১. শোনা (Listening):
শোনা ভাষা শিক্ষার প্রথম ধাপ। এটি ভাষার শব্দ, ছন্দ, এবং অর্থ বোঝার জন্য ভিত্তি গঠন করে।
- উপাদান: শব্দভাণ্ডার, বাক্যের গঠন, এবং উচ্চারণ।
- গুরুত্ব:
- ভাষার সঠিক ধ্বনি এবং সুর শিখতে সাহায্য করে।
- মনের অভ্যন্তরীণ চিত্র তৈরি করে।
- শ্রবণ দক্ষতা শিশুদের প্রথম ভাষা শিখনকে সহজ করে।
২. বলা (Speaking):
শ্রবণ দক্ষতার পরে বলা ভাষার সক্রিয় ব্যবহার।
- উপাদান: উচ্চারণ, শব্দ নির্বাচন, এবং বাক্য গঠন।
- গুরুত্ব:
- ভাষার মাধ্যমে যোগাযোগ নিশ্চিত করে।
- শিশুর আত্মবিশ্বাস তৈরি করে।
- মনের ভাব প্রকাশের জন্য কার্যকর মাধ্যম।
ভাষায় কার্যাবলী (Functions of Language)
১. যোগাযোগের মাধ্যম
ভাষা মানুষের ভাব, চিন্তা, এবং অভিব্যক্তি আদান-প্রদানের প্রধান মাধ্যম।
- উদাহরণ: “আমি জল চাই।”
২. সামাজিক মিথস্ক্রিয়া
ভাষা সমাজে বিভিন্ন সম্পর্ক স্থাপন এবং বজায় রাখতে ব্যবহৃত হয়।
- উদাহরণ: বন্ধুর সাথে কথা বলা, অন্যের মতামত জানা।
৩. তথ্য প্রদান ও গ্রহণ
ভাষা তথ্য বিনিময়ের মাধ্যম।
- উদাহরণ: শিক্ষার্থীদের পাঠ শেখানোর জন্য শিক্ষক ভাষা ব্যবহার করেন।
৪. আবেগ প্রকাশ
মানুষের আবেগ প্রকাশ করার জন্য ভাষার ব্যবহার।
- উদাহরণ: আনন্দ বা দুঃখ প্রকাশ করা।
৫. চিন্তা প্রকাশ
ভাষা চিন্তাকে কাঠামোবদ্ধ করে এবং প্রকাশ করতে সহায়তা করে।
- উদাহরণ: “কীভাবে সমস্যা সমাধান করা যায়?”
শিশুরা ভাষাকে কীভাবে ব্যবহার করে (How Children Use Language)
১. পর্যবেক্ষণ এবং অনুকরণ
- শিশুরা চারপাশের শব্দ, বাক্যাংশ, এবং আচরণ পর্যবেক্ষণ করে এবং তা অনুকরণ করে।
উদাহরণ: মায়ের মুখে “মা” শব্দ শুনে সেটি বলা।
২. শ্রবণ ও উচ্চারণ
- শিশুরা প্রথমে শুনে এবং পরে সেই শব্দ বা বাক্য উচ্চারণ করতে চেষ্টা করে।
উদাহরণ: “দুধ খেতে চাই” শব্দ শুনে বলতে চেষ্টা।
৩. প্রাথমিক চিহ্ন থেকে অর্থপূর্ণ বাক্য
- প্রথমে শব্দ বা শব্দাংশ ব্যবহার করে, পরে তা গঠনমূলক বাক্যে রূপান্তরিত হয়।
উদাহরণ: “জল” → “জল চাই” → “আমি জল চাই।”
৪. ত্রুটি থেকে শেখা
- শিশু ভুল করে এবং তা সংশোধন করে শিখে।
উদাহরণ: “আমি গিয়েছে” → “আমি গিয়েছি।”
৫. ক্রিয়া ও প্রতিক্রিয়া
- শিশু মনের ভাব প্রকাশ করার জন্য ভাষা ব্যবহার করে এবং প্রতিক্রিয়া পায়।
উদাহরণ: “আমাকে কলম দাও” বললে কলম পাওয়া।
৬. কল্পনা ও সৃজনশীলতা
- শিশুরা ভাষার মাধ্যমে তাদের কল্পনা প্রকাশ করে।
উদাহরণ: গল্প তৈরি করা বা রোল-প্লে করা।
৭. পরিবেশ থেকে শেখা
- শিশু পরিবার, বন্ধু এবং চারপাশের পরিবেশ থেকে ভাষার শব্দ, বাক্যাংশ এবং ব্যবহার শেখে।
ভাষা শেখাতে শোনা ও বলার গুরুত্ব
- শ্রবণ এবং বলার ব্যায়াম:
শিশুদের গল্প শোনানো বা গানের মাধ্যমে শেখানো। - উৎসাহিত পরিবেশ:
শিশুরা যাতে তাদের ভাব প্রকাশ করতে সাহস পায়, এমন পরিবেশ তৈরি করা। - ব্যবহারিক চর্চা:
কথোপকথনের মাধ্যমে ভাষার চর্চা। - ত্রুটি সংশোধন:
শিশুর ভুলকে নেতিবাচক না করে, তা সংশোধন করা।