১. ভূমিকা
প্রাচীন ও মধ্যযুগীয় সমাজে নারীদের অবস্থান অনেক সময় সামাজিক, অর্থনৈতিক ও ধর্মীয় দিক থেকে সীমিত ছিল। ১৮ ও ১৯ শতকে ভারতের সমাজে বিভিন্ন সংস্কার আন্দোলন উঠে আসতে থাকে, যা নারীর অবস্থান ও অধিকার পরিবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
২. নারীর অবস্থান পূর্বে
- পূর্বে নারীরা: সীমিত শিক্ষা, বাল্যবিবাহ, বিধবা পুনর্বিবাহ নিষেধ, গৃহস্থালি কাজকর্মে সীমাবদ্ধ।
- দায়িত্ব ও স্বাধীনতা: সামাজিক নিয়মে বাধ্যতামূলক ও সীমাবদ্ধ।
- ধর্মীয় ও সামাজিক বিধিনিষেধ: সাপতাহিক পূজা থেকে শুরু করে বড় ধরনের আচার-অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ কম।
৩. সংস্কার আন্দোলনের সূচনা
(ক) সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন
- ব্রিটিশ শাসনের সময় আধুনিক শিক্ষাব্যবস্থা।
- ইউরোপীয় চিন্তাধারা ও মানবাধিকার সম্পর্কে সচেতনতা।
(খ) প্রধান সংস্কারকরা
- রাম মোহন রায়: বিধবা বিবাহ সমর্থন, সতি প্রথার বিরোধিতা।
- ইশ্বর চন্দ্র বিদ্যাসাগর: নারী শিক্ষার প্রচার, বিধবা বিবাহ আইন প্রণয়ন।
- মুক্তা বালা: নারী মুক্তির পক্ষে কাজ।
- অন্যান্য: যতীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কিশোরী দে, সুরেন্দ্রনাথ দত্ত।
৪. প্রধান সংস্কার বিষয়সমূহ
(ক) সতি প্রথা বিলোপ
- নারীর জীবন্ত দাহের প্রথা, ১৮২৯ সালে সরকারিভাবে নিষিদ্ধ।
- রাম মোহন রায় ও অন্যান্য সংস্কারকদের প্রচেষ্টায়।
(খ) বিধবা বিবাহের স্বীকৃতি
- বিধবাদের পুনর্বিবাহের অধিকার আদায়।
- ইশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর এর প্রচার ও আইন প্রণয়ন (১৮৫৬ সালে বিধবা বিবাহ আইন)।
(গ) নারী শিক্ষা
- মেয়েদের বিদ্যালয় ও মহাবিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা।
- নারী শিক্ষার উন্নয়নে বহু প্রতিষ্ঠান ও প্রচেষ্টা।
(ঘ) বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ
- বাল্যবিবাহের বিরোধিতা ও নিয়ন্ত্রণের প্রচেষ্টা।
(ঙ) সামাজিক এবং রাজনৈতিক অধিকার
- নারীদের ভোটাধিকার ও সামাজিক মর্যাদা আদায়ের আন্দোলন শুরু।
৫. সংস্কারের প্রভাব
- নারীর শিক্ষার প্রসার ও জ্ঞান বৃদ্ধি।
- সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গিতে পরিবর্তন, নারীর স্বাধীনতা বৃদ্ধি।
- নতুন আইন ও নীতি গ্রহণ।
- নারী নেতৃত্ব ও সক্রিয়তা বৃদ্ধি।
৬. সারাংশ
সংস্কার ক্ষেত্র | কার্যক্রম ও ফলাফল |
---|---|
সতি প্রথা বিলোপ | ১৮২৯ সালে নিষিদ্ধ, নারীর জীবন রক্ষা |
বিধবা বিবাহ | বিধবা পুনর্বিবাহের আইন প্রণয়ন, সামাজিক স্বীকৃতি |
নারী শিক্ষা | মেয়েদের বিদ্যালয় ও মহাবিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা |
বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ | বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে প্রচারণা ও আইন |