি অঞ্চলে জনসংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম থাকে।
৫. নগরায়ন: বড় বড় শহর ও মহানগরগুলিতে ব্যবসা-বাণিজ্য, পরিষেবা ক্ষেত্র এবং অন্যান্য অর্থনৈতিক সুযোগ-সুবিধা বেশি থাকায় সেখানে জনসংখ্যা কেন্দ্রীভূত হয়।

১০. ভারতের জনসংখ্যা সমস্যার সমাধানের উপায়গুলি বিস্তারিতভাবে আলোচনা করো।

উত্তর:
ভারতের জনসংখ্যা সমস্যা সমাধানের জন্য একটি দীর্ঘমেয়াদী ও বহুমুখী পরিকল্পনা প্রয়োজন। প্রধান উপায়গুলি হল:
ক) জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি:
১. পরিবার পরিকল্পনা: ‘আমরা দুই, আমাদের দুই’ নীতির ব্যাপক প্রচার এবং গর্ভনিরোধক সামগ্রী ও পরিষেবা সহজলভ্য করতে হবে।
২. আইনগত পদক্ষেপ: মেয়েদের বিয়ের বয়স আইন করে বাড়ানো (১৮ বছর) কঠোরভাবে প্রয়োগ করতে হবে।
খ) আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন:
১. শিক্ষা ও সাক্ষরতার প্রসার: সার্বিক সাক্ষরতা, বিশেষত নারীশিক্ষার প্রসার ঘটাতে হবে। শিক্ষিত মানুষ, বিশেষত মহিলারা, ছোট পরিবারের গুরুত্ব বোঝেন এবং সচেতনভাবে পরিবার পরিকল্পনা গ্রহণ করেন।
২. দারিদ্র্য দূরীকরণ ও কর্মসংস্থান: দারিদ্র্য দূরীকরণ এবং ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে হবে। মানুষের আয় বাড়লে এবং জীবনযাত্রার মান উন্নত হলে তারা নিজে থেকেই ছোট পরিবার গঠনে আগ্রহী হয়।
গ) স্বাস্থ্য পরিষেবার উন্নতি:
উন্নত স্বাস্থ্য পরিষেবার মাধ্যমে শিশুমৃত্যু ও মাতৃমৃত্যুর হার কমাতে হবে। এর ফলে বারবার সন্তান ধারণের প্রবণতা কমবে। টিকাকরণ, পুষ্টি প্রকল্প ইত্যাদি কর্মসূচিকে আরও জোরদার করতে হবে।
ঘ) জনসচেতনতা বৃদ্ধি:
গণমাধ্যম, স্কুল-কলেজ এবং সামাজিক সংগঠনগুলির মাধ্যমে জনসংখ্যা বৃদ্ধির কুফল এবং ছোট পরিবারের সুফল সম্পর্কে সমাজের সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে ব্যাপক সচেতনতা গড়ে তুলতে হবে। বাল্যবিবাহ ও পুত্রসন্তানের আকাঙ্ক্ষার মতো সামাজিক কুপ্রথাগুলির বিরুদ্ধে প্রচার চালাতে হবে।

ভারতের জনসংখ্যা class 10 প্রশ্ন উত্তর MCQ, অতি-সংক্ষিপ্ত, ও রচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তর : Class 10 Geography ভারতের জনসংখ্যা Question Answer

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top