ধাতু (Metals) কী?
ধাতু হলো এমন প্রাকৃতিক উপাদান বা উপকরণ যা কঠিন (মোটামুটি) হয়, ভাল তাপ এবং বিদ্যুৎ পরিবাহী, নমনীয় ও টেকসই, এবং সাধারণত চকচকে চেহারা থাকে। ধাতুগুলো আমাদের দৈনন্দিন জীবনে বিভিন্ন কাজে ব্যবহৃত হয়।
ধাতুর বৈশিষ্ট্য
- চকচকে হয় (Luster):
- ধাতুগুলো সাধারণত চকচকে হয় এবং আলো প্রতিফলিত করে।
- তাপ ও বিদ্যুৎ পরিবাহী (Conductivity):
- তাপ ও বিদ্যুৎ খুব ভালোভাবে পরিবহন করে।
- গঠনশীলতা (Malleability):
- চাপ দিলে পাতলা ফিল্ম বা পাতলা পাত তৈরি করা যায়।
- নমনীয়তা (Ductility):
- তার বা তারের মতো দীর্ঘ আকারে গড়া যায়।
- দৃঢ়তা ও শক্তি (Hardness and Strength):
- বেশির ভাগ ধাতু শক্ত ও টেকসই হয়।
- উচ্চ গলনবিন্দু (High Melting Point):
- অধিকাংশ ধাতুর গলনবিন্দু বেশি হয়।
- গভীর রং বা বিভিন্ন রঙ:
- সাধারণত ধাতুগুলো ধূসর, সোনালি, রুপার বা বাদামি রঙের হতে পারে।
ধাতুর প্রকারভেদ
১. মূল ধাতু (Pure Metals)
- যেমন: লোহা, তামা, সোনা, রূপা।
২. মিশ্র ধাতু (Alloys)
- দুটি বা ততোধিক ধাতুর মিশ্রণ।
- যেমন: ব্রোঞ্জ (তামা + কস), পিতল (তামা + জিংক), স্টিল (লোহা + কার্বন)।
ধাতুর ব্যবহার
- গৃহস্থালী সামগ্রী: পাত্র, চামচ, চুলা ইত্যাদি।
- বিল্ডিং ও নির্মাণ: লোহা, ইস্পাত বিভিন্ন কাঠামোতে।
- যন্ত্রাংশ ও যানবাহন: মোটর, ইঞ্জিন, যানবাহনে ব্যবহার।
- বিদ্যুৎ ও ইলেকট্রনিক্স: তার, সুইচ, বাল্বের অংশ ইত্যাদি।
- অলঙ্কার: সোনা, রূপা, প্লাটিনাম।
ধাতু এবং অর্ধধাতু ও অধাতু পার্থক্য
| বৈশিষ্ট্য | ধাতু | অর্ধধাতু / অধাতু |
| তাপ পরিবাহিতা | ভালো | কম বা মাঝারি |
| বিদ্যুৎ পরিবাহিতা | ভালো | কম |
| চকচকে | থাকে | থাকে না |
| নমনীয়তা ও গঠনশীলতা | উচ্চ | কম |
| রঙ | ধূসর, সোনালী, রুপালি | কালো, সাদা, বাদামী |
| উদাহরণ | লোহা, তামা, সোনা | সালফার, ফসফরাস, কার্বন |
ধাতুর রূপান্তর
- ধাতুগুলো গলিয়ে বিভিন্ন আকারে তৈরি করা যায় (গলনবিন্দু নির্ভর)।
- মিশ্র ধাতু তৈরি করে ধাতুর গুণাবলী উন্নত করা হয়।
বিশেষ তথ্য
- জ্বালানি উৎপাদনে ধাতুর ভূমিকা: তামা ও লোহা ব্যবহার হয় বিদ্যুৎ ও তাপ পরিবাহক হিসেবে।
- প্রাকৃতিক উৎস: ধাতু সাধারণত খনিজ থেকে আহরণ করা হয়, যেমন বক্সাইট থেকে অ্যালুমিনিয়াম।