সিন্ধুতীরে কবিতার প্রশ্ন উত্তর
সিন্ধুতীরে ( সৈয়দ আলাওল )
ক) বহুবিকল্পভিত্তিক প্রশ্নাবলী (MCQ) – মান ১ (৫০টি)
১. ‘সিন্ধুতীরে’ কবিতাটি কার লেখা?
২. ‘সিন্ধুতীরে’ কাব্যাংশটি কোন কাব্য থেকে নেওয়া হয়েছে?
৩. “সিন্ধুতীরে দেখি দিব্য স্থান” – ‘দিব্য স্থান’টি কেমন ছিল?
৪. “তথা কন্যা থাকে সর্বক্ষণ” – ‘কন্যা’টি কে?
৫. মাঞ্জসে কতজন কন্যা ছিল?
৬. ‘পঞ্চকন্যা’ বলতে কাদের বোঝানো হয়েছে?
৭. পদ্মাবতীকে দেখে পদ্মা প্রথমে কী ভেবেছিলেন?
৮. পদ্মা অচেতন কন্যাদের কোথায় নিয়ে গিয়েছিলেন?
৯. “সিন্ধু-নৃপতি-সুতা” – কে?
১০. পদ্মা কিসের শয্যা প্রস্তুত করেছিলেন?
১১. “বিধি মোরে না করো নৈরাশ” – বক্তা কে?
১২. ‘মাঞ্জস’ শব্দের অর্থ কী?
১৩. পঞ্চকন্যার জ্ঞান ফিরিয়ে আনার জন্য কী করা হয়েছিল?
১৪. “চারি সখী চারিভিতে” – কার চারিভিতে?
১৫. সৈয়দ আলাওল কোন রাজসভার কবি ছিলেন?
১৬. “অচেতন পঞ্চকন্যা” – তারা কেন অচেতন ছিল?
১৭. ‘মহৌষধ’ কী?
১৮. “দেখিয়া রূপের কলা” – কার রূপের কথা বলা হয়েছে?
১৯. ‘বৈথান’ শব্দের অর্থ কী?
২০. পদ্মাবতীর কেশ কেমন ছিল?
২১. পদ্মাবতীর বসন কীসে ভেজা ছিল?
২২. ‘সিন্ধুতীরে’ কবিতায় কোন দেবতার উল্লেখ আছে?
২৩. “মনেতে কৌতুক বাসি” – কার মনে কৌতুক জেগেছিল?
২৪. “অম্বর পরিধান” – ‘অম্বর’ শব্দের অর্থ কী?
২৫. ‘সখি সবে’ কী করছিল?
২৬. “সিন্ধুতীরে” কবিতাটি কোন শতকের রচনা?
২৭. পদ্মা কার কন্যা ছিলেন?
২৮. “তড়িৎ-উজ্জ্বল তনু” – কার তনু?
২৯. পঞ্চকন্যার চেতনা ফিরতে কত দণ্ড সময় লেগেছিল?
৩০. “এ কী! সখী, সবে মিলি” – এই উক্তিটি কার?
৩১. উদ্যানটি কেমন ছিল?
৩২. “কতো রবি শশী” – এই তুলনাটি কী বোঝাতে ব্যবহৃত?
৩৩. ‘সিন্ধু’ শব্দের অর্থ কী?
৩৪. “যদি হয় živit” – এই আশায় পদ্মা কী করেছিলেন?
৩৫. ‘সিন্ধুতীরে’ কবিতায় কোন রসের প্রাধান্য?
৩৬. ‘সত্বরে’ শব্দের অর্থ কী?
৩৭. “বাহুরক সখী” – কে সখীদের বাহুড়িয়েছিল?
৩৮. ‘দিব্যপুরী’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
৩৯. “অচৈতন্য” এবং “অচেতন” শব্দদুটির অর্থ কী?
৪০. পদ্মা কার প্রতি হতাশ না হতে বলেছিলেন?
৪১. “করুণা-স্বরূপ” কে?
৪২. ‘সিন্ধুতীরে’ ঘটনাটি দিনের কোন সময়ে ঘটে?
৪৩. “কনক মন্দির” – ‘কনক’ শব্দের অর্থ কী?
৪৪. “আলাইয়া ছিল বেণী” – ‘বেণী’ শব্দের অর্থ কী?
৪৫. পদ্মাবতীর জ্ঞান ফেরার পর তিনি নিজেকে কোথায় আবিষ্কার করেন?
৪৬. ‘সিন্ধুতীরে’ কোন ভাষারীতির নিদর্শন?
৪৭. “সমুদ্রের মাঝারে” কী ভাসছিল?
৪৮. “হৃদয়ে ভাবিত…” – কে হৃদয়ে ভাবছিলেন?
৪৯. “এ কী! সখী, সবে মিলি” – পদ্মাবতী এই উক্তিটি কেন করেছিলেন?
৫০. কবিতাটির মূল ভাব কী?
খ) অতি-সংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্নাবলী (SAQ) – মান ১ (৪০টি)
১. ‘সিন্ধুতীরে’ কাব্যাংশটি কোন কাব্য থেকে নেওয়া হয়েছে?
উত্তর: ‘সিন্ধুতীরে’ কাব্যাংশটি সৈয়দ আলাওলের ‘পদ্মাবতী’ কাব্য থেকে নেওয়া হয়েছে।
২. দিব্যপুরীটি কোথায় অবস্থিত ছিল?
উত্তর: দিব্যপুরীটি সিন্ধুতীরে বা সমুদ্রের তীরে অবস্থিত ছিল।
৩. ‘পঞ্চকন্যা’ কারা?
উত্তর: ‘পঞ্চকন্যা’ হলেন রাজকুমারী পদ্মাবতী এবং তাঁর চারজন সখী।
৪. মাঞ্জস কী?
উত্তর: মাঞ্জস হলো ভেলা।
৫. পঞ্চকন্যা কেন অচেতন ছিলেন?
উত্তর: সমুদ্রের ঢেউয়ের আঘাতে এবং বিপর্যয়ের কারণে পঞ্চকন্যা অচেতন ছিলেন।
৬. ‘সমুদ্র-নৃপতি-সুতা’ কে?
উত্তর: ‘সমুদ্র-নৃপতি-সুতা’ হলেন পদ্মা।
৭. অচেতন কন্যাদের দেখে পদ্মা প্রথমে কী ভেবেছিলেন?
উত্তর: অচেতন কন্যাদের দেখে পদ্মা প্রথমে ভেবেছিলেন, তাঁরা হয়তো কোনো দেবী অথবা ইন্দ্রের শাপে স্বর্গ থেকে বিচ্যুত কোনো অপ্সরা।
৮. “বিধি মোরে না করো নৈরাশ” – বক্তা কে?
উত্তর: এই উক্তিটির বক্তা হলেন পদ্মা।
৯. পদ্মা অচেতন কন্যাদের কোথায় নিয়ে গিয়েছিলেন?
উত্তর: পদ্মা অচেতন কন্যাদের একটি মনোরম উদ্যানের মাঝে নিয়ে গিয়েছিলেন।
১০. কন্যাদের চেতনা ফেরানোর জন্য কী করা হয়েছিল?
উত্তর: কন্যাদের চেতনা ফেরানোর জন্য আগুন জ্বেলে সেক দেওয়া হয়েছিল এবং বিভিন্ন ঔষধ প্রয়োগ করা হয়েছিল।
১১. কতক্ষণ পরে পঞ্চকন্যার জ্ঞান ফেরে?
উত্তর: চারি দণ্ড অর্থাৎ প্রায় ৯৬ মিনিট পরে পঞ্চকন্যার জ্ঞান ফেরে।
১২. ‘বৈথান’ শব্দের অর্থ কী?
উত্তর: ‘বৈথান’ শব্দের অর্থ হলো স্থান বা জায়গা।
১৩. জ্ঞান ফেরার পর পদ্মাবতী কাকে দেখতে পান?
উত্তর: জ্ঞান ফেরার পর পদ্মাবতী দেখেন যে, তাঁর চারজন সখী তাঁর সেবা করছে।
১৪. সৈয়দ আলাওল কোন যুগের কবি?
উত্তর: সৈয়দ আলাওল মধ্যযুগের কবি।
১৫. পদ্মাবতীর কেশের বর্ণনা দাও।
উত্তর: পদ্মাবতীর চুল ছিল মেঘের মতো কালো, যা তাঁর পিঠের উপর বিনুনি করে সাজানো ছিল।
১৬. পদ্মা কার কাছে প্রার্থনা করেছিলেন?
উত্তর: পদ্মা বিধি বা ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করেছিলেন।
১৭. ‘মহৌষধ’ শব্দের অর্থ কী?
উত্তর: ‘মহৌষধ’ শব্দের অর্থ হলো শ্রেষ্ঠ ঔষধ বা অব্যর্থ ঔষধ।
১৮. পদ্মাবতীর রূপ কেমন ছিল?
উত্তর: পদ্মাবতীর রূপ ছিল এতটাই সুন্দর যে, তাঁর কাছে সূর্য ও চন্দ্রও ম্লান হয়ে যায় এবং তাঁর শরীর ছিল বিদ্যুতের মতো উজ্জ্বল।
১৯. ‘সিন্ধুতীরে’ কোন ভাষারীতির নিদর্শন?
উত্তর: ‘সিন্ধুতীরে’ মধ্যযুগীয় বাংলা বা প্রাচীন সাধু ভাষারীতির নিদর্শন।
২০. “এ কী! সখী, সবে মিলি” – পদ্মাবতী কেন এই উক্তি করেন?
উত্তর: জ্ঞান ফেরার পর নিজেকে এক অচেনা, সুন্দর উদ্যানে আবিষ্কার করে এবং সখীদের সেবারত দেখে বিস্ময় ও উদ্বেগ প্রকাশ করার জন্য পদ্মাবতী এই উক্তি করেন।
২১. পদ্মাবতীর বসন কেমন ছিল?
উত্তর: পদ্মাবতীর বসন সমুদ্রের জলে ভেজা ছিল।
২২. পদ্মা কার কন্যা ছিলেন?
উত্তর: পদ্মা সমুদ্র-রাজ বা সমুদ্র-নৃপতির কন্যা ছিলেন।
২৩. ‘সত্বরে’ শব্দের অর্থ কী?
উত্তর: ‘সত্বরে’ শব্দের অর্থ হলো দ্রুত বা তাড়াতাড়ি।
২৪. “তথ্য কন্যা থাকে সর্বক্ষণ” – ‘তথা’ শব্দের অর্থ কী?
উত্তর: ‘তথা’ শব্দের অর্থ হলো সেখানে।
২৫. ‘পদ্মাবতী’ কাব্যটি কোন কাব্যের অনুবাদ?
উত্তর: ‘পদ্মাবতী’ কাব্যটি মালিক মহম্মদ জায়সীর লেখা ‘পদুমাবৎ’ কাব্যের অনুবাদ।
২৬. কবিতায় কোন অরণ্যের কথা বলা হয়েছে?
উত্তর: কবিতায় দিব্যপুরীর মনোরম উদ্যান বা অরণ্যের কথা বলা হয়েছে।
২৭. পদ্মা কন্যাদের জন্য কীসের শয্যা তৈরি করেন?
উত্তর: পদ্মা কন্যাদের জন্য নরম বস্ত্রের শয্যা তৈরি করেন।
২৮. “অচৈতন্য” শব্দের অর্থ কী?
উত্তর: “অচৈতন্য” শব্দের অর্থ হলো চৈতন্যহীন বা জ্ঞানহীন।
২৯. কে কন্যাদের বসন শুকানোর ব্যবস্থা করেন?
উত্তর: পদ্মা আগুন জ্বেলে কন্যাদের বসন শুকানোর ব্যবস্থা করেন।
৩০. ‘দিব্যপুরী’র বর্ণনা দাও।
উত্তর: ‘দিব্যপুরী’ ছিল সমুদ্রতীরে অবস্থিত এক মনোরম স্থান, যেখানে কোনো দুঃখ বা কষ্ট ছিল না।
৩১. “অতিরিক্ত হয় রূপ” – কার রূপ?
উত্তর: পদ্মাবতীর রূপ অতিরিক্ত ছিল।
৩২. ‘সখী সবে’ কী করছিল?
উত্তর: জ্ঞান ফেরার পর ‘সখী সবে’ পদ্মাবতীর সেবা করছিল।
৩৩. ‘সিন্ধুতীরে’ কবিতায় কার মানবিকতার পরিচয় পাওয়া যায়?
উত্তর: ‘সিন্ধুতীরে’ কবিতায় পদ্মার মানবিকতার পরিচয় পাওয়া যায়।
৩৪. পদ্মা অচেতন কন্যাদের দেখে কী করতে উদ্যত হন?
উত্তর: পদ্মা অচেতন কন্যাদের দেখে তাদের সেবা ও চিকিৎসার জন্য উদ্যত হন।
৩৫. ‘পরিধান’ শব্দের অর্থ কী?
উত্তর: ‘পরিধান’ শব্দের অর্থ হলো পরিধেয় বস্ত্র বা পোশাক।
৩৬. ‘বেণী’ শব্দের অর্থ কী?
উত্তর: ‘বেণী’ শব্দের অর্থ হলো বিনুনি করা চুল।
৩৭. পদ্মা ও পদ্মাবতীর মধ্যে সম্পর্ক কী?
উত্তর: পদ্মা হলেন উদ্ধারকর্ত্রী এবং পদ্মাবতী হলেন উদ্ধারপ্রাপ্তা।
৩৮. ‘কনক মন্দির’ কোথায় ছিল?
উত্তর: ‘কনক মন্দির’ সমুদ্রের তীরে অবস্থিত দিব্যপুরীতে ছিল।
৩৯. “বিস্মিত হইল বালা” – ‘বালা’ কে?
উত্তর: এখানে ‘বালা’ বলতে পদ্মাবতীকে বোঝানো হয়েছে।
৪০. ‘সিন্ধুতীরে’ কবিতাটি কোন পর্বের অন্তর্গত?
উত্তর: ‘সিন্ধুতীরে’ কবিতাটি ‘পদ্মাবতী’ কাব্যের ‘পদ্মা-সমুদ্র খণ্ড’ পর্বের অন্তর্গত।
গ) সংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্নাবলী – মান ৩ (২৫টি)
১. “বিধি মোরে না করো নৈরাশ” – বক্তা কে? তিনি এমন প্রার্থনা করেছেন কেন?
উত্তর: উক্তিটির বক্তা হলেন সমুদ্র-রাজকন্যা পদ্মা। তিনি যখন সমুদ্রতীরে পাঁচজন অচেতন কন্যাকে দেখতে পান, তখন তাদের বাঁচানোর জন্য ব্যাকুল হয়ে ওঠেন। তাদের জীবন রক্ষা পাবে কি না, এই অনিশ্চয়তা থেকে তিনি বিধি বা ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করেন, যেন ঈশ্বর তাকে নিরাশ না করেন এবং তিনি কন্যাদের প্রাণরক্ষা করতে সক্ষম হন।
২. “দেখিয়া রূপের কলা/বিস্মিত হইল বালা” – কার রূপ দেখে কে বিস্মিত হয়েছিল? রূপের বর্ণনা দাও।
উত্তর: এখানে পদ্মাবতীর রূপ দেখে সমুদ্র-রাজকন্যা পদ্মা বিস্মিত হয়েছিলেন। পদ্মাবতীর রূপ ছিল অলৌকিক। তাঁর শরীর ছিল বিদ্যুতের মতো উজ্জ্বল এবং তাঁর সৌন্দর্যের কাছে সূর্য ও চন্দ্রও ম্লান হয়ে যায়। তাঁর লম্বা কালো চুল বিনুনি করা ছিল এবং তাঁর সৌন্দর্য ভাষায় বর্ণনা করা কঠিন।
৩. “পঞ্চকন্যা পাইলা চেতন” – তারা কীভাবে চেতনা ফিরে পেয়েছিল?
উত্তর: পদ্মা এবং তাঁর সখীদের অক্লান্ত সেবায় পঞ্চকন্যা চেতনা ফিরে পেয়েছিল। পদ্মা প্রথমে আগুন জ্বেলে তাদের দেহের উত্তাপ ফিরিয়ে আনেন এবং ভেজা বস্ত্র শুকানোর ব্যবস্থা করেন। তারপর তিনি নানা রকম শ্রেষ্ঠ ঔষধ বা ‘মহৌষধ’ তাদের মুখে ও শরীরে প্রয়োগ করেন। এই নিবিড় সেবা ও চিকিৎসার ফলেই প্রায় চার দণ্ড পরে তারা চেতনা ফিরে পায়।
৪. “সিন্ধুতীরে দেখি দিব্য স্থান” – দিব্য স্থানটির বর্ণনা দাও।
উত্তর: ‘সিন্ধুতীরে’ অবস্থিত দিব্য স্থানটি ছিল অত্যন্ত মনোরম। সেখানে কোনো দুঃখ বা কষ্ট ছিল না এবং সর্বদা সত্যধর্ম বিরাজ করত। স্থানটি ফল ও ফুলে ভরা একটি সুন্দর উদ্যান দ্বারা বেষ্টিত ছিল। সেখানে সোনার মন্দির ছিল, যা তার সৌন্দর্য ও পবিত্রতাকে আরও বাড়িয়ে তুলেছিল।
৫. “তথা কন্যা থাকে সর্বক্ষণ” – ‘কন্যা’টির পরিচয় দাও।
উত্তর: ‘কন্যা’টি হলেন সমুদ্র-রাজ বা সমুদ্র-নৃপতির কন্যা পদ্মা। তিনি এই দিব্যপুরীতে বা মনোরম স্থানে বাস করেন। তিনি অত্যন্ত দয়ালু, পরোপকারী এবং মানবিক গুণসম্পন্ন। সমুদ্রতীরে ভেসে আসা অচেতন পঞ্চকন্যাকে উদ্ধার করে এবং সেবা-শুশ্রূষার মাধ্যমে বাঁচিয়ে তুলে তিনি তাঁর মহৎ হৃদয়ের পরিচয় দিয়েছেন।
৬. অচেতন কন্যাদের দেখে পদ্মার মনে কী কী ভাবনা এসেছিল?
উত্তর: অচেতন কন্যাদের অলৌকিক রূপ দেখে পদ্মার মনে নানা ভাবনা এসেছিল। তিনি প্রথমে ভেবেছিলেন, এরা হয়তো কোনো দেবী। পরক্ষণেই তাঁর মনে হয়, হয়তো দেবরাজ ইন্দ্রের শাপে কোনো অপ্সরা স্বর্গ থেকে বিচ্যুত হয়ে পৃথিবীতে এসেছে। তিনি তাদের পরিচয় নিয়ে অত্যন্ত কৌতূহলী ও বিস্মিত হয়েছিলেন।
৭. জ্ঞান ফেরার পর পদ্মাবতী কী দেখেছিলেন এবং তাঁর প্রতিক্রিয়া কী ছিল?
উত্তর: জ্ঞান ফেরার পর পদ্মাবতী দেখেন যে, তিনি এক মনোরম উদ্যানে রয়েছেন এবং তাঁর চারজন সখী তাঁর সেবা করছে। এই অচেনা, সুন্দর পরিবেশ দেখে তিনি বিস্মিত ও উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। তিনি সখীদের কাছে জানতে চান, কীভাবে তারা এই স্বর্গীয় স্থানে এসে পৌঁছলেন এবং কে-ই বা তাদের উদ্ধার করল।
৮. ‘সিন্ধুতীরে’ কবিতায় পদ্মার চরিত্রটি কীভাবে ফুটে উঠেছে?
উত্তর: ‘সিন্ধুতীরে’ কবিতায় পদ্মা একজন দয়ালু, পরোপকারী ও মানবিক নারী হিসেবে ফুটে উঠেছেন। তিনি বিপন্ন পঞ্চকন্যাকে দেখে শুধু করুণা করেননি, সক্রিয়ভাবে তাদের উদ্ধারের ব্যবস্থা করেছেন। তিনি তাদের সেবা-শুশ্রূষা করে বাঁচিয়ে তুলেছেন। তাঁর চরিত্রটি নিঃস্বার্থ সেবা ও নারীশক্তির এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
৯. “চারি সখী চারিভিতে/মধ্যে যে কন্যাখানি” – এই দৃশ্যের বর্ণনা দাও।
উত্তর: এই দৃশ্যে দেখা যায়, মাঞ্জস বা ভেলার উপর পাঁচজন কন্যা অচেতন অবস্থায় পড়ে আছে। মাঝখানে শুয়ে আছেন রাজকুমারী পদ্মাবতী এবং তাঁকে ঘিরে চারদিকে তাঁর চারজন সখী পড়ে আছে। তাদের চুল এলোমেলো এবং পোশাক জলে ভেজা। এই দৃশ্যটি এক ভয়াবহ বিপর্যয়ের পরের করুণ অবস্থাকে তুলে ধরে।
১০. ‘সিন্ধুতীরে’ কবিতায় অলৌকিকতার পরিচয় দাও।
উত্তর: ‘সিন্ধুতীরে’ কবিতায় অলৌকিকতার ছাপ স্পষ্ট। সমুদ্রতীরের দিব্যপুরী, যা দুঃখ-কষ্টহীন এক স্থান, তা অলৌকিক। সমুদ্র-রাজকন্যা পদ্মার অস্তিত্ব এবং পদ্মাবতীর অলৌকিক সৌন্দর্য (“কতো রবি শশী… জিনিয়া”)—এই সবই কাহিনীকে এক fantastical বা অলৌকিক মাত্রা দিয়েছে। মধ্যযুগীয় কাব্যের বৈশিষ্ট্য হিসেবেই এই অলৌকিকতার প্রয়োগ ঘটেছে।
১১. “কিঞ্চিতরূপেতে তার আছে মাত্র শ্বাস” – এই পঙক্তিটির তাৎপর্য কী?
উত্তর: এই পঙক্তিটির মাধ্যমে অচেতন পঞ্চকন্যার আশঙ্কাজনক অবস্থাকে বোঝানো হয়েছে। তারা এতটাই বিপর্যস্ত ছিল যে, তাদের মধ্যে জীবনের চিহ্ন হিসেবে শুধুমাত্র সামান্য শ্বাস-প্রশ্বাসটুকু বাকি ছিল। তারা ছিল জীবন ও মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। এই অবস্থা দেখেই পদ্মা তাদের বাঁচানোর জন্য ব্যাকুল হয়ে উঠেছিলেন।
১২. “সখি সবে আজ্ঞা দিল” – কে, কেন আজ্ঞা দিয়েছিল?
উত্তর: সমুদ্র-রাজকন্যা পদ্মা তাঁর সখীদের আজ্ঞা দিয়েছিলেন। তিনি অচেতন পঞ্চকন্যাকে উদ্ধার করে সেবা করার জন্য এই আজ্ঞা দেন। তিনি তাঁর সখীদের নির্দেশ দেন আগুন জ্বেলে সেক দেওয়ার জন্য এবং কন্যাদের ভেজা বস্ত্র শুকানোর ব্যবস্থা করার জন্য, যাতে তাদের জীবন রক্ষা করা যায়।
১৩. “সিন্ধু-নৃপতি” কে? তাঁর কন্যার পরিচয় দাও।
উত্তর: ‘সিন্ধু-নৃপতি’ হলেন সমুদ্র-রাজ বা সমুদ্রের অধিপতি। তাঁর কন্যা হলেন পদ্মা। পদ্মা এই কাব্যাংশের এক প্রধান চরিত্র। তিনি অত্যন্ত দয়ালু, পরোপকারী এবং মানবিক গুণসম্পন্ন। তিনিই সমুদ্রতীরে ভেসে আসা বিপন্ন পদ্মাবতী ও তাঁর সখীদের উদ্ধার করেন এবং সেবা করে বাঁচিয়ে তোলেন।
১৪. ‘পদ্মাবতী’ কাব্যের মূল কাহিনীর পরিচয় দাও।
উত্তর: ‘পদ্মাবতী’ কাব্যটি সিংহলের রাজকুমারী পদ্মাবতী এবং চিতোরের রাজা রত্নসেনের প্রেমকাহিনী অবলম্বনে রচিত। এটি মালিক মহম্মদ জায়সীর ‘পদুমাবৎ’ কাব্যের ভাবানুবাদ। আলাউদ্দিন খিলজির চিতোর আক্রমণ এবং পদ্মাবতীর জহরব্রত পালনের ঐতিহাসিক ঘটনাও এই কাব্যের অংশ।
১৫. সৈয়দ আলাওলকে ‘মহাকবি’ বলা হয় কেন?
উত্তর: সৈয়দ আলাওল মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবি। তাঁর রচনায় পাণ্ডিত্য, শিল্পগুণ এবং মানবিকতার গভীর পরিচয় পাওয়া যায়। ‘পদ্মাবতী’-র মতো মহৎ কাব্য রচনা করে তিনি বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছেন। তাঁর ভাষার দক্ষতা এবং চরিত্র চিত্রণের নৈপুণ্যের জন্যই তাঁকে ‘মহাকবি’র মর্যাদা দেওয়া হয়।
১৬. “অচৈতন্য পড়ি আছে”– কারা এবং কেন অচৈতন্য ছিল?
উত্তর: রাজকুমারী পদ্মাবতী ও তাঁর চার সখী অচৈতন্য অবস্থায় পড়েছিল। সমুদ্রপথে এক ভয়ংকর ঝড়ে তাদের জাহাজডুবি হয়। তারা একটি ভেলায় আশ্রয় নিলেও, সমুদ্রের বিশাল ঢেউ এবং প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের আঘাতে তারা জ্ঞান হারিয়ে ফেলে।
১৭. “করুণা-স্বরূপ” কে? তাঁকে কেন এমন বলা হয়েছে?
উত্তর: এখানে ‘করুণা-স্বরূপ’ বলতে বিধি বা ঈশ্বরকে বোঝানো হয়েছে। পদ্মা যখন বিপন্ন কন্যাদের বাঁচানোর চেষ্টা করছিলেন, তখন তিনি ঈশ্বরের উপর ভরসা রেখেছিলেন। কারণ তিনি বিশ্বাস করেন, ঈশ্বরই হলেন করুণার মূর্ত প্রতীক এবং তাঁর কৃপা হলেই এই কন্যাদের জীবনরক্ষা সম্ভব হবে।
১৮. ‘সিন্ধুতীরে’ কবিতায় প্রকৃতির বর্ণনা কীভাবে এসেছে?
উত্তর: ‘সিন্ধুতীরে’ কবিতায় প্রকৃতি এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। একদিকে রয়েছে সমুদ্রের ভয়ঙ্কর, ধ্বংসাত্মক রূপ, যা পঞ্চকন্যাকে বিপদে ফেলেছে। অন্যদিকে রয়েছে সমুদ্রতীরের মনোরম, শান্ত উদ্যান, যা তাদের আশ্রয় ও আরোগ্যের স্থান হয়েছে। এভাবেই প্রকৃতিকে দ্বৈত রূপে চিত্রিত করা হয়েছে।
১৯. “জিনিয়া কতো রবি শশী” – এই উপমাটির সার্থকতা কী?
উত্তর: এই উপমাটি পদ্মাবতীর অলৌকিক সৌন্দর্য বোঝাতে ব্যবহৃত হয়েছে। ‘রবি’ বা সূর্য এবং ‘শশী’ বা চন্দ্র হলো পৃথিবীর সবচেয়ে উজ্জ্বল বস্তু। পদ্মাবতীর রূপের ঔজ্জ্বল্য এতটাই বেশি যে, তা সূর্য ও চন্দ্রের আলোকেও হার মানায় বা জয় করে। এই অতিশয়োক্তি অলঙ্কারের মাধ্যমে কবি পদ্মাবতীর অসাধারণ রূপের পরিচয় দিয়েছেন।
২০. পদ্মাবতীর জ্ঞান ফেরার পরের মানসিক অবস্থা কেমন ছিল?
উত্তর: জ্ঞান ফেরার পর পদ্মাবতীর মানসিক অবস্থা ছিল বিস্ময়, উদ্বেগ ও অনিশ্চয়তায় পূর্ণ। তিনি নিজেকে এক অচেনা স্বর্গীয় উদ্যানে আবিষ্কার করে হতবাক হয়ে যান। তিনি বুঝতে পারছিলেন না যে, তারা সমুদ্রে ডুবে যাওয়ার পর কীভাবে এই সুন্দর স্থানে এসে পৌঁছলেন। এই পরিস্থিতি তাঁকে উদ্বিগ্ন করে তুলেছিল।
২১. পদ্মা কীভাবে পঞ্চকন্যার সেবা করেছিলেন?
উত্তর: পদ্মা অত্যন্ত যত্ন সহকারে পঞ্চকন্যার সেবা করেছিলেন। তিনি তাদের মনোরম উদ্যানে নিয়ে যান এবং নরম বস্ত্রের শয্যায় শোয়ান। আগুন জ্বেলে তাদের শরীর গরম করেন ও ভেজা পোশাক শুকানোর ব্যবস্থা করেন। এরপর তিনি নানারকম ‘মহৌষধ’ তাদের মুখে দিয়ে ও শরীরে লাগিয়ে তাদের চেতনা ফিরিয়ে আনেন।
২২. “বাহুরক সখী” – এই উক্তির মাধ্যমে পদ্মাবতীর চরিত্রের কোন দিকটি প্রকাশ পেয়েছে?
উত্তর: জ্ঞান ফেরার পর পদ্মাবতী যখন তাঁর সখীদের দেখেন, তখন তিনি তাদের বাহু দিয়ে জড়িয়ে ধরেন। এই উক্তির মাধ্যমে পদ্মাবতীর চরিত্রের স্নেহপ্রবণতা এবং তাঁর সখীদের প্রতি গভীর ভালোবাসা ও নির্ভরতার দিকটি প্রকাশ পেয়েছে। তিনি যে একা নন, তাঁর প্রিয়জনেরা পাশে আছে, এটা বুঝতে পেরে তিনি আশ্বস্ত হন।
২৩. “মনেতে কৌতুক বাসি” – পদ্মার মনে কী নিয়ে কৌতুক জেগেছিল?
উত্তর: সমুদ্রতীরে অচেতন, অপরূপা কন্যাদের দেখে পদ্মার মনে কৌতুক বা curiosity জেগেছিল। তারা কারা, কোথা থেকে এসেছে, কেনই বা তাদের এই দশা—এই সমস্ত প্রশ্ন তাঁর মনে কৌতূহলের জন্ম দিয়েছিল। তাদের অলৌকিক সৌন্দর্য দেখে তিনি তাদের পরিচয় জানার জন্য উৎসুক হয়ে পড়েছিলেন।
২৪. “তুরিত” শব্দের অর্থ কী? কবিতায় এর প্রয়োগ দেখাও।
উত্তর: “তুরিত” শব্দের অর্থ হলো তাড়াতাড়ি বা সত্বর। কবিতায় এর প্রয়োগ দেখা যায়—”তুরিত গমনে আসি দেখে চারি সखी”। অর্থাৎ, পদ্মা তাড়াতাড়ি হেঁটে এসে চারজন সখীকে দেখতে পান। এই শব্দটি ঘটনার দ্রুততাকে নির্দেশ করে।
২৫. ‘সিন্ধুতীরে’ কবিতায় নারী চরিত্রের ভূমিকা আলোচনা করো।
উত্তর: ‘সিন্ধুতীরে’ কবিতাটি সম্পূর্ণভাবে নারী চরিত্র কেন্দ্রিক। এখানে প্রধান চরিত্র পদ্মা, যিনি উদ্ধারকর্ত্রী ও সেবিকা। অন্যদিকে, বিপন্ন চরিত্ররা হলেন পদ্মাবতী ও তাঁর সখীরা। কবিতাটিতে এক নারীর দ্বারা অন্য নারীর উদ্ধার, সেবা এবং সহমর্মিতার এক সুন্দর ছবি ফুটে উঠেছে। এটি নারীশক্তির এক ইতিবাচক ও মানবিক রূপকে তুলে ধরে।
ঘ) রচনাধর্মী প্রশ্নাবলী – মান ৫ (১০টি)
১. ‘সিন্ধুতীরে’ কাব্যাংশ অবলম্বনে পদ্মা চরিত্রটির পরিচয় দাও।
উত্তর:
ভূমিকা: সৈয়দ আলাওলের ‘পদ্মাবতী’ কাব্যের অন্তর্গত ‘সিন্ধুতীরে’ কাব্যাংশে সমুদ্র-রাজকন্যা পদ্মা এক প্রধান ও উজ্জ্বল চরিত্র। তাঁর চরিত্রের মধ্যে দিয়ে কবি এক আদর্শ নারীর রূপ তুলে ধরেছেন।
চরিত্রের বৈশিষ্ট্য:
১. কৌতূহলী ও সৌন্দর্য-পিপাসু: সমুদ্রতীরে অচেতন পঞ্চকন্যাকে দেখে পদ্মার মনে তীব্র কৌতূহল জাগে। তাদের অলৌকিক রূপ দেখে তিনি মুগ্ধ হন এবং তাদের পরিচয় জানার জন্য উৎসুক হয়ে ওঠেন।
২. দয়ালু ও পরোপকারী: পদ্মা অত্যন্ত দয়ালু ও পরোপকারী। বিপন্ন, অসহায় কন্যাদের দেখে তাঁর মনে করুণার উদ্রেক হয়। তিনি শুধুমাত্র করুণা প্রকাশ করেই থেমে থাকেননি, সক্রিয়ভাবে তাদের উদ্ধারের জন্য এগিয়ে এসেছেন।
৩. সেবাপরায়ণা ও মানবিক: তাঁর সবচেয়ে বড় পরিচয় হলো তাঁর সেবাপরায়ণতা। তিনি অচেতন কন্যাদের মনোরম উদ্যানে নিয়ে গিয়ে আগুন জ্বেলে, ঔষধ দিয়ে এবং নানাভাবে সেবা করে তাদের প্রাণরক্ষা করেছেন। তাঁর এই নিঃস্বার্থ সেবা তাঁকে এক মহৎ মানবিক চরিত্রে পরিণত করেছে।
৪. ঈশ্বর বিশ্বাসী: তিনি যখন কন্যাদের জীবন নিয়ে সন্দিহান, তখন তিনি বিধি বা ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করেন—”বিধি মোরে না করো নৈরাশ”। এটি তাঁর ঈশ্বর-বিশ্বাসী মনের পরিচয় দেয়।
উপসংহার: সুতরাং, পদ্মা চরিত্রটি দয়া, সেবা, পরোপকার ও মানবিকতার এক মূর্ত প্রতীক। তাঁর নিঃস্বার্থ সেবাই কাব্যাংশের মূল চালিকাশক্তি।
২. “পঞ্চকন্যা পাইলা চেতন” – ‘পঞ্চকন্যা’ কারা? তারা কীভাবে অচেতন হয়েছিল এবং কীভাবে তাদের চেতনা ফিরিয়ে আনা হয়েছিল? বিস্তারিত আলোচনা করো।
উত্তর:
‘পঞ্চকন্যা’-র পরিচয়: ‘পঞ্চকন্যা’ বলতে সিংহলের রাজকুমারী পদ্মাবতী এবং তাঁর চারজন সখীকে বোঝানো হয়েছে।
অচেতন হওয়ার কারণ:
‘পদ্মাবতী’ কাব্যের কাহিনী অনুসারে, রাজকুমারী পদ্মাবতী রাজা রত্নসেনের খোঁজে সমুদ্রপথে যাত্রা করেছিলেন। কিন্তু মাঝসমুদ্রে ভয়ংকর ঝড়ে তাঁদের জাহাজটি ডুবে যায়। তাঁরা কোনোক্রমে একটি ভেলা বা ‘মাঞ্জস’-এ আশ্রয় নেন। কিন্তু সমুদ্রের বিশাল ঢেউ এবং প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের প্রচণ্ড আঘাতে তাঁরা জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন এবং অচেতন অবস্থায় ভেলা সমেত সমুদ্রতীরে ভেসে আসেন।
চেতনা ফেরানোর বৃত্তান্ত:
সমুদ্র-রাজকন্যা পদ্মা তাঁদের অচেতন অবস্থায় দেখতে পেয়ে উদ্ধার করেন। তিনি এবং তাঁর সখীরা মিলে—
১. পঞ্চকন্যাকে একটি মনোরম উদ্যানে নিয়ে যান এবং নরম বস্ত্রের শয্যায় শুইয়ে দেন।
২. আগুন জ্বেলে তাদের শরীর গরম করার এবং ভেজা পোশাক শুকানোর ব্যবস্থা করেন।
৩. নানারকম ‘মহৌষধ’ বা শ্রেষ্ঠ ঔষধ তাদের মুখে ও সর্বাঙ্গে প্রয়োগ করেন।
এই নিবিড় সেবা ও চিকিৎসার ফলেই প্রায় চার দণ্ড বা ৯৬ মিনিট পরে পঞ্চকন্যা চেতনা ফিরে পায়।
৩. ‘সিন্ধুতীরে’ কাব্যাংশের নামকরণের সার্থকতা বিচার করো।
উত্তর:
ভূমিকা: যেকোনো সাহিত্যের নামকরণ তার বিষয়বস্তু, ঘটনাস্থল অথবা মূল ব্যঞ্জনার উপর নির্ভর করে। সৈয়দ আলাওলের ‘সিন্ধুতীরে’ কাব্যাংশটির নামকরণ ঘটনাস্থল-ভিত্তিক এবং অত্যন্ত সার্থক।
ঘটনাস্থলের গুরুত্ব: কাব্যাংশের সমস্ত ঘটনা সিন্ধুতীর বা সমুদ্রের তীরকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হয়েছে।
১. ঘটনার সূচনা: কাব্যাংশের সূচনাতেই আমরা দেখি, “সিন্ধুতীরে দেখি দিব্য স্থান”। এই সিন্ধুতীরেই সমুদ্র-রাজকন্যা পদ্মা বাস করেন।
২. মূল ঘটনা: মূল ঘটনা অর্থাৎ পঞ্চকন্যার অচেতন অবস্থায় ভেসে আসা এবং পদ্মাকর্তৃক তাদের উদ্ধার—এই সবকিছুই সিন্ধুতীরে ঘটেছে।
৩. আশ্রয় ও আরোগ্য: পঞ্চকন্যার আশ্রয় ও আরোগ্যের স্থানটিও হলো সিন্ধুতীরের মনোরম উদ্যান।
ব্যঞ্জনাধর্মী তাৎপর্য: ‘সিন্ধুতীর’ এখানে শুধুমাত্র একটি স্থান নয়, এটি এক প্রতীকী অর্থও বহন করে। সিন্ধু বা সমুদ্র এখানে ধ্বংস ও সৃষ্টির প্রতীক। সমুদ্রই যেমন পঞ্চকন্যাকে বিপদে ফেলেছে, তেমনই সমুদ্রের তীরই তাদের নতুন জীবন ও আশ্রয় দিয়েছে। এই তীর হলো বিপদ থেকে মুক্তির প্রতীক, ধ্বংসের পর জীবনের নতুন সূচনার প্রতীক।
উপসংহার: যেহেতু কাব্যাংশের সমস্ত ঘটনা সিন্ধুতীরকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে এবং এই স্থানটিই গল্পের গতিপথকে নিয়ন্ত্রণ করেছে, তাই ‘সিন্ধুতীরে’ নামকরণটি সর্বাংশে সার্থক ও সুপ্রযুক্ত।
৪. “বিস্মিত হইল বালা/দেখিয়া রূপের কলা” – কার রূপের কথা বলা হয়েছে? সেই রূপের বর্ণনা দাও এবং এই রূপ দেখে বক্তার কী প্রতিক্রিয়া হয়েছিল?
উত্তর:
ভূমিকা: সৈয়দ আলাওলের ‘সিন্ধুতীরে’ কাব্যাংশে এই উক্তিটি রাজকুমারী পদ্মাবতীর রূপ প্রসঙ্গে করা হয়েছে।
রূপের বর্ণনা:
কবি পদ্মাবতীর রূপকে অলৌকিক ও স্বর্গীয় হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
১. দৈহিক সৌন্দর্য: তাঁর শরীর ছিল বিদ্যুতের মতো উজ্জ্বল (“তড়িৎ-উজ্জ্বল তনু”)। তাঁর মুখমণ্ডলের সৌন্দর্যের কাছে সূর্য ও চন্দ্রের আলোও ম্লান হয়ে যায় (“কতো রবি শশী… জিনিয়া”)।
২. কেশের সৌন্দর্য: তাঁর চুল ছিল মেঘের মতো কালো এবং পিঠের উপর বিনুনি করে সাজানো ছিল।
৩. সামগ্রিক প্রভাব: তাঁর রূপ এতটাই অসাধারণ ছিল যে, তা ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন। কবি বলেছেন, তাঁর রূপের কলা বা কারুকার্য দেখে যে কেউ মুগ্ধ হতে বাধ্য।
বক্তার প্রতিক্রিয়া:
এই রূপের বক্তা ও দর্শক হলেন সমুদ্র-রাজকন্যা পদ্মা। পদ্মাবতীর এই অলৌকিক সৌন্দর্য দেখে তিনি বিস্মিত ও হতবাক হয়ে যান। তাঁর মনে হয়, এমন রূপ কোনো সাধারণ মানবীর হতে পারে না। তিনি ভাবতে থাকেন, ইনি হয়তো কোনো দেবী অথবা ইন্দ্রের শাপে স্বর্গভ্রষ্ট কোনো অপ্সরা। এই সৌন্দর্য তাঁর মনে গভীর কৌতূহল ও করুণার জন্ম দেয় এবং তিনি এই অপরূপা কন্যাকে বাঁচানোর জন্য দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হন।
৫. ‘সিন্ধুতীরে’ কাব্যাংশে মধ্যযুগীয় বাংলা সাহিত্যের কোন কোন বৈশিষ্ট্য ফুটে উঠেছে? আলোচনা করো।
উত্তর:
ভূমিকা: সৈয়দ আলাওলের ‘সিন্ধুতীরে’ কাব্যাংশটি সপ্তদশ শতকের রচনা হওয়ায় এর মধ্যে মধ্যযুগীয় বাংলা সাহিত্যের একাধিক বৈশিষ্ট্য সুস্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে।
বৈশিষ্ট্যসমূহ:
১. দেবদেবীর প্রভাব ও অলৌকিকতা: মধ্যযুগের সাহিত্যে দেবদেবী ও অলৌকিক ঘটনার প্রাধান্য ছিল। এই কবিতাতেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। সমুদ্র-রাজকন্যা পদ্মার অস্তিত্ব, পদ্মাবতীর অলৌকিক সৌন্দর্য, ইন্দ্রের শাপে অপ্সরার স্বর্গচ্যুত হওয়ার কল্পনা—এই সবই অলৌকিকতার নিদর্শন।
২. ধর্মীয় অনুষঙ্গ ও ঈশ্বর বিশ্বাস: কবিতায় বিধি বা ঈশ্বরের প্রতি গভীর আস্থা প্রকাশ পেয়েছে। পদ্মা বিপন্নদের দেখে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করছেন (“বিধি মোরে না করো নৈরাশ”)। এটি মধ্যযুগীয় ধর্মীয় ভাবনার পরিচায়ক।
৩. ভাষার ব্যবহার: কবিতাটির ভাষা প্রাচীন সাধু বাংলা। ‘বৈথান’ (স্থান), ‘মাঞ্জস’ (ভেলা), ‘তুরিত’ (সত্বর), ‘নিঃশ্বাস’ (শ্বাস) ইত্যাদি প্রাচীন শব্দের ব্যবহার মধ্যযুগের ভাষারীতিকে স্মরণ করায়।
৪. মঙ্গলকাব্যের প্রভাব: বিপদে পড়ে দেবীর সাহায্য লাভ এবং উদ্ধার পাওয়ার যে কাহিনী, তার সঙ্গে মঙ্গলকাব্যের কাহিনীর ধারার মিল খুঁজে পাওয়া যায়।
উপসংহার: এভাবেই, বিষয়বস্তু, চরিত্র, ভাষা এবং ভাবনার দিক থেকে ‘সিন্ধুতীরে’ কাব্যাংশটি মধ্যযুগীয় বাংলা সাহিত্যের এক সার্থক প্রতিনিধি।
৬. “সিন্ধুতীরে রহি নানা সুখে।” – বক্তা কে? তার সুখের পরিচয় দাও। এই সুখের আবহে হঠাৎ কী ঘটনা ঘটল?
উত্তর:
বক্তা: এখানে বক্তা হলেন কবি সৈয়দ আলাওল, যিনি সমুদ্র-রাজকন্যা পদ্মার জীবনের বর্ণনা দিচ্ছেন। পদ্মা সিন্ধুতীরে নানা সুখে বাস করতেন।
সুখের পরিচয়:
পদ্মার বাসস্থান ‘দিব্যপুরী’ ছিল এক স্বর্গীয় স্থান। সেখানে কোনো দুঃখ বা কষ্ট ছিল না। সর্বদা সত্যধর্ম বিরাজ করত। স্থানটি ফল ও ফুলে ভরা এক মনোরম উদ্যান দ্বারা বেষ্টিত ছিল। পদ্মা তাঁর সখীদের নিয়ে এই আনন্দময় ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে সুখে দিন কাটাতেন।
আকস্মিক ঘটনা:
এই সুখের আবহে হঠাৎ এক অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটল। পদ্মা একদিন তাঁর সখীদের সঙ্গে উদ্যানে ভ্রমণ করার সময় দেখতে পেলেন, সমুদ্রের জলে একটি ভেলা বা ‘মাঞ্জস’ ভাসছে। সেই ভেলার উপর পাঁচজন কন্যা অচেতন অবস্থায় পড়ে আছে। এই আকস্মিক ও করুণ দৃশ্যই পদ্মার শান্তিপূর্ণ জীবনে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করে এবং গল্পের মূল ঘটনাকে চালিত করে।
৭. “এ কী! সখী, সবে মিলি/আমরা আসಿರುವ এথা।” – বক্তা কে? তাঁর এই বিস্ময় ও উদ্বেগের কারণ কী? এর পরবর্তী ঘটনা কী ঘটেছিল?
উত্তর:
বক্তা: উক্তিটির বক্তা হলেন রাজকুমারী পদ্মাবতী।
বিস্ময় ও উদ্বেগের কারণ:
সমুদ্রে জাহাজডুবির পর পদ্মাবতী ও তাঁর সখীরা জ্ঞান হারান। দীর্ঘ সময় পরে যখন তাঁর জ্ঞান ফেরে, তখন তিনি নিজেকে এক অচেনা কিন্তু মনোরম উদ্যানে আবিষ্কার করেন। তিনি দেখতে পান যে, তাঁর সখীরা তাঁর সেবা করছে। তিনি শেষ যে ঘটনা মনে করতে পারছেন, তা হলো সমুদ্রের বিপর্যয়। তারপর কীভাবে তাঁরা এই স্বর্গীয় স্থানে এসে পৌঁছলেন, তা তাঁর কাছে ছিল এক বিরাট বিস্ময় ও উদ্বেগের বিষয়। এই পরিস্থিতিই তাঁকে এই প্রশ্ন করতে বাধ্য করেছে।
পরবর্তী ঘটনা:
পদ্মাবতীর এই প্রশ্নের উত্তরে তাঁর সখীরাও জানায় যে, তারা কিছুই জানে না। তারা শুধু দেখেছে যে, এক অপরূপা কন্যা (পদ্মা) তাদের সেবা করে বাঁচিয়ে তুলেছেন। এরপরই পদ্মা সেখানে উপস্থিত হন এবং পদ্মাবতীর সঙ্গে তাঁর পরিচয় ও কথোপকথন হয়, যা মূল কাব্যের কাহিনীকে এগিয়ে নিয়ে যায়।
৮. ‘সিন্ধুতীরে’ কাব্যাংশটি অবলম্বনে পদ্মাবতীর শারীরিক ও মানসিক অবস্থার বর্ণনা দাও।
উত্তর:
ভূমিকা: ‘সিন্ধুতীরে’ কাব্যাংশে আমরা পদ্মাবতীর দুটি ভিন্ন অবস্থার পরিচয় পাই—অচেতন থাকাকালীন এবং চেতনা ফিরে পাওয়ার পর।
শারীরিক অবস্থা (অচেতন অবস্থায়):
সমুদ্রের বিপর্যয়ের পর পদ্মাবতী যখন ভেলায় ভেসে আসেন, তখন তাঁর শারীরিক অবস্থা ছিল অত্যন্ত আশঙ্কাজনক। তিনি ছিলেন সম্পূর্ণ অচেতন, তাঁর মধ্যে জীবনের চিহ্ন হিসেবে শুধু ক্ষীণ শ্বাস-প্রশ্বাসটুকু ছিল। তাঁর শরীর ছিল নিথর এবং পোশাক ছিল সমুদ্রের জলে ভেজা। কিন্তু এই অবস্থাতেও তাঁর অলৌকিক সৌন্দর্য ম্লান হয়নি। তাঁর শরীর ছিল বিদ্যুতের মতো উজ্জ্বল এবং মুখমণ্ডলের রূপ ছিল সূর্য-চন্দ্রকেও হার মানানোর মতো।
মানসিক অবস্থা (চেতনা ফেরার পর):
যখন পদ্মা ও তাঁর সখীদের সেবায় পদ্মাবতীর জ্ঞান ফেরে, তখন তাঁর মানসিক অবস্থা ছিল বিস্ময়, উদ্বেগ ও অনিশ্চয়তায় পূর্ণ। তিনি নিজেকে এক অচেনা, স্বর্গীয় স্থানে আবিষ্কার করে হতবাক হয়ে যান। তিনি বুঝতে পারছিলেন না যে, কে বা কারা তাঁকে উদ্ধার করেছে এবং কীভাবে তিনি সেখানে এলেন। এই অজানা পরিস্থিতি তাঁর মনে গভীর উদ্বেগ ও কৌতূহলের জন্ম দিয়েছিল, যা তাঁর “এ কী! সখী, সবে মিলি” – এই উক্তির মাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে।
৯. “তথা আমি থাকি সর্বক্ষণ।” – ‘আমি’ কে? তাঁর বাসস্থান ও জীবনযাত্রার পরিচয় দাও।
উত্তর:
‘আমি’-র পরিচয়: এখানে ‘আমি’ বলতে সমুদ্র-রাজকন্যা পদ্মা নিজেকে বুঝিয়েছেন। তিনি কাব্যাংশের অন্যতম প্রধান চরিত্র।
বাসস্থান ও জীবনযাত্রার পরিচয়:
পদ্মার বাসস্থান হলো সিন্ধুতীরে অবস্থিত এক ‘দিব্যপুরী’। এটি কোনো সাধারণ স্থান নয়, এক স্বর্গীয় ও মনোরম জগৎ।
১. পরিবেশ: এই স্থানটি দুঃখ, কষ্ট ও পাপ থেকে মুক্ত। এখানে সর্বদা সত্যধর্ম বিরাজ করে। স্থানটি ফল-ফুলে ভরা সুন্দর উদ্যান দ্বারা পরিবেষ্টিত।
২. ঐশ্বর্য: সেখানে সোনার মন্দির রয়েছে, যা স্থানটির ঐশ্বর্য ও পবিত্রতার প্রতীক।
৩. জীবনযাত্রা: পদ্মা তাঁর সখীদের নিয়ে এই শান্তিপূর্ণ ও আনন্দময় পরিবেশে বাস করেন। তাঁর জীবনে কোনো অভাব বা দুঃখ নেই। তিনি মনের আনন্দে উদ্যানে ভ্রমণ করেন। এই শান্তিপূর্ণ জীবনযাত্রার মধ্যেই তিনি বিপন্ন পঞ্চকন্যাকে আবিষ্কার করেন এবং তাঁর জীবনের গতিপথ পরিবর্তিত হয়।
১০. ‘সিন্ধুতীরে’ কবিতায় মানবিকতা ও সেবার যে আদর্শ ফুটে উঠেছে, তা নিজের ভাষায় আলোচনা করো।
উত্তর:
ভূমিকা: সৈয়দ আলাওলের ‘সিন্ধুতীরে’ কবিতাটি শুধুমাত্র এক fantastical কাহিনী নয়, এটি মানবিকতা ও নিঃস্বার্থ সেবার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। কবিতার কেন্দ্রীয় চরিত্র পদ্মার মাধ্যমে এই আদর্শটি মূর্ত হয়ে উঠেছে।
মানবিকতা ও সেবার প্রকাশ:
১. বিপন্নের প্রতি করুণা: পদ্মা যখন সমুদ্রতীরে পাঁচজন অচেতন কন্যাকে দেখতে পান, তখন তাঁর মনে গভীর করুণা ও সহানুভূতির জন্ম হয়। তিনি তাদের পরিচয় বা ধর্ম নিয়ে বিন্দুমাত্র চিন্তা না করে, তাদের বিপন্ন অবস্থা দেখে তাদের পাশে দাঁড়ান।
২. সক্রিয় উদ্ধারকার্য: তিনি শুধু করুণা প্রকাশ করেই থেমে থাকেননি। তিনি সক্রিয়ভাবে তাদের উদ্ধারের দায়িত্ব নেন। তিনি তাদের নিরাপদ স্থানে নিয়ে যান এবং তাদের বাঁচানোর জন্য সমস্ত রকম চেষ্টা করেন।
৩. নিঃস্বার্থ সেবা: পদ্মা ও তাঁর সখীরা অত্যন্ত যত্ন সহকারে পঞ্চকন্যার সেবা করেন। আগুন জ্বেলে সেক দেওয়া, ঔষধ প্রয়োগ করা এবং তাদের জন্য নরম শয্যার ব্যবস্থা করা—এই সমস্ত কাজের মধ্যে দিয়ে তাঁদের নিঃস্বার্থ সেবার মনোভাব প্রকাশ পেয়েছে।
৪. নারীশক্তির জাগরণ: এই সেবা ও মানবিকতার কাজটি নারীদের দ্বারাই সম্পন্ন হয়েছে। এটি প্রমাণ করে যে, নারী শুধুমাত্র রূপ বা সৌন্দর্যের প্রতীক নয়, সে সেবা ও শক্তিরও আধার।
উপসংহার: এভাবেই, ‘সিন্ধুতীরে’ কবিতাটি ধর্ম-বর্ণ-পরিচয়ের ঊর্ধ্বে উঠে বিপন্ন মানুষের পাশে দাঁড়ানোর এক শাশ্বত মানবিক আদর্শকে প্রতিষ্ঠা করে।
Class 10 bengali সিন্ধুতীরে question answer
সিন্ধুতীরে সৈয়দ আলাওল কবিতার প্রশ্ন উত্তর, MCQ, অতি-সংক্ষিপ্ত, ও রচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তর : Class 10 bengali সিন্ধুতীরে কবিতার প্রশ্ন উত্তর